![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গতকাল শিক্ষা ব্যাবস্থার একটা দিক নিয়ে আলোচনা করেছিলাম।আজ আরেকটি দিক নিয়ে আলোচনা করতে চাচ্ছি।
নির্মম হলেও একটা কথা ধ্রুব সত্য যে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা একটা বীজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে যার কারণে সেই বীজের ফসল হয়তো নষ্ট নয়তো চিটা হচ্ছে।
কোচিং ব্যাবসায়ি আর সামাজিক রাষ্ট্রীয় সিস্টেমের পাল্লায় পরে বাধ্য হয়ে বলা লোকেরা ছাড়া বাকী সব দার্শনিক থেকে শুরু করে সকল জ্ঞানী গুণী মানুষ যখন শিক্ষাকে সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের উপকরণ হিসেবে ধরে দেহ ও মনের বিস্তৃতি লাভের পথ বলেছে তখন বাংলাদেশের মত কয়েকটি দেশে শিক্ষাকে চাকরীর ব্যাজারের চাবি বলা হয়।
অথচ শিক্ষা শব্দটির মুল এর অর্থও কিন্তু বিকশিত করার পন্থা অন্তরায় হওয়ার প্রাচীর বলা হয় নি।
Joseph T. Shipley তাঁর Dictionary of word Origins এ লিখেছেন, Education শব্দটি এসেছে ল্যাটিন Edex এবং Ducer-Duc শব্দগুলো থেকে। এ শব্দগুলোর শাব্দিক অর্থ হলো, যথাক্রমে বের করা, পথ প্রদর্শন করা। আরেকটু ব্যাপক অর্থে তথ্য সংগ্রহ করে দেয়া এবং সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করে দেয়া।
বিখ্যাত শিক্ষাবিদ হার্বার্ট বলেছেন : শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে শিশুর সম্ভবনা ও অনুরাগের পূর্ণ বিকাশ ও তার নৈতিক চরিত্রের প্রকাশ।
অথচ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা এমন এক জগদ্দল পাথর যা প্রতিভা আর মেধাকেই গলা টিপে হত্যা করছে যার কারণে চাকুরীর প্রতিযোগিতার বাজার চড়া হলেও মেধাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের কারিগরের যথেষ্ট অভাব।
নিজের জীবনে চিত্র শিল্পী হতে চেয়েছিলাম।কিন্তু ধর্ম দোহাই আর বাজার গরম সাবজেক্টের ঝনঝন শব্দে আমার স্বাধীনতার পায়ে বেড়ী পড়লে ছেড়ে দে মা কাইন্দে বাঁচি করতে করতে “wasting of time” এর আওয়তায় কয়েকটা সার্টিফিকেট কিনেছি কিন্তু তৃপ্তি আর সার্টিফিকেটের উপকারিতা দুইটাই আমার জীবনে শূন্য।
তেমনি ইউকে তে থাকা অবস্থায় খুলনার একটি ছেলের সাথে কথা হয়েছিল যার বাবা ডাক্তার এবং ছেলেদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল ডাক্তার হওয়ার বোঝা।ছেলেরা এতো ভালো ক্রিকেট খেলতো এবং সাকিব আল হাসান ছিল তার বড় ভাইয়ের বন্ধু।তারা দুইজনেই দলে চান্স পেলেও সাকিব তখন পেতো না।কিন্তু বিধি বাম।বাবা বড় ভাইয়ের পিঠের উপর ব্যাট ভেঙ্গে ঘর থেকে বের ক্রে দেয় এবং বড় ভাই দুই বছর বাড়ির বাইরে থাকে,আর ছোটটা মার খেতে খেতে চালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত ইউকে তে এসে কমপক্ষে বাবার অত্যাচার থেকে বাঁচে।
সবাই যদি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যায় তবে নজরুল বা বিল গেটস কারা হবে!প্রতিটা ছোট্ট মনের সুপ্ত বাসনাই যদি শিক্ষার মাধ্যমে বিকশিত করা না যায় তবে সেই শিক্ষা সিমপ্লি ওয়েস্টিং অব টাইম।সেই শিক্ষা বিকাশের না বরং খুনি শিক্ষা।
রেজাল্টের জন্য আত্মহত্যার পথ দেখায়,পাশের বাড়ির ছেলের জন্য সারা জীবন অন্য যোগ্যতা সত্ত্বেও হিনমন্য হয়ে থাকতে থাকতে কাপুরুষ হয়ে যেতে হয়।
তার উপর জোর করে রসায়ন পড়ে যদি ব্যাংকারই হতে হয় বা সাহিত্য পরে যদি কম্পিউটারে শুধু হিসাব নিকাশ করতেই হয় তবে শিক্ষা ট পূরাই ভাঁড়ামি হয়ে যায়।
আইনস্টাইন বলেছিলেন,”যা বইয়ের পাতা উলটালেই পাওয়া যায় তা মুখস্ত করতে যাব কেন! “ওয়েস্টিং অফ টাইম”
তাই যদি হয় তবে স্লাইড ক্যালিপার্স,টাইট্রেশন এসব মাথা গরম করা কিছু পড়াশোনা পড়ে শেষ পর্যন্ত ব্যাঙ্কে ২/৩ যোগ করার চাকুরী নিলে নির্দ্বিধায় এ কথাই বলাই শ্রেয় যে পিছনের পড়াশোনার একটা অংশ স্রেফ সময়ের অপচয় বৈ আর কিছু ছিল না।
এতে জীবন থেকে মূল্যবান সময় যেমন চলে যাচ্ছে তেমনি আর্থিক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।যার প্রভাব ব্যাক্তি নিজের উপর,পরিবারের উপর তদুপুরি দেশের উপরও পড়ছে।
থ্রি ইদিয়েট যারা দেখেছেন তারা সমস্ত বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝলেও সন্তানের ইচ্ছাকে বেড়ী লাগিয়ে দিয়ে দিনশেষ সেই তোতা পাখির ঘণ্টাই বাজিয়ে দেয়া হয়।
এরপর অকর্মণ্য ভাদাইম্মা একটা তরুণ গোষ্ঠী দেখতে কেমন হয় তা বাংলাদেশের দিকে তাকালেই সহজে এর সার্কাস আনাচে কানাচে দেখতে পাওয়া যায়।টাকা আর সময় দুইটাই নষ্ট করে দেশ আর দশের উন্নয়ন থমকে দিয়েছে সেই বাবা ছেলের “শ্যাম কুলের ঠুকাঠুকিতে”
(চলবে)
২০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৯
চির চেনা বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২০ শে মে, ২০১৭ রাত ১১:৪৮
আখেনাটেন বলেছেন: প্রথমেই পেটের চিন্তা করে দেশের মানুষ চাকরি নির্ভর পড়াকেই প্রকৃত শিক্ষা হিসেবে মেনে নিয়েছে। এত সহজে এর থেকে পরিত্রাণ নেই।
২৪ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪১
চির চেনা বলেছেন: এটাই আফসোসের বিষয়,অথচ সরকারের উপর পর্যায়ের অনেকেই আছে যারা বাইরে থেকে পড়াশোনা করে গেছেন বা পড়াশোনা সম্পর্কে জানেন।
কিন্তু তারা দেশে গিয়ে এসব কেন ভুলে যায় !!!
৩| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬
চির চেনা বলেছেন: একঃ
জেএসসিতে ৪.৮৬ পয়েন্ট পেয়ে আইনস্টাইন রহমান দৌড়ে
গেল তার মায়ের কাছে, মা, মা আমি একটুর জন্য GPA- 5
পাইনি। ৪.৮৬ পেয়েছি ! মায়ের হাতের কাছে একটা
ঝাটা ছিল, সেটা ছুড়ে মারতে গিয়েও থেমে গেল, শুধু
বলল, দূর হ হতভাগা। তুই জিপিএ- ৫ পাস নি। পাশের
বাসার ভাবিকে আমি মুখ দেখাব কি করে?এক বুক হতাশা
নিয়ে আইনস্টাইন মায়ের সামনে থেকে সরে আসলো।
বসে থাকলো গিয়ে গাছতলায়।
.
আইনস্টাইন এখন ক্লাশ নাইনে ভর্তি হবে। সে সাইন্স
নিয়ে পড়তে চায়। স্বপ্ন দেখে পরবর্তীতে বুয়েটে ভর্তি
হওয়ার। তার স্বপ্ন বড় একজন বিজ্ঞানী হবে। কেননা
ছোটবেলা থেকেই তার গবেষনার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ।
কিন্তু তার স্বপ্নে ছেদ ঘটালো তার বাবা। বাবা বললো,,
না না, তা হবার নয়। তুমি সাইন্স নিয়ে এগোতে পারবে
না। কারন তুমি জিপিএ- ৫ পাও নি। আইনস্টাইন GPA-5 পায়
নি বলে তাকে আর্টস নিয়ে পড়তে হলো।
আইনস্টাইন এখন জীবনানন্দ দাসের নিদ্রালু টাইপের
কবিতাগুলো পড়ে, আর ঘুমায়। তার কাছে গল্প,কবিতা,প্রব
ন্ধ এসব বিরক্তিকর লাগে। কেননা সে করতে চায় বড় বড়
অংক। করতে চায় রিসার্চ।
.
দুইঃ
সেক্সপিয়ার চক্রবর্তী জেএসসিতে টেনে টুনে এ
যাত্রায় GPA-5 পেয়ে গেল। সে কোনদিনই এই পরীক্ষা-
টরিক্ষা নিয়ে সিরিয়াস না। পরীক্ষার রেজাল্ট
দিয়েছে, কিন্তু সেদিকে তার কোন খেয়ালই নাই। এখন
সে হোমার, জন মিল্টন, দস্তয়ভস্কি, লিও তলস্তয়,
নিকোলাই গোগলের একগাদা বই নিয়ে গাছতলায় বসে
সাহিত্য চর্চায় ব্যাস্ত । সাহিত্যে তার ব্যাপক আগ্রহ।
সে বড় হয়ে নাম করা একজন লেখক হতে চায়। ইতিমধ্যে
সেক্সপিয়ার ফেসবুকে একটা পেজ খুলেছে। নাম
দিয়েছে "হ্যাভেন সাহিত্য সংঘ"। সেখানে সে মাঝে
মাঝে কবিতা, ছোটগল্প লিখে পোস্ট করে।
.
সেক্সপিয়ার এখন ক্লাশ নাইনে ভর্তি হবে। সে আর্টস
নিয়ে পড়তে চায়। তার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়বে। লেখালেখি করে এক সময় দেশের খ্যাতিমান
একজন কবি সাহিত্যিক হবে। কিন্তু তার লালিত স্বপ্নটির
উত্তপ্ত ছাইচাপা ঘটলো তার বাবার ধমকে। বাবা বলে
রেখেছে, সাইন্স নিয়ে পড়তেই হবে। তোকে ডাক্তার
বানাব। অনেক বড় ডাক্তার। অতঃপর পিতৃবাক্য
শিরধার্য্য মান্য করে সেক্সপিয়ারকে সাইন্স নিয়েই
পড়তে হলো। সে এখন গোমড়া মুখো বিশ্রী সব হায়ার
ম্যাথ সলভ করে। রসায়নের লম্বা লম্বা বিক্রিয়া সংকেত
মুখস্ত করে। আর সারাক্ষন স্বপ্নভঙ্গের অসহ্য অস্থিরতায়
ভোগে।
.
কয়েকবছর পরঃ
আইনস্টাইন, আর সেক্সপিয়ার মাস্টার্সে পড়ে। কোথাও
চান্স না পেয়ে দুজনই গুলিস্তানের "গোলাপ শাহ ডিগ্রি
কলেজে" ভর্তি হয়েছিল। সেক্সপিয়ার চক্রবর্তীর বাবার
স্বপ্ন পূরন হয় নি। কেননা সে মেডিকেলে কোথাও চান্স
পায় নি। আইনস্টাইন রহমানের মায়ের স্বপ্নও পূরন হয় নি।
কারন সেদিনের পর আইনস্টাইন আর কোনদিন ভাল
রেজাল্ট করে নি। লেখাপড়াটা চালিয়ে এসেছে স্রেফ
ইচ্ছার বিরুদ্ধে।
সেক্সপিয়ারের এখন আর লেখালেখিতে আগ্রহ নেই।
আইনস্টাইনও এখন ক্রিয়েটিভ সব অংক করে না। এখন
সেক্সপিয়ার আর আইনস্টাইন , ওরাকল বিসিএস, নতুন
বিশ্ব, Mp3, প্রফেসরস ব্যাংক জব নামক বস্তাপঁচা বই
কাধে নিয়ে ভোরবেলা শাহবাগ পাবলিক লাইব্রেরীর
সামনে গিয়ে লাইনে দাড়ায়। লাইব্রেরীর ভিতরে গিয়ে
মুখস্ত করে, হংকংয়ের রাজধানীর নাম কি? উগান্ডার
মুদ্রার নাম কি? ইত্যাদি ইত্যাদি। কারন তাদের এখন
দরকার একটি চাকরি। আর চাকরি পেতে হলে এসব মুখস্ত
করতে হয়।
একটি চাকরি নিয়ে এই বিরক্তিকর পড়ালেখা নামক
আপদটাকে বিসর্জন দিতে চায়। যোগ দিতে চায় দেশের
আমলাতান্ত্রিকতায়। এতদিন পড়ালেখা করেছে, একটি
চাকরির জন্য, কিছু শেখার জন্য বা জ্ঞানার্জনের জন্য
নয়।
.
অবশেষে অনেক চাকরির পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ
মোকাবেলা করে আইনস্টাইন এবং সেক্সপিয়ার দুজনেই
কেরাণী পোস্টে চাকরি পেল। দুজন উদীয়মান বিজ্ঞানী
এবং লেখক রুপান্তরিত হলো চাকরে। এবার শিঘ্রই বিয়ে
করবে। শুরু হবে এই বেতন দিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার
অারেকটি সংগ্রাম।
বিঃদ্রঃ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কারনে আইনস্টাইন
রহমান এবং সেক্সপিয়ার চক্রবর্তীর স্বপ্নগুলো তাদের
সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
অতঃপর এই ঘূণে ধরা শিক্ষা ব্যবস্থার ফলেই সূচনা ঘটল
একটি অাধুনিক দাস তান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার।
অপমৃত্যু ঘটলো উদীয়মান বিজ্ঞানী আইনস্টাইন রহমানের
এবং সাহিত্যিক সেক্সপিয়ার চক্রবর্তীর।
(কপি পোষ্ট)
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: পুরো লিখাটাই ভাল লেগেছে।