নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্য চিরন্তন এবং সত্য মানুষকে মুক্তি প্রদান করে, আর মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪২


সত্য সুন্দর। সত্য কল্যাণকর। 'সত্য মানুষকে মুক্তি প্রদান করে আর মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে'। চিরন্তন এই বাণীটি জানেন না এমন মানুষ হয়তো খুঁজেই পাওয়া যাবে না। কিন্তু এই বাণীটিকে জীবন যাপনের ক্ষেত্রে অনুসরণ করেন এমন মানুষের সংখ্যা খবুই কম। সত্য কথা বলা, সত্যের সঙ্গে থাকা এবং মিথ্যার পরিবর্তে সত্যকে গ্রহণ করাই সত্যবাদিতা। সত্য মানুষকে মুক্তি প্রদান করে, পক্ষান্তরে মিথ্যা বিভ্রান্তিসহ নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে। সত্যবাদিতা কেবল একজন মানুষের ধর্মীয় জীবনের ক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক পরিমণ্ডল, সামাজিক পরিণ্ডল; এমনকি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিতি অর্জন করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে।সত্যবাদিতা কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, জাগতিক যেকোনো মানদণ্ডের বিচারে এটি একটি ভালো গুণ। সত্যবাদী মানুষকে সবাই ভালোবাসে, চাই তিনি মুসলমান হোন কিংবা অন্য ধর্মাবলম্বী। কালো হোন কিংবা সাদা। হোন তিনি উঁচু বংশীয় কিংবা সাধারণ কোনো বংশের সদস্য। আলোকিত একজন মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সত্যবাদিতা প্রথম ও প্রধান গুণ হিসেবে বিবেচিত। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে সত্য কথা বলা, সত্যের পক্ষে অবস্থান করা এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হওয়ার ব্যাপারে অসংখ্য নির্দেশ এসেছে। আল্লাহ মহান পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে ও নবীজি (সা.) বাণীর মাধ্যমে যেসব ভালো গুণাবলিকে আয়ত্ত করতে জোর নির্দেশ প্রদান করেছেন, তার মধ্যে প্রথম সারির গুণ হলো 'সত্যবাদিতা'।

সত্যবাদিতাকে তুচ্ছ করে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন- এমন ইতিহাস পৃথিবীতে আগে ছিল না, বর্তমানে নেই এবং ভবিষ্যতেও সৃষ্টি হবে না; হতে পারে না। কারণ সত্য সব ভালো স্বভাব বা সব শুভ্রতার 'মা'। মদিনার কাফিররা মুহাম্মাদ (সা.) আনীত ধর্মকে মানতো না ঠিকই; কিন্তু সত্যবাদী একজন মানুষ হিসেবে তাঁর স্থান ছিল তাদের সবার হৃদয়ের গভীরে। সত্যবাদী মানুষ হিসেবে সবাই ভালোবাসত তাঁকে। নবীজির (সা.) সত্যবাদিতা এবং ন্যায়পরায়ণতায় মুগ্ধ হয়ে তৎকালীন আরবের মুসলিম-কাফির নির্বিশেষে 'আল-আমিন' উপাধিতে ভূষিত করেছিল তাঁকে। তিনি ছিলেন সত্যবাদী একজন আদর্শ মানুষ। নবীজির (সা.) সত্যবাদিতাকে তৎকালীন কাফির-মুশরিকরাও স্বীকৃতি প্রদান করেছিল। নবীজির (সা.) জীবনাদর্শ গ্রহণ করে আমাদের সত্যবাদী হওয়া উচিত। সত্যবাদী মানুষকে সঙ্গী বানানো প্রয়োজন। সত্য একজন মানুষকে কেবল ধর্মীয় 'অর্জনে'র ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখে, ব্যাপারটা কখনোই এমন একপক্ষীয় নয়। সত্যবাদিতা প্রতিটি মানুষকে তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ এবং ঝামেলামুক্তভাবে বসবাস করতে সহযোগিতা করে।

একজন সত্যবাদী মানুষের সংস্পর্শ ধীরে ধীরে সত্যের পথে ধাবিত করবে, পক্ষান্তরে মিথ্যাবাদী একজন মানুষের সংস্পর্শ মিথ্যার দিকেই পরিচালিত করে। এই মর্মে আল্লাহ মহান ইরশাদ করেন, 'হে ইমানদাররা. আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমরা সত্যবাদীদের সাথী হও। [সুরা আত্-তাওবা, আয়াত : ১১৯]
সত্যকে গ্রহণ করা এবং সত্য কথার বিজয়ী অবস্থানের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ মহান ইরশাদ করেন, '(হে নবী) বলো, সত্য এসেছে আর মিথ্যা অন্তর্ধান করেছে। মিথ্যাকে অন্তর্ধান করতেই হবে। [সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ৮১]
রাসুল (সা.) বলেছেন, 'সত্যবাদিতাকে গ্রহণ করো তোমরা, কেননা সত্যবাদিতা পুণ্যের পথ দেখায় আর পুণ্য জান্নাতের পথে পরিচালিত করে, একজন লোক সর্বদা সত্য বলতে থাকে এবং সত্যবাদিতার প্রতি অনুরাগী হয়, ফলে আল্লাহর কাছে সে সত্যবাদী হিসেবে নিবন্ধিত হয়ে যায়'। [মুসলিম]
একই বাণীটি হাদিসের অন্য গ্রন্থে একটু আলাদাভাবে বর্ণিত হয়েছে। সেখানে মহানবী (সা.) বলেছেন, 'তোমাদের সত্য কথা বলা উচিত, কেননা সত্যবাদিতা অবশ্যই পুণ্যের দিকে পরিচালিত করে, আর নিশ্চয়ই পুণ্য জান্নাতের দিকে পরিচালিত করে।' এ ব্যাপারে তিনি আরো বলেছেন, 'সত্য হলো প্রশান্তির মাধ্যম এবং মিথ্যা হলো দুশ্চিন্তা বা ভয়ের উৎস।

সত্যবাদিতা বিদায় নিচ্ছে আমাদের জীবন থেকে। সত্যবাদী মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে দিন দিন। সামান্য থেকে সামান্য কারণেও সত্য কথাকে ত্যাগ করছি আমরা। গ্রহণ করছি মিথ্যাকে এবং নিজের অজান্তেই জাহান্নামী মানুষের তালিকাভুক্ত করছি নিজেকে। শেষ নবী হজরত মুহাম্মাদের (সা.) উম্মত হিসেবে যা কখনোই কাম্য নয়। মিথ্যা কেবল দুশ্চিন্তার সৃষ্টিই করে না, মিথ্যাবাদীরা দুর্বল চিত্তের অধিকারী হয়। তাই আমাদের সবাইকে মিথ্যা বলা ত্যাগ করে সত্যবাদী হতে হবে।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৬

নিভৃতা বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্যের পথে, আলোর পথে চলার তৌফিক দান করুন।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমিন।
আপনার নির্মোহ প্রার্থনা কবুল
হোক মহান আল্লাহর দরবারে।

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:০১

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: ধর্মে সৎ কার্য করা এবং সত্যবাদিতাকে এতো গুরুত্ত্ব দেয়া সত্বেও অধিকাংশ মানুষ ধর্মের অন্তর্নিহিত আহবান অনুধাবন করতে না পেরে শুধু আক্ষরিক রীতিনীতি পালনেই সীমাবদ্ধ | একারণেই এতো তথাকথিত ধার্মিক থাকা সত্বেও পাপাচার ও স্খলনের কোনো প্রকার কমতি দেখা যাচ্ছে না |

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সত্য মানুষকে পথ দেখায়, সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস জোগায়,
বাধার পাহাড় ডিঙাতে শক্তি দেয় আর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর
রাস্তা সুগম করে দেয়। সত্যের পথে থেকেই যেমন বহু জাতি পৃথিবী
দাবড়ে বেড়িয়েছে, তেমনি সত্যের পথ থেকে দূরে সরে গিয়ে বহু জাতি
ধ্বংস হয়ে গেছে।
সত্য শুধু এদেশ থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে না, সত্য নিরুদ্দেশের পথে
সব দেশে। রুশ লেখক পিতার পোমারানসেভ তো একটা আস্ত বই-ই
লিখে ফেলেছেন এ বিষয়ে : ‘Nothing is True and Everything
is Possible’. ব্যবস্থাপনা গুরু নামে বিশ্বআদৃত লেখক পিটার ড্রাকার
বলেছেন : আমরা মানবেতিহাসে সবচেয়ে আলোড়িত সামাজিক
পরিবর্তনের মধ্যে বসবাস করছি।
এর থেকে উত্তরণের জন্য সত্য বলার জন্য উৎসাহ দিতে হবে।
বুঝতে হবে, সত্যবাদীরা সাহসী হয়, কথা রক্ষা করে, আমানতের
খেয়ানত করে না, অন্যকে কষ্ট দেয় না, কাউকে ভয় করে না।
সত্য মানুষের মনকে হীনম্মন্যতা থেকে রক্ষা করে। সত্যের
চর্চাকারীর মনে জোর থাকে। মানুষ তার ওপর নির্ভর করে,
তাকে বিশ্বাস করে, তার ওপর দায়িত্ব দিতে দ্বিধাবোধ করে না।

৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:২৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


রাজতন্ত্রের সময়, মানুষের কোন অধিকার ছিলো না, সিকিউরিটি ছিলো না, আয়ের সঠিক পথ ছিলো না, মানুষ সত্য কথা বলতো না; ধর্ম আবিস্কারকেরা ইহা সহজেই বুঝতে পেরে, সত্য নিয়ে অনেক কথা বলেছে। আজকের পৃথিবীতে আগেরদিনের সমস্যাগুলো তিরোহিত হয়েছে।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আল্লাহ মানুষকে সুষ্টি করেছেন সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে।
মানুষ যখন তার প্রভূর দিক থেকে দূরে সরে যেতে লাগল
তখন আল্লাহ পাঠালেন নবী ও রাসূল। মানুষকে সঠিকপথ
দেখানো ছিল নবী রাসূলদের দায়িত্ব। মুহাম্মদ (সঃ) মানুষকে
ইসলামের দিকে আহ্বান করতেন। তাই নবীর অবর্তমানে মানুষের
কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌছানো আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
আমাদের দায়িত্ব শুধু ঈমান আন নয়, যে সত্যের প্রতি ঈমান এনেছি
তার সাক্ষীরুপে দুনিয়ার সবার সামনে দাঁড়াতে হবে। কোরআনে বলা হয়েছে-
“হে ঈমানদারগন! তোমরা আল্লাহর জস্য সত্যের স্বাী হয়ে যাও।
মুসলমানদের পূর্বে ইহুদী জাতি সত্যের উপর টিকে থাকতে পারে নি।”
আমাদেরকে অবশ্যই নবীদের পথ ধরে মহাসত্যের বাণী মানুষের কাছে
পৌছিয়ে দিতে হবে এবং মানুষকে সহজ সরল পথ দেখাতে হবে।

৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: সত্য মানুষকে কষ্ট দেয়।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেনঃ
“ও আমার বান্দারা, তোমরা যারা সীমালঙ্ঘন করে নিজেদেরকে নষ্ট করেছ,
আল্লাহর রহমতের উপর নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দিতে পারেন।
তিনি সত্যিই অত্যন্ত ক্ষমাশীল, নিরন্তর দয়ালু।” [আজ-জুমার ৩৯:৫৩]

৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৩৯

নীল আকাশ বলেছেন: খুব অবাক হতে হয় আজকাল মানুষের মাঝে সত্যবাদিতা নেই বললেই চলে। অনেক সময় প্রায় বিনা কারণেও মিথ্যা কথা বলছে মানুষ। এটা যে একধরণের পাপ সেটাও ভুলে গেছে।
খুব সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন আপনি।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আজকাল মানুষ যে সৎ হয়, তার নেপথ্যের প্রধান কারন হলো –
শিক্ষা , অর্থনৈতিক উন্নতি , সামাজিক উন্নতি ,আইনের শাসন ইত্যাদি।
যার যেটারে অভাব নেই, তার সৎ থাকাটা ততই সহজ । তবে যখন কি না
মানুষের জৈবিক এবং মৌলিক চাহিদা অপূর্ণ থাকে, তখন তার পক্ষে সততা
মেনে চলা বহুলাংশেই দূরহ । তবুও ধর্মের বিধি নিষেধ মেনে সততার প্রকাশ
যে শত অভাবের মধ্যে দেখাতে পারে সে নিঃসন্দেহে সুমহান। তার জীবনের
শ্রেষ্ঠ অলংকার হলো সন্মান, যা সে মূলত অর্জন করে তার সততার মাধ্যমে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.