নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

"মানবাধিকার সুরক্ষায় তারুণ্যের অভিযাত্রা" প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে ৭১তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৬


বজ্র আটুনি ফস্কো গিরো। আইন যত কঠিন হোক আইনের ফাঁক ফোঁকর গলিয়ে তা ভাঙ্গা ততটাই সহজ। ঘটা করে আইন করা হয় যেন তা ভাঙ্গার আনন্দ লাভের জন্য। আইন ভাঙ্গার এই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ মহা সমারোহে পালিত হবে ৭১তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস আজ। এ বছর দিবসটি উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস মানুষের জীবনে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী তরুণ জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের অধিকার, নারী-পুরুষের সমধিকার, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ ও স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাচ্ছে, সংগঠিত ও সোচ্চার হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতি-রাষ্ট্রের মধ্যে বিভেদ দূর করার লক্ষ্যে এবং মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা এবং মানবতাবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমন্বয়ে ঘোষিত হয় সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৫০ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৩১৭তম প্লেনারি সভায় ৪২৩(ভি) প্রস্তাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুত্বের সাথে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। জাতিসংঘের নির্দেশনা অনুযায়ী সেই থেকে প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর ঐতিহ্যগতভাবে এই দিনকে কেন্দ্র করে প্রতি পাঁচ বৎসর অন্তর 'জাতিসংঘের মানব অধিকার ক্ষেত্র পুরস্কার' প্রদান করা হয়। এছাড়া নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান কার্যক্রমও এদিনেই হয়ে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতি ও রাষ্ট্রের মধ্যে বিভেদ দূর করার লক্ষ্যে মানবাধিকার ঘোষণাটি ছিল একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য "মানবাধিকার সুরক্ষায় তারুণ্যের অভিযাত্রা" খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় দেশের তরুণ মসাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তরুন সমাজকে বাদ দিয়ে মানবাধিকারপ্রতিষ্ঠাাও সুরক্ষা আশা করা যায়না।উল্লেখ্য বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে যোগদান করে এবং ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস্ বা সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার স্মরণার্থে মানবাধিকার দিবস উদযাপন শুরু করে। সরকার বিগত সাত বছরে মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ৭১ বছর পূর্তি উপলক্ষে শিশু, নারী, নবীন-প্রবীণ, সাধারণ ও বিশেষ চাহিদার, শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের অধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের প্রত্যাশা নিয়ে বাংলাদেশে আজ মানবাধিকার দিবস পালিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, দেশে দেশে আজ দিনটি উদযাপিত হবে । পরিতাপের বিষয় মানবাধিকার ঘোষণার ৭১ বছর পূর্তিতে মানবাধিকার নিশ্চিতে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্য-বঞ্চনা ও অধিকারহীনতার পরিবেশ সৃষ্টির বিপরীতে সবাইকে অধিকার রক্ষা ও সম্প্রসারণে সচেষ্ট হওয়ার এখনই সময়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তথ্যঃ বাংলাদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ২০১৮ সালের জানুয়ারি ও ফেব্র“য়ারি মাসের মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে পরিসংখ্যান তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করেছে, তার মধ্যে রয়েছে, প্রথম মাসে হত্যা ১৫২, ধর্ষণ ১৭, শিশু ধর্ষণ ২০, নারীর প্রতি সহিংস যৌন নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা, এসিড নিক্ষেপ ইত্যাদি ২৮, শিশু হত্যা ১০, শিশু নির্যাতন ০২, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ০৩, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শাস্তি ২০, নিখোঁজ ০১, অপহরণ ০২, শ্রমিক মৃত্যু ১৮, বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২৭। দ্বিতীয় মাসে হত্যা ৮৯, ধর্ষণ ১৬, শিশু ধর্ষণ ১০, নারীর প্রতি সহিংসতা ১৪, যৌন নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা, এসিড নিক্ষেপ ইত্যাদি ২৮, শিশু হত্যা ১৭, শিশু নির্যাতন ০৩, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ০২, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শাস্তি ০২, গুম ০১, নিখোঁজ ০৬, অপহরণ ০১, শ্রমিক মৃত্যু ১৯, বন্দুকযুদ্ধে নিহত ০৫।

বাংলাদেশ সবসময় মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি মেনে চলার অঙ্গীকার করলেও এই দিবস পালনে যতটা থাকে আনুষ্ঠানিকতা তার সামান্যতম অংশও বাস্তবায়িত হলে বিশ্ব থেকে নির্বাসিত হত বিচার বহির্ভূত হত্যা, শিশু ও নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস, ছিনতাই, রাহাজানীসহ হাজারো অপরাধ। ১০ই ডিসেম্বর জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত মানবাধিকার বিষয়টি পৃথিবীর সর্বত্রই এখন লঙ্ঘিত, পর্যদস্থ প্রায়। দারিদ্রতা, নারীর প্রতি সহিংসতা, শিশু পাঁচার, নির্যাতন ও নিপিড়ন, নিষ্ঠুরতা রোধ ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা দূরহ হয়ে উঠেছে। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে আলোচিত ও অবহেলিত প্রসঙ্গটির নাম মানবাধিকার। ১৯৪৮ সাল থেকে জাতিসংঘের নির্দেশনায় বিশ্বের সকল দেশে প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর পালিত হয়ে আসছে। তবে ১৯৫০ সালের ৪ ডিসেম্বর, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৩১৭তম পূর্ণ অধিবেশনে ৪২৩(৫) অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সদস্যভূক্ত দেশসহ আগ্রহী সংস্থাগুলোকে দিনটি তাদের মতো করে উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়। মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে সভা-সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ধরণের তথ্যচিত্র কিংবা চলচ্চিত্র প্রদর্শনী প্রধানতঃ এ দিনের সাধারণ ঘটনা। জাতিসংঘের সকল সদস্যভূক্ত রাষ্ট্র সভা, আলোচনা অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকে। সার্বজনীন মানব অধিকার ঘোষণা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নবরূপে সৃষ্ট জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ অর্জন। এছাড়াও, 'সার্বজনীন মানব অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণাকে' বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ তারিখকে নির্ধারণ করা হয়। দিবসটি জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত কিন্তু, দক্ষিণ আফ্রিকায় শার্পেভিল গণহত্যাকে স্মরণ করে দিবসটি উদযাপিত হয় ২১ মার্চ।

মানুষের প্রতি মানুষের কর্তব্য দায়িত্ব সর্বোপরি মানবতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনই হচ্ছে মানবাধিকার ঘোষণার মূল মন্ত্র। আমাদের দেশের সংবিধানেও মানবাধিকার সংরক্ষণের কথা থাকলেও মানুষ প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের। সংবিধানের ৭ ধারায় বলা হয়েছে, "প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ"। অন্যদিকে সংবিধানের দ্বিতীয় অধ্যায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে বলা হয়েছে, "সরকার যেই গঠন করুকনা কেন, জনগণের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার দায়িত্ব ওই সরকারের উপর বর্তাবে। জাতীয় জীবনে নারী পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে কৃষক শ্রমিককে শোষণ থেকে মুক্ত রাখার অধিকার এই মহান সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। কি্ন্তু দুঃখের বিষয় বিশ্বের অন্যান্য দেশেরে মতো আমাদের মহান সংবিধানেও মানবাধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও ব্যবকহারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। তবে আমরা এখোনো দেশ প্রেমি হয়ে উঠতে পারিনি। মানবাধিকার সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার জন্মগত মৌলিক অধিকার। মানবতার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনে মানবাধিকারের গুরুত্ব অপরিসীম। মানবাধিকার লংঘন দণ্ডণীয় অপরাধ। কিন্ত অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আমরা মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়ে বারবার বাধাগ্রস্থ্ হচ্ছি। সাংবিধানিকভাবে মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠায় আমরা এখোনো পুরোপুরি সক্ষমতা অর্জন করিনি। দেশের মানুষ এখন চরম হিংস্রতা, সহিংসতায়, বর্বরতায় নিমজ্জিত। বিবেক বর্জিত সকল কাজ আমরা করে চলেছি।

২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিলেন। শাহবাগ এলাকায় শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলন-সমাবেশে পুলিশ যেভাবে চড়াও হয়েছিল, তা শুধু বাড়াবাড়িই নয়, এক ছাত্রীর সঙ্গে পুলিশ যে আচরণ করেছে, তা চরম অসভ্যতা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে পুলিশ বাহিনীর এক সদস্য সেখানে যা করেছেন, তার সঙ্গে আর যাই হোক শৃঙ্খলার বা মানবিকতার কোনো সম্পর্ক নেই। শিক্ষাথীদের এই সমাবেশ কোনো সহিংস আন্দোলন নয়। গত সোমবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় যে ছবিটি ছাপা হয়েছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে এক ছাত্রীকে পেছন দিক থেকে সেই পুলিশ কর্মকর্তা যেভাবে লাথি মেরেছেন, তার আদৌ কোনো দরকার ছিল না। যা মানবতার চরম লঙ্ঘন।

দেশীয় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান ঘেঁটে গুম-অপহরণের উদ্বেগজনক চিত্র পাওয়া গেছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত আট বছরের মধ্যে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে এ ধরনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। এ সময়ে দেশে ৮২ ব্যক্তি গুম-অপহরণের শিকার হন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে এসব ব্যক্তিকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তাঁদের স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন। পরে এঁদের মধ্যে ২৩ জনের লাশ পাওয়া গেছে। ১০ জন ছাড়া পেয়েছেন। সাতজনকে গ্রেপ্তারের খবর পরে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনজনকে পরে থানায় ও কারাগারে পাওয়া গেছে। বাকি ৩৯ জন এখনো নিখোঁজ। আসকের পরিসংখ্যান বলছে, এই গুম-খুন ও অপহরণের ঘটনা থেকে সরকারি দলের লোকজনও রেহাই পাচ্ছে না। এ বছরের ৮২ ভুক্তভোগীর মধ্যে ১১ জন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। অন্যদের মধ্যে ১৮ জন বিএনপির, তিনজন জামায়াতে ইসলামীর, ১১ জন ব্যবসায়ী, আটজন চাকরিজীবী, তিনজন ছাত্র, দুজন শিক্ষক, একজন আইনজীবী, দুজন কৃষক, একজন অটোরিকশাচালক, একজন টোল আদায়কারী এবং পৌর কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য দুজন। বাকি ১৯ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর আগে ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালে গুম-অপহরণের শিকার হয়েছিলেন ২১ জন। ২০১০-এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ জন, যাঁদের মধ্যে ছয়জন পরে ছাড়া পেয়েছিলেন ও একজনকে পুলিশে দেওয়া হয়েছিল। পরে ছয়জনের লাশ পাওয়া যায়। ৩১ জনের খোঁজ মেলেনি। ২০১১ সালে গুম-অপহরণ হন ৫৯ জন। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনের লাশ উদ্ধার হলেও ৩৯ জন এখনো নিখোঁজ। চারজন পরে ছাড়া পান। ২০১২ সালে এ সংখ্যা ছিল ৫৬। যাঁদের মধ্যে আটজন পরে ছাড়া পান, চারজনের লাশ পাওয়া যায়। ১০ জনকে পুলিশ হেফাজতে ও কারাগারে পাওয়া যায়। ৩৪ জন এখনো নিখোঁজ। ২০১৩ সালে গুমের শিকার হন ৭৬ জন। এঁদের মধ্যে ২৩ জনের লাশ পরে পাওয়া গেছে। অন্যরা এখনো নিখোঁজ। এ ছাড়া গত এক দশকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত ‘ক্রসফায়ার’, ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘এনকাউন্টারের’ ঘটনায় ও হেফাজতে নিহতের সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। একইভাবে গত বছরের প্রথম ১০ মাসে মারা গেছেন ১৩৬ জন। এসব মৃত্যুর ঘটনাকে বিচারবহির্ভূত হত্যা হিসেবে উল্লেখ করেছে আসক।

ওমেন্স উইথ ডিজএবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (ডব্লিউডিডিএফ)-এর তথ্য মতে, দেশের শতকরা ছিয়ানব্বই ভাগ প্রতিবন্ধী নারী মেয়ে শিশু শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার। সংস্থাটির মতে প্রতিবন্ধী নারীদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আইনি সহায়তার ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা দরকার। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত মানবাধিকার চর্চা ও বাস্তব প্রয়োগে অভ্যস্ত না হয়ে উঠব, ভিন্নমতের প্রতি সহনশীল হয়ে শ্রদ্ধা করতে না শিখব, ততদিন পর্যন্ত তা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছবে না। সমাজের পারিপার্শ্বিকতা, জাতীয় নেতৃত্বের অবস্থান, সব শ্রেণী পেশার মানুষের মূল্যবোধ, সামাজিক প্রগতিতে আস্থা, ইতিবাচক পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার ও যথাযথ ভূমিকা পালনের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে বিবেচ্য। নারী-যুবা, শিশু-প্রতিবন্ধী-দরিদ্র-প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও আদিবাসীসহ প্রতিটি মানুষের অধিকারের বিষয়টি জনজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ও নীতি নির্ধারনীতে সব ধরনের বৈষম্য, নির্যাতন দূর করে। একটি শোষণহীন বিশ্ব গঠনের 'অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারলেই নিশ্চিত হবে মানবাধিকার।আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত মানবাধিকার চর্চা ও বাস্তব প্রয়োগে অভ্যস্ত না হয়ে উঠব, ভিন্নমতের প্রতি সহনশীল হয়ে শ্রদ্ধা করতে না শিখব, ততদিন পর্যন্ত তা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছাবে না। রাজনৈতিক দল ও মতের এবং ধর্মীয় গোরামির উর্দ্ধে থেকে আমরা বাঙালি জাতি সকল ধর্মের মানুষ একসাথে বসবাস করবো। তবেই সুসংহত হবে মানবাধিকার। সকল দেশের প্রতিটি মানুষের অধিকার, স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকবে এই হোক আমাদের আজকের প্রত্যাশা।

নূর মোহাম্মদ নুরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২২

রাজীব নুর বলেছেন: বিএনপি কে আজ র‍্যালি করতে দেওয়া হয় নি।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৫০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বিএনপিকে র‍্যালি করতে দিলে মানবাধিকার ক্ষুন্ন হবার সম্ভাবনা আছে। কারন র‌্যালি করলে যান চলাচলে সমস্যা হবে। এতে জনদূর্ভোগ বাড়বে । যানবাহন চলাচল না করতে পারলে যাত্রীদের মানবাধিকার ক্ষুন্ন হবে। তাই না?

এ বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এনামুল হক বলেন, আজ ঢাকা শহরে অনেক যানজট। সরকারি অফিস আদালত খোলা। এরমধ্যে র‌্যালি করলে যান চলাচলে সমস্যা হবে। জনদুর্ভোগ হবে।
তিনি বলেন, যেহেতু বিএনপির র‌্যালি করার অনুমতি নেই তাই করতে দেয়া হবে না। তারপরও যদি করতে চায় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫২

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক।

কিন্তু এজন্য প্রতিটি দেশের নাগরিককে সৎ, বিশ্বস্ত, মানবিক ও কর্তব্যপরায়ণ হতে হবে।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বিশ্বমানবতা আজ হুমকির মুখে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসন ও ক্ষমতালিপ্সুদের পরিকল্পনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে পরিকল্পিত গণহত্যা। নির্বিচারে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষকে। এক খণ্ড নরককুণ্ড হয়ে উঠেছে পৃথিবী। ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের কবলে লাখ লাখ বিশ্ব নাগরিক। মধ্যপ্রাচ্যে ধুঁকছে মানবতা। ইয়েমেন, সিরিয়ার মানুষ আজ হয়ে পড়েছে অসহায়। ফিলিস্তিনিদের তো মাথা গোঁজার ঠাঁইও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। পূর্ব থেকে পশ্চিম—সর্বত্রই নানাভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো একদিকে মানবতার বুলি আওড়াচ্ছে, অন্যদিকে মানুষ হত্যার তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। মানবতার রক্ষকের অভিনয় করলেও আদতে তারাই মূলত নানা ছলে-কৌশলে মানবাধিকার হরণ করছে। বলতে দ্বিধা নেই, জাতিসংঘের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র আজ এক টুকরো কাগুজে দলিল ছাড়া আর তেমন কিছু নয় বলেই বিবেচিত হচ্ছে। জাতিসংঘকে মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.