নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেশীও না কমও না

ওমর মোহাম্মদ ফারুক

বেশীও না কমও না

ওমর মোহাম্মদ ফারুক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হঠাৎ নিয়মিত মুসূল্লী ও সাবধানতা

০২ রা মে, ২০১৯ রাত ১২:১০

বিশ্বাসীদের প্রিয় স্থান মসজিদ। ইবাদাতের জন্য, নত হওয়ার জন্য, নিরাপদ থাকার জন্য। মসজিদবাসীরা নরম দিলের হয়। একের সাথে অপরের অঘোষিত এক বন্ধুত্ব গড়ে উঠে প্রতিদিন ৫ বার দেখা ও পাশাপাশি দাড়িয়ে নামাজ পড়ার মাধ্যমে। একে অপরকে দেখলে সিগ্নন্ধ হাসি ইদের চাঁদের মত অবওবে ফুটে উঠে। মসজিদ ছাড়াও কোথায় দেখা হলে মনে হয়, উনাকে একটু সাহায্য করি, উনাকে কিছু খাওয়াই, উনি কি কি বই পড়েন একটু জানি। এই সম্পর্কের একটাই উদ্দেশ্য। আল্লাহর সন্তুষ্টি। আমি যে এলাকায় বড় হই সে এলাকার মসজিদের কিছু মুসুল্লির সাথে চোখাচোখি হলে শুধু একটু মুচকি হাসতাম। উনারাও হাসতে আমিও হাসতাম। তখন উনারা অনেক বড় আমি অনেক ছোট। আমরা ওই এলাকা ছেড়ে চলে আসলাম। আমি বড় হয়ে গেলাম। একদিন রাস্তায় ওই মুসূল্লীদের একজনের সাথে দেখা। সেই সিগ্নন্ধ হাসি! কেমন আছি, এখন কি করি, দোয়া চেয়ে বিদায়। হৃদয় ছোঁয়া পবিত্র সম্পর্ক!

কিছুদিন আগে একজন নিয়মিত মুসূল্লীর উপস্থিতি টের ফেলাম। দেখলে সালাম দিয়ে হাসি বিনিময় হয়। নামাজের পর মসজিদের সামনে দাড়িয়ে কথা-বার্তা বলেন। এনার উনার খবর নেন। হঠাৎ করে উনার অনুপস্থিতিও টের ফেলাম। সবই স্বাভাবিকতা। হঠাৎ একদিন আদনান ভাই জিজ্ঞাসা করলেন, উমুক ভাইয়ের সাথে কি আপনার যোগাযোগ আছে? উনার নাম আমি জানতাম না। অবয়বের বর্ননা দেওয়ার পর বুঝলাম উনি উমুক। আচ্ছা কি হয়েছে? আদনান ভাই বলল, না এম্নি। জিজ্ঞাসা করলাম, লেনদেন আছে নাকি? বলল, হা। চলুন বর্ণনা দেওয়া যাক

উমুকের পরিচয়: সেনা কল্যান সংস্থায় কাজ করে (মিথ্যা কথা)। রাস্তার ওইদিক দিয়ে উনাদের অফিস। পায়জমা, কলার ছাড়া পাঞ্জাবী, মুখে যথেষ্ট দাড়িঁ, মুচ ছোট ছোট, মাথায় বিতর্কহীন টুপি। কাতারের প্রথম দিকে নামাজ পড়েন। দেখতে নিষ্পাপ মনে হয়। সৌদি প্রিন্স সালমানের মত। সবার সাথে সহজে মিশতে পারেন। দায়িত্ব নিয়ে আগ বাড়িয়ে খোজ খবর নেন।

ঘটনা ১: বিনা ঘুষে এক মুসূল্লী ভাইকে চাকুরি দিতে চাইলেন। পিয়নের চাকুরি। সরকারি। উমুক বললে একেবারে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। দশ হাজার টাকার মত লাগবে। মুলূল্লী দিলেন। মুসূল্লী ভাইয়ের খাবারের দোকান ছিলো। খেয়েছে, দিয়েছে। অনেক বাকি করেছে। পরে উমুককে আর খুজে পাওয়া গেলো না।

ঘটনা ২: এক মাদ্রাসার ছাত্রের অসুস্থার কথা শুনে ওর মাদ্রাসায় ফলমূল নিয়ে দেখতে গেলেন। ওই ছাত্রকে দেখিয়ে উচ্চবিত্ত মানুষ থেকে অনেক টাকা নিয়েছেন।

ঘটনা ৩: উমুক ফজরের নামাজের আগে ফোন দিয়ে অন্যদের জাগিয়ে দিতেন। মানুষেরা তাকে মিথ্যা সমস্যা থেকে উদ্ধার করার জন্য বিশ্বাস করে ঋণ দিলেন। উনি হারিয়ে গেলো।

ঘটনা ৪: সাত আট দিন ভাড়া বাসায় থেকে জমিদারকে পুরা মাসের ভাড়া দিয়ে চলে আসলেন। জমিদারের মন গলে গেলো। পরে জমিদার থেকেও টাকা নিলেন এবং হারিয়ে গেলেন।

সব ঘটনা আমার জানা নাই। এই ঘটনাগুলো জানার পর আবু লুল’র কথা মনে পড়ছে। ফজরের নামাজ পড়ার সময় হযরত ওমর রা: কে নামাজরত অবস্থায় ছুরি মেরে হত্যা করেছিলেন। উনিও প্রথম কাতারের মুসূল্লী ছিলেন। মনে পড়ছে ৬ষ্ঠ হিজরীতে হুদাইবিয়ার সন্ধির আগে বিশ্বনবী সাঃ এর হাতের উপর হাত রেখে প্রায় ১৪০০ শত সাহাবীর ঐতিহাসিক বায়াতের কথা। ঐতিহাসিক এই শপথের নাম ‘বাইয়াতে রিদওয়ান’। ইতিহাস থেকে জানা যায় এখানেও একজন উমুক উটের পেছনে লুকিয়ে ছিলো যিনি বাইয়াত গ্রহন করেন নাই। যেখানে অনেক সাহাবী দুইবারও বায়াত নিয়েছেন। যাদ বিন কায়েস! এই মুনাফিক সম্পর্কে সূরা তাওবার ৪৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে। মুনাফিক দেখতে হুবুহু মুমিন এর মত। আল্লাহকে বিশ্বাস করার জন্য আসমান দেওয়া হয়েছে, আলোর কণা/তরঙ্গ দেওয়া হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে বিশ্বাস করার জন্য উম্মী বলে আল কোরআন দেওয়া হয়েছে। দেখেই কাউকে বিশ্বাস করা উচিত না, সর্বউচ্চ ভালো আচরণ করা যেতে পারে। ভালো আচরণ বিশ্বাসীরাও করতে পারে অবিশ্বাসীরও করতে পারে। কিন্তু বিশ্বাস কেবল বিশ্বাসীরাই করবে। মুনাফিক তারা যারা আমাদের থেকে অমূল্য সম্পদ ‘খেলাফত’ সরিয়ে দিয়েছে। ৪/৫ লাখ টাকা এ আর এমন কি!

এই বাংলায় ধর্ম বিক্রি করা সহজ। কারণ আমরা ধর্মপ্রাণ। প্রাণের এই ধর্মের ঘ্রাণ প্রাণে থেকে প্রাণে ছড়িয়ে দিতে সজাগ থাকুন, সচেতন থাকুন! ভয় পাবেন না, ভয় দেখাবেন না!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৯ রাত ৯:২১

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আপনার কথার সাথে সম্পূর্ণ একমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.