নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশী কবি, মুক্তিযোদ্ধা ও সম্পাদক কবি রফিক আজাদের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১২ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১:২৫


একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারজয়ী আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি রফিক আজাদ। চিরদিনই প্রতিবাদী এই কবি তার দ্রোহকে শুধু কবিতার লেখনীতে আবদ্ধ না রেখে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জাতির চরম ক্রান্তিকালে, ১৯৭১ এ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনের সৈনিক হিসেবে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেন তিনি। কর্মজীবনে রফিক আজাদ বাংলা একাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’র সম্পাদক ছিলেন। ‘রোববার’ পত্রিকাতেও রফিক আজাদ নিজের নাম উহ্য রেখে সম্পাদনার কাজ করেছেন। এছাড়া টাঙ্গাইলের মওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনাও করেন তিনি। সাহিত্যে অবদানের জন্য হুমায়ুন কবির স্মৃতি (লেখক শিবির) পুরস্কারসহ আরও বেশ কয়েকটি পুরস্কার লাভ করেন। ষাটের দশকের জনপ্রিয় কবি রফিক আজাদ ১২ মার্চ-১০১৬. শনিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মারা যান। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি'২০১৬ থেকে ওই হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। আজ কবির ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী বহু কালজয়ী কবিতার স্রষ্টা কবি রফিক আজাদের মৃত্যু বাষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

রফিক আজাদ ১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সলিম উদ্দিন খান ছিলেন একজন প্রকৃত সমাজসেবক এবং মা রাবেয়া খান ছিলেন আদর্শ গৃহিণী। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়ই ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাবা-মার কঠিন শাসন উপেক্ষা করে ভাষা শহীদদের স্মরণে খালি পায়ে মিছিল করেন তিনি। ভাষার প্রতি এই ভালোবাসা পরবর্তী জীবনে তাকে তৈরি করেছিল একজন কবি হিসেবে, আদর্শ মানুষ হিসেবে। ১৯৫৬ সালে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় একবার বাবার হাতে মার খেয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। সাধুটী মিডল ইংলিশ স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণী পাস করে ভর্তি হলেন কালিহাতি রামগতি শ্রীগোবিন্দ হাই ইংলিশ স্কুলের নবম শ্রেণীতে। পরবর্তীতে ব্রাহ্মণশাসন হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন।

কর্মজীবনে কবি রফিক আজাদ বাংলা একাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা উত্তরাধিকার এর সম্পাদক ছিলেন। রোববার পত্রিকাতেও তিনি নিজের নাম ঊহ্য রেখে সম্পাদনার কাজ করেছেন। তিনি টাঙ্গাইলের মওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলার প্রভাষক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনের সৈনিক হিসেবে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেন তিনি। এছাড়াও তিনি কাজ করেছেন বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন, উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে। কবি রফিক আজাদের প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে, ‘অসম্ভবের পায়ে’, ‘সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে’, ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এ কাব্যের জন্য ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে একুশে পদক পান তিনি। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি রফিক আজাদ আজ ১২ মার্চ শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের পর তিনি প্রায় দুই মাস ধরে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। তার বয়স হয়েছিলো ৭৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী অধ্যাপক দিলারা হাফিজ, দুই ছেলে অভিন্ন আজাদ ও অব্যয় আজাদসহ বহু আত্মীস্বজন ও গুনগ্রাহীদের রেখে গেছেন। 'ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাবো' সহ রফিক আজাদের বিভিন্ন কবিতার বহু পংক্তি বাংলা কবিতার ভক্তদের মধ্যে স্মরণীয় হয়ে আছেন থাকবেন অনন্তকাল। আজ কবির ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০২০ রাত ২:৩১

চাঁদগাজী বলেছেন:



খুব সামান্য পরিমাণ শিক্ষক, সরকারী কর্মচারী, ব্যবসায়ী মুক্তিযু্দ্ধে অংশ নিয়েছিলেন; উনার পরিবারের জন্য সন্মান রলো

১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
একটা কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক
একটা নাামকরা পত্রিকার সম্পাদক, একুশে
পদক প্রাপ্ত একজন কবকে আপনি বলেন
সামান্য পরিমান শিক্ষক !!আসলে অনেকেই
পরের কৃতৃত্ব সহ্য করার মানসিকতা রাখেনা।

যাহোক কবিকে না হোক তার পরিবারকে
সম্মান জনানোতে আপনাকে কিঞ্চিত ধন্যবাদ।

২| ১২ ই মার্চ, ২০২০ রাত ২:৫০

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: উনার কবিতা আমি পড়েছি
......................................................................................................................
কালজয়ী কবিতার স্রষ্টা কবি রফিক আজাদের মৃত্যু বাষিকীতে আমার
থাকল অশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি।

১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
স্বপ্নের শঙ্খচিল ধন্যবাদ আপনাকে
কবির মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

৩| ১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:২৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অশেষ শ্রদ্ধা।

১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আলি ভাই আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ
কবির জন্য শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য।

৪| ১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনার গুরু তাকে নয় তার পরিবারের জন্য
ভালোবাসা জানিয়েছেন, আপনি কবিকে শ্রদ্ধা
ও ভালোবাসা জানিয়েছেন। অনুমতি নিয়েছেন?
তিনি আবার বকবেন নাতো?

৫| ১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৩৭

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আশ্চর্য লিঙ্কগুলো কাজ করছে না। তাই ওপরের তিনটি মন্তব্য দয়া করে মুছে দেবেন। কিছু কবিতা এখানে দিচ্ছি।
তুমি: বিশ বছর আগে ও পরে
তুমি যে-সব ভুল করতে সেগুলো খুবই মারাত্মক ছিল। তোমার কথায় ছিল গেঁয়ো টান, অনেকগুলো শব্দের করতে ভুল উচ্চারণ: ‘প্রমথ চৌধুরী’ কে তুমি বলতে ‘প্রথম চৌধুরী’; ‘জনৈক’ উচ্চারণ করতে গিয়ে সর্বদাই ‘জৈনিক’ বলে ফেলতে। এমনি বহুতর ভয়াবহ ভুলে-ভরা ছিল তোমার ব্যক্তিগত অভিধান। কিন্তু সে-সময়, সেই সুদূর কৈশোরে ঐ মারাত্মক ভুলগুলো তোমার বড়-বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলুম।

তোমার পরীক্ষার খাতায় সর্বদাই সাধু ও চলতির দূষণীয় মিশ্রণ ঘটাতে। ভাষা-ব্যবহারে তুমি বরাবরই খুব অমনোযোগী ছিলে। বেশ হাবাগোবা গোছের লাজুক ও অবনতমুখী মেয়ে ছিলে তুমি। ‘শোকাভিভূত’ বলতে গিয়ে ব’লে ফেলতে ‘শোকাভূত’। তোমার উচ্চারণের ত্রুটি, বাক্যমধ্যস্থিত শব্দের ভুল ব্যবহারে আমি তখন এক ধরনের মজাই পেতুম।

২০-বছর পর আজ তোমার বক্তৃতা শুনলুম। বিষয়: ‘নারী-স্বাধীনতা’! এত সুন্দর, স্পষ্ট ও নির্ভুল উচ্চারণে তোমার বক্তব্য রাখলে যে, দেখে অবাক ও ব্যথিত হলুম।

আমার বুকের মধ্যে জেঁকে-বসা একটি পাথর বিশ বছর পর নিঃশব্দে নেমে গেল।
.

(চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া, ১৯৭৭)


নারী: আমার অভিধান
আমার নিকট তুমি এক মূর্তিমান অভিধান;
খুচরো অথবা খুব দরকারি ভারী শব্দাবলি
টেবিলে ঈষৎ ঝুঁকে নিষ্ঠাভাবে যে-রকমভাবে
দেখে নিতে হয়, প্রয়োজনে তোমাকে তেমনি পড়ি।
তুমিই আমার হও বিশ্বাস-স্থাপনযোগ্য সেই
বিশুদ্ধ মৌলিক গ্রন্থ: তোমাকে পড়েই শিখে নিই
শব্দের সঠিক অর্থ, মূল ধাতু, নির্ভুল বানান।
তোমাকে দেখেই জেনে নিই কোন ঠিকানায় আছে
সুন্দরের ঘরদোর,—বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের বিরুদ্ধে
কী-কী অস্ত্র প্রয়োগের প্রয়োজন, তাও জানা হয়।

তোমার হাঁটার ভঙ্গি দেখে মুহূর্তেই শেখা হয়
কবিতায় ব্যবহার্য সমস্ত ছন্দের মূলসূত্র।
এজন্য আমাকে কোনো প্রবোধচন্দ্রের গ্রন্থাবলি
কোনোদিন পড়তে হয় নি—এবং একথা সত্য,
পড়ব না—যতদিন নৃত্যপর নারীর শরীর
আমার চোখের সামনে প্রকৃতির মতো রয়ে যাবে।

হরিচরণের কাছে, আপাতত, কোনো ঋণ নেই:
যতদিন পৃথিবীতে তোমরা রয়েছ, ততদিন
প্রয়োজন নেই কোনো ব্যাকরণ কিংবা অভিধানে;
সত্যি কথা বলতে গেলে, এমনকি, দরকার নেই
কোনো ফুলে। কেননা, নারীর নগ্ন শরীরের মতো
ঘ্রাণময়ফুল আমি এ জীবনে কখনো শুঁকি নি।
যে সৌগন্ধ্য রয়েছে নারীর, সেরকম গন্ধবহ
ফুলের সাক্ষাৎ আমি এখনো পাই নি কোনো ফুলে।

আমার হাতের কাছে সর্বদা সরল শব্দকোষ,
হয়ে আছ, আজীবন। যদিবা দৈবাৎ পড়ে যাই
দুর্বোধ্য, রুক্ষ, অপরিচিত শব্দাবলির সম্মুখে
স্বভাবত, তোমাকে দেখেই সাহস সঞ্চয় করি।

সুন্দরের দিকে রয় আমার প্রধান প্রবণতা;
তোমার শরীর হয় কবিতার পবিত্র পুরাণ,

গরীবের কানাকড়ি, বিধবার শেষ সাদা শাড়ি।
.

(চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া, ১৯৭৭)

১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কামাল ভাই
অনেক কষ্ট করেছেন কবিকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
আপনার আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করে। কবির দারুন
সব কবিতাগুলো সংযোজন করে আমার লেখাটিকে
দারুনভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। কৃতজ্ঞতা অশেষ।

৬| ১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৩৮

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: যদি ভালোবাসা পাই
যদি ভালোবাসা পাই……….. আবার শুধরে নেব
………………… জীবনের ভুলগুলি
যদি ভালোবাসা পাই……….. ব্যাপক দীর্ঘপথে
………………… তুলে নেব ঝোলাঝুলি
যদি ভালোবাসা পাই……….. শীতের রাতের শেষে
………………… মখমল দিন পাবো
যদি ভালোবাসা পাই……….. পাহাড় ডিঙাবো আর
………………… সমুদ্র সাঁতরাবো
যদি ভালোবাসা পাই……….. আমার আকাশ হবে
………………… দ্রুত শরতের নীল
যদি ভালোবাসা পাই……….. জীবনে আমিও পাব
………………… মধ্য- অন্তমিল।
যদি ভালোবাসা পাই……….. আবার শুধরে নেব
………………… জীবনের ভুলগুলি
যদি ভালোবাসা পাই……….. শিল্পদীর্ঘপথে
………………… বয়ে যাবো কাঁথাগুলি…

.

(চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া, ১৯৭৭)

১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার আর একটি কবিতার সংযোজন!!
আমারও খুব ভালো লাগলো কবিতাট।ি
ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৩৯

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: ভাত দে হারামজাদা
ভীষণ ক্ষুধার্ত আছি: উদরে, শরীরবৃত্ত ব্যেপে
অনুভূত হতে থাকে—প্রতিপলে—সর্বগ্রাসী ক্ষুধা!
অনাবৃষ্টি—যেমন চৈত্রের শস্যক্ষেত্রে—জ্বেলে দ্যায়
প্রভূত দাহন—তেমনি ক্ষুধার জ্বালা, জ্বলে দেহ।

দু’বেলা দু’মুঠো পেলে মোটে নেই অন্য কোনো দাবী,
অনেকে অনেক কিছু চেয়ে নিচ্ছে, সকলেই চায়:
বাড়ি, গাড়ি, টাকা কড়ি—কারো বা খ্যাতির লোভ আছে;
আমার সামান্য দাবী: পুড়ে যাচ্ছে পেটের প্রান্তর—
ভাত চাই—এই চাওয়া সরাসরি—ঠান্ডা বা গরম,
সরু বা দারুণ মোটা রেশনের লাল চালে হ’লে
কোনো ক্ষতি নেই—মাটির শানকি ভর্তি ভাত চাই;
দু’বেলা দু’মুঠো পেলে ছেড়ে দেবো অন্য-সব দাবী।

অযৌক্তিক লোভ নেই, এমনকি, নেই যৌনক্ষুধা—
চাই নি তো: নাভিনিম্নে-পরা শাড়ি, শাড়ির মালিক;
যে চায় সে নিয়ে যাক—যাকে ইচ্ছা তাকে দিয়ে দাও—
জেনে রাখো: আমার ওসবের কোনো প্রয়োজন নেই।
যদি না মেটাতে পারো আমার সামান্য এই দাবী,
তোমার সমস্ত রাজ্যে দক্ষযজ্ঞ কাণ্ড ঘ’টে যাবে;
ক্ষুধার্তের কাছে নেই ইষ্টানিষ্ট, আইন কানুন—
সম্মুখে যা কিছু পাবো খেয়ে যাবো অবলীলাক্রমে:
থাকবে না কিছু বাকি—চলে যাবে হা-ভাতের গ্রাসে।
যদি বা দৈবাৎ সম্মুখে তোমাকে, ধরো, পেয়ে যাই—
রাক্ষুসে ক্ষুধার কাছে উপাদেয় উপাচার হবে।

সর্বপরিবেশগ্রাসী হ’লে সামান্য ভাতের ক্ষুধা
ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসে নিমন্ত্রণ ক’রে।

দৃশ্য থেকে দ্রষ্টা অব্দি ধারাবাহিকতা খেয়ে ফেলে
অবশেষে যথাক্রমে খাবো: গাছপালা, নদী-নালা,
গ্রাম-গঞ্জ, ফুটপাত, নর্দমার জলের প্রপাত,
চলাচলকারী পথচারী, নিতম্ব-প্রধান নারী—
উড্ডীন পতাকাসহ খাদ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীর গাড়ি—
আমার ক্ষুধার কাছে কিছুই ফেলনা নয় আজ।

ভাত দে হারামজাদা, তা না-হ’লে মানচিত্র খাবো।

১২ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কবি রফিক আজাদের একটি স্মরণীয় ও প্রতিবাদী কবিতা
যা কবিকে অমর করে রাখবে যুগের পর যুগ। আমি সত্যিই
অভিভূত তার চমৎকার কবিতাগুলোকে সংকলিত করার জন্য।
আপনা প্রজ্ঞা ও মেধার জন্য ধন্যবাদ। ব্লগডেতে আপনার
সহচার্য পেয়ে ধন্য্ আমি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.