নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদেশী হাইব্রীড জাতের মাছের ভীরে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি মাছ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনীতিঃ দেশি মাছ রক্ষায় করণীয়

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৭


কথায় আছে, মাছে ভাতে বাঙালি। পাতে মাছ না হলে আমাদের চলে না। মাছে-ভাতে বাঙালি— এ কথা এখন শুধু বই-পুস্তকেই শোভা পায়। দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে বর্তমান প্রজন্ম পুকুর, হাওর কিংবা বিল থেকে মাছ ধরার যেসব কাহিনী শোনে তা রূপকথার মতোই কাল্পনিক মনে হয়। দেশি জাতের অনেক মাছই আছে যেগুলোর নাম পর্যন্ত শোনেনি বর্তমান প্রজন্ম। এ পরিস্থিতির জন্য প্রাকৃতিক কারণগুলোর চেয়ে মানবসৃষ্ট কারণই বেশি দায়ী। আমিষের অনেকটাই পূরণ করে মাছ। মাছ উৎপাদনে পৃথিবীতে চতুর্থ স্থানে রয়েছি আমরা। আমাদের দেশে চাষ ছাড়া বা চাষকৃত দু’ভাবেই মাছ উৎপাদিত হলেও যে মাছ চাষ করা হয়নি তাকে আমরা দেশি মাছ বলে থাকি। আর দেশি মাছ স্বাদে ও পুষ্টিতে অনন্য হওয়ায় এর দাম চাষ করা মাছের থেকে অনেক বেশি। আমাদের দেশের স্বাদু পানির ২৬০ প্রজাতির মধ্যে প্রায় ৫৪ প্রজাতির মাছই বিলুপ্তপ্রায়। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— মহাশোল, সরপুঁটি, দেশি পুঁটি, খলিসা, বাটা, রিঠা, বাঘাআইর, বাচা, কাজুলি, তারা বাইম, কুচিয়া, আইর, টেংরা, মেনি, ফলি, গাংমাগুর, তিতপুঁটি, খোকসা, চিতল, পাবদা, মলা, ঢেলা, চিত্রা, শিলং, নন্দিনা, বাতাসি, কালি বাউস, নাপিত, দারকিনা, বাইল্লা, বোয়াল, ভেটকি, চাপিলা, কাকিলা, চেলা, পটকা, পোয়া, কাচকি, শিং ইত্যাদি। এসব জাতের মাছ এখন আগের মতো বেশি দেখা যায় না। দেশি মাছের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে, বিশেষ করে যেসব অঞ্চল বর্ষার পানিতে ডুবে ছিল, সেসব এলাকায় মাছ ধরার ধুম পড়ে যেত আগে। তবে এখন আর সব অঞ্চলে মাছ ধরার ধুম পড়ে না। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাস এলে সকালে শত শত লোক ওছা, জালি ইত্যাদি নিয়ে নেমে পড়ত। প্রত্যেকেই মাঝারি পাতিলের এক পাতিল (ডেকচি) মাছ বাড়িতে নিয়ে যেত। এসব মাছের মধ্যে ছিল কই, শিং, পুঁটি, ভেদা, টেংরা, খইলসা/খল্লা, ছোট চিংড়ি, বাইম ইত্যাদি। এসব মাছ ছিল অত্যন্ত সুস্বাদু। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, এখন বর্ষাকাল আসে ঠিকই; কিন্তু দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে আগের মতো আর দেশি মাছ পাওয়া যায় না। কোনো কোনো অঞ্চলে একেবারেই পাওয়া যায় না। পুকুর থেকে বের হয়ে আসা চাষ করা মাছের দু’একটা পোনা পাওয়া যায়। দেশি মাছ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ ফসলে কীটনাশক ব্যবহার, কল-কারখানা থেকে বর্জ্য পদার্থ, ডাইংয়ের দূষিত পানি খালে-বিলে, নদীতে ফেলা এবং সেচের মাধ্যমে পানিশূন্য করে পুকুর, বিল, হাওর ইত্যাদির মাছ ধরা।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৯৯-২০০০ সালে নদী থেকে মাছ প্রাপ্তির পরিমাণ ছিল ১৫৪৩৫ মেট্রিক টন যা ২০০৯-১০ সালে নেমে এসে দাঁড়িয়েছে ১৩৬৮১২ মেট্রিক টনে। মৎস্য অধিদপ্তর (২০০৯) এর তথ্যানুসারে বাংলাদেশে জনপ্রতি বাৎসারিক মাছ গ্রহণের পরিমাণ ১৭.২৩ কেজি, মাছের বাৎসরিক চাহিদা ২৫.৯০ লক্ষ মেট্রিক টন, জনপ্রতি মাছের বাৎসরিক চাহিদা ১৮ কেজি, প্রলিজ আমিষ সরবরাহে অবদান ৫৮ শতাংশ। বাংলাদেশে মাছের মোট উৎপাদন ২৫ লক্ষ ৬৩ হাজার ২৯৬ মেট্রিক টন। যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয় (আহরিত) থেকে আসে ১০,৬০,১৮১ মেট্রিক টন, অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয় (চাষকৃত) থেকে আসে ১০,০৫,৫৪২ মেট্রিক টন এবং সমুদ্র থেকে আসে ৪,৯৭,৫৭৩ মেট্রিক টন। অধিক জনসংখ্যার দেশে বা হরহামেশায় চাহিদা বৃদ্ধির দেশে উপযুক্ত পরিকল্পনা নিয়ে অল্প রিসোর্সে অধিক উত্পাদনশীল চিন্তা নিয়ে এগোতে হবে। ২০১৫ সালে আমাদের দেশে মোট মাছ উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫.৪০ লাখ টন। সেখানে বর্তমান উত্পাদন মাত্র ২৪ লাখ টনের কাছাকাছি। সুদূরপ্রসারী এ চিন্তার প্রেক্ষাপট কিন্তু তেমন সহজ নয়। প্রতিবছর লোক বাড়ছে প্রায় ২৫ লাখ। মাছ উত্পাদনের ক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে বিভিন্ন কারণে। তবে এতটুকু বলা যায়, দেশের মত্স্য উত্পাদনের অনেকটা অবদানই বেসরকারি বা ব্যক্তি পর্যায়ের। আবার প্রাকৃতিক উেসর প্রাপ্যতা যদি অবহেলায় আর অজ্ঞতার কারণে নষ্ট হয়ে যায়, তবে তা এ অভাগা জাতির জন্য দুঃসংবাদ ছাড়া কিইবা বলতে পারি। চলতি বছরের পরিসংখ্যানটা এখনও করা না হলেও এতটুকু বলা যায়, মাছের বর্তমান উত্পাদন উল্লিখিত পরিমাণের চেয়ে কম হওয়াটাই স্বাভাবিক। দেশি মাছ দিন দিন বিলুপ্ত হওয়ার পেছনে মূলত কাজ করছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা, নিয়ম-কানুন না মেনেই স্বাদু পানির মাছ ধরা, পানিতে বিষাক্ত কীটনাশক, সার ও বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাবসহ ইত্যাদি। মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদ এমনভাবে ব্যবহার করে যে এক পর্যায় তার অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সে কারণে এ দেশের অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ হারিয়ে যেতে বসেছে। এ ধরনের প্রাকৃতিক নিরাপত্তা না পেয়ে একটা মহা মূল্যবান সম্পদকে আমরা হারাতে বসেছি। তা হলো প্রাকৃতিক মত্স্য। বিভিন্ন কারণে আমাদের সম্পদের এ খাতটি অস্তিত্বের সংকটে। তা হলো প্রাকৃতিক উৎসের পোনা। জলাধার সংকুচিত, নদীর নাব্যতা হ্রাস, নির্বিচারে রেণুপোনা মেরে ফেলা, বাঁধ নির্মাণ করে নদ-নদীর গতি পথকে থামিয়ে দেওয়া, নদী-খাল-বিল দখল করে স্থায়ী ও নিত্য ব্যবহৃত অবকাঠামো তৈরি করা, জলাশয় শুকিয়ে নিয়ে মাছ ধরা, মাছের প্রজনন ক্ষেত্রগুলোকে নষ্ট করা, নির্বিচারে প্রজননক্ষম মাছকে প্রজনন কার্যক্রম ঘটানোর আগেই ধরে খেয়ে ফেলা, অসহনীয় মাত্রায় কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার, শিল্পের বর্জ্য দূষণের মাধ্যমে পরিবেশের পানি দূষণ ঘটিয়ে মাছ ও পোনা বিচরণ এবং প্রজনন ক্ষেত্রগুলোকে নষ্ট করা হচ্ছে।

বর্তমান মুনাফামুখী ইজারা প্রথায় জলাশয় বন্দোবস্ত দেওয়ার ফলে উত্পাদনের জৈবিক ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে ইজারাদারের লোভের কারণে এ সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। অনেক কারণে প্রাকৃতিক উেসর পোনার অভাবে ’মাছে-ভাতে’ বাঙালি প্রবাদটি বেমালুম হারিয়ে যাচ্ছে। সরকার যাকে আইন প্রণয়নের মাধ্যমেও টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ ব্রহ্মপুত্র নদীতে এবং তাদের শাখা-প্রশাখাগুলোতে বিচরণ করত মাছের ডিম-রেণু-পোনা এবং মাছ। বর্ষা শেষে খেপলা জাল, দোয়ার, পলো, হুচা টেঁটা প্রভৃতি নিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা এখন তেমন আর চোখে পড়ে না। আমাদের দেশে মুক্ত জলাশয়ে মাছ উত্পাদনের উত্স ছিল অনেক। যার আয়তন সে দিনও ছিল ৪০,৪৮,৫৩২ হেক্টর। প্লাবন না হওয়ার কারণে তা এখন আর নেই। অতি বৃষ্টি হচ্ছে না গত তিন বছর। খাল আছে, বিল আছে, জল নেই। এই জলাশয়ে বিচরণ করত প্রাকৃতিক উৎসের পোনা। দেশের বিরাট জনগোষ্ঠীর মাছের বা আমিষের জোগান হতো একমাত্র এখান থেকে। দেশের বড় নদীগুলো ও তাদের শাখা-প্রশাখাগুলোতে জন্ম নেওয়া পোনাগুলোর আশ্রয়স্থল ছিল নদী থেকে গ্রামের বিল পর্যন্ত। অর্থাৎ আমাদের ঘরের ডোয়া অব্দি। সে নদী নেই, জল নেই, পোনা নেই, মাছও নেই। সাম্প্রতিক সময়ে নদীর খরস্রোত কমে যাওয়ায় খুব সহজেই জলাশয় থেকে পোনা ধরে নেওয়া হচ্ছে। সরকার পোনা সংকটের মাধ্যমে মত্স্য সম্পদের সংকটের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে মত্স্য রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধি ১৯৫০ বলবত্ করে। আবার ১৯৮৫ সালে নতুন করে এ-সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন এবং কঠোর অবস্থানের মাধ্যমে মত্স্য সম্পদ রক্ষার ব্যবস্থা নেয়। ছোট্ট পরিসরের এ দেশে ১৬ কোটির মতো বিশাল মানুষের বাঁচা-মরা অথবা টিকে থাকার পরিকল্পনাও আসে কৃষি থেকে। এই কৃষির একটি মোক্ষম খাত হচ্ছে মত্স্য। ২০২১ সাল আমাদের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি। বর্তমান সরকার গৌরবময় এই অধ্যায়কে সামনে রেখে আমাদের দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। সরকারের লক্ষ্য আগামী ২০১৩ সালের মধ্যে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, ২.৮ কোনায় এ খাতে অনেক ভাবতে হবে। কেননা কৃষির মত্স্য খাত মানুষের পুষ্টি চাহিদার ৬৩ শতাংশ পূরণ করছে। আবার মোট রপ্তানি আয়ের শতকরা ৬ ভাগ আসছে মত্স্য ও মত্স্যজাত পণ্য রপ্তানি করে। এতসবের পরেও আমাদের এ খাতে রিসোর্স বেশ কম। দেশের সীমিত সম্পদ রক্ষা করতে না পারলে আমাদের অস্তিত্ব সংকটের আশঙ্কা থেকে যায়। প্রাকৃতিক পোনা, মুক্ত জলাশয়ের মাছকে রক্ষায় কতকগুলো দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তার মধ্যে মত্স্য রক্ষণ ও সংরক্ষণ বিধি ১৯৫০ এবং ১৯৮৫ সালে নতুন করে এ-সংক্রান্ত প্রণীত আইনের বাস্তবায়ন চাই। যেজন্য আইন প্রয়োগের বাধাগুলোকে চিহ্নিত করে যার কাজ তাকে দিয়েই বাস্তবায়ন করাতে হবে। নদী বা জলাশয়গুলোর জলপ্রবাহ ঠিক রাখতে পরিকল্পনা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দেশি মাছ রক্ষায় সরকার পানিশূন্য করে মাছ ধরা বন্ধে কঠোর আইন করতে পারে, যা হবে অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ। সরকার ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে দিন দিন ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। আমরা যদি দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়াতে পারি, তাহলে আমরা যেমন সুস্বাদু ও নির্ভেজাল মাছ খেতে পারব, তেমনি চাষ করা মাছ বিদেশে রফতানি করতে পারব। তাহলে আর মিয়ানমার থেকে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে ফরমালিনযুক্ত মাছ আমদানি করতে হবে না।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


কিছু বছর দেশী মাছ না ধরা হোক, না খাওয়া হোক

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বিড়ালের গলায়
ঘন্টা বাঁধবে কে ?

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি বাঁধবো

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দেরী হয়ে যাচ্ছেনা ?
যা করবেন তাড়াাাড়ি
পরে আর সময় পাবেন না।
আমরা আছি আপনার সাখে।

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: দেশী মাছ তো পাই না।
আর চাষের মাছ খেয়ে আরাম নেই।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি, সেই কথাই বলেছি আমি
শ্যালো পাম্প দিয়ে পানি সেচে মশারি জাল দিয়ে ছেঁকে
মাতৃমাছ তো বটেই রেণু পোনা পর্যন্ত নিধন করে চলেছি আমরা।
দেশী মাছ রক্ষা করতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নিতে হবে এখনিঃ

১। কৃষিকাজে কীটনাশক ব্যবহার না করে পোকামাকড় দমনের
জন্য জৈব বালাইনাশকের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

২। উন্মুক্ত জলাশয় অর্থাৎ বিল, বাওর, নদী, খাল যেগুলো সরকারি
সম্পত্তিগুলোকে কোন ব্যক্তি বিশেষকে বা নামমাত্র কোন সংগঠনকে
লিজ বা বন্দোবস্ত না দিয়ে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের কাছে লিজ দেওয়া।

৩। নদী-নালা বা জলাশয়ের ওপর কোন অবকাঠামো নির্মাণের আগে
সেটি পরিবেশ বা নদী-নালার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে কি না
তা যাচাই করে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন অবকাঠামো নির্মাণ।

৪। মাছের পোনা নিধন এবং ডিমওয়ালা মাছ ধরা নিষিদ্ধ করতে হবে।
অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে অন্য কেউ পোণা নিধন বা ডিমওয়ালা
মাছ শিকার করতে সাহস পাবে না।

৫। ভরাট নদীনালা, ডোবা, জলাশয় পুনঃখনন করে দেশের সব নদ-নদীকে
মাছের অভয়াশ্রম কিংবা প্রতিটি জেলা বা উপজেলায় নিদির্ষ্ট কোন জলাশয়কে
মাছের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা।

সর্বোপরি মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ এবং
মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে
আমাদের দেশের নদী-নালা, খালবিল, পুকুর, ডোবা, হাওড়-বাওড়ে
আবার দেশি প্রজাতির মাছে পরিপূর্ণ হবে।

৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




নূর মোহাম্মদ নূরু ভাই,
খাদক বাঙ্গালীকে অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধ করতে বলুন? তিন বছরে মোটামোটি এক সামঞ্জস্য চলে আসবে।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
খাদকদের জন্যই সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য দিয়েছেন
প্রাকৃতির এই রূপালী সম্পদ। কিন্তু অব্যবস্থাপনার জন্য
আমরা এই সম্পদকে হারাতে বসেছি। সুষ্ঠ পরিকল্পনা
নিলে খাদকদের রসনা তৃপ্ত হবে।

৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




নূর মোহাম্মদ নূরু ভাই,
ধানের জমিতে ঘুরে বেড়ানো মাছ এখন আর নেই বললেই চলে। যেটুকু দেখা মেলে তাও চড়া দামে কিনতে হয়। ছোট ছোট কই, মাগুর, শিঙি, ল্যাটা, চ্যাং, ট্যাংরারাও চাষের জমি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

আবাদি কৃষি জমিতে অনিয়ন্ত্রিয়তভাবে কীটনাশক প্রয়োগ হচ্ছে। সঠিকভাবে কীটনামক ব্যবহার না হওয়ার পরিবেম মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। জানা যায়, আবাদি জমিতে বর্তমানে কৃষকরা উচ্চ ফলনের জন্য অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কীটনাশক ব্যবহার করছে। তাদের ব্যবহারে সঠিক জ্ঞান থাকার কারণে যেমন তেমনভাবে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে। ব্যবহৃত কীটনাশকের প্রায় শতকরা ২৫ ভাগ বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিকটবর্তী উন্মুক্ত জলাশয়ে পতিত হয়।

কৃষি জমিতে ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহারে জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের হুমকির সৃষ্টিসহ পরিবেশের ওপর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। এতে নির্মল জলজ পরিবেশ হচ্ছে মারাত্মক দূষিত, আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আবহমানকালের লালিত জীববৈচিত্র্য, পরিবেশের ভারসাম্য, আর প্রাকৃতিক খাদ্যচক্র। কৃষকরা সাধারণত জমিতে পোকামাকড়, রোগবালাই দমনের লক্ষে কৃষি জমিতে অজৈব, জৈব এবং উদ্ভিদজাত কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে।

জলজ পরিবেশ ও জলজ প্রাণীর ওপর প্রায় সর্বপ্রকার জৈব ও অজৈব কীটনাশকের বহুমাত্রিক ক্ষতিকারক প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে। আবাদি জমিতে ব্যবহার করা কীটনাশকজাতীয় বিষের প্রতিক্রিয়ায় আস্তে আস্তে হুমকির মুখে রয়েছে জলজ পরিবেশ। বিপন্ন হয়ে উঠছে জলাশয়ে বসবাসকারী জলজ প্রাণী। ফলে উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে প্রাণিজ আমিষের প্রধান উৎস মাছ। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে অন্য জীবের ক্ষেত্রেও। এদিকে জলজ পরিবেশে বিচরণকারী জীবের স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁচে থাকা অধিকাংশ নির্ভর করছে পানির ভৌত রাসায়নিক গুণাবলীর ওপর। জলজ পরিবেশ ব্যবহৃত কীটনাশক দ্বারা দূষিত হলে পানির ভৌত রাসায়নিক গুণাবলী তারতম্য ঘটে। ফলে জলজ পরিবেশের ভারসাম্যের গুণাবলী নষ্ট হয়।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমরা বুঝেও না বোঝার ভান
করি বলেই আমাদের এত দুরবস্থা।
আল্লাহ আমাদের সুমতি দিন। আমিন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.