নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপন্যাস " মারিজুয়ানা" পর্ব ১ -নুরুন নাহার লিলিয়ান

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫০



আজকে শফিক সাহেবের জাপানি মেয়ে বাংলাদেশে ফিরবে। তাই সন্ধ্যায় ড: নেশাম এবং তার স্ত্রী কে শফিক সাহেবের বাসায় ইনভাইট করা হয়েছে। একুশ বছর বয়সী তার জাপানি মেয়ে এই বার সহ আরও চার বাংলাদেশে এসেছে। এর আগে তিন বার ঘুরতে এলেও এবারের ঘটনা আলাদা ।হয়তো এবার সে অনেকদিন থাকবে। আবার নাও থাকতে পারে। মেয়ের জন্য শফিক সাহেব সব করতে পারে। মেয়ে পাকা পোক্ত ভাবে ফিরবে বলে গত বছর তিনি ধানমন্ডি তিন হাজার স্কয়ার ফিটের খুব সুন্দর একটা ফ্লাট কিনেছেন। ধানমন্ডি লেক থেকে খুব বেশি দূরে নয়। গত সপ্তাহে নাতালি সুজুকির ফেরার কথা ছিল। হঠাৎ তার জাপানি মা মিকি সুজুকি অসুস্থ হওয়াতে ফিরতে পারেনি। গত সপ্তাহে আর ও একবার ইনভাইট করা হয়েছিল ডঃ নেশাম কে। কিন্তু তখন শফিক সাহেব সাতক্ষিরা গিয়েছিল। একদল জাপানি গবেষক কে নিয়ে। একটা বিশাল প্রজেক্টের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে শফিক সাহেব। সেই প্রজেক্টের কনসালটেন্ট ড: নেশাম। পুরো প্রজেক্টের চল্লিশ ভাগ শেয়ার শফিকের। বায়ান্ন বছর বয়সী শফিক সাহেব পাক্কা ব্যবসায়ী। তিনি জানেন কিভাবে মানুষের কাছে পৌছতে হয়। নিজের প্রয়োজন এবং ব্যবসায়িক লেনদেনটাও ভাল ভাবে সেট করেন।
গত সপ্তাহে সেই জাপানি দলের সাথেই একটা রেস্তরাঁয় নৈশভোজ ছিল। কিন্তু ঠিক সময়ে ঢাকায় না ফিরতে পারায় ডিনার আয়োজন বাদ করা হয়।
আজ সন্ধ্যায় তার বাসায় সব আয়োজন। এই দিকে ডঃ নেশামের স্ত্রী বিকেল থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করছেন। যতো যাইহোক ভিনদেশিদের সামনে তো আর যেন তেন ভাবে যাওয়া যায় না। তাছাড়া ওরা বেশ খুটিয়ে সব দেখে। সব মানুষের ভিতরে থাকা কমন সাইকোলজি।
ড: নেশাম এর মধ্যে দুই বার ফোনে কথা বলেছেন শফিক সাহেবের সাথে।যথা সময়ে স্ত্রী সহ হাজির হলেন। তাদের বাসায় লিফট থেকে নামার পর যা হলো তা ড: নেশামের স্ত্রীর চিন্তায় ছিল না।

লিফট খোলার সাথে সাথেই গুঞ্জন অবাক হল।লজ্জায় বরের হাতটা ছেড়ে দিল। দুটো পরিবার ফুলের তোড়া নিয়ে দাড়িয়ে আছে।তাদের দুজনকে অভ্যর্থনা জানাতে।দুটো মানুষকে অভ্যর্থনা জানাতে দুটো পরিবারের সাত জন লোক। আজকের মর্ডান সোসাইটির শো অফের মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি নাকি ভিন্ন সংস্কৃতির শৈল্পিকতা।হতে পারে কিছু একটা। ফেসবুকে এবং নেশামের মোবাইলে শফিক সাহেবের ছবি দেখেছে গুঞ্জন। তাই শফিক সাহেব কে চিনতে ভুল হয়নি। বাকিদের ঠিক বুঝতে পারছে না । প্রথমেই নাতালি নিজের পরিচয় দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল। তার পাশেই ছিপছিপে গড়নের শ্যামলা এক টগবগে তরুনী। চোখ দুটো বহমান নদী। তবুও কোথাও ভীষন ক্লান্তি। ব্লাক কালার টি শার্ট এর সাথে লং স্কার্ট। রুমের সামনের লাইটের আলোতে তার চেহারাটা বেশ উজ্জল মনে হচ্ছে। পুরো শরীরে দূর্দান্ত তারুণ্যের ঢেউ। মিষ্টি হাসি দিয়ে কেউ কিছু বলার আগেই বলল,” আমিই শফিক ভাবি। এই মিন মিসেস শফিক। আমার নাম জুয়ানা। মারিজুয়ানা! ” তিনি এক গুচ্ছ ফুলে সাজানো একটা মাঝারি তোড়া গুঞ্জনের হাতে দিল। তাকে ধন্যবাদ জানালেও ভিতরে ভিতরে গুঞ্জন ভিষন অপ্রস্তুত। কোন এক কারনে লজ্জিত।

বাম পাশের যে পরিবারটা দাড়িয়ে আছে ওনারা এখনই চলে যাবে। কারন আজ রাত আড়াইটায় রিপন সাহেবের শিকাগো যাওয়ার ফ্লাইট।রিপন সাহেব তার দুই বাচ্চা নিয়ে এর মধ্যে খাওয়া পর্ব সেরে নিয়েছেন। শুধু ড:নেশামের সাথে দেখা করার জন্যই সৌজন্যমূলক দাড়িয়ে আছেন। তারা কেউ আর রুমে ঢুকলেন না। লিফটের সামনে থেকে বিদায় নিলেন। এরপর নেশাম স্ব স্ত্রী ভিতরে ঢুকলেন। বেশ গুছানো পরিপাটি জীবন। শফিক সাহেব এবং মারিজুয়ানা তাদের বসতে দিয়ে ভেতরে চলে গেলেন।

নাতালি কাছাকাছি হাসি মুখে বসলেন। তারপর ভাঙা বাংলায় বললেন, ” আমি টোকিও মিটিং এর পর আপনার ছবি আংকেলের মোবাইলে দেখেছি। আপনি খুব সুন্দর।”
গুঞ্জন লজ্জা আর অবাক হয়ে বলল, ” আপনার বাংলা বেশ ভাল। আমি তো জাপানিজ ভাষা আরও মনে মনে গুছিয়ে এলাম। আপনার সাথে জাপানিজে কথা বলবো।অনেক কিছুই ভুলে যাচ্ছি।”
নাতালি হেসে দিয়ে বলল,” আমি চার বছর ধরে বাংলা শিখছি। সমস্যা নেই আমরা দুই ভাষাই কথা বলবো।”
মাঝখানে শফিক সাহেব এসে বললেন, ” ভাবি ওর সাথে ইংরেজিতেও কথা বলতে পারেন। ও ইংরেজি পারে। ”
জাপানিজরা ইংরেজি পারলেও বলতে চায়না। শফিক সাহেব ভিতরে গেলেন। নাতালি টুকটাক বাংলায় প্রশ্ন আর উত্তর দিয়ে যাচ্ছিল। দশ পনেরো মিনিট নাতালি সুজুকির সাথেই কথা হল। মারিজুয়ানা কে আর দেখা গেলো না।কেনো জানি এই মারিজুয়ানাকে নিয়েই তার অদ্ভুত কৌতুহল তৈরি হল।

চলবে…

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:০২

শামচুল হক বলেছেন: লিখতে থাকেন সাথে আছি।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:১৩

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ ।

২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২১

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: এই পর্ব পড়ে নিলাম পরের পর্বের অপেক্ষায়। লিখায় দাপট আছে সামনে কি খোঁজে পাই পড়েই মন্তব্য করবো যদি এমনি এমনি পড়েতে দেন। ভাল থাকবেন।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১০

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: উপন্যাসটা লেখা শেষ । এখন থেকে একটা করে পর্ব পোষ্ট দিব । আমার লেখার পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।

৩| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: মারিজুয়ানা কি বই আকারে বের হয়েছে? না হবে?

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩২

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: এর মধ্যে ছাপাখানায় গিয়েছে । সব কাজ চলছে । খুব দ্রুতই প্রকাশ হবে । ব্লগে সব পর্ব দিব না ।লেখা চুরির ভয় । প্রথম দিকের কয়েকটা পর্ব দিব । এটা অনেক বড় উপন্যাস ভাই । ধন্যবাদ ।

৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৮

স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: প্রথম পর্বটি ভাল লেগেছে পড়তে। :) সময় করে বাকি পর্বগুলো পড়বো কোন এক সময়। শুভ কামনা রইলো।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪১

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: ব্লগের ধারাবাহিক ভাবেই আছে । আগামী বই মেলায় শিখা প্রকাশনী থেকে আসছে বই আকারে । আমার লেখা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.