![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চতুর্থ বর্ষে উঠেই টিউশানী ছেড়ে দিয়েছি।ভাবলাম শেষ বছরটা মজা করে কাটাই।বছর শেষ হয়ে গেল কিন্তু মজা আর করতে পারলাম কই?মাঝখান থেকে পকেট খরচ নিয়ে টানাটানি।এখন মনে হয় টিউশানীই আসলে মজা ছিল।সংখ্যা আর সময়ের দিক থেকে আমার টিউশানীগুলো আর দশটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের তুলনায় হয়তো নগন্য, কিন্তু সার্কাস হিসেবে কোন অংশে কম না।তিনটা টিউশানীর প্রথমটার কথা আজকে বলে ফেলব ...
মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হয়েছি,তখনো ক্লাস শুরু হয় নাই। টিউশানী করার জন্য পাগল হয়ে গেলাম। কিভাবে টিউশানী যোগাড় করা যায় এটা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করে ফেললাম, কিন্তু ফলাফল শুন্য।এক বড় ভাইকে একদিন বললাম, ভাই এখন তো ক্লাস শুরু হয়নাই, বেকার বসে আছি, কি করা যায়, ভাই বলে দাস-মুখারজীর বই কিনে ফেলে ক্যালকুলাস করা শুরু কর! কয় কী ! মাথা খারাপ ! ভাইরে অতঃপর খোলসা করে বললাম যে টিউশানী করতে মন চায়। কাজ হল। সেদিন সন্ধ্যায় প্রথম টিউশানীর উদ্দ্যেশ্যে সাজুগুজু (!)করে বের হলাম।বুক ধপধপ করছে , কারন, যাহাকে পড়াইতে হবে,উহা নাকি H.S.C প্রথম বর্ষ। এবং স্ত্রী লিংগ !! কি জানি কি হয়ে যায় ! কি জানি কি হয়ে যায় ! বালিকার মায়ের সাথে কথা হইল। কেমিস্ট্রি পড়াইতে হবে । ভিতরে যাই থাকুক, বাহিরে গম্ভীর টাইপ ভাব বজায়ে রাখতে পেরেছিলাম।
পড়াইতে গিয়ে দেখি বিপদ ! বয়েস স্কুল আর কলেজে পড়াশুনা করেছি, মেয়েদের সাথে কথা বলার অভ্যাস তো নাই, চোখের দিকে তাকাতে পারি না। তাও কোনমতে ম্যানেজ করে চলতেছি।ফোন আসলে আরেক বিপদ। তখন প্রথম ফোন কিনেছিলাম নিজের টাকায়, স্যামসাং এর একটা অ্যান্টেনা সহ সাদা কালো সেকেন্ডহ্যান্ড ফোন, যেটার আবার অ্যান্টেনা ভাঙা, ওই যায়গায় স্কচটেপ লাগানো। নব্য স্টুডেন্টের সামনে বের করলে প্রেস্টিজের দফারফা হয়ে যাবে (তখন প্রেস্টিজ খুব ঠুনকো ছিল, হাল্কা বাতাসেই ভেঙ্গে পড়তো)। ফোন আসলে দুই হাতের তালুর মাঝে ফোন লুকিয়ে তারপর কথা বলতাম।একদিন ছাত্রী বলে স্যার, বেশী ব্যক্তিগত কথা হলে আমি ভেতরে যাই,আপনি কথা বলেন !!!!
প্রথম টিউশানী, তাও আবার মেয়ে!কিভাবে যে কন্ট্রোল করব, বুঝতে পারতেছি না । বিক্রিয়া বুঝাতে গেলে দেখি উদাস হয়ে যায়(!), অঙ্ক করাতে গেলে বলে স্যার মাথা ব্যাথা...ধমক দিব কিনা বুঝতে পারতেছি না। পড়া দিলে একদিনো পড়ে আসে না। শেষমেশ দিয়েই দিলাম একটা কঠিন ঝাড়ি। পরের দিন গিয়ে শুনি সেদিন আর পড়বে না, মাথাব্যাথা। শিখাইতে গিয়ে নিজেই ব্যাপক শিক্ষা নিলাম।এরপর থেকে ঝাড়িঝুড়ি সব বাদ।
আরেক প্রব্লেম নাস্তা নিয়ে।নাস্তা দিয়ে গেলে সাথে সাথে খাওয়া শুরু করলে তো ছোটলোক মনে করবে(প্রেস্টিজ পুনরায় নড়েচড়ে উঠলো)। কাজেই খাবার অপেক্ষা করতে থাকল আধাঘন্টা ধরে, আর আমি বুঝানোয় ব্যাস্ত থাকলাম।চা শরবত হতে থাকল, স্প্রাইট পানি হতে থাকল।নুড়লস দিলে অর্ধেক রেখে দিতাম, এক প্লেট পিঠা দিলে একটা খেতাম। একদিন আন্টি এসে বলে, তোমার মা তো খুব ভাল রাঁধে... আমি ভ্যাবাচেকা !!! কিন্তু স্মারটলি কিছু তো বলতে হবে।
কি করে বুঝলেন আন্টি?
না, তুমি তো আমাদের বাসার কিছু খাও না।
আমি বোল্ড আউট, তিনটা স্ট্যাম্পই উড়ে গেছে,এমন কি ওইপাশের একটাও দুলছে। এরপর থেকে নাস্তা আসলে প্লেট লেহনটাই বাকি রাখতাম।
আরেকদিন । ছাত্রী লেখায় ব্যাস্ত, আমি উদাস। হঠাৎ দেখি ছাত্রী আমার দিকে তাকালো। তারপর কটমট করে তাকালো !! তারপর ওড়না ঠিক করল !মানে কি ??? আমি এতক্ষন কোন দিকে তাকিয়ে ছিলাম !!!! ও মাই গড !!! আল্লাগো বাচাও !!!!
যাই হোক উহার সাথে আমার মোটামুটি কিঞ্চিৎ বন্ধুত্ব হয়ে গেল, পড়ার পাশাপাশি টুকটাক গল্প চলতে থাকল ।টুকটাক বিষয়। আমার সাবজেক্ট কেমন, পড়তে মজা কিনা, ভার্সিটি লাইফ কেমন এইসব। আন্টি হঠাৎ হঠাৎ দেখা দিতে লাগল। আমিও এসব ফালতু আলাপ বাদ দাও পড়াশুনার বিষয়ে জিগেস কর এই টাইপের কথা বলতে লাগলাম।ফারস্ট ইয়ার ফাইনালে ছাত্রী কেমিস্ট্রি পরীক্ষা দিল না। তার নাকি শরীর খারাপ ছিল!
যাই হোক মাস শেষে বেতন আনতে গেলাম, খরচের মাস্টারপ্ল্যান তো গত এক মাস থেকে করতেছি । আন্টি অনেক জ্ঞ্যানের কথা বলল। আমিও এমন ভাব ধরলাম যে আমি এসব কথা আগে থেকেই জানি। অতঃপর তিনি বলিলেন ছাত্রী আগামী মাস থেকে কলেজের স্যারের কাছে পড়বে, প্রায় সমবয়সী শিক্ষকের কাছে পড়ানোয় আসলে অনেক সময় লেখাপড়ার আসল উদ্দেশ্য পূরন হয় না...এই টাইপের একটা কথা।আসলে অনেক দিন আগের কথা, ঠিকঠাক মনে নাই(থাকা উচিৎ ছিল)। আমি তো প্রচন্ড স্মার্ট !!!!!! বললাম ঠিকি বলেছেন আন্টি, কলেজের টিচার রাই বেস্ট। আন্টি তো খুব খুশী, ফাটাফাটি একটা নাস্তা বানানোর জন্য দ্রুত উঠে চলে গেলেন। আমিও ছাত্রীকে পড়াশুনা বিসয়ক একটা জ্ঞানগর্ভ ভাষণ দিয়ে ফাটাফাটি নাস্তা খেয়ে সেদিনের এবং চিরকালের মত বিদায় নিলাম।
সবকিছু একমাসের মাঝে ঘটে গেল।আমার প্রথম টিউশানী প্রাপ্তি এবং উহার অকাল মৃত্যু। বলার মত একটা কাহিনী এবং বিস্তর অভিজ্ঞতার সাথে সাথে কিছু টাকাও হাতে আসল। নিজের প্রথম উপার্জন !!! মজা করে খরচ করলাম...যাই কিনলাম, যাই খেলাম...এক অদ্ভুত তৃপ্তি !! মজা !!
পরে ওই বালিকার কি হল ?? জানিনা । নিজেকে অনেক ভয় পাই আমি, যদি উলটা পালটা চিন্তা মাথায় আসে, যদি কখনো ফোন করে কথা বলতে ইচ্ছে হয়, যদি ছ্যাবলামি করে ফেলি!!! নো!! নেভার!!! দিলাম নাম্বার মোবাইল থেকে ডিলিট করে। এবং সাথে সাথে কাহিনীতেও ফুলস্টপ পড়ে গেল ।
এর পর আর দুটি টিউশানী করেছি, সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা।সেটা নিয়ে আরেকদিন কথা বলার ইচ্ছা রইল ।
আমার টিউশানী অভিজ্ঞতা-২
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:০৭
অন্যমত বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। লিখে ফেলেন,অপেক্ষায় থাকলাম।
২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৫৬
বিলুপ্ত বৃশ্চিক বলেছেন: আপ্নে তো ইশমাট বয়
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:০৩
অন্যমত বলেছেন: ভাই শুধু ইশমাট না প্রছন্ড ইশমাট।
৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:০৯
অররশীদ বলেছেন: সার, ভালো লেখেছেন..........
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:১৯
অন্যমত বলেছেন: থ্যাঙ্কিউ জনাব।
৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:১৯
কর্ণেল সামুরাই বলেছেন: তারপর কটমট করে তাকালো !! তারপর ওড়না ঠিক করল !মানে কি ??? আমি এতক্ষন কোন দিকে তাকিয়ে ছিলাম !!!! ও মাই গড !!! আল্লাগো বাচাও !!!!(
(
.............
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:২১
অন্যমত বলেছেন:
৫| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৯
একিলিস বলেছেন: Chhatri lekhay monojogi hoyar van koira clo, chaitaclo apne tare dekhen. Jokhon dekhlo apne udas hoiya kajer mohilar dike takay achhen tokhon kotmot koira, orna taina apnare nirob jhari marchhe......valo kotha chhatri dakhte kemun clo?
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৯
অন্যমত বলেছেন:
কাজের মহিলা !!! হতে পারে ! কাজের মানুষ(আমি) তো কাজের মহিলার দিকে তাকাতেই পারে !
ভাই আমি শিওর আপনিও অকাজে না ।
৬| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩২
অন্ধ তীরোন্দাজ বলেছেন: একিলিস এ কি কইলো গো বাই.......
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২৪
অন্যমত বলেছেন: একিলিস জিগাইলো মাইয়ার চেহারা কেমন । ইম্পরট্যান্ট প্রশ্ন। মাইয়ার চেহারা মাশাল্লা (আমি তাকাইছি নাকি?)
৭| ০১ লা মার্চ, ২০১১ বিকাল ৩:৪৫
নীরব 009 বলেছেন:
০১ লা মার্চ, ২০১১ বিকাল ৫:০৯
অন্যমত বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৩৬
আরিফ্ ৯১ বলেছেন: ভালা মজা!! আমিও ভাবতেছি কিছু লিখা দরকার। কিন্তু ক্যামনে সাজামু বুঝতাছি না!!