নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রহস্য গল্প:মোবাইল টোন

১১ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬




হোক্কাইডো বিশ্ব বিদ্যালয় থেকেও বিদেশি গবেষক এবং ছাত্র ছাত্রীদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা আছে। ইরাকার জাপানি প্রফেসর বাসার আবেদন করার জন্য একটা ফরম হাতে দিল। আর কিভাবে ফরম পূরন করতে হবে তা শিখিয়ে দিল। ল্যাব থেকে বেশি দূরে নয়। সেই আবাসন এলাকা বাংলাদেশীদের কাছে সোয়েন বলে পরিচিত। ইরাকার স্বামী জাপান আসতে আরো দুই মাস লাগবে। এর মধ্যে বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাসাটা পেয়ে গেলে ইরাকার জন্য খুব ভাল হয়। বিশ্ব বিদ্যালয়ের এই বাসা গুলো দুই ধরনের । কাপল বাসা এবং ফ্যামিলি বাসা। ইরাকার যেহেতু সন্তান নেই তাই স্বামী নিয়ে কাপল বাসাতেই উঠতে হবে।খুব নিভৃত সবুজ ঘেরা অরন্যের মাঝে ইট পাথরে গড়া মানব বসতি। সোয়েনে সব বিশ্ব বিদ্যালয়ের গবেষক আর ছাত্র ছাত্রী। ইরাকার আরো দুজন বিদেশি ল্যাব ম্যাট ও সোয়েনের বাসায় উঠেছে। ভারতের গীতিকা আর চীনের ইউয়ান। তাদের সাথে খুব অল্প সময়ের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক তৈরী হয়েছে ।ভিসা জটিলতার কারনে ইরাকার স্বামীর জাপান আসতে আরো এক মাস লাগবে। মাঝে মাঝে যখন একা অনুভব করে তখন সোয়োনের দুতলা বাসার বারান্দায় বসে ইরাকা পাহাড় থেকে তুষাড় নামার দৃশ্য দেখে আপ্লুত হয়। গভীর অরন্যের এই দ্বীপ শহরে ইরাকা নিজের জীবনের ছন্দ খুঁজে। একঘেয়েমি প্রবাস জীবনের নানা টানাপোড়েনে যখন মন ভীষন ক্লান্ত তখন বান্ধবী ইউয়ান এবং গীতিকা যেন প্রতিদিনের জীবনে একটু বাড়তি আয়োজন। ল্যাব থেকে যে যার মতো সময়ে বাসায় ফিরলেও হীম শীতল সন্ধ্যায় এক কাপ কফি এক সাথে পান করা যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে।পাহাড় আর সমুদ্রের আবাহনে বেড়ে উঠা নি:সঙ্গ হোক্কাইডো দ্বীপটা যেন নিরন্তর প্রশ্নবোধক উপাখ্যান। কি কোন অনুক্ত বেদনার কান্নায় এই দ্বীপের আকাশটা আজ ভারী হয়ে আছে। এখানকার প্রকৃতি মুহুর্তে নানা রং পাল্টায়। স্বামী কাছে না থাকলেও ইউয়ান আর গীতিকাকে নিয়ে প্রাত্যহিক জীবন ভালোই কেটে যাচিছল। এপ্রিল মাস। চারিদিকে শীতের আর তুষাড়ের স্বার্থপর বিচরন। চাইনিজ বান্ধবী ইউয়ান এজমা রোগে আক্রান্ত। শীতের সময়টা তার প্রচন্ড কষ্টে কাটে। প্রায়ই ল্যাবে শ্বাস কষ্ট উঠলে তার মৃত্যু প্রায় অবস্থা হয়ে যায়। গীতিকা পাশের বিল্ডিংয়ে থাকলেও ইউয়ান আরো দুই বিল্ডিং পিছনে থাকে। যে বিল্ডিংটার পিছনে গবেষনাগারের গভীর বাগান। দিনে বেলায়ও ভয় লাগে।গীতিকার সাথে যোগাযোগটা বেশী থাকলেও ইউয়ানের সাথে তুলনামূলক কম হয়। সন্ধ্যা থেকে বাইরে প্রচন্ড তুষাড়পাত। সেই সাথে ঘূর্ণি বাতাস। চারিদিকের পরিবেশটা কেমন গুমোট ভাব। আবহাওয়া খারাপ থাকায় প্রতিদিনের মতো ইরাকার বাসায় কফি খাওয়ার পর যে যার রুমে চলে যায়। দেশে স্বামীর সাথে কথা বলার পর সে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে। ঠিক ভোর রাতের ঘটনা। বেশ অনেকক্ষন মোবাইল বেজেই যাচেছ। ঘুম ঘুম চোখে মোবাইলে দেখে গীতিকা কল করেছে। ফোনটা রিসিভ করতেই যেন গীতিকা কান্না শুরু করে।
তারপর বলে, “ইউয়ান আর নেই। তুমি তাড়াতাড়ি নিচে নেমে আসো। ”
ইরাকা কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই হম্বিতম্বি হয়ে দৌড়ে নিচে নামে। ইউয়ানের রুমে গিয়ে কলিংবেল বাজালেই ইউয়ান ঘুম চোখে বিরক্ত ভংগিতে বেড়িয়ে আসে। মৃত ইউয়ান কে জীবিত দেখে ইরাকার বুকের ভিতরটা আৎকে উঠলো। প্রচন্ড ভয়ে কুকড়ে গেল । সমস্ত শরীর হীম হয়ে গেল। হাত পা ধর ধর করে কাপতে থাকলো । ইউয়ান কে ঠিক বুঝাতে পারছিল না মোবাইল টোনের কথা। তাই গীতিকাকে মোবাইল করে।তুষাড়পাতের কারনে বাইরের তুষাড় স্তুপে অন্যরকম পরিবেশ হয়ে আছে। কিছুক্ষনের মধ্যে গীতিকাও এলো। এর মধ্যে পুরো ব্যাপারটা পরিস্কার হলো যে গীতিকা মোবাইল করেনি। ইরাকার মোবাইল চেক করে দেখা গেল আবহাওয়া পূর্বাভাস দিতে কয়েকবার সিটি সাপ্পোরো থেকে এলার্ট কল এসেছে।ইরাকা কিছুতেই নিজেকে বিশ্বাস করতে পারলো না। কিংবা বিশ্বাস করাতে পারলো। মুহুর্তে ইরাকা মূর্ছা গেল।একটা গভীর বিশ্বাসের রহস্যময় দ্বন্দ্ব মনের কোথাও দাগ কেটে দিল।ইউয়ান আর গীতিকা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। কি করবে বুঝতে পারে না। বাইরে তাকিয়ে দেখে আবার তুষাড়পাত শুরু হয়েছে।
ততোক্ষনে জাপানের আকাশে ভোরের সূর্য ও উঠতে শুরু করেছে। দিনের আলোয় মুছে গেছে অন্ধকার রাতের অন্ধকার গল্প।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৩১

টাইম টিউনার বলেছেন: ভালো লাগলো এই প্যারানরমাল গল্প। দুইবার পড়ার পর বুঝতে পারছি। নাম গুলা অনেক কটিন । আচ্ছা এর আগে পরে কি আরো কিছু আছে?

১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:১৯

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: টাইম টিউনার কষ্ট করে লেখাটা পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। নিয়ম অনুযায়ী ছোট গল্প তো এমনই হওয়ার কথা আগে পরে কিছু আছে কিছু নেই!!! চারপাশে আমি শুধুই প্যারানরমাল দেখি। পরবর্তী গল্পের জন্য আমন্ত্রণ রইল।

২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৫০

প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর গল্প। ধন্যবাদ

১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:১৫

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৪৭

রোদেলা বলেছেন: কেমন একটা রহস্যময় ব্যাপার,নাম গুলো ভালোই কঠিন।ভালো লেগেছে।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৫৩

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আমার গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ। নাম গুলো রিয়েল লাইফ থেকে নেওয়া। গল্পটাও অনেকটা জীবনেরর অভিজ্ঞতা থেকে নেয়া। ভাল থাকুন।

৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:০৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ''শেষ হইয়াও হইল না শেষ'' জাতীয় চমৎকার ছোট গল্পটা গতকাল পড়েছি , পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটি সেভ করেছি , ভুলে কমেন্ট করা হয়নি । অনেক শুভ কামনা ।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:১৯

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: অনেক দিন পর ব্লগে লিখছি।আপনাদের সুন্দর সুন্দর কমেন্ট আর ব্লগ মিস করেছি। আশাকরি নতুন গুনী জন নিয়ে গবেষনা করছেন। পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। ভীষন করে ধন্যবাদ

৫| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:১৩

Foe বলেছেন: ছবিটা চমৎকার।
গল্পে ব্যবহৃত নামগুলো যথেষ্ট কঠিন।
সবশেষে খুবই ভালো লেগেছে

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৪৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: ভালো লাগার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.