নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর অমীমাংসিত ১৫টি রহস্যময় ঘটনাঃ আজও যার জট খোলেনি

৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪১


আগর পর্বঃ পৃথিবীর কয়েকটি রহস্য ঘেরা স্থানঃ যার ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বিজ্ঞান
প্রকৃতি রহস্য পছন্দ করে। নিজেকে সে আগলে রাখে নানা ধরনের রহস্য দিয়ে। পৃথিবীতে অসংখ্য রহস্যময় ঘটনা ঘটে প্রতিদিন। কিছু রহস্যের সমাধান মানুষ করতে পারে। আবার অনেক রহস্যের কোনো সমাধান পাওয়া যায় না। কিছু রহস্য অমীমাংসিতই থেকে যায়। এরকম ১৫ টি রহস্যময় ঘটনা যা আজও অমীমাংসিত।

১। মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০
সবচেয়ে সাম্প্রতিক নিখোঁজ রহস্যগুলোর মধ্যে একটি হলো মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০, যা শনিবার ৮ মার্চ, ২০১৪ তারিখে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। মালয়েশিয়ার থেকে বেইজিং পর্যন্ত একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ছিল এটি। ২২৭ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্যকে বহন করেছিল। উড়োজাহাজটি বিমানের ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে তার শেষ ভয়েস যোগাযোগটি করে টেক অফের এক ঘণ্টা এবং রাডারে পর্দা থেকে নিখোঁজ হয় কয়েক মিনিটের কম সময়ের মধ্যে। মালয়েশীয় সামরিক রাডারটি প্রায় এক ঘণ্টার পর বিমানটি ট্র্যাক করে, এটি তার উড়োজাহাজ থেকে বিচ্যুত হওয়ার পর থেকে আন্দামান সাগর পর্যন্ত রাডারের পরিসীমা বজায় রেখেছিল। বিমানটি অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার আগে কোনো সংকটের সংকেত, খারাপ আবহাওয়ার সতর্কবাণী বা প্রযুক্তিগত – কোনো সমস্যার কথা বলা হয়নি। অনেকেই এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন যে, ভারত মহাসাগরে এই ফ্লাইট শেষ হয়েছে এবং এখনও অনুসন্ধান চলছে, সেখানে কোনো ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি।

২। উলপিটের রহস্যময় সবুজ রঙের ভাই বোনঃ
দ্বাদশ শতাব্দীতে হঠাৎ করেই ইংল্যান্ডের উলপিটে একজোড়া ভাই বোনের উদয় হয়। তারা সবদিক থেকেই সাধারণ মানুষের মতো ছিল। তবে তাদের গায়ের রং ছিল অস্বাভাবিক সবুজ রঙের। তারা দুই ভাই বোন অজানা ভাষায় কথা বলতো, অদ্ভুত পোশাক পরিধান করতো এবং খাবার হিসেবে শুধু কাঁচা শিম খেতো। কিছুদিন পর অবশ্য তাদের মধ্যে ছেলেটি মারা যায় কিন্তু মেয়েটি বেঁচে ছিল। মেয়েটি পরবর্তীতে ইংরেজি ভাষা আয়ত্ত করেছিল এবং অন্যান্য খাবার খাওয়া শিখেছিল। ধীরে ধীরে মেয়েটি তার গায়ের সবুজ রং হারাতে শুরু করে। সে অন্যদের বলেছিল যে, তারা দুই ভাই বোন সেন্ট মার্টিন্স ল্যান্ড থেকে এসেছে। তার ভাষ্য মতে, সেন্ট মার্টিন্স একটি ভূগর্ভস্থ এলাকা যেখানে সবাই সবুজ গাত্র বর্ণের অধিকারী। এই গল্পের ভিত্তি পরিষ্কার নয়। কেউ কেউ এটিকে নিছক পরীর গল্প মনে করেন। কেউ আবার মনে করেন সত্য গল্পের কিছুটা রদবদল হয়েছে। কেউ আবার এখনো মনে করেন তারা হয়তো আসলেই ভূগর্ভস্থ পৃথিবীর কোনো অশরীরী প্রাণী।

৩। ‘তামাম সুড’ কেসঃ
১৯৪৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার সোমেরটন বিচ থেকে একজন মৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। তার কাছে কোনো পরিচয়পত্র ছিল না এবং তার সাথে কোনো ডেন্টাল রেকর্ডের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলা হয়েছে, তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু বিষের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই জটিল রহস্যের সমাধান দিতে একজন বিশেষজ্ঞকে সেই মৃতদেহ পর্যবেক্ষণের জন্য আনা হয়েছিল। সে ঐ মৃতব্যক্তির কোমরবন্ধনীর কাছে একটি ছোট পকেট আবিষ্কার করে যার মধ্যে একটি ছোট কাগজে লেখা ছিল ‘তামাম সুড’। এটি ওমর খৈয়ামের ‘রুবাইয়াত’ নামক কবিতা সমগ্রের শেষের কিছু শব্দ। ধারণা করা হচ্ছিল যে, কাগজের ঐ টুকরাটি সৈকতের পাশে রাখা গাড়ির ভেতর রাখা বইয়ের ছেঁড়া অংশ। সেই বইতে একজন নার্সের ফোন নম্বর ছিল। সেই সাথে তাতে একটি সাংকেতিক বার্তা ছিল। নার্স বলেছিলেন- তিনি এই বইটি অ্যালবার্ট বক্সাল নামক এক ব্যক্তি দিয়েছিল। পুলিশ ভেবেছিল মৃত ব্যক্তিই মনে হয় অ্যালবার্ট বক্সাল যতদিন অ্যালবার্ট বক্সাল সশরীরে নিজে এসে উপস্থিত না হয়। পরবর্তীতে অ্যালবার্ট তার সেই বইটিও সাথে করে নিয়ে আসে যেটা তাকে সেই নার্স দিয়েছিল এবং সেই ‘তামাম সুড’ কথাটি সেখান থেকে ছেঁড়া হয়নি। এই রহস্যের কোনো সমাধান আজও পাওয়া যায়নি।

৪। অভিনেত্রী মারি এমপ্রেসঃ
মারি এমপ্রেস ছিলেন নির্বাক যুগের চলচ্চিত্রের বিখ্যাত অভিনেত্রী। ‘ছবির দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী নারী’ বলে ডাকা হতো তাকে। এছাড়াও তিনি ছিলেন জনপ্রিয় গায়িকা ও নৃত্যশিল্পী। তার জন্ম ১৮৮৪ সালের ২৬ মার্চ; ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে। সামুদ্রিক জাহাজ ‘এসএস অর্ডুনা’য় উঠেছিলেন অ্যাটলান্টিক পাড়ি দেবেন বলে। সেই তিনিই কি না হাজারও যাত্রী ও নাবিকের মাঝ থেকে উধাও হয়ে গেলেন! কেউ কিছু টেরও পেল না? ঘটনাটি ১৯১৯ সালের ২৭ অক্টোবরের। সেদিন ছিল সোমবার। আমেরিকার নিউ ইয়র্ক সিটির কানার্ড লাইন জেটিতে নোঙর করল অর্ডুনা। অ্যাটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিতে জাহাজটি সেবারের যাত্রা শুরু করেছিল ১১ দিন আগে, ইংল্যান্ডের লিভারপুল থেকে। নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর আগে কানাডার নোভা স্কটিয়া রাজ্যের হ্যালিফ্যাক্সে ফেলেছিল নোঙর। ভিআইপি, সাধারণ যাত্রী ও অভিবাসীতে ভরা জাহাজটিতে সবচেয়ে আলোচিত যাত্রী ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী মারি এমপ্রেস। কিন্তু নিউ ইয়র্ক এসে দেখা গেল, যাত্রীদের সবাই আছেন, শুধু তিনি ছাড়া। একবার-দুইবার নয়, তিনবার তন্ন তন্ন করে খোঁজা হলো পুরো জাহাজ। না; কোথাও নেই মারি। বিনোদন দুনিয়ায় সাড়া পড়ে গেল। এত মানুষের মাঝখানে তিনি কখন কীভাবে কোথায় উধাও হয়ে গেলেন, সেই অনুসন্ধানে ঘাম ঝরাতে থাকলেন জাঁদলেন গোয়েন্দারা। ফলাফল শূন্য! ১০০ বছর পেরিয়ে গেলেও তার এভাবে চিরতরে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি এখনো রহস্যই রয়ে গেছে।

৫। ওয়াও সিগন্যালঃ
১৯৭৭ সালের ১৫ই আগস্টে ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির বিগ এয়ার নামক রেডিও টেলিস্কোপে এই সংকেত ধরা পড়ে। সেই রেডিও সিগন্যালটি অনেক শক্তিশালী ছিল এবং অনেক দূর কোনো স্থান থেকে এসেছিল। পরবর্তীতে, জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেরি আর. এহম্যান সংকেতটি বিশ্লেষন করতে গিয়ে অভিভূত হয়ে এর কম্পিউটার প্রিন্টআউটের পাশে ‘Wow!’ লিখেন যা থেকে এই সংকেতের নামকরণ করা হয়। সাধারণত, সৌরজগতের ভিতর থেকে এই ধরনের সংকেত আসার কথা নয়। এতে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা দেখা যাওয়ায়, সংকেতটি সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল। সিগন্যালটি ৭২ সেকেন্ড স্থায়ী হয় এবং তারপর আজ অবধি সেটি আর কখনো শোনা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন, এই সিগন্যালটি যদি পৃথিবীর বাইরের কোনো সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আসে তবে তারা মানুষের থেকে অনেক উন্নত। কিন্তু এই রহস্যের জট এখনো খোলেনি।

৬। ডি.বি.কুপারঃ
এক ব্যক্তি নিজেকে ড্যান কুপার দাবী করেন এবং ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে নর্থ ওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৩০৫ এ সিয়াটলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। প্লেনের শেষের সারিতে বসে একটি সিগারেট ধরেন। তিনি একটি বর্বোন এবং সোডা অর্ডার করেন। তার কিছুক্ষণ পর, একটি নোট ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্সকে দেন। সেই নোটে তিনি বলেন – তার সাথে একটি বোমা আছে এবং তিনি তাকে তার পাশে বসতে বলেন। যখন সে তার পাশে বসেন তখন কুপার তার ব্রিফকেস খুলে দেখান। একটি ব্যাটারী, কিছু লাল কাঠি এবং তার দেখিয়ে তিনি বলেন, আমি ২০০,০০০$ নগদ চাই বিকেল ৫:০০ টার মধ্যে। একটি ব্যাগে দুটি প্যারশুট চাই। এবং যখন আমরা ভূমিতে নামবো তখন এক ট্রাক তেল যেন তৈরি থাকে। ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্স প্লেনের চালককে কুপারের কথা বলেন। সিয়াটলে নামার পর যাত্রীদের ছেড়ে দেয়া হয় এবং যাবতীয় অর্থ এবং প্যারাশুট বিমানে আনা হয়। কুপারের নির্দেশে বিমানটি নিউ মেক্সিকোর দিকে যেতে থাকে। প্লেনটির ১০,০০০ মিটারের বেশি উচ্চতায় যাবার পর কুপার নগদ অর্থ সহ এবং প্যারাশুট বেঁধে পিছনের সিট থেকে লাফ দেয়। এরপর অনেকেই নিজেকে কুপার দাবী করেন কিন্তু কোনো উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারেননি। এ গল্পটি এত বিখ্যাত ছিল যে, কুপার কমিক সিরিজের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছিল।

৭। ভয়নিচ পান্ডুলিপিঃ
এটি একটি অজানা ভাষায় হাতে লেখা চিত্রিত ভলিয়মের পান্ডুলিপি। ১৫ শতকের শুরুতে এটি লেখা হয়েছিল এবং এটির নামকরণ করা হয় আলফ্রেড ভয়নিচের নামানুসারে। তিনি মূলত ১৯১২ সালে বইটি ক্রয় করেছিলেন। এটি অসংখ্য বার পড়া হয়েছে কিন্তু এর কোড কেউ ভেদ করতে পারেনি। এটি ৬টি বিভাগে বিভক্ত। হারবাল, জ্যোতির্বিদ্যা, জৈবিক, মহাজাগতিক, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং রেসিপি। কিছু পাতা হারানো গেলেও, এর বর্তমান সংস্করণে প্রায় ২৩৪টি পাতা রয়েছে যার অধিকাংশই চিত্রালংকরণের সাথে গঠিত। পান্ডুলিপিটির অনেক বর্ণনাতে সে সময়ের ভেষজ পান্ডুলিপি, গাছপালার চিত্রালংকরণ এবং তাদের সম্ভাব্য ব্যবহার সম্পর্কিত তথ্য রয়েছে। উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞদের মতে – আঁকা উদ্ভিদের অনেকগুলোই কোনো পরিচিত প্রজাতির অনুরূপ না। তারা যৌগিক বলে মনে হয়। কেউ কেউ এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন যে, এটি একটি ফাঁকি কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই বিশ্বাস করেন এটি খুব জটিল এবং অত্যাধুনিক। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এটি একটি মেডিক্যাল ভলিউম যা এখনো রহস্যের আধার।

৮। সময় ভ্রমণকারীঃ
২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির জন্য আন্ড্রু কার্লসসিন নামধারী একজন ব্যক্তিকে আটক করে। শেয়ারবাজারে ১২৬টি ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন করে, যার আয় মাত্র ৮০০ মার্কিন ডলার থেকে ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়। এফবিআইর হাতে আটক হওয়ার পর অ্যান্ড্রু দাবি করেন যে তিনি একজন সময় ভ্রমণকারী। ২২৫৬ সালের পৃথিবী থেকে তিনি সময় ভ্রমণকারী যানে চেপে ২০০৩ সালে পৌঁছেছেন। তাই তিনি অতীত থেকে তথ্য পান। অবশ্য আন্ড্রুর এ বক্তব্য মার্কিন আদালতে ধোপে টিকেনি। আদালতের রায়ে জেল হয়ে যায় তাঁর। কিছুদিন পর নিজের কথার সত্যতা প্রমাণ দিয়ে কঠোর নজরদারির জেল থেকে বেমালুম হাওয়া হয়ে যান এই সময় ভ্রমণকারী।

৯। বিমিনি রোডঃ
বিমিনি রোড একটি ডুবো শিলা যা বাহামা দ্বীপে উত্তর বিমিনি দ্বীপের কাছে বিশাল, আয়তক্ষেত্রাকার চুনাপাথরের ব্লক ধারণ করেছে। এর গাঠনিক চেহারাটি দেখে অনেকে দাবী করেন যে, এটি একটি হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন সভ্যতার প্রমাণ। প্রচলিত মতামত – এটি প্রকৃতপক্ষে একটি প্রাকৃতিক ল্যান্ডফর্ম, কিন্তু কয়েকজন বিশেষজ্ঞ এখনও নিশ্চিত নন। ১৯৬৮ সালে বিমিনি রোড আবিষ্কৃত হওয়ার পর, ১৯৩৮ সালে রহস্যবিদ এডগার কাইস একটি অদ্ভুত ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন,”বিমিনির নিকটবর্তী যুগ এবং সমুদ্রের তলদেশে জলমগ্ন মন্দিরের একটি অংশ এখনো আবিষ্কৃত হতে পারে। প্রত্যাশিত সময় এটি ‘৬৮ বা ‘৬৯তে – যা খুব বেশি দূরে নয়।”

১০। হিমায়িত বালিকা জিন হিলিয়ার্ডঃ
হলিউডের ফ্রোজেন চলচ্চিত্রের এলসা ও আন্নাকে নিশ্চয়ই মনে আছে সবার। এলসার কারণে বরফে জমে যাওয়া আন্নাকে ভালোবাসা দিয়ে সারিয়ে তোলা হয়। এবার বাস্তবের আন্নাকেই খুঁজে পাওয়া গেছে। নাম জিন হিলিয়ার্ড। ঘটনাটা ঘটেছে ১৯৮০ সালের ২০ ডিসেম্বর। ওই দিন জিন হিলিয়ার্ড তাঁর গাড়ি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার লেংবাইয়ের তুষার পড়া রাস্তা ধরে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি এসে হঠাৎ তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, গাড়ি চালানো থামিয়ে তুষার পড়া রাস্তায় একটু হেঁটে বেড়াবেন। এরপর বাড়ির লোকেরা যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তিনি অচেতন অবস্থায় ছয় ঘণ্টা ধরে তুষার পড়া রাস্তায় পড়ে আছেন। সে সময় তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফারেনহাইটে যা হিসাব করলে দাঁড়ায় মাইনাস ৭.৬ ফারেনহাইট। যখন তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, তখন তাঁর মধ্যে বেঁচে থাকার কোনো লক্ষণ ছিল না। তুষারে থাকতে থাকতে তাঁর চামড়া এতটাই শক্ত হয়ে গিয়েছিল যে শরীরে ইনজেকশন দিতে পারছিলেন না চিকিৎসকরা। সবাই ভেবেছিলেন, জিন মারা গেছে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিন দিন বাদে হাত-পা নাড়াতে শুরু করে জিন। ছয় সপ্তাহ পড়ে সবার চোখের সামনে দিয়ে দিব্যি হেঁটে বাসায় ফিরেছেন জিন হিলিয়ার্ড।

১১। ওকভিলে বাবলসঃ
আগস্ট ৭, ১৯৯৪ সালে ওকভিলের বাসিন্দারা এক অদ্ভুত বৃষ্টি লক্ষ্য করেন। সেই বৃষ্টিত পানির ফোঁটার পরিবর্তে জেলাটিন সমৃদ্ধ বাবল পড়েছিল। বমি বমি ভাব হয়ে একটি বিড়াল ছানা মারা যাওয়ার পর ঐ বাবলগুলো টেস্টিং এর জন্য পাঠানো হয়েছিল। তাতে দুই ধরণের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছিল যার একটি মানুষের পাকস্থলিতে পাওয়া যায়। টেস্টের ফলাফল – জেলাটিনগুলো কোনো জীবন্ত জীব থেকে এসেছে আবার কেউ বলছিল শ্বেত রক্তকণিকা হতে। কিছু অধিবাসী এ ঘটনাকে সামরিক পরীক্ষার অংশ বলে দাবি করেন। কেননা ঐ সময় ঐ এলাকায় সামরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

১২। পোলক টুইনসঃ
১৯৫৭ সালে, দুই বোন, জোয়ানা (১১) এবং জ্যাকলিন (৬) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এক বছর পর, তাদের মা জমজ সন্তানের জন্ম দেন একজন জেনিফার ও গিলিয়ান। তারপর তিনি একটি অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করেন। জেনিফারের দেহে জন্ম চিহ্ন ছিল যা জ্যাকলিনের মতোই। তাদের মা তাদের নিয়ে একটি গেম খেলেন। যেখানে জেনিফার এবং গিলিয়ান, জোয়ানা এবং জ্যাকলিন যেভাবে মারা যায় তারা ঠিক সেই দৃশ্যের মতোই খেলছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো বাবা মা কখনোই মেয়েদের সাথে দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেননি। ঘটনা শুনে মনোবিজ্ঞানী ডাঃ ইয়ান স্টিভেনসন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, সম্ভবত এই যমজ তাদের বোনদের পুনরুত্থান ছিল।

১৩। স্ক্রিমিং মমিঃ
১৮৮৬ সালে একটি মমি আবিষ্কার হয় যার মুখে বিচিত্র ধরণের দুর্গন্ধ ছিল। এমনকি তার অন্যান্য অঙ্গপ্রতঙ্গগুলো অক্ষত ছিল যা সাধারণ মমিদের মতো প্রক্রিয়াজাত নয়। ধারণা করা হয় কাউকে হত্যা, বিষপ্রয়োগ অথবা জীবন্ত কবর দেয়া হয়েছিল। ন্যাশনাল জিওগ্রাফির মতে, এটি ফারাও রামসেস-৩ এর পুত্র প্রিন্স পেন্টেওয়ের মমি যা বাবার হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। স্ক্রিমিং মমির রহস্য আজও সমাধান হয়নি।

১৪। দ্যতলোভ পাসের ঘটনাঃ
১৯৫৯ সালে ৯ জন অভিজ্ঞ রাশিয়ান পর্বতারোহী ইউরাল পর্বতে নিঁখোজ হন। কয়েক মাস পর, তাদের মৃত দেহগুলো খুব অদ্ভুত অবস্থায় পাওয়া যায়। ৩ জন মাটিতে পড়েছিল এবং বাকিরা ১৫ ফুট বরফের নিচে। তাদের একটি গর্তে পাওয়া যায় যেটি তারা নিজেদের জন্য খোদাই করেছিল। তাদের ত্বকে আঘাতের চিহ্ন ছিল সেই সাথে কিছু হাড় ভেঙে গিয়েছিল এবং কিছু অভ্যন্তরীণ আঘাতও ছিল।
কিছু লাশে কাপড় ছিল আবার কিছু সম্পূর্ণ নগ্ন। একজনের জিহ্বা এবং একজনের চোখ ছিল না। কেন এবং কিভাবে তাদের হ্ত্যা করা হয়েছিল সেটি আজও রহস্য।

১৫। বৃষ্টি মানব ডন ডেকারঃ
১৯৮৩ সালের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার স্ট্রাউডসবার্গ নিবাসী ডন ডেকারের দাদা সম্প্রতি গত হয়েছেন। তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষে ভারাক্রান্ত ডন বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়ি ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির ছাদ ও দেয়ালজুড়ে বৃষ্টির মতো পানি পড়া শুরু করে। অথচ বাড়ির ছাদ বা দেয়ালে কোনো পানির পাইপ সংযুক্ত ছিল না। সমস্যা সমাধানের জন্য ডনের বন্ধু পুলিশ ডাকেন। পুলিশের সহায়তায় ডনকে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির কাছের পিৎজা রেস্টুরেন্টে। অবাক করা বিষয়, ডন বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির বৃষ্টি থেমে যায়। ডনের বন্ধু ও পুলিশ আরো অবাক হয় যখন তাঁরা দেখতে পায়, পিৎজার রেস্টুরেন্টে ডনের ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার দেয়াল ও ছাদজুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এ ঘটনার ব্যাখ্যা আজও দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:



১৫ নং, এর ব্যাখ্যা বেশ কঠিন হবে, মনে হচ্ছে!

৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমারও তাই ধারণা!!
তবে অন্যগুলোর কি হবে সমাধান!!
ধন্যবাদ গাজীসাব।

২| ৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:০৩

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: ২ নং টাই আমার কাছে বেশি রহস্যময়, আচ্ছা মেয়েটার পরবর্তী জীবনে কোন তথ্য জানা গেছে!!

৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমি জানিনা
আজো তারা রহস্যই
রয়ে গেছে!

৩| ৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪১

কল্পদ্রুম বলেছেন: সবগুলোই ইন্টারেস্টিং।তবে স্ক্রিমিং মামির রহস্য অনেকটাই সমাধান হয়ে গেছে ইন্টারনেটে পড়লাম।

৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:১৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ডিএনএ অ্যানালিসিস করে প্রত্নতত্ত্ববিদরা বলছেন, 'এটি আসলে প্রিন্স পেন্টাওয়ারের মমি। তিনি ছিলেন ফারাও তৃতীয় রামসেসের সন্তান। ১১৮৬ থেকে ১১৫৫ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেছেন ফারাও রামসেস। মনে করা হয়, বাবাকে হত্যার ছক কষেছিল বলেই ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল প্রিন্স পেন্টাওয়ারকে। মিশরের প্রাচীন কাহিনী থেকে এই সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়।
'স্ক্রিমিং' মমির ঘাড়ের চারপাশের দাগ দেখেই স্পষ্ট বোঝা যায় এটা সেই প্রিন্স পেন্টাওয়ারের মমি। এমনকি ওই মমির শরীরের নানা অঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছিল। এরপর ভেড়ার চামড়ায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল তার দেহ, যা মিশরে অপবিত্র বলে গণ্য করা হত। তৃতীয় রামসেসকে হত্যা করা হয়েছিল কি-না, তা জানা যায়নি। তবে তাকে পিছন থেকে ছুরি মারার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

৪| ৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো একটি পোষ্ট দিয়েছেন মুরুব্বী।

৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমার পোস্টে সুন্দরী ললনা যে নাই!

৫| ৩০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫০

কল্পদ্রুম বলেছেন: এই পোস্ট দেখেই ঘটনা পড়েছি।সবই মিলেছে।কেবল শেষের রামসেসের খুনের ব্যাপারটা মেলেনি।আমি তো পড়লাম তাতে তাকে গলা কেটে খুন করা হয়েছিলো।খুন করার আগে ফারাও এর পায়ের বুড়ো আঙ্গুল কেটে নিয়েছিলো।বুড়ো আঙ্গুল কেটে কি করেছিলো উপরওয়ালাই জানে।

রামসেস তৃতীয়

তামাম সুড এর ঘটনাও পড়লাম।আসলেই এটা এখনো পুরোপুরি রহস্য হিসেবে আছে।এই পোস্ট পড়ার সময় অবশ্য আমার মনে হচ্ছিলো ভদ্রলোক গুপ্তচর হতে পারে।উনি যে সময় মারা গেছেন তখন দেশে দেশে গুপ্তচর ঘুরে বেড়ানো অস্বাভাবিক ছিলো না।পরে ইন্টারনেটে দেখলাম সত্যি সত্যিই অনেকে তাকে গুপ্তচর ভেবে ছিলো।যদিও প্রমাণ নেই।যে নার্সের নাম্বার পাওয়া গেছিলো সেই ভদ্রমহিলা ঐ লোককে চিনতো বলে তদন্তকারী গোয়েন্দার ধারণা।বাংলাদেশ হলে হয়তো ডলা দিয়া আসল কথা বের করতেন।অস্ট্রেলিয়া বলে সেটা পারেন নি।তবে নার্সের মেয়ে খুনের বহু বছর পর এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে তার নিজের বিশ্বাস তার মা ঐ লোকের আসল পরিচয় জানতো।



৩১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১:৫০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ লেখা এবং এর উৎস
সন্ধানের জন্য। ভালো থাকবেন। ঈদের
শুভেচ্ছা জানবেন।

৬| ৩১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৩:৩৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: মারি এমপ্রেস এর ঘটনায় রহস্য পেলাম না।তিনি হয়তো মাতাল অবস্থায় বা ঢেউয়ের ধাক্কায় পানিতে পড়ে গিয়েছিলেন।
এরকম অনেক হয়।

৩১ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

অনল দাদা আপনাকে ধন্যবাদ
আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি ঙে,
ইন্টারিয়র প্যাসেজওয়ের একটা দরজা ছিল কেবিনটিতে। ১৩ ইঞ্চি প্রশস্ত
সেই পথ দিয়ে এমপ্রেসের পক্ষে বের হওয়া মোটেও সম্ভব নয়। তাছাড়া
সেই দরজাটি ছিল বন্ধ। কিন্তু এই পথ দিয়ে যদি না যেয়ে থাকেন, তাহলে
কী করে জাহাজ থেকে লাপাত্তা হলেন তিনি?

মূল দরজা দিয়ে বের হয়ে যদি সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে থাকেন, তাহলে অনেক
যাত্রী, স্টুয়ার্ট ও অফিসারদের পাশ দিয়েই যেতে হতো তাকে। এমন বিখ্যাত এ
কজন অভিনেত্রী কারওই চোখে পড়বেন না, তা তো হতে পারে না। তাই তার
লাপাত্তা হওয়ার কোনো সদুত্তর ১০০ বছরেও বের করা সম্ভব হয়নি কারও পক্ষে।

৭| ৩১ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৩৪

দারাশিকো বলেছেন: রহস্য ঘটনা সবসময়ই ভালো লাগে। ডিবি কুপার এবং টাইম ট্রাভেলার্সের ঘটনাগুলো বেশি ভালো লাগলো। ডিবি কুপার নিয়ে ভালো কোন সিনেমা থাকলে ভালো হতো, সেরকম কিছু পেলাম না।

ভালো থাকবেন।

৩১ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ দারাশিকো ভাই।
ঘটনাগুলো ভালো লাগার জন্য আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ। ডিবি কুপার নিয়ে কোন
সিনেমা হয়েছে কিনা আমার জানা নাই তবে
৪৪ মিনিটের একটা ডকুমেন্টারি আছে দেখতে পারেন

৮| ৩১ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: খুব ভাল লাগল।
প্রিয়দের কক্ষে।

৩১ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ বরকতউল্লাহ ভাই
লেখাটি পাঠ করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.