নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ বিশ্ব থাইরয়েড দিবসঃ থাইরয়েড ভালো রাখুন, ভালো থাকুন

২৫ শে মে, ২০২১ রাত ১০:১৬


আজ ২৫ মে, বিশ্ব থাইরয়েড দিবস। বিশ্বব্যাপী ৭৫ কোটি মানুষ থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছেন। এটা একটি হরমোনজনিত সমস্যা। ঘাড়ের কাছে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থেকে নিঃসরিত হরমোন শরীরের মেটাবলিজমকে নিয়ন্ত্রণ ও শরীরের প্রতিটি কোষকে প্রভাবিত করে। হরমোন শরীরের শক্তি, পুষ্টি ও অক্সিজেন উৎপাদন করতে সহায়তা করে। এর ব্যতিক্রম হলেই শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।থাইরয়েড সমস্যা হলে হৃদস্পন্দন হ্রাস পায়, ঠান্ডায় স্পর্শকাতরতা বাড়ে, হাতে অবশ অবশ অনুভূত হয়ে ঘাড়ের পরিবর্ধন শুরু হয়। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য, মেয়েদের মাসিকে প্রচুর রক্তপাত হয় এবং চুল ও ত্বকে শুষ্কতা দেখা দেয়। এছাড়া থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে সমস্যা হলে মৃদু থেকে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, ঘাড় নড়াচড়া করলে অথবা কোনো কিছু গিলে খেতে গেলে অস্বস্তি অথবা ব্যথা হয়ে থাকে। সর্দি, হাম অথবা মাম্পসের মতো ভাইরাসজনিত রোগের সময় এ রোগটি দৃশ্যমান হয় বেশি। বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি (বিইএস) তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে অন্তত ৫ কোটি থাইরয়েড রোগী রয়েছে। এর বেশির ভাগই নারী। সাধারণত এক জন পুরুষের বিপরীতে ১০ জন নারী থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এদের মধ্যে ৩ কোটি রোগীই জানে না, তারা এ রোগে আক্রান্ত। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও নারীদের মধ্যে এর হার ৩.৯ শতাংশ থেকে ৯.৪ শতাংশ হারে থাকতে পারে। শিশুদেরও থায়রয়েডের হরমোন ঘাটতি জনিত সমস্যা হতে পারে। থায়রয়েডের হরমোন ঘাটতি হলে শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পরর্বতী সময়ে দৈহিক বৃদ্ধির সমতা আনা গেলেও মেধার উন্নতি করা সম্ভব হয় না।এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। আমাদের দেশে সরকারিভাবে এ দিবসটি উদযাপিত হয় না। তবে বিভিন্ন সংগঠন গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি যথাযথভাবে পালন করে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রাসহ নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হবে।

দেখতে প্রজাপতির ডানার মতো ‘থাইরয়েড’ আমাদের শরীরের একটি গ্রন্থির নাম। বাদামী রঙের এ গ্রন্থিটি থাকে আমাদের গলার স্বরযন্ত্রের দু’পাশে। এর কাজ হলো আমাদের শরীরের কিছু অত্যাবশ্যকীয় হরমোন উৎপাদন করা। এ হরমোনের তারতম্যের জন্য শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, শরীর মোটা হওয়া, ক্ষয় হওয়া, মাসিক সমস্যা, ত্বকের সমস্যা, হার্টের এবং চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণসহ বিশেষক্ষেত্রে ক্যান্সারের কারণ হিসেবেও থায়রয়েড হরমোনের তারতম্যকে দায়ী করা হয়। থাইরয়েড গ্রন্থি একটি অতি প্রয়োজনীয় অন্তঃক্ষরা (এন্ডোক্রাইন) গ্লান্ড, যা গলার সামনের অংশে অবস্থিত। এটি মানব শরীরের প্রধান বিপাকীয় হরমোন তৈরিকারী গ্লান্ড। থাইরয়েড হরমোনের অন্যতম কাজ হচ্ছে শরীরের বিপাকীয় হার বা বেসাল মেটাবলিক রেট বাড়ানো। থাইরয়েড হরমোনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে স্নায়ুর পরিপক্বতা। এজন্য গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড হরমোনের স্বল্পতায় গর্ভের বাচ্চা বুদ্ধিদীপ্ত হয় না। যেসব উদ্দীপনায় বিপাক ক্রিয়া বেড়ে যায় যেমন-যৌবনপ্রাপ্তি, গর্ভাবস্থা, শরীরবৃত্তীয় কোনো চাপ-ইত্যাদি কারণে থাইরয়েড গ্লান্ডের আকারগত বা কার্যকারিতায় পরিবর্তন হতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে মূলত দুধরনের সমস্যা দেখা যায়-গঠনগত ও কার্যগত। এটা বিভিন্ন উপায়ে প্রকাশ পেতে পারে। গঠনগত সমস্যায় থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যায় যেটাকে গয়টার বা গলগণ্ড বলা হয়; এছাড়া থাইরয়েড গ্লান্ডে গোটা বা নডিউল এবং ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়া থাইরয়েড গ্লান্ডের প্রদাহ বা থাইরয়ডাইটিস হতে পারে। হাইপারথাইরয়ডিজম রোগে থাইরয়েড গ্লান্ড বেশি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়ে। থাইরয়েড গ্লান্ডের অতিরিক্ত কার্যকারিতার ফলে প্রচণ্ড গরম লাগা, হাত পা ঘামা, পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা, খাওয়ার রুচি স্বাভাবিক বা বেড়ে যাওয়ার পরও ওজন কমে যাওয়া, ঘন ঘন পায়খানা হওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

হার্ট ও ফুসফুসীয় সমস্যাঃ বুক ধড়ফড়, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, হার্ট ফেইলিওর, এনজাইনা বা বুক ব্যথা। স্নায়ু ও মাংসপেশির সমস্যা : অবসন্নতা বা নার্ভাসনেস, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, উত্তেজনা, আবেগ প্রবণতা, সাইকোসিস বা মানসিক বিষাদগ্রস্ততা; হাত পা কাঁপা, মাংসপেশি ও চক্ষুপেশির দুর্বলতা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। এছাড়া হাড়ের ক্ষয় বা ওস্টিওপোরোসিস, মাসিকের সমস্যা, বন্ধ্যত্ব পর্যন্ত হতে পারে।

থাইরয়েড গ্লান্ডের কার্যকারিতা হ্রাস বা হাইপোথায়রয়েডিজমঃ আয়োডিনের অভাবে হাইপোথায়রয়েডিজম হতে পারে। এছাড়া অটোইমিউন হাইপোথাইরয়েডিজমে থাইরয়েড গ্লান্ডের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি সক্রিয় হলে গ্লান্ড নষ্ট হয়ে যায় এবং থাইরয়েড গ্লান্ড কাজ করে না। চিকিৎসাজনিত কারণেও এ রোগ হতে পারে। অপারেশনের কারণে থাইরয়েড গ্লান্ড বাদ দিতে হলে বা অন্য কারণেও থাইরয়েড নষ্ট হয়ে গেলে এ সমস্যা হতে পারে।

হাইপোথায়রয়ডিজমের লক্ষণঃ অবসাদগ্রস্ত হওয়া, ত্বক খসখসে হয়ে যায়, ক্ষুধা মন্দা, চুল পড়া। ওজন বেড়ে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, শীত শীত ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, রক্তচাপ বাড়া, মাসিকের সমস্যা ইত্যাদি। বন্ধ্যত্ব সমস্যা হতে পারে। গর্ভধারণকালে গর্ভপাত হতে পারে। কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়ডিজমে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ হয় না।

থাইরয়েড ক্যান্সারঃ থাইরয়েড গ্রন্থির কোনো অংশের কোষসংখ্যা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেলে তাকে থায়রয়েড ক্যান্সার বলে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্রন্থি বা এর অংশবিশেষ ফুলে ওঠা মানেই ক্যান্সার নয়। থাইরয়েড ক্যান্সারে যে লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে : গলার সম্মুখভাগে ফুলে ওঠা। ফোলা অংশটি বেশ শক্ত হয়। একটি বা একাধিক টিউমার হতে পারে। উভয় পাশে টিউমার হতে পারে, আশপাশের লিঙ্ক নোডগুলো ফুলে উঠতে পারে। ওজন কমে যায়। খাওয়ার রুচি কমে যেতে পারে। গলার স্বর মোটা বা ফ্যাসফেসে হতে পারে। তবে থাইরয়েড নোডিউল বা ক্যান্সার ছাড়াও গলার সামনে ফুলে উঠতে পারে। শ্বাসনালির ওপর চাপ সৃষ্টির ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। ক্যান্সার শনাক্ত হলে বা ক্যান্সার আছে এমন সন্দেহ হলে অতিদ্রুত নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ বা থাইরয়েড অপারেশনে পারদর্শী কোনো সার্জনের কাছে যেতে হবে।

বাংলাদেশে থায়রয়েডের চিকিৎসাঃ বাংলাদেশে থায়রয়েডের চিকিৎসা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিইএসের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে থায়রয়েডের রোগীরা এদেশে চিকিৎসা পেয়ে আসছে। বিভিন্ন হাসপাতাল এ হরমোন জনিত রোগটির চিকিৎসা দিয়ে থাকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢামেকসহ দেশের প্রায় প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের হরমোন বিশেষজ্ঞরা এ কাজে নেতৃত্ব দিলেও পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক ও অন্যরাও এর যথাযথ অংশিদার। এছাড়া নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ, গাইনী বিশেষজ্ঞ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, প্যাথলজিসহ অন্যান্য রোগ নির্নয়কারী স্বাস্থ্য সেবাদানকারিরাও বাংলাদেশের থায়রয়েড হরমোন ও গ্রন্থির বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
সূত্রঃ সিএনআই

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: সুরভির থাইরয়েড সমস্যা আছে। নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছে।

২৬ শে মে, ২০২১ রাত ২:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নিয়মিত ওষুধের সাথে
চিকিৎসকের পরামর্শও
নিবেন নিয়মিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.