| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন অচেনা লেখক
পিতৃপ্রদত্ত নাম মেহেদী হাসান শামীম হলেও,আমি চাই মানুষ আমার নাম বা চেহারা থেকে না চিনুক..…। চিনুক আমার লেখায়।লোকে যেন না বলে ওই ছেলেটা বংশ ভাল বা দেখতে ভাল।আমি চাই লোকে বলুক,ওই ছেলেটা খুব সুন্দর লেখে। সৃষ্টি কর্তা আমায় সে সুযোগ দিয়েছে কিনা জানিনা।দোয়া করবেন। আমার ফেসবুক আইডি লিংক- facebook.com/
খুট করে একটা শব্দ হল!তাতেই ঘুমটা ভেঙে গেল কৌশিক আকন্দের।নেহাৎ অভ্যাস বশেই চট করে দৃস্টি চলে গেল বিছানার অপর পার্শ্বে,যেখানে অনিতা ঘুমায়।অনিতা তার স্ত্রী।বছর দুয়েক হল তারা বিয়ে করেছে।প্রথম বছরটা বেশ ভালভাবেই কেটে যায়।ঝামেলা শুরু হয় ২য় বছর থেকে।মানসিক রোগির মত আচরন শুরু করে।ধীরে ধীরে সেটা বাড়তে থাকে।ইদানিং ঘুমের মাঝেই হাটতে থাকে।আজকের ঘটনাটাও ঠিক তাই!
দুশ্চিন্তা এসে ভর করল তার মাথায়।দ্রুত বিছানা ছাড়ল সে।দড়জাটা ছিল হাট করে খোলা।অনীতা যে বাইরে আছে,এ থেকেই তা প্রমান হয়।বাইরে বেরিয়ে এলো কৌশিক।নিজেই নিজেকে সাহস জোগাচ্ছে এই মুহুর্তে।ভিষন চিন্তায় পড়ে গেছে সে।মেয়েটা তো অঘটন ঘটাতে ওস্তাদ।কি যে করে বসেছে কে জানে!
সে সন্দেহ করে যে,অনীতা আসলে ধীরে ধীরে হোমিসাইডাল ম্যানিয়াকে পরিনত হচ্ছে।ওকে সামলানো তার একার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব না।এমনকি শত চেষ্টা করেও অনীতাকে কোন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারেনি সে।অবশেষে মরিয়া হয়ে গোপনে সে পরিচিত একজন মানসিক ডাক্তারের সাথে আলোচনা করেছে।ভদ্রলোক বিদেশ থেকে সাইকিয়াট্রির উপর পড়াশোনা করেছেন।তারপর দেশে এসে চেম্বার খুলেছেন।এরই মাঝে তার বেশ নাম-ডাক হয়ে গেসে।এক বন্ধুর কাছে তার কথা শুনেই ছুটে এসেছে কৌশিক।খোলাখুলি সব কিছু জানিয়েছে।ভদ্রলোক কিছু পরামর্শ দেয়।সেদিনকার মতো বিদায় নেয় সে।এই তো মাত্র গতকালকের কথা সেটা।এই মুহুর্তে দরজার বাইরে অবস্থান করছে কৌশিক আকন্দ।করিডরের দুধারে দৃস্টি বুলালো আকন্দ।কিন্তু অনীতার ছায়াও দেখতে পেল না।অস্বস্তি ঘিরে ধরল তাকে।চোখ বন্ধ করে নিজেকে অটোসাজেশন দিল সে।তারপর এক পাশ ধরে হাটা আরম্ভ করল।কয়েক পার এগোবার পরই আজব একটা শব্দ কানে এলো বলে মনে হল তার।তবে শব্দটা এতই ক্ষীণ যে,ভালোভাবে বুঝতেও পারছে না।মনে হল গরু কোরবানীর পর গলা থেকে রক্ত বেরোবার সময় যেরুপ শব্দ হয়,ঠিক সেইরকম।কিন্তু এইরকম শব্দ হতে যাবে কেন?তাছাড়া,কেউ তো নেই।সারা বাড়ীতে সে,অনীতা আর একজন কেয়ার্টেকার থাকে মাত্র।ব্যাপারটা মন থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করল সে।কিন্তু পারল না।অকারনেই গা ছমছম করে উঠল।ভূতে বিশ্বাস নেই কৌশিকের।কিন্তু তবুও ভূতে বিশ্বাসী মানুষ ভয় পেলে যে অনুভূতি হয় ঠিক সেই রকম অনুভূতি হচ্ছে তার।
কেয়ারটেকারের রুমের সামনে চলে এল সে।উত্তেজিত না হলে দেখতে পেত,দরজার নিচ দিয়ে রক্তের সরু একটা ধারা বেড়িয়ে আসছে!
২
দরজার কবজা ধরে মোচর দিয়ে ঘুরে গেল চাকতিটা।খুলে ফেলল পুরোটা।কিন্তু সাথে সাথেই আঁতকে উঠে পিছিয়ে গেল ভিতরের দৃশ্য দেখে।কেয়ারটেকারের রুমটা যেন একটা কসাইখানায় পরিনত হয়েছে।লোকটার গলা প্রায় দুইভাগ করে ফেলা হয়েছে চরম নিশ্ঠুরতার পড়িচয় দিয়ে।খুব ধারাল কোন ছুরি দিয়ে করা হয়েছে কাজটা!
স্থবির হয়ে রইল কৌশিক কয়েক মুহুর্ত।তারপর চিৎকার করে উঠল।কিন্তু চিৎকারের বদলে গলা দিয়ে যে আওয়াজ টা বেরুলো,নিজের কানেই তা বেখাপ্পা শোনালো।তারপর সংবিৎ ফিরে পেতেই ঝট করে দড়জাটা লাগিয়ে দিল সে।তারপর দেয়ালের গায়ে হেলান দিয়ে জোরে জোরে দম ছাড়তে লাগল।একটু পরে ধাতস্থ হয়ে বিড়বিড় করে বলতে শুরু করল,'খুন হয়ে গেছে আকবর।হ্যাঁ হ্যাঁ খুন।জবাই করেছে তাকে কেউ।ওহ মাই গড......... অনীতা!নিশ্চয়ই অনীতা।আর কে হতে পারে!হোমিসাইডাল টেন্ডেন্সি তাহলে ভালোভাবেই ভর করেছে ওর উপর।আর কেয়ারটেকারকে যখন খুন করতে পেরেছে,তখন কি আমাকে................. ,'মেরুদন্ড বেয়ে কয়েক দফা ঘাম গড়ালো।কেপে উঠল কৌশিক।
হঠাৎ খুট করে একটা শব্দ হল পিছনে।পাই করে ঘুরে দাড়াল সে।কিন্তু খোথায় কি?সম্পুর্ন করিডর ফাকা।কারও ছায়া পর্যন্ত নেই!
শব্দের উৎসের দিকে হাঁটা দিল সে।থেমে দাড়াল মাঝপথে।যেন আঠা দিয়ে মেঝের সাথে তার পা দুটিকে আটকে দিয়েছে কেউ!
৩
সামনে দাড়িয়ে আছে অনীতা।এলোমেলো চুল।চোখে বুনো দৃস্টি।তাকিয়ে আছে তারই দিকে।ভয় পেয়ে গেল কৌশিক,যখন দেখল তার দিকে ধির পায়ে এগিয়ে আসছে অনীতা।হাতে একটা রক্তমাখা ছুরি বাগিয়ে ধরেছে।
আতঙ্কে হাত-পা অসাড় হয়ে আসতে চাইল কৌশিকের।মনে পড়ল কেয়ারটেকারের মৃতদেহর কথা।এই ছুরিটা দিয়েই তো খুন করেছিল তাকে অনীতা।কৌশিকের দৃস্টি এই মুহুর্তে নিবদ্ধ রয়েছে অনীতার ছুরি ধরা হাত এবং ধিরে এগোনো পায়ের দিকে।তাল মিলিয়েই যেন সেও পিছিয়ে যেতে শুরু করল।কিন্তু ক্রমশ এগিয়ে আসছে অনীতা।
নাহ!আমার আর কোন আশা নাই!ভাবল সে।তার কাছ থেকে যখন মাত্র ৫ হাত দূরে,ছুরিটা বাগিয়ে ধরে ওর দিকে ঝাপ দিল অনীতা।মরিয়া হয়ে ডানদিকে সরে গেল কৌশিক।পুরোপুরি এড়াতে পারলনা।গলার একপাশের চামরা কেটে নিয়ে সরে এল ছুরিটা।দুজনেই তাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পড়ে গেছে।ধস্তাধস্তি শুরু হল দুজনের মাঝে।কিন্তু উন্মাদিনীর কাছে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হল কৌশিক।মরার আগে তার শেষ কথাটি হছে-'অনীতা তুমি'!
২|
২০ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩
একজন অচেনা লেখক বলেছেন:
![]()
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৪০
নিরপেক্ষ মানুষ বলেছেন: ++