নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হৃদয় নির্যাস

নুরুল ইসলাম স্যার

পেশায় ককসবাজারের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক। সুশিক্ষা বিতরণের মাধ্যমে আমাদের সন্তানদের মানবিক মানুষে পরিনত করা আমার ব্রত। পেশাকে অন্যরকম ভালবেসে চাকরীর সাড়ে চৌদ্দ বছরে মাত্র তিনদিন ছুটি নিয়েছি। অনন্য শিক্ষকতার স্বীকৃতি স্বরূপ দেশবরেণ্য উপস্থাপক হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে দু’বার সম্মানিত হয়েছি। দেশের ভিন্ন মাত্রার দৈনিক প্রথম আলো’র অন্যরকম সম্বর্ধনা পেয়ে আপ্লুত হয়েছি। পেয়েছি বিএসবি ফাউন্ডেশন এওয়ার্ড ২০০৯, আলহামদুলিল্লাহ! আমার পেশায় আমি বেশ ভাল আছি। আপনাদের দোয়া কামনা করছি।

নুরুল ইসলাম স্যার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মত প্রকাশের অধিকার নয়, মানুষের জীবন চাই

০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

‘‘যেভাবে টিভি স্ক্রলবারে মৃতের সংখ্যা দেখাচ্ছে, মনে হচ্ছে ভোট কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষনা করা হচ্ছে!’’ কথাটি গতরাতে একজনের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেয়া। তাতে একজনের মন্তব্য, ‘‘মৃতের সংখ্যা কি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে!’’ দেশের চলমান পরিস্থিতিতে তরুন প্রজন্মের অভিমান, আক্রোশ ও প্রতিশোধ পরায়নতা প্রতিনিয়ত কত বাড়ছে এ কথার মাধ্যমে তা সহজেই অনুমেয়।



‘‘স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সবার অধিকার রয়েছে সম্পদ ও জানমালের নিরাপত্তা পাবার। সরকার জনগণকে তা দিতে বাধ্য। মানুষ নিজের অভিপ্রায় ব্যক্ত করে কথা বলার অধিকার রাখে এবং এতে ইন্টারফেয়ার করার অধিকার সরকারের নেই। তবে, দেশের কোন নাগরিক এমন কোন উদ্ধত আচরণ কিংবা কথা বলতে পারবেন না যা দেশের প্রতিষ্ঠিত আইনের বিপরীতে যাবে।’ বইয়ের এই কথাগুলো আমরা শিক্ষার্থীদেরকে পড়াই। শিক্ষার্থীদের চোখ-মুখের চাহনি বলে দেয় কথাগুলোতে তারা সন্তুষ্ট নয়। চারদিকে অধিকার আদায়ের মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করছে, সাধারণ মানুষকে লাঠি দিয়ে পেঠাচ্ছে আচ্ছামতো। এসব দেখতে দেখতে বোধহয় এই অধিকারগুলোর কথা আর বিশ্বাস করেনা শিক্ষার্থীরা। তাই তারা মিটিমিটি হাসে, আমরা বিব্রত হই।



শাহবাগ আন্দোলনের ২১ দিনে অন্তত দেশের সাধারণ ২৭ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া, আন্দোলনের ২৪ ও ২৫তম দিনে সাঈদীর রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ৪ পুলিশসহ ৬০ জন মানুষ ইতোমধ্যে পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। তথ্যটি অনলাইনের। ৭১ এ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে যে মাটি, স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে সে শ্যামল মাটি তো রক্তের জন্য এত হিংস্র হওয়ার কথা না! ‘মিছিল করার অধিকার রয়েছে সাধারণ ও প্রতিবাদী জনগণের এবং তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করতে দেওয়ার জন্য সাংবিধানিক দায়িত্ব রয়েছে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের’ - কথাগুলো বিবিসি সংলাপে শাহরিয়ার কবিরের। আমরা দেখি, শাহবাগ কিংবা হরতাল বিরোধীদের মিছিলে সরকারের পক্ষে দেশের আইন অনুযায়ী পুলিশ প্রটেকশন দেয়, কিন্তু বিরোধী পক্ষের মিছিলে কেন বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ হয়! শাহবাগের তারুন্যের মতো এদেরও তো অধিকার রয়েছে পুলিশ প্রহরায় শান্তিপূর্ণ মিছিল করার। সভ্য সমাজে পুলিশ তো সৎ মায়ের মতো আচরণ করেন না! কেন বিরোধী দলের মিছিলে ছোঁড়া হবে বৃষ্টির মতো গুলি! কেন সাধারণ মানুষকে পেঠাবেন অমানুষের মতো! জনগনের টাকায় দেশের শান্তি শৃংখলা রক্ষার জন্য যাদের চাকরি, তাদের কি অধিকার রয়েছে জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষদের সাথে এমন পাশবিক আচরণ করার। উত্তর খোঁজার চেয়ে চলুন বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে ঘোষিত টানা ৩দিনের হরতালে আমরা প্রত্যাশা করি-



১। বিরোধীদল মিছিল বের করলে পুলিশ হঠাৎ গুলিবর্ষণ না করে তাদেরকে ঘোষনা দিক ‘লাঠিসোটা ফেলে শান্তিপূর্ণ মিছিল করুন, কোথাও ধ্বংসলীলা চালাতে পারবেন না, নিদ্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে শান্তিপূর্ণভাবে চলে যান। কোথাও আগুন কিংবা ভাংচুর চালালে গুলি চালাতে বাধ্য হবো’। প্রয়োজনে শাহবাগ আন্দোলনকারীদের মিছিলের মতো বিরোধী পক্ষের মিছিলেও আগে আগে থাকুক আমাদের পুলিশ। তখন দেশের সম্পদ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম হতে পারে।



২। বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উপরের সরল কথায় কাজ হবেনা বিশ্বাস হলে সরকারের মাধ্যমে হরতাল বন্ধ হোক। কারণ মত প্রকাশের অধিকারের চেয়ে সাধারণ মানুষের জীবনের মুল্য অনেক বেশি।



৩। যাদের বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের অনেককে সক্রিয় দেখেছি গতকালের মিছিলে। পুলিশ এদের ধরে নিয়ে গেলে থানা/জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করবে এমন অভিভাবক হয়তো তাদের নেই। তাই আন্দোলনকারীদের বলবো, তারা যেন অহেতুক কোন ধ্বংসলীলা চালানোতে বেপরোয়া না হয়।



৪। আন্দোলনকারীরা যেন দেশের সম্পদ নষ্ট করা থেকে বিরত থাকেন, পুলিশের নির্যাতনের অজুহাতে তারা যেন হিংস্র না হন, যেন কারো গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার ধৃষ্ঠতা না দেখান - এই প্রত্যাশা আন্দোলনকারীদের প্রতি।



৫। বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক এবং শান্তি প্রিয়দের একাংশ উদ্ধত তরুনদের বুঝানোর চেষ্টা করছেন সহিংসতায় না জড়ানোর। নিঃসন্দেহে এটি ভাল উদ্যোগ। কারণ আমাদের দেশের কর্তাব্যক্তিরা দেশের তরুনদেরকে বলির পাঠা বানান বলে অভিযোগ রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে দেশের সাধারণ নাগরিকরা যেন কারো অনৈতিক আচরনে নিষ্পেষিত না হয়।



‘রস+আলো’র একটি কৌতুকের কথা বলে শেষ করবো।



প্রেমিকাঃ দেখো তো আজ আমাকে কেমন দেখাচ্ছে?

প্রেমিকঃ শুধু আজ কেন তোমাকে আমার সব সময়ই খুব সুন্দর লাগে।

প্রেমিকাঃ তাই?

প্রেমিকঃ আমার চোখ ফটোশপের মতো কাজ করে। এটি তোমার উঁচু দাঁত, মুখভরা আঁচিল, ভোঁতা নাক সে কিছুই আমাকে বুঝতে দেয় না। তাই সুন্দর লাগে আর কি।



দেশের চলমান পরিস্থিতিতে প্রেমিকের ফটোশপের চোখ দিয়ে আমিও দেখছি, দেশের সর্বত্র এখন বিজয় উৎসব চলছে। যুদ্ধাপরাধের অপরাধে সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দেওয়ায় সবাই পুলকিত। শোকর আলহামদুলিল্লাহ! আমরা বেশ ভাল আছি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫২

হায়রে দুনিয়া বলেছেন: হায়রে দুনিয়া :(

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:০৮

মো কবির বলেছেন: আপনার মতো ভাই আমারও একই কথা। কিন্তু কে শুনবে আমাদের মতো শক্তি হীন মানুষের কথা।



তাই আসুন আমরা সেই শক্তি অর্জন করে এই দেশে আনি সুষ্ঠ গণতন্ত্র,
আর এই দেশকে গড়ি সবুজে শ্যামলে।

যোগ দিতে পারেন আমাদের এই গ্রুপে



৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:১৯

মো কবির বলেছেন: """পেশায় ককসবাজারের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক। সুশিক্ষা বিতরণের মাধ্যমে আমাদের সন্তানদের মানবিক মানুষে পরিনত করা আমার ব্রত।""


ভাই, আপনাকে আমার লক্ষ কোটি সালাম।

এই দেশে সচেতন নাগরিক না হওয়ার কারন হচ্ছে শিক্ষা।
আজকের দিনে এই ধরণের শিক্ষক নেই, যে কিনা সুশিক্ষা বিতরণের
মাধ্যমে ছাত্রদের মানবিক মানুষে পরিনত করা আমার ব্রত পোষণ করে।
আমি এখন পর্যন্ত কোন শিক্ষক পাইনি, যে কিনা দিয়েছি কোন মানবিক গুণাবলীর শিক্ষা। তাই এক শিক্ষকে লিখেছিলাম, শুধু জ্ঞানই দিলে, দিলে নাতো বিবেকের শিক্ষা, কি নিয়ে আমি তবে ছড়াব জ্ঞানের আলো।

আর আজকের দিনে বেশীর ভাগ শিক্ষকই মুলত শিক্ষকতা করেন শুধু জীবিকা চালানোর জন্য, তাই তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই মনে করেন, দেন না কোন সঠিক শিক্ষা কিংবা নৈতিক শিক্ষা।

তাই আমিও আপনার মতো মহান উদ্দশ্যে শিক্ষক হতে চাই, আমি বর্তমানে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার শেষ দিকে আছি, পড়া শেষ করেই আমি এই জাতিকে সঠিক শিক্ষা দিয়ে আদর্শ মানুষ হিসিবে গড়তে তোলার সুযোগ নিতে চাই।

৪| ২৬ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৫২

পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন:
ওরে গেলমান রে, শিবিরের তোর হেরেমখানার সাথীগুলা আগুন দিবে, লুটপাট করবে, আর পুলিশ তাদের থামাইতে গেলে তোর লাগে !!!!! তোর ভাষায় আর যুক্তিতে তো মতিকন্ঠও ফেইল রে ।

আহা রে, তোদের পেয়ারা শিবিরের গেলমান নেতা কর্মীরা যখন শান্তি পুর্ন ভাবে পুলিশ কুপাচ্ছিল, বাকশালীদের বাড়িতে আগুন দিচ্ছিল, তখন হানাদার পুলিশ নির্মম গনহত্যা চালায়। আহা, দুক্ষে চোউক্ষে কান্দন আইসা গেল


:(( :((


আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.