নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলাদেশের প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা। তিনি একাধারে একজন সাংবাদিক, সম্পাদক ও কলামিস্ট। বর্ণাঢ্য কমজীবনের তিনি দীর্ঘকাল ইংরেজী দৈনিক বাংলাদেশ অবজার্ভার-এর বার্তা সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের সাংবাদিকতার জগতে মূসা ছিলেন গুরুজনের মতো। বলা হয়েছে,"তার নিউজ সেন্স ছিল সব নিউজ এডিটরের মধ্যে সেরা। পেইজ মেকআপ করার সময়ে তিনি ত্বরিতে বলে দিতেন কোন নিউজটা লিড হবে। কোনটা সেকেন্ড, কোনটা থার্ড লিড; কোন ফটো ব্যবহার করতে হবে। ইত্যাদি।সরকারের নিমোর্হ সমালোচনায় তিনি ছিলেন নির্ভীক ও সোচ্চার। তাঁর লেখনী ছিল ক্ষুরধার। তিনি আমৃত্যু সাধারণ মানুষের অধিকারের কথা বলেছেন। মৃত্যুর পূর্ববর্তী বছরগুলোতে তিনি টেলিভিশন টক-শোতে গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে কথা বলে জনপ্রিয়তা অর্জ্জন করেন। তাঁর মৃত্যু পরবতী সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয় "এবিএম মূসা ছিলেন আমাদের সাংবাদিক সমাজের জ্যেষ্ঠতম সদস্য ও অভিভাবক। ১৯৭১-এ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু পর্যন্ত টানা ছয় দশক তিনি সাংবাদিকতা করে গেছেন। আজ সাংবাদিক এবিএম মূসার ৮৯তম জন্মবার্ষকী। ১৯৩১ সালের ২৮ আজকের দিনে তিনি ফেনীর ফুলগাজীতে জন্মগ্রহণ করেন। প্রখ্যাত সাংবাদিক এ বি এম মূসার জন্মবার্ষকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
এ বি এম মূসার ১৯৩১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেনীর ফুলগাজীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্ণ নাম আবুল বাশার মােহাম্মদ মূসা। তবে তিনি এবিএম মূসা নামেই সমধিক পরিচিত। তার পিতার নাম আশ্রাফ আলী। মাতা সাজেদা. খাতুন। এবিএম মূসার আদি বংশধর এসেছিলাে চৌদ্দগ্রাম থেকে। সর্বজনশ্রদ্ধেয় এবিএম মূসা ১৯৫০ সালে, মাত্র ১৯ বৎসর বয়সে, দৈনিক ইনসাফের মাধ্যমে সাংবাদিকতার জগতে প্রবেশ করেন। একই বছরে তিনি ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগ দেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় সরকার পাকিস্তান অবজারভার বন্ধ করে দিলে তিনি সংবাদে যোগ দেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি মর্নিং নিউজ পত্রিকায় যোগ দিয়েছিলেন। রাজনীতি এ বি এম মূসা'র পছন্দের বিষয় ছিল না। পাকিস্তান আমলে ১৯৭০-এর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার জন্য তাকে বলা হয়েছিল তিনি বলেছিলেন, "যদি কোনও দিন দেশ স্বাধীন হয়, তবেই নির্বাচনে দাঁড়াব— এখন নয়।" ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান অবজারভারে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বিটিভির মহাব্যবস্থাপক, মর্নিং নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের আহবানে সাড়া দিয়ে তিনি ১৯৭৩-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে ফেনী আসন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করেন এবং বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের একজন সদস্য তথা আইন প্রণেতা নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি আর রাজনীতিতে সক্রিয় হন নি, তবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি তার অনুগ্রহ ছিল। ১৯৭৮ সালে এ বি এম মূসা ব্যাংককে অবস্থিত জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের (এসকাপ) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন।২একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমস প্রভৃতি পত্রিকার সংবাদদাতা হিসেবে রণাঙ্গন থেকে সংবাদ প্রেরণ করতেন এবিএম মূসা। ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি কিছুদিন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রায় এক বৎসর জন্য দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। তিনি এই ক্লাবের আজীবন সদস্যও ছিলেন। তিনি চারবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। মূসা মুজিব ভাই নামের একটি বই রচনা করেন। ২০১২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত এই বইয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর র্দীঘ দিনের ঘনিষ্ঠ সংশ্রবের বয়ান রয়েছে। মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্ব বৎসরসমূহে তিনি একটি আত্মজীবনী রচনা করেছিলেন। এটি প্রথমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়।
২০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি নানাবিধ বাধর্ক্যজ্বনিত রোগে ভুগছিলেন। তাঁর হৃৎপিণ্ড, বৃক্ক, ফুসফুস প্রভৃতিতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের শেষ ভাগে তিনি মাইলোডিসপ্লাস্টিক সিনড্রোম আক্রান্ত হন।এটি ক্যানসারের ন্যায় প্রাণহারী ব্যাধি। এর ফলে তাঁর অস্থিমজ্জা বিনষ্টিতে আক্রান্ত হয়। অর্ধচেতন অবস্থায় ২০১৪ সালের ২৯ শে মার্চ তাঁকে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার দেহের রক্ত উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ১১ দিনে তাঁর দেহে ২৪ ব্যাগ রক্ত সংবাহন করা হয়েছিল কিন্ত অবস্থার অবনতি হলে ৭ এপ্রিল দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে তাঁকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দেয়া হতে থাকে। ৯ এপিল ২০১৪ তারিখ দুপুর সোয়া একটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৩ বৎসর। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ৯ এপিল ২০১৪ দুপুর একটা ১৫ মিনিটে এবিএম মূসার কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থা খুলে ফেলা হয়। এবিএম মূসা প্রকৃত মানবতাবাদী ছিলেন এবং নীতির প্রশ্নে অটল। আজ সাংবাদিক এবিএম মূসার ৮৯তম জন্মবার্ষকী। সর্বজনশ্রদ্ধেয় প্রখ্যাত সাংবাদিক এ বি এম মূসার জন্মবার্ষকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক লিংক
[email protected]
০১ লা মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ আলি ভাই
সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রখ্যাত সাংবাদিক
এ বি এম মূসার জন্মবার্ষকীতে
শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: মুজিব ভাই বইটা আমার সংগ্রহে আছে। তবে এখনও পড়া হয় নাই।
কত অলস আমি। ছিঃ
০১ লা মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:২৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
একনও সময় আছে
পড়ে নেবেন সময় করে।
৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫১
চাঁদগাজী বলেছেন:
কখন কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্র লাগানো হলো, কখন খুলে নেয়া হলো, এগুলো কি পোষ্টে আসার দরকার আছে?
আপনাকে কিছু শিখাতে পারলাম না।
০১ লা মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:২৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সারমেয়ে ক্ষুধা লাগলেই খায়
তার কিছু সাজানোর প্রয়োজন হয়না।
মানুষের ক্ষুধা পেলে সে সাজিয়ে তার
খাবার গ্রহণ করে। যেমন পরিস্কার থালা,
পানির গ্লাস এবং আনুসাঙ্গিক অন্যান্য
জিনিস পত্র।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: প্রিয় মানুষ। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা ।