নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো হারিয়ে যাই ওই অসীম দূরের তারা ভরা আকাশে......

চাদের বুড়ি

খুব সাধারণ এবং অলস একজন মানুষ আমি। জীবনের জটিলতা একদমই বুঝি না। খাই দাই, ঘুমাই আর আড্ডা মারি - এভাবেই তো জীবন কেটে যাচ্ছে বেশ।

চাদের বুড়ি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সগিরউদ্দিন নামা - ০১ (রম্য পোস্ট)

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৮

নাম সগিরউদ্দিন। বয়স ৩৮। পেশায় ভিক্ষুক। কমলাপুর, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, মালিবাগ, মৌচাক এলাকা হচ্ছে তার "এরিয়া"।

আজ সকালে উঠে কোনও এক অজানা কারণে সগিরউদ্দিনের মন বড়ই আনন্দিত। আনন্দের কারণ সে নিজেও জানে না। তার কেবলই মনে হতে থাকল আজ "খেপ" মারলে ইনকাম ভালই হবে।

যেই ভাবা সেই কাজ। হালকা কিছু খেয়ে সে কমলাপুরের বস্তি থেকে থালা হাতে বেরিয়ে পড়ল। হাঁটতে হাঁটতে মালিবাগ এসে দেখে বিশাল জ্যাম। এক প্রাইভেট কারের সামনে গিয়ে সে মুখ যতটা সম্ভব করুন করে বলে, "স্যার, ১০ টা টাকা ভিক্ষা দিবেন? চা খামু.।"

ঃ চায়ের দাম তো ৫ টাকা, ১০ টাকা চাও ক্যান?

ঃ স্যার, গার্লফ্রেন্ডও খাইব।

ঃ ও, ফকির হয়ে গার্লফ্রেন্ডও বানাইছ?

ঃ না স্যার, গার্লফ্রেন্ডই ফকির বানাইছে। :P

এরপর সেই সাহেব যেই "লুক" দিলেন তাতে সগিরউদ্দিনের আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকার সাহস হল না। অগত্যা টাকা না নিয়েই তাকে সরে আসতে হল।

এরপর সে ধরল এক পথচারী কে, "স্যার ২ টা টাকা ভিক্ষা দেন"

ঃ ২ টাকা নাই।

ঃ তাইলে ১ টাকা দেন।

ঃ ১ টাকাও নাই।

এইবার সগির উদ্দিনের যথেষ্ট রাগ হল। সে বলে বসল, "তাইলে দাঁড়াইয়া আছেন ক্যান? আমার সাথে নাইমা পড়েন ।":)

অগত্যা এখান থেকেও তার কোনও ইনকাম হল না। এরপর তৃতীয় আরেকজনের কাছে ভিক্ষা চাইতেই লোকটি বলল, "ওই মিয়া, আগে না তোমারে গুলশান এলাকায় ভিক্ষা করতে দেখতাম, এখন এই জায়গায় ভিক্ষা কর কেন?"

লোকটির কথা শুনে তার যথেষ্ট বিরক্তি লাগল। আগে গুলশানে ভিক্ষা করত বলে কি এখন মালিবাগে ভিক্ষা করা যাবে না? সে বিরক্তি ভরা কণ্ঠে উত্তর দিল, "ওই জায়গা মাইয়ার জামাইরে যৌতুক দিয়া দিছি।" ;) তবে এইবার তার ২ টাকা ইনকাম হল।

রাস্তায় দাঁড়িয়ে এবার সে পরবর্তী "শিকার" খুঁজতে লাগল। এক বৃদ্ধ দাড়িওয়ালা লোককে হেঁটে যেতে দেখে সে এগিয়ে গিয়ে করুন কণ্ঠে ভিক্ষা চাইল। সগির উদ্দিনকে দেখে লোকটির বড় মায়া হল। সে তাকে বলল, "তুমি যদি ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দাও তাহলে আমি তোমাকে প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে দিব।"

টাকার অঙ্ক শুনে সগির উদ্দিন জবাব দিল, "আপনে যদি আমার সাথে ভিক্ষা করেন তাইলে আমি আপনেরে প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা কইরা দিমু।" এই বলে সে হনহন করে হাঁটতে শুরু করে। যেই লোক এর ভিক্ষুক সম্প্রদায় এর ইনকাম সম্পর্কে কোনও ধারনা নাই তার কাছ থেকে ভিক্ষা নেওয়াও প্রেস্টিজের ব্যাপার। X(

হাঁটতে হাঁটতে সগির উদ্দিন ভাবতে থাকে সকালে উঠে দিনটাকে যত ভালো ভেবেছিল, দিনটা আসলে তার জন্য তত ভালো না। সে তখনকার মত ভিক্ষায় ইস্তফা দেওয়াটাকেই ভালো মনে করল। রওনা দিল তার "আস্তানা" কমলাপুরের বস্তির দিকে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৪

রায়ান ঋদ্ধ বলেছেন: ভালো লেখা। তবে পুরো লেখাটা ইউনিক হলে ভালো লাগতো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.