নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবি, অনুবাদক ও শিক্ষাবিদ সানাউল হক এর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪০


চল্লিশের দশকের একজন খ্যাতিমান কবি সানাউল হক। একাধারে তিনি কবি, অনুবাদক, সংস্কৃতিকর্মী, সংগঠক ও শিক্ষাবিদ । সানাউল হক চল্লিশের দশকের একজন খ্যাতিমান কবি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। কবিতার মাধ্যমে তিনি মানবজীবন ও জগতের ছবি আকার চেষ্টা করেছেন যা সমকালের কবিমহল এবং পাঠকদের কাছে সমাদৃত হয়। বিশেষভাবে তার স্বদেশপ্রেমের কবিতাগুলো পাঠককে বিশেষ আকৃষ্ট করে। তাঁর কবিতায় তাঁর ব্যক্তিত্বকে প্রত্যক্ষ করা যায়—যেখানে তিনি সমস্যা ও সম্ভাবনায় কখনও আশাহত, কখনও আনন্দিত। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে পদ্মিনী শঙ্খিনী (১৯৭৬), প্রবাসে যখন (১৯৮১), বিরাশির কবিতা (১৯৮২), উত্তীর্ণ পঞ্চাশ (১৯৮৪ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তাঁর বন্দর থেকে বন্দরে (১৯৬৪) নামক অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ-কাহিনী বেশ খ্যাতি লাভ করেছে। সাহিত্যে অবদানের জন্য সানাউল হক বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৪), ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৫) লেখক সঙ্ঘ পুরস্কার (১৯৬৫), একুশে পদক (১৯৮৩), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৫) লাভ করেন। আজ কবি সানাউল হকের ২৭তম মৃত্যুবাষর্ষিকী। ১৯৯৩ সালের আজকের দিনে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। কবি, অনুবাদক ও শিক্ষাবিদ সানাউল হক এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সানাউল হক ১৯২৪ সালের ২৩ মে ব্রিটিশ ভারতের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চৌরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রকৃত নাম আল মামুন সানাউল হক। তার পিতা জহুরুল হক ও মাতা সৈয়দা হোসেনী বেগম। তিনি ১৯৩৯ সালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আনন্দ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন, ১৯৪১ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে তার ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৪৪ সালে অর্থনীতি বিষয়ে বিএ সম্মান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৫ সালে এমএ সম্পন্ন করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি বিএল ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে ১৯৪৬ সালের ২৯ নভেম্বর সানাউল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন এবং ১৯৪৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। পরে তিনি একজন আমলা হিসেবে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সানাউল হকের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় পারিবারিক আবহে। তাঁর মামা মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন কবি ও লেখক। তাঁর সান্নিধ্য ও উৎসাহে সানাউল হক সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত হন। মোতাহের হোসেন চৌধুরীর চিন্তাভাবনা সানাউল হকের সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত করে। এর প্রতিফলন লক্ষ করা যায় সানাউল হকের কবিতায়, ভ্রমণবৃত্তান্তে, অনুবাদে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে। তাঁর কবিতায় তাঁর ব্যক্তিত্বকে প্রত্যক্ষ করা যায়—যেখানে তিনি সমস্যা ও সম্ভাবনায় কখনও আশাহত, কখনও আনন্দিত। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে পদ্মিনী শঙ্খিনী (১৯৭৬), প্রবাসে যখন (১৯৮১), বিরাশির কবিতা (১৯৮২), উত্তীর্ণ পঞ্চাশ (১৯৮৪ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তাঁর বন্দর থেকে বন্দরে (১৯৬৪) নামক অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ-কাহিনী বেশ খ্যাতি লাভ করেছে।

জানা গেছে, সানাউল হককে খুব স্নেহ করতেন বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনেকের আপত্তি সত্ত্বেও তাকে রাষ্ট্রদূত করেছিলেন। কিন্ত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনার পরই বদলে গেলেন রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত সানাউল হক। সেদিন বেলজিয়াম দূতাবাসের বাসায় অবস্থান করছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ঘটনার পর তাঁদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন এই রাষ্ট্রদূত। তখন জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী (পরে স্পিকার) টেলিফোনে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নিরাপত্তা দিতে অনুরোধ করলেও সানাউল হক তা প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি শেষ মুহূর্তে হুমায়ুর রশীদ চৌধুরী জার্মানির সীমান্ত পর্যন্ত শেখ হাসিনার পরিবারকে নিরাপদে দূতাবাসের গাড়ি দিয়ে পৌঁছে দিতে অনুরোধ করলেও সানাউল হক তাতেও রাজি হননি। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী পরবর্তীতে তার এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে বলেছেন, সানাউল হক অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, ‘আমাকে কেন এসব ঝামেলায় জড়াচ্ছেন? আমি এসব জটিলতায় পড়তে চাই না।’ এ বিষয়ে শেখ রেহানা তার এক স্মৃতিচারণে এ সম্পর্কে বলেন, রাত তিনটা পর্যন্ত সানাউল হকের মেয়ে ও অন্যদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন আর জোরে জোরে হাসছিলেন শেখ রেহানা। এসময় ওয়াজেদ মিয়া বারবার এসে আস্তে হাসার জন্য বলেন। রাত তিনটার দিকে এসে ওয়াজেদ মিয়া শেখ রেহানাকে বলেন, এত হাসাহাসি করা ভালো না। বেশি হাসলে সারাজীবন কাঁদতে হয়। সেদিন সানাউল হক তাদের কিছুদিন বেলজিয়ামে তার বাড়িতে থাকার জোর অনুরোধও করেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বদলে যান এই রাষ্ট্রদূত। শেখ হাসিনা ও অন্যদের জার্মানির সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেন। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী লিখেছেন, সানাউল হক তাতে রাজি হলেন না। তিনি আরও লিখেছেন, সানাউল হকের কথায় মনে হচ্ছিল- তিনি শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সদস্যদের পারলে তখনই বাড়ি থেকে বের করে দেন। সেই সানাউল হক পরবর্তীকালে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য হয়েছিলেন।। সেই সানাউল হক পরবর্তীকালে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য হয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। আল্লাহ তাকে শান্তিতে রাখুন পরকালে।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: পরকালে শুরু হয় মানুষের কবরের আযাবের মধ্যে দিয়ে।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সবাইযে কবর আযাব ভোগ করবে তেমন কথা বলা হয়নি।
মুমিন বান্দারা কবরের আযাব ভোগ করবে না। তাদের
কবরকে জান্নাতের বাগান হিসেবে তৈরী করা হবে।

যারা এই পার্থিব জীবন পুণ্য ময় কর্মে অতিবাহিত করেন এবং মৃত্যুর
পরের জীবনের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করেন , এই দুনিয়ার প্রতি
তাদের মন আকৃষ্ট হয় না ।তারা ইহকালের চেয়ে পরকালের জীবন
কে বেশি প্রাধান্য দেন। আর যারা পার্থিব জীবন কে খারাপ ও
অন্যায় কাজে অতিবাহিত করে । তারা মৃত্যুর কথা স্মরণেই ভয় পায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.