![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরে দিমুনে !!!
ভালোবাসার প্রকাশভঙ্গী কতভাবে হতে পারে? কোটি উত্তরের একটি হলো ‘ভোজন’। তাও সে ভোজন যদি হয় আদিরসাত্মক। ১৬ সালে সাহিত্যে ম্যানবুকার পুরষ্কার পেয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইন হান কাং। তার উপন্যাস ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’-এর প্রধাণ চরিত্র আকস্মিক নিরামিষভোজী হয়ে পড়েন। দক্ষিণ কোরিয় রীতির একদম বিপরীত। আর সেইসাথে চরিত্রের শারীরিক, মনস্তাত্ত্বিক ও আধ্যাত্বিক যে রূপান্তর ঘটে তা নিয়েই এগিয়ে যায় উপাখ্যান। সেক্ষেত্রে ছোট্টশহর গোহাটিকে কেন্দ্রে রেখে বানানো ‘আমিষ’ সিনেমায় পরিচালক ভাষ্কর হাজারিকা তুলে এনেছেন একদম বিপরীত গল্প। যে গল্প ভালোবাসার যে গল্প ভয় ও ভোজনের
আমিষের শুরুটা সাধারণ ছেলে আর মেয়ের দেখা আর পরিচইয়ের মাঝেই থাকে। নির্মালি পেশায় চিকিৎসক। স্বামী-সন্তান নিয়ে নির্মালি বেশ ভদ্রস্থ সংসারী মানুষ। আর সুমন উত্তরপূর্ব ভারতের মাংস খাওয়ার রীতিনীতি নিয়ে পিএইচডি গবেষণায় ব্যস্ত। সুমনের গবেষণার বিষয় যেমন আশ্চর্যান্বিত করে। তার শখও আশ্চর্য হবার মতোই। মিটক্লাব যেখানে সুমন ও তার বন্ধুরা নানান মাংসের স্বাদ আস্বাদনে ব্যস্ত থাকে।
এই দুই নরনারীর দেখায় গল্প এগোয়। আমিষের শ্লেষ্মা আর আসামের সবুজ কুয়াশায় দিক হারায় দুই ছায়াছন্ন চরিত্র। মানুষ মানুষকে টানে নিজ নিজ দক্ষতায় পরিবেষ্টিত আন্তরিকতা দিয়ে। যেমন আমিই লোকের সাথে সবচেয়ে জমিয়ে গল্প করতে পারি বই, সিনেমা, ইতিহাস নিয়ে। তেমনি সুমনও নির্মালিকে আমিষের গহ্বরে নিয়ে আলোচনা করে। সেইসাথে নিত্যনতুন আমিষের অমৃত গ্রহণ। বুনো খরগোশ থেকে শুরু করে বাদুড়। নদীর পাড়ের মাছ থেকে শুরু করে জোঁক আর গান্ধীপোকার আলোচনা এগিয়ে যায় সেলুলয়েডের কিসসায়। উঠে আসে আসাম, মেঘালয়, গোহাটি, কাছাড়। মানুষের নিত্য রীতির গল্পেরা বাঙ্ময় হয় বর্ষার বিকেলের মতো।
সুমনের সারল্য আর নির্মলির সামাজিক সীমাবদ্ধতায় প্রগাঢ় হতে থাকে অনুভূতি। নির্মলিকে ছুঁতে চেয়েও যেন সে পারে না। প্রতিদিন তাকে নিজে হাতে নতুন নতুন মাংসের পদ রান্না করে দিয়ে যেন সেই অপূর্ণ ভালোবাসায় সান্ত্বনা খুঁজে পেতে চায় সুমন। এইভাবে নিজের প্রেয়সীর জন্য নতুন ধরনের মাংস খুঁজতে গিয়ে একদিন তার মাথায় একটা অদ্ভুত পৈশাচিক আইডিয়া জন্ম নেয়। আমার মনে পরে যায় ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ সিনেমার গানের লাইন, “তোমার পাকস্থলীর ভেতর আমায় খাবার করে নাও......”
হয়ত সুমনও এমনটাই ভেবে ঠিক করে নেয়। সঙ্গমে না হোক ভোজনে নাহয় প্রেয়সীর শরীরে ঠাঁই করে নেই।
সুমন আর নির্মলির অনুভব গভীর হয়। গল্পও সৈকত থেকে সোপানে যায়। একসময় চমকে উঠতে হয়। প্রশ্ন আসে মনে, ভালোবাসার মানুষটিকে খুশি করার জন্য কত দূর যাওয়া সম্ভব? কোনটা নিষিদ্ধ? কোথায় থেমে যাওয়া উচিত? থামা কি উচিত?
শেষাবধি বলতে হয়, আপনি যদি সব ভাষাভাষির উর্ধ্বে উঠে ভালো সিনেমার ভক্ত হন, তাহলে পরিচালক ভাস্কর হাজারিকার 'আমিষ' আপনার জন্যই। চরিত্রের ঘনঘটা নেই, নারী-পুরুষ প্রেম বোঝানোর জন্য কোনো শয্যাদৃশ্য নেই, নিদেনপক্ষে একটা চুম্বনও নেই।
একইসাথে ছবির পরিচালনা, স্ক্রিন-প্লে, সিনেমাটোগ্রাফি প্রতিটা জিনিসই নিখুঁত। একজন নিঃসঙ্গ গৃহবধূ ও ডাক্তারের ভূমিকায় লিমা দাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের চরিত্রে অর্ঘ্যদীপ বড়ুয়াও একেবারে যথাযথ। অনুরাগ কাশ্যপের মত পরিচালক যখন বিষয়বস্তুর প্রশংসা করে ছবিটির উপস্থাপনা করেন, তখন 'আমিষ' যে সিনেমা হিসাবে কোন পর্যায়ের সেটা আশা করি সহজেই অনুমেয়।
১৩ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:১৭
অন্যনায়ক বলেছেন: আসলে ভাই আমরা কাঠামোবদ্ধ হয়ে গেছি। অচেনা লোকের মধ্যে মিউচ্যুয়াল কেউ থাকলে যেমন ভরসা লাগে, ওইরকম আরকি। অসমিয়া ছবির বাজার তো তেমন নাই। বলিউড আর সাউথ এই দুইটাই পরিচিত বেশি। সেজন্যে ধরেন সিনেমা বাজারে পিছিয়ে পড়া ইন্ডাস্ট্রি থেকে এমন আউটপুটের কথা অনুরাগ কাশ্যপ বলার কারণই হলো যে এই সিনেমাটা outstanding হইসে। নইলে কি আর ভাই বলতো। এমন একটা ধারণা আমাদের মধ্যে কাজ করে। ওই যে কাঠামো মস্তিষ্ক।
আর ভাই লেখায় আমি খুব অলস। এইজন্যে নিয়মিত না ব্লগে।
২| ১৩ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:২৯
শেরজা তপন বলেছেন: আপনিও বুঝিয়েছেন ভালই- সিনেমাটা দেখার ইচ্ছে রইল।
১৩ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:০৮
অন্যনায়ক বলেছেন: ভাই একটা সময় ছিলো শুধু আপনার লেখা পড়তেই ব্লগে আসতাম। আজকে আপনি আমার লেখা পড়েছেন ভেবেই অনেক ভালো লাগলো। আপনি এখনও ব্লগে আসেন। এইটা দেখেই অনেক আনন্দ লাগতেসে।
৩| ১৩ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখেছি।
চমৎকার মুভি। একদম অন্যসব মুভি থেকে আলদা।
নিজের পায়ের মাংস কেটে রান্না করে।
১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৬
অন্যনায়ক বলেছেন: অসমিয় ধারায় যে এমন এডভান্স কাহিনী নিয়ে ছবি করবে ভাবাই যায় না। মানসিকভাবে তারা এগিয়ে আছে। মানুষের এই গল্প তুলে এনেই দেখা যাচ্ছে কেরালা, আসাম বা কন্নড় ছবিগুলো এগিয়ে যাচ্ছে।
৪| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:০৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: উপভোগ্য লেখা।
১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৭
অন্যনায়ক বলেছেন: লেখাটা বড় হয়ে যাওয়ায় একটু চিন্তায় পরেছিলাম। ধৈর্য্য সহকারে পড়বার জন্যে ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৪৫
বিজন রয় বলেছেন: একটি সিনেমা ভাল না মন্দ সেটা অনুরাগ কাশ্যপের উপর নির্ভর করবে কেন? আমার ভাল-মন্দ বোঝার জ্ঞান নেই?
বরং আপনার লেখাটি ভাল লেগেছে।
ভালবাসার মানুষটিকে খুশি করার জন্য কতদূর যাওয়া সম্ভব আর কোনটা নিষিদ্ধ এটার উত্তর আজন্ম অমিমাংসিত।
যাহোক, অনেক দিন পর পোস্ট দিলেন?
ভাল আছেন তো?