নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ণযুগের ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীত শিল্পী মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১৩


মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীত শিল্পী। পঞ্চাশের দশকে বাংলা চলচ্চিত্র সঙ্গীত জগতে যে আধুনিকতার ঢেউ এসেছিলো তার অন্যতম কারিগর ছিলেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। সুরের ভূবনে কেবল চলচ্চিত্র জগতেই নিজের প্রতিভার ছাপ রাখেননি তিনি, কীর্তন থেকে নজরুলীতি সব আঙিনাতেই ছিল তার অনায়াস পায়চারী। তার স্বতন্ত্র কণ্ঠের কারণে দর্শকদের কাছে তিনি হিট ছিলেন। সুরকার যিনি বহু বাংলা আধুনিক গান এবং নজরুলগীতি গেয়েছেন। মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় তৃতীয় দফায় নজরুল সঙ্গীতের স্বর্ণ যুগের শিল্পী। ১৯৭০ সালে হিজ মাস্টার্স ভয়েজ কোম্পানির ট্রেনার শ্রী বিমান মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে কয়েকশ নজরুল সঙ্গীত গেয়ে মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় পশ্চিম বঙ্গসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নজরুল সঙ্গীতের অনুরাগী শিল্পীদের হৃদয়ে স্থান করে নেয়। এ সময় মানবেন্দ্রকে অনুসরণ করে কলকাতা শহরে শত শত নজরুল সঙ্গীত শিল্পী তৈরি হওয়ার সুযোগ পায়। অনেকে আধুনিক গান ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের পাশাপাশি নজরুল সঙ্গীতকে প্রাধান্য দিয়ে চর্চা করতে শুরু করে। ফলে নজরুল সঙ্গীত বহু বছর পর বনবাস থেকে ফিরে এসে মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। মাত্র ৫ মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৪ মে কাজী নজরুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে সপরিবারে বাংলাদেশের ধানমণ্ডিতে নিয়ে আসেন। নজরুলের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদনপূর্বক তিনি এই কাজটি করেছিলেন বলে সর্বজন স্বীকৃত। এর ফলে বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জ থেকে তাদের প্রিয় কবি নজরুলকে এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন দলে দলে মানুষ ধানমণ্ডিতে আসতে শুরু করে- অন্যদিকে নজরুল তরুণ শিল্পীদের মুখে শুধুই মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের রেকর্ড অবলম্বনে নজরুল সঙ্গীত গাওয়া অনেকটা নেশায় পরিণত হয়েছিল। তিনি বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশ, ষাট ও সত্তরের দশকে বাংলা গান চমৎকারিত্বের উচ্চতম পর্যায়ে পৌঁছে এবং সে-কারণে সেই সময়কালকে "বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ণযুগ বলা হয়"। ১৯৫০-এর দশকেই মানবেন্দ্র বাংলা গানের মর্যাদাকে ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের উচ্চতায় তুলে দেন। আজ সংগীত শিল্পী মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯২ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ গায়ক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ১৯২৯ সালের ৮ আগস্ট ভারতের কলকাতার কালীঘাটে জন্মগ্রহণ করেন। তার আদি বাড়ি বরিশালের উজিরপুর থানায়। তার পিতা অতুলচন্দ্র। তিনি ছিলেন আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ার। মানবেন্দ্ররা ছিলেন সব মিলিয়ে দশ ভাই। গান বাজনা ছিল পরিবারের বহুকালের সঙ্গী। মানবেন্দ্র ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে সিটি কলেজ থেকে বি.এসসি. পাশ করেন। পঞ্চাশের দশক নাগাদ বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গীত জগতে যে আধুনিকতার ঢেউ এসেছিল তার অন্যতম কারিগর ছিলেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। সুরের ভুবনে কেবল চলচ্চিত্র জগতেই নিজের প্রতিভার ছাপ রাখেননি তিনি, কীর্তন থেকে নজরুলগীতি সব আঙিনাতেই তাঁর ছিল অনায়াস পায়চারী। কীর্তনের মাধ্যমে তাঁর সংগীতে হাতেখড়ি। পিতৃব্য রত্নেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কাছে সংগীতশিক্ষার শুরু। পরে ধ্রুপদ, টপ্পা, রাগপ্রধান প্রভৃতির তালিম নিয়েছেন। নজরুলগীতি, দ্বিজেন্দ্রগীতি, পল্লিগীতি, আধুনিক, রবীন্দ্রসংগীত, পুরাতনী সব ক্ষেত্রেই মানবেন্দ্র সচ্ছন্দ ছিলেন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি বেতারশিল্পী। পিতৃব্য সিদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় এইচ.এম.ভি. থেকে তাঁর প্রথম রেকর্ড বার হয়। প্রথম প্লে-ব্যাক গাইলেন ‘নবজন্ম’ ছবিতে। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ‘চাঁপাডাঙার বৌ’ ছবিতে তিনি প্রথম সুর দেন। এ ছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি বাংলা ছবিতে সুর করেছিলেন যার মধ্যে মায়ামৃগ, বধু, যত মত তত পথ, জয় জয়ন্তী, গোধুলি বেলা উল্লেখযোগ্য। যাত্রাপালাতেও সুর দিয়েছেন। আর জীবনে অভিনেতা হিসেবে একবারই অবতীর্ণ হয়েছেন "সাড়ে চুয়াত্তর" ছবিতে। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে বি.এফ.জে. পুরস্কার পান।

মানবেন্দ্র মুখার্জী সত্যিকার অর্থে ছিলেন একজন সাধক শিল্পী, গান ছাড়া তার কোন পেশা ছিল না বলে শোনা যায়। তাই সারাদিন গানের সাথেই ছিল তার আত্মীয়তা। তার কোন ছাত্রছাত্রী নেই বা গান শেখানোর ইচ্ছাও ব্যক্ত করেননি কোনোদিন। নিজের হৃদয়ে মাত্রাতিরিক্ত আবেগ ও সুরব্যঞ্জনার কারণে সারাক্ষণ অন্তর ভরে থাকতো সঙ্গীত সাধনা ও চর্চায়। এ কারণে সম্ভবত তিনি সময় পাননি কেউকে তালিম দিতে- কিন্তু সঙ্গীত অঙ্গনে তার দাপট কেউ আটকাতে পারেনি। এই সুর সাধকের মধ্যে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রভাব ও তালিম থাকায় তিনি আধুনিক, রাগপ্রধান গান ছেড়ে দিয়ে সম্ভবত শেষ পর্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ নজরুল সঙ্গীতের ভাণ্ডারে প্রবেশ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তার কণ্ঠে নজরুল সঙ্গীতের সুর ও বাণী একাকার হয়ে মিশে গিয়ে এক মধুর রস ব্যঞ্জনার আবহ তৈরি করেছে যে কারণে তিনি নজরুল সঙ্গীতের এক মুকুটহীন সম্রাট হয়ে উঠেছে। আজো মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের নজরুল সঙ্গীত শোনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রবাদ প্রতিম গায়ক তথা শিল্পী মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ম্যাসিভ হার্ট এট্যাকে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। বাংলা সঙ্গীত জগতে মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের অবদান আমাদের হৃদয়ের অন্তঃস্থলে প্রতিধ্বনিত হতে থাকবে অনন্তকাল। আজ সংগীত শিল্পী মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯২ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ গায়ক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: শ্রদ্ধা রইলো

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ছবি আপু শুভ সন্ধ্যা।
আপনাকে ধন্যবাদ
ধ্রুপদী সংগীত শিল্পী
মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা
জানানোর জন্য।

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন:

স্কুটি চালাতে পারেন?

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনি বলেছিলেন আপনি অসু্স্থ্য !!
এখন আমার মনে হচ্ছে আপনি খুবই অসুস্থ্য।
শিঘ্র সুস্থ্য হয়ে উঠুন সেই দোয়া করছি।

৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৪

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি উনি মারা যান।তখন সম্ভবত আমি পেপার পড়া শিখিনি।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কিতনা উমর হ্যায় আপকা ?

৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৬

অনন্ত শুভ্র হৃদয় বলেছেন: আমার প্রথম পোস্ট এবং প্রথম পাতায় আসতে না পারার ব্যার্থতা
আমরা জন্মগতভাবে মানুষ। কিন্তু আমরা আমাদের পরিচয়কে ভাগ করেছি নানাভাবে। দৈহিক গঠনের ভিন্নতার ভিত্তিতে বিভক্ত হয়েছি সাধারণত ৩টি ভাবে। যথাঃ-
পুরুষ লিঙ্গ, স্ত্রী লিঙ্গ এবং তৃতীয় লিঙ্গ।
[যাহারা "লিঙ্গ" শব্দটি দর্শন করিয়া কিংকর্তব্যবিমুঢ় হইবেন অদ্য লিখনি তাহাদের জন্য নহে]
:
একজন মানবশিশুর পড়িচয় কি হওয়া উচিত? এই পরিচয় নির্ণয়ের মাপকাঠি কি হওয়া উচিত? সে একজন মানব_শিশু, মানবিক গুণসম্পন্ন ভবিষ্যতের একজন মহা_মানব; আমরা কি এই দৃষ্টিতে তাকে দেখি?
স্পষ্টতই না!
বরং আমাদের বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থা সদ্যজাত একজন মানবশিশুকে সম-অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, যৌনাঙ্গ/লিঙ্গ এর ভিত্তিতে ৩ টুকরো হয়ে যায় মানব পরিচয়।
:
পরিবারে ছেলে জন্মালে আনন্দ ধরেনা! মেয়ে জন্মালে ভালো লাগেনা! তৃতীয় লিঙ্গের কেউ জন্মালে জাগে শুধু ঘৃণা! কি বিচিত্র আমাদের মানসিকতা?
:
যৌনাঙ্গ স্বাভাবিক থাকলেও অন্যকোনো অঙ্গ কম হলে বা বিকৃত থাকলে তাদের "প্রতিবন্ধী" ট্যাগ লাগিয়ে দেই। কিন্তু তার চেয়েও পরিতাপের বিষয় এইযে যৌনাঙ্গ সুগঠিত না থাকার কারণে ও দৈহিক গঠনের কারণে যারা যৌনমিলনের মাধ্যমে বংশবিস্তারে অক্ষম তাদের তৃতীয় লিঙ্গ তথা "হিজড়া" ট্যাগ দিয়ে পরিবার ও সমাজ হতে বিচ্যুত করি। তারা চরমভাবে পরিচয়হীন হয়ে ভাসমান জীবন লাভ করে।
কি বিচিত্র যৌনতাকামী কামনা নির্ভর এই সমাজ ব্যাবস্থা!
:::
......লিঙ্গবৈষম্য ও আমাদের অনাগত প্রজন্ম......
আমাদের বড় পরিচয় আমরা মানুষ। আমাদের অনাগত প্রজন্মেরা মানব শিশু। প্রতিটা শিশুই সমানভাবে আপন পরিচয়ে বেড়ে উঠবে। বিবাহ আর যৌনতানির্ভর পরিচয় ছাপিয়ে প্রতিটা মানুষের মহৎ কর্মই মানুষকে অমর করে রাখবে।
আজকের শিশুরাই আগামীর মহা_মানব।
:
:
মানবিক পৃথিবীতে শান্তির সাম্য প্রতিষ্ঠায় আসুন আমরা সবাই শিশু_বৈষম্য এবং শিশু_শ্রম রোধ করি। নিজেদের পরিবার হতেই প্রতিষ্ঠা করি মানব_সাম্যবাদ।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
প্রসবের অব্যক্ত যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে
আমার এখানে উগরে দিলেন !! সবংসহার মতো
সয়ে গেলাম নীরবে।

মন্তব্য প্রসা‌ঙ্গিক হওয়া বাঞ্ছনীয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.