নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ের অন্যতম ছাত্রনেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৪৪


১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ কালীন সময়ের অন্যতম ছাত্রনেতা, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সংগ্রামমুখর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আব্দুর রাজ্জাক বাঙালির স্বাধিকার, স্বাধীনতা, শান্তি ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনে তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ছাত্রজীবন থেকে আমৃত্যু তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রথমসারির সংগঠক ও নেতা। তিনি ছিলেন '৭১-এর ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের আজ ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১১ সালের এই দিনে তিনি লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যু দিনে এই নেতার জন্য আমাদের গভীর ভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

রাজনীতিবিদ আব্দুর রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ০১ আগস্ট শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ইমাম উদ্দিন এবং মাতার নাম বেগম আকফাতুন্নেছা। তিনি ১৯৫৮ সালে ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৬০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি হন। তিনি ১৯৬৪ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং পরে মাস্টার্স পাস করেন। এরপর তিনি এলএলবি পাস করেন এবং ১৯৭৩ সালে আইনজীবী হিসেবে বার কাউন্সিল’র নিবন্ধিত হন। আব্দুর রাজ্জাকের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ৫০’র দশকের শেষের দিকে ছাত্ররাজনীতির মধ্য দিয়ে। তিনি ১৯৬০-৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৬২-৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র-ছাত্রী সংসদের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৩-৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছাত্রলীগের সহ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের সময়ে তিনি প্রথম গ্রেপ্তার হন এবং ’৬৫ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন। কারাগার থেকেই মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর ৬ দফা আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৬৭ সাল থেকে ’৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি পর পর দুই বার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ থেকে ’৭২ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাসেবক বিভাগের প্রধান ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে আব্দুর রাজ্জাক ভারতের মেঘালয়ে মুজিব বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার (মুজিব বাহিনীর ৪ সেক্টর কমান্ডারের একজন) ছিলেন। তিনি মুজিব বাহিনীর একজন সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষকও ছিলেন। তিনি দেরাদুনে ভারতের সেনাবাহিনীর জেনারেল উবানের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। মুজিব বাহিনী গঠনে অন্যতম রূপকার ছিলেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম বারের মতো জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন। ১৯৯১, ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে ২টি ক'রে আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন। আব্দুর রাজ্জাক ১৯৬৬-১৯৬৭ ও ১৯৬৭-১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ ও ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক রাজনীতিবীদ আব্দুর রাজ্জাক লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৯ বছর। মৃত্যুর আগে তিনি লন্ডনের কিংস হসপিটালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডাক্তারদের পরামর্শে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়ার পর ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৫০ মিনিটে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ২৫ ডিসেম্বর দুপুর সোয়া ১২টায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে লন্ডন থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় আবদুর রাজ্জাকের মরদেহ। ২৬ ডিসেম্বর বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি রেখে যান স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাক এবং দুই পুত্র নাহিম রাজ্জাক ও ফাহিম রাজ্জাক। মৃত্যুর পূর্বাবধি তিনি শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। একটি উন্নত সমৃদ্ধ সুখী সুন্দর অসামপ্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামে জননেতা আব্দুর রাজ্জাকের অনন্য অবদান বাঙালি জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। আজ এই রাজনীতিবীদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী। বর্ষীয়ান জননেতা আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুদিনে তাঁর জন্য আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৮

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই ------------

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লিটন ভাই সালাম নিবেন।
ছাত্রনেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মন্ত্রী
আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা
জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৩

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: খুব ভালোমানুষ ছিলেন।

একেবারে নির্লোভ ও নির্মোহ ব্যক্তিত্ব।


শ্রদ্ধা তাঁর প্রতি।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সাইয়িদ রফিকুল হক ভাই
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
নির্লোভ ও নির্মোহ ব্যক্তিত্ব
ছাত্রনেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও
সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
নিবেদনের জন্য।

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ছবি আপু শুভ সকাল
আপনার মন্তব্যের জন্য
আন্তরিক ধন্যবাদ।

৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০২

রাশিয়া বলেছেন: উনি তো পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময়টা ভারতেই কাটিয়েছেন। তাহলে উনি মুক্তিযোদ্ধা হলেন কি করে?

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
একজন সেক্টর কমাণ্ডার নিশ্চয় ঘুমিয়ে সময় পার করনে না।
একজন সেক্টর কমান্ডারকে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিতে হয়।
প্রসঙ্গত মুক্তিযুদ্ধে আবদুর রাজ্জাক ভারতের মেঘালয়ে
মুজিব বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।

৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ তারেক ভাই
সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
নিবেদনের জন্য।

৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো রাজনীতিবিদ ছিলেন। সৎ ছিলেন।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি রাজীব ভাই
সৎএবং আদর্শবাদ
রাজনীতিবিদ ছিলেন

৭| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৭

ST COVER SONG বলেছেন: dadu vaiya thank you

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
You are most welcome Nati

৮| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


উনি পুরোজীবন ছাত্র রাজনীতিবিদ ছিলেন, পুরো রাজনীতিবিদ হতে পারেননি

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তবে কি তিনি আজীবন ছাত্রই ছিলেন?
ছাত্র রাজনীতি থেকেই
পরবর্তীতে রাজনীতিবিদ হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.