নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুর সাধক ওস্তাদ আবেদ হোসেন খানের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০৯


ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। সুরসাধক ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান আমার আজকের গুণীজন। ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান, বাংলাদেশি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার বাদক ও সুরকার। তাঁর জন্ম হয় উপমহাদেশের অন্যতম এক সঙ্গীত পরিবারে। আবেদ হোসেন ১৯৫০ সালে বাংলাদেশ বেতারের নিজস্ব শিল্পী হিসেবে যোগ দেন। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে তার সুরকৃত গান প্রচারিত হত। তিনি চলচ্চিত্রের সঙ্গীতও পরিচালনা করেন। তিনি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন কাদির রচিত উপন্যাস নদী ও নারী অবলম্বনে নির্মিত নদী ও নারী চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেন। তিনি ৩৬ বছর বাংলাদেশ বেতারে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং ১৯৮৬ সালে মুখ্য সঙ্গীত প্রযোজক পদে থাকাকালীন অবসর গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে চুক্তিভিত্তিতে আরো প্রায় ১০ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। সঙ্গীতের স্বরলিপি প্রণয়নেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। তার রচিত সুর-লহরী (৩ খন্ড) গ্রন্থটি সঙ্গীতজগতে এক অমূল্য সম্পদ। সুর-লহরী গ্রন্থটি সঙ্গীত বিষয়ের পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত। ১৯৬৬ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সেতার পরিবেশন করেন। ১৯৭৪ সালে ভারতের কলকাতা, মাদ্রাজ, দিল্লি, মুম্বাই ও শ্রীনগরে অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া রেডিও মিউজিক কনফারেন্সে সেতার পরিবেশন করে তিনি বিপুল পরিচিতি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান ও ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে সেতার পরিবেশন করে বিদেশে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতকে জনপ্রিয় করে তোলেন তিনি। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একুশে পদক লাভ করেন। আজ তার ২৩তম মৃতুবার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের আজকের দিনে তিনি ৬৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। সুর সাধক ওস্তাদ আবেদ হেসেন খানের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আবেদ হোসেন ১৯২৯ সালের ১ এপ্রিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ একজন বরেণ্য উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী এবং মাতা উমার উন-নেসা খানম। তাঁর চাচা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ। পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী ছেলেবেলা থেকে সঙ্গীত সাধনা করেছেন। তার বড় তিন বোন আম্বিয়া, কোহিনূর, ও রাজিয়া এবং ছোট দুই ভাই প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ বাহাদুর হোসেন খান ও সঙ্গীত গবেষক ও লেখক মোবারক হোসেন খান। দেশ বিভাগের পূর্ব থেকে তার পিতার গান শিখানোর উদ্দেশ্যে কুমিল্লা জেলায় যাতায়াত ছিল এবং ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তারা সপরিবারে সেখানে চলে যান। আবেদ সেখানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। ঢাকার সঙ্গীত কলেজ প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম এবং সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে সঙ্গীতের ইতিহাস, থিওরি ও ব্যবহারিক বিষয়ে অধ্যাপনা করেন।১৯৭৩ সালে তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে 'ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ সঙ্গীত নিকেতন' নামক সঙ্গীত একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

আবেদ হোসেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর একজন আমন্ত্রিত সঙ্গীত প্রশিক্ষক ও বিশেষজ্ঞ লেকচারার ছিলেন। তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের অর্থানুকূল্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত গুরুশিষ্য পরম্পরা (mentor fellowship in music) পদ্ধতিতে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিক্ষাদান কোর্সে বিশেষজ্ঞ-প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সেতার ও সরোদ পরিবেশন করতেন। অর্কেস্ট্রা রচনা ও পরিচালনায় তিনি অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। বাংলাদেশে সঙ্গীতের উন্নতি ও প্রসারের ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সঙ্গীতে অনন্যসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৫ সালে ‘একুশে পদক’ দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করে। এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, বুলবুল ললিতকলা একাডেমী (বাফা), ইউনেস্কো ও সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় যুগ্মভাবে তাকে ‘জাতীয় সঙ্গীত সম্মেলন সম্মাননা ২০০২’ সম্মাননা প্রদান করে। তাছাড়া সদারঙ্গ সঙ্গীত সমারোহ, সুরের আলো সঙ্গীত একাডেমীসহ বহু সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তাকে সম্মানিত করে। আবেদ হোসেনের পুত্র শাহাদাত হোসেন খানও একজন গুনী সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব। তার দুই জমজ নাতনী আফসানা খান সেতার বাদক ও রুখসানা খান সরোদ বাদক। ১৯৯৬ সালের ২৯ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন ওস্তাদ আবেদ হেসেন খান। আজ তার ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। সুর সাধক ওস্তাদ আবেদ হোসেন খানের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:২১

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অনেক মানুষের অনেক রকমের হবি থাকে।আপনার হবি জীবনী লেখা,আর এই সুবাদে আমরা অনেকের জীবনের অনেকতথ্য জানতে পারি।এইজন্য ধন্যবাদ ।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: নিজের কোন গুন নাই তাই
গুনীজনদের আশোপাশে ঘুর ঘুর করি,
তাদের গুণকীর্তন করি এতে যদি কেউ
উপকৃতহ হয় তা হলে নিজেকে সার্থক ভাবি।

২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
হজ্ব করার ইচ্ছা এখনো আছে তো?
আপনিতো ক্ষনে ক্ষনে রং পাল্টান!!
তবে এই ইচ্ছাটার বাস্তবায়ন করবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.