নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতীয় সাংবাদিক ও রম্যলেখক খুশবন্ত সিং এর ১০৫তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩২


ভারতের বিখ্যাত রম্যলেখক ও সাংবাদিকদের অন্যতম খুশবন্ত সিং। বলা হয়ে থাকে খুশবন্ত সিং ভারতীয়দের ইংরেজী ভাষায় সাহিত্য রচনার ধারাটাই বদলে দিয়েছিলেন। তাঁর গল্প – উপন্যাস হোক, নিয়মিত কলাম হোক বা সংবাদপত্র সম্পাদনার কাজেই হোক, নিকষ রাজনৈতিক লেখাতেও বুদ্ধিদীপ্ত মজা যে অনায়াসেই মিশিয়ে দেওয়া যায় সেটা দেখিয়েছেন মি. সিং। তিনি সংবাদপত্র যোজনা’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও ভারতের ‘দ্য ন্যাশনাল হেরাল্ড’ ও ‘দ্য হিন্দুস্তান টাইমস’ও সম্পাদনা করেছেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের লোকসভার সদস্য ছিলেন। তাঁর লেখা জনপ্রিয় বইগুলোর মধ্যে অন্যতম ট্রেন টু পাকিস্তান, আই শ্যাল নট হিয়ার দ্য নাইটিঙ্গেল এবং দিল্লি। খুশবন্ত ৯৫ বছর বয়সে ‘দ্য সানসেট ক্লাব’ উপন্যাস লেখেন। এছাড়াও তার ননফিকশন দুইখণ্ডের রচনা, ‘অ্যা হিস্টরি অব দ্য শিখস’ ছাড়াও অনুবাদ, সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে লেখা, উর্দু কবিতা সব মিলিয়ে তার লেখার পরিমাণ অনেক। ২০০২ সালে পেঙ্গুইন থেকে তার আত্মজীবনী ‘ট্রুথ, লাভ অ্যান্ড এ লিটল ম্যালিস’ প্রকাশিত হয়। আজ ভারতীয় এই সাংবাদিকের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৯১৫ সালের আজকের দিনে তিনি অবিভক্ত ভারতের পাঞ্চাবের হাদালিতে জন্ম গ্রহণ করেন। ভারতীয় সাংবাদিক ও রম্যলেখক খুশবন্ত সিং এরতম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

খুশবন্ত সিং ১৯১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের পাঞ্চাবের হাদালিতে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর অঞ্চলটি পাকিস্তানের অধীনে চলে যায়। তাঁর বাবা স্যার সোভা সিং ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী হিসাবে যখন দিল্লিকে গড়ে তোলা হচ্ছে সেই কর্মযজ্ঞের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার – নামকরা নির্মান ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। প্রথমে দিল্লিতে, তারপরে লাহোর আর তারও পরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৪৭ সালে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকে তথ্য বিভাগে কাজে যোগ দেন খুশবন্ত সিং। ১৯৭০ আর আশির দশকে অনেকগুলি দৈনিক ও সাময়িক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। কয়েক দশক ধরে লিখেছেন কলাম। ১৯৪৭ এ ভারত ভাগের সময়কার রক্তাক্ত সময় নিয়ে লেখা তাঁর উপন্যাস আ ট্রেন টু পাকিস্তান ছাড়াও প্রায় আশিটি বই লিখেছেন। আবার একই পটুতায় লিখেছেন দেশভাগ আর তার পরের কয়েক বছরের রক্তাক্ত ইতিহাস নিয়ে উপন্যাস – ট্রেন টু পাকিস্তান অথবা গবেষণা ভিত্তিক শিখ ধর্মের ইতিহাস। কবিতাও যেমন লিখেছেন, তেমনই লিখে গেছেন নিয়মিত কলাম উইথ ম্যালিস টুওয়ার্ডস ওয়ান এন্ড অল – যেটা ভারতের অনেক সংবাদপত্রে একযোগে ছাপা হয়ে এসেছে বহু দশক ধরে। তখনকার দিনে নামী ইংরেজী কাগজগুলোতে শুধু সম্পাদক নন, সহযোগী সম্পাদকও হওয়ার স্বপ্নই কেউ দেখতে পারতেন না। অথচ খুশবন্ত সিং অনায়াসেই টি-শার্ট পরেই একের পর এক কাগজে সম্পাদকের কাজ করেছেন –টি-শার্ট ছাড়া তিনি অন্য জামা বোধহয় পড়তেনই না। তিনি হার্ড পলিটিকাল জার্নালিজম করেন নি, সাংস্কৃতিক এবং সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সাংবাদিকতা করেছেন। কিন্তু তার পরও রাজনীতি সম্বন্ধে অনেক সরস মন্তব্য করতেন তিনি অনায়াসেই।“

আমৃত্যু লেখালেখি করেছেন তিনি – ভোর সাড়ে চারটের সময়ে উঠে – নিজের হাতে লিখতে বসে যেতেন তিনি। পেন দিয়েই লিখতেন বলেই হয়তো প্রচুর কলম চুরি করতেন খুশবন্ত সিং – নিজের মুখেই সেটা স্বীকার করেছিলেন বিবিসি কে কয়েক বছর আগে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে।“বলপেন চুরি করাটা ছিলো তার একটা অভ্যাস – নেশার মতো। কোনও বড় বৈঠকে সবার আগে পৌঁছে যেতেন তিনি। বৈঠকে নোট নেওয়ার জন্য যে প্যাড আর পেন দেওয়া হয়, সেগুলো চুরি করে পকেটে রাখার জন্য হাত নিশপিশ করতো তার। পেন অনেক আছে, তা স্বত্ত্বেও পেন চুরি না করে থাকতে পারতেন না,” হাসতে হাসতে নিজের সততা নিয়ে বলেছিলেন খুশবন্ত সিং। নিজে ধর্মকর্ম না মানলেও দুই খন্ডে শিখদের ইতিহাস লিখেছিলেন তিনি – যেটাকে প্রামাণ্য ইতিহাস বলে মনে করা হয়ে থাকে। আবার সেই তিনিই শিখ উগ্রপন্থীদের বিরোধিতা যেমন করেছেন, তেমনই শিখদের প্রধান তীর্থস্থান অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের নির্দেশে সেনা অভিযানের বিরোধিতা করে ১৯৮৪ সালে ভারত সরকারের দেওয়া পদ্মভূষণ উপাধি ফেরত দিয়েছেন। যদিও পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্ম বিভূষণ উপাধি পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী কাওয়াল মালিক ২০০১ সালে মারা গেছেন। যখন গুনমুগ্ধরা তাঁর শতবর্ষ পালন করার কথা ভাবছিলেন, তখনই তিনিও বিদায় নিলেন। ২০১৪ সালের ২০ মার্চ ৯৯ বছর বয়সে ভারতের নিউ দিল্লীতে মারা যান খুশবন্ত সিং। আজ ভারতীয় এই সাংবাদিকের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী। ভারতীয় সাংবাদিক ও রম্যলেখক খুশবন্ত সিং এরতম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: বড় রসিক মানুষ তিনি।
আমি তার বই পড়েছি।

২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১৮

নিভৃতা বলেছেন: শুভেচ্ছা রইল

৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:০১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: জন্মদিনে গ্রেট সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে রইলো শুভেচ্ছা।
এ ট্রেন টু পাকিস্তান '-আমার মনে হয় গ্রন্থটি ওনাকে বিশ্ববরেণ্য করেছিল।
উনার আর একটি পরিচয়:- উনিই প্রথম রবীন্দ্রনাথকে সমালোচনা করার সাহস দেখিয়েছিলেন।

৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:২৫

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: ভারতীয় সাংবাদিক ও রম্যলেখক খুশবন্ত সিং এরতম জন্মবার্ষিকীতে
......................................................................................
আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.