নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ও কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ৭৬তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪০


ষাটের দশকের গুরুত্বপূর্ণ কবি; বিশ্বজোড়া সমাদৃত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও নির্দেশক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেনের পর বাংলা ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে যে ক'জন শুদ্ধতম স্রষ্টা রয়েছেন তাদের মধ্যে বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত অন্যতম। তার চলচ্চিত্রগুলো ঘটনার ঘনঘোরে আচ্ছন্ন নয়, বরং প্রতিটিই জীবনের গভীরতর বোধ থেকে উৎসরিত। চলচ্চিত্র পরিচালনার পাশাপাশি তিনি কবিতাও লিখেন, এজন্যই একধরনের কাব্যিক অনুভূতি যেন তার নির্মাণগুলির ফ্রেমে ফ্রেমে অনুভূত হয়। সিনেমা থেকে, কবিতা থেকে শিল্পের নানা মাধ্যমে সাবলীল এক যাতায়াত তাঁর। তাঁর ভাবনা শুধু এই উপমহাদেশের সিনেমা নয়, বিশ্বসিনেমায়ও রেখে চলেছে গুরুত্বপূর্ণ ছাপ। তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোতেও কবিতার ছোঁয়া বিদ্যমান ছিল। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের নির্মাণগুলোর মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম আলোচিত চলচ্চিত্র 'কালপুরুষ'। পরিচালনার পাশাপাশি এর কাহিনী এবং চিত্রনাট্য তার নিজের। ২০০৫ সালে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি 'টরেন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল', দিল্লীতে অনুষ্ঠিত 'এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভাল'সহ বেশ কয়েকটি উৎসবে প্রথমে প্রদর্শিত হয়। কালপুরুষ' ২০০৫ সালের 'শ্রেষ্ঠ ফিচার ফিল্ম' হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছিল এবং মিঠুন চক্রবর্তী এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য 'শ্রেষ্ঠ অভিনেতা'র পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। পরে ২০০৮ সালের ২৫ এপ্রিল এটি ভারতে মুক্তি পায়। তার বিখ্যাত কয়েকটি ছবি হল বাঘ বাহাদুর, তাহাদের কথা,চারাচার ও উত্তরা। শ্রেষ্ঠ পাঁচটি চলচ্চিত্র বাঘ বাহাদুর (১৯৮৯)চারাচার (১৯৯৩), লাল দরজা (১৯৯৭), মন্দ মেয়ের উপাখ্য়‌ান (২০০২) , কালপুরুষ (২০০৮), দৌরাতওয়া (১৯৭৮)এর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, এবং তাহাদের কথা (১৯৯৩) বাংলাতে শ্রেষ্ঠ ফিচার ফিল্মের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। পরিচালক হিসেবে তিনি উত্তরা (২০০০) এবং স্বপনের দিন (২০০৫) এর জন্য দুইবার সেরা নির্দেশনার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। বছরের পর বছর ধরে তিনি গভীর আরালে, কফিন কিম্বা সুটকেস, হিমজগ, ছাতা কাহিনি, রোবটের গান, শ্রেষ্ঠ কবিতা, ভোম্বোলের আশ্চর্য কাহিনি ও অন্যান্য কবিতা সহ কবিতার বিভিন্ন রচনা প্রকাশ করেছেন। আজ চলচ্চিত্র নির্মাতা বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৪ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ও কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

বুদ্ধদেব দাশগুপ্তে ১৯৪৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পুরুলিয়ার নিকটবর্তী আনারাতে একটি বৈদিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, এবং নয় জন ভাইবোন ছিলেন। তার বাবা তারকান্ত দাশগুপ্ত ভারতীয় রেলওয়ের একজন ডাক্তার ছিলেন। পিতার বদলির চাকরির সূত্রে, তাঁর শৈশব কেটেছে নানান জায়গায়। পরে তাঁর পিতা সুস্থির ভাবে একটি জায়গায় লেখাপড়া করার জন্য, তাঁকে কলকাতার হাওড়ার দীনবন্ধু স্কুলে ভর্তি করে দেন। এই স্কুলের পাঠ শেষ করে তিনি কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া শেষ করেন। স্বাধীনতার পর তার পিতা প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর এবং মানেন্দ্রগড় (এখন ছত্তিশগড়ে) বদলি হন । তিনি কর্মজীবন শুরু করেছিলেন কলকাতার সিটি কলেজে অর্থনীতির শিক্ষক হিসাবে। এর পর তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ শ্যামসুন্দর কলেজে অধ্যাপনা করেন। অর্থনীতির সূত্রাদির সঙ্গে ভারতীয় আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিস্তর দূরত্ব উপলব্ধি করে, তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। সাধারণ মানুষের কাছে প্রকৃত আর্থ-সামাজিক অবস্থার তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে, মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য, তিনি চলচ্চিত্রকে বেছে নেন। চলচ্চিত্রের প্রতি প্রথম তীব্র ভাবে আকৃষ্ট হন স্কুল জীবনে। এই সময় তিনি তাঁর কাকার সঙ্গে চার্লি চ্যাপলিনের বেশ কিছু ছবি দেখেন। এর পর তাঁকে মুগ্ধ করেছে বিশ্ববিখ্যাত কয়েক জন চলচ্চিত্র পরিচালকের ছবি। এঁদের ভিতরে ছিলেন আকিরা কুরসাওয়া, ভিক্টোরিয়া ডে সিচা, রোবার্টো রেসেলিনি এবং অ্যান্টনিয়োনি। পরবর্তী সময়ে বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণে তাঁকে বিশেষ ভাবে অনুপ্রাণিত করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দেতিনি ১০ মিনিটের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি "দ্য় কন্তিনেন্ত অব লাভ" তৈরির মাধ্যমে শুরু করেছিলেন।এই ছবিটির গল্প এবং চিত্রনাট্যও তিনি রচনা করেছিলেন। অবশেষে তিনি ১৯৭৮ সালে তার প্রথম সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ফিচার ফিল্ম, দোরাতওয়া (দূরত্ব) তৈরি করেন।

সিনেমা থেকে কবিতা, নাকি কবিতার মধ্যেই সিনেমা? কিছু ক্ষেত্রে দুই, বা তিন বহু শিল্পের সংমিশ্রণে ঘনীভূত হয়ে ওঠে নতুন এক শিল্প। তাকে কি কবিতা বলা যায়? নাকি সিনেমা? নাকি দু'টোই বা কোনওটাই নয়! এমনই নতুন এক মাধ্যমের সঙ্গে যিনি আমাদের পরিচয় করিয়েছিলেন তিনি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। কবি না চলচ্চিত্র নির্মাতা? নাকি দুই সত্ত্বাই একই মানুষের? নিজে অবশ্য মনে করেন তাঁর কাছে এই দুই শিল্পই বড় আপন, চলচ্চিত্র বা কবিতা তাঁর কাছে আলাদা কিছু না। আজ চলচ্চিত্রকার বা কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর জন্মদিন, আজ এক শিল্পীর জন্মদিন। তার বড় কন্যা, অলকানন্দ দাশগুপ্ত, একজন প্রশিক্ষিত শাস্ত্রীয় পিয়ানোবাদী, তার ২০১৩ সালের চলচ্চিত্র, আনোয়ার কা আজিব কিসসার জন্য তিনি পটভূমি স্কোর রচনা করেছিলেন। চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে 'বাঘ বাহাদুর' ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে 'চরাচর' ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে'লাল দরজা' ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০০০ খ্রিস্টাব্দে 'উত্তরা' ছবির জন্য শ্রেষ্ট নির্দেশনার জন্য পুরস্কার, ২০০২ খ্রিস্টাব্দে মন্দ মেয়ের উপাখ্যান' ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে 'স্বপনের দিন' ছবির জন্য শ্রেষ্ট নির্দেশনার জন্য পুরস্কার, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে 'কালপুরুষ' ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে অ্যাথেন্স ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এ পান গোল্ডেন অ্যাথেনা পুরস্কার. ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ২৭ মে মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত দ্য স্পেন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এ সমগ্র কাজের উপর সম্মাননা লাভসহ অসংখ্য পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। আজ বিশ্বজোড়া সমাদৃত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও নির্দেশক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ও কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি যে শুধু হিন্দু, ইহুদি নাসারাদের নিয়েই লিখছেন। লেখায় তাদের গুনগান করছেন।
মুসলমানদের মধ্যে নামি দামি কেউ নেই? বিখ্যাত কেউ নেই?

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার উপর আমার আগের যে ধারণা ছিলো
ক্রমান্বয়ে তা হ্রাস পাচ্ছে! আমিতো সস্তা বাহবা
পাবার জন্য ধর্ম নিয়ে ক্যাচাল করতে চাইনা।
হিন্দু, মুসলমান, খ্রীষ্ট্রান এগুলো ধর্ম তাই এসব
নিয়ে লিখিনা। আমি মানুষ নিয়ে লিখি যাদের
মাঝে এ সব ধর্মের মানুষ আছে। আমার আজকের
লেখা ইনিকি মুসলমান নন?
বোকা থাকা ভালো, তবে আধা চালাক মানুষ মারত্মক হয়।

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৩১

নেওয়াজ আলি বলেছেন:

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনার জন্য এই
লাল গোলাপটি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.