![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কতোটা পথ পেরুলে তবে পথিক বলা যায় ......
সেসব কিছুই আর মনে নেই
আমার কাছে কেউ কেউ জানতে চায় পৃথিবীর কোন নারীকে
আমি প্রথম ভালোবাসি
কেউ কেউ জানতে চায় কাকে আমি প্রথম চিঠি লিখি,
কেউ বলে, প্রথম গোপনে কোন নামটি আমি লিখে রেখেছিলাম;
প্রথম আমি কী দেখে মুগ্ধ হই, প্রথম কার হাত ধরি
আমার প্রথম স্মৃতির এই সব প্রশ্নে আমি ঠিক কিছুই
বলতে পারি না, বোকার মতো চেয়ে থাকি।
প্রথম অশ্রুবিন্দুর কথা কার মনে থাকে, তারপর এতো বৃষ্টি এতো বর্ষা
মাটির শ্লেটে প্রথম যে অক্ষর লিখেছিলাম আমি
তা আর কিছুতেই কারো কাছে বলা যাবে না,
প্রথম কবে সেই রাজহাঁসটিকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরেছিলাম
সেই শিহরণ কবে বাতাসে মিশে গেছে,
পুকুরপাড়ের ঘাটলার সিঁড়িতে যে নাম প্রথম খোদাই
করেছিলাম আমি
এতোদিনে চোখের জলে তার কোনো চিহ্নই আর নেই
আমি সেই আদ্যক্ষর কী করে দেখাব?
আমি কী করে দেখাব প্রথম স্বপ্ন দেখে আমি
কীভাবে সারারাত কেঁদেছিলাম,
ভালোবাসা কথাটা প্রথম বলতে গিয়ে কত লক্ষবার
মুখ ঢেকেছি আমি,
প্রথম কবে আমি বর্ষণ দেখলাম পৃথিবীতে
কবে প্রথম পাখির ডাক শুনলাম, সন্ধ্যাতারা
দেখলাম
না, না, সেসব কিছুই আর আমার মনে নেই
কারোরই মনে থাকে না।
কবে কে আমার হাতে লুকিয়ে একটি গোলাপ ফুল
দিয়েছিল
বইয়ের ভাঁজে রেখে দিয়েছিল একখানা লাজুক চিঠি
কে বলেছিল কানের কাছে কোকিলের মতো মাতাল করা
একটি শব্দ
সেসব কিছুই আর আমার মনে নেই, মনে নেই।
আমার এতো বর্ষা
এই যে জীবন উজাড় করে বর্ষার মেঘের মতো
তোমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছি
তুমি কখনোই তার কিছু অনুভব করলে না;
তুমি বুঝলে না এই সহস্র সহস্র চুম্বনের ব্যাকুলতা নিয়ে
আমি তোমার জন্য দাঁড়িয়ে আছি,
তোমাকে ভিজিয়ে দেওয়ার জন্য হাজার বছর ধরে
আমি মেঘ হয়েছি সমুদ্রে,
লক্ষ লক্ষ শীতরাত্রি ভেদ করে তোমার জন্য ফুটেছি গোলাপ;
শিশির হয়েছি শত শত মাঘ নিশীথের বুকে
তুমি সেই বৃষ্টি কিংবা শিশিরের গন্ধ নিতে শিখলে না,
আমার সব অশ্রুবিন্দু দ্যাখো আমার চোখেই কীভাবে
শুকিয়ে গেল।
তুমি বুঝলে না আমি কতকাল এই বর্ষা হয়ে আছি,
মেঘে মেঘে মল্লার হয়ে আছি তোমার জন্য
এক বিন্দু অশ্রু হয়ে আছি সমস্ত প্রেমিকের চোখে।
তুমি মুখ তুলে চাওনি বলে
তুমি মুখ তুলে চাওনি বলেই দেখো আমি
সব কাজে মনোযোগহীন
সবখানে খাপছাড়া ;
তাই বহুদিন কবিতাও পড়ে আছে অসম্পূর্ণ
একটি পঙক্তি মেলানো হয়নি আর তুমি ফিরে তাকাওনি বলে,
কতো প্রগাঢ় ইমেজ ঝরে গেছে তোমার
সামান্যতম স্নেহের অভাবে ।
তুমি মুখ তুলে তাকাওনি বলে
কিভাবে যে ক্ষয়ে গেছি অন্তরে-বাহিরে
কিভাবে যে হয়ে গেছি নিঃস্ব, রিক্ত, উদ্দামহীন
শুধু তোমার উপেক্ষা পেয়ে উৎসাহে পরেছে ভাটা,
পরাজয় মেনেছি এভাবে
সব প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে নিজেই নিয়েছি তুলে লজ্জার মুখোশ ।
ধীরে ধীরে অন্তরালে চলে গেছি সকলের অজ্ঞাতসারেই,
কাউকে বলিনি কিছু, বুঝতে দেইনি এই গোপন ব্যর্থতা
শুধু আমি জানি তোমার করুনাধারা ছাড়া
এ জীবনে ফুটবে না মুগ্ধ কিশলয়
মাথায় উঠবে না কোনো জয়ের শিরোপা,
আমার গলায় কেউ পরাবে না গৌরবের মালা ;
তোমার সযত্ন পরিচর্যা ব্যতিরেকে
বলো নিরাময় হয়েছে কখন কার ক্ষত?
তুমি মুখ তুলে তাকাওনি বলে রৌদ্রদগ্ধ হয়ে গেছে
হৃদয়ের ঘন বনাঞ্চল
বর্ষণ-অভাবে সেখানে দিয়েছে দেখা ব্যধি ও মড়ক,
একমাত্র তুমি মুখ তুলে তাকাওনি বলে
এই গ্লানি এই পরাজয় ।
দিনরাত্রি হয়ে গেছে উসকো-খুসকো,
এলোমেলো, সঙ্গতিবিহীন
কিছুই মেলে না আর
সবখানে থেকে যায় একটা না একটা ছেঁড়া তার ;
তাই আমাকে বেড়াতে হয় দেশে দেশে
কান্না ছাড়া আর কোন ঠিকানাও নেই ।
শুধু তুমি মুখ তুলে তাকাওনি বলে রয়ে গেছি সবার পশ্চাতে
কোথাও পাইনি ঠাই,
সকলের কাছে উপেক্ষিত;
এমনকি যতটা হেঁটেছি পথ,
বিপদের মুখে ভেঙ্গেছি চড়াই
সে কথাও কেউ কখনো বোঝেনি ।
একমাত্র তুমি মুখ তুলে চাওনি বলেই
ভিতরে-বাহিরে এই অপার ব্যর্থতা
শুধু তুমি মুখ তুলে চাওনি বলেই
মরুভূমি গ্রাস করে এখন আমাকে ।
চিঠি দিও
করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
খামে ভরে তুলে দিও
আঙ্গুলের মিহিন সেলাই
ভুল বানানেও লিখো প্রিয়,
বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,
এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও,
তোমার শাড়ির মতো
অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।
চুলের মতন কোনো চিহ্ন দিও
বিস্ময় বোঝাতে যদি চাও
বর্ণণা আলস্য লাগে তোমার চোখের
মতো চিহ্ন কিছু দিও!
আজো তো অমল আমি চিঠি চাই,
পথ চেয়ে আছি,
আসবেন অচেনা রাজার লোক
তার হাতে চিঠি দিও,
বাড়ি পৌঁছে দেবে
এমন ব্যস্ততা যদি শুদ্ধ করে
একটি শব্দই শুধু লিখো,
তোমার কুশল!
করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
ভুলে গিয়ে ভুল করে একখানি
চিঠি দিও খামে
কিছুই লেখার নেই তবু
লিখো একটি পাখির শিস
একটি ফুলের ছোট নাম ।
টুকিটাকি হয়তো হারিয়ে গেছে কিছু,
হয়তো পাওনি খুঁজে
সেইসব চুপচাপ কোন দুপুরবেলার গল্প
খুব মেঘ করে এলে কখনো কখনো বড়
একা লাগে, তাই লিখো
করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
মিথ্যা করে হলেও বোলো, ভালবাসি !
তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি
তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি
কতোবার দ্বারস্ত হয়েছি আমি
গীতিকবিতার,
কতোদিন মুখস্ত করেছি এই নদীর কল্লোল
কান পেতে শুনেছি ঝর্ণার গান,
বনে বনে ঘুরে আহরণ করেছি পাখির শিস্
উদ্ভিদের কাছে নিয়েছি শব্দের পাঠ;
তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি
সংগ্রহ করেছি আমি ভোরের শিশির,
তোমাকে লেখার মতো প্রাঞ্জল ভাষার জন্য
সবুজ বৃক্ষের কাছে জোড়হাতে দাঁড়িয়েছি আমি-
ঘুরে ঘুরে গুহাগাত্র থেকে নিবিড় উদ্ধৃতি সব
করেছি চয়ন;
তোমাকে লিখবো বলে জীবনের গূঢ়তম চিঠি
হাজার বছর দেখো কেমন রেখেছি খুলে বুক।
মানুষের বুকে এতো দীর্ঘশ্বাস
কেউ জানেনা একেকেটি মানুষ বুকের মধ্যে কী গভীর দীর্ঘশ্বাস
নিয়ে বেড়ায়-
কোনো বিষন্ন ক্যাসেটেও এতো বেদনার সংগ্রহ নেই আর,
এই বুকের মধ্যে দীর্ঘশ্বাসের পর
দীর্ঘশ্বাস যেন একখানি অন্তহীন
প্রগাঢ় এপিক!
পাতায় পাতায় চোখের জল
সেখানে লিপিবদ্ধ
আর মনোবেদনা সেই এপিকের ট্রাজিক মলাট;
মানুষের বুকে এতো দীর্ঘশ্বাস,
এতো দীর্ঘশ্বাস, কে জানতো!
দীর্ঘশ্বাসভরা এই বুকের চেয়ে শীতপ্রধান বিপন্ন অঞ্চল আর
কোথাও নেই,
এমন হলুদ, ধূসর আর তুষারবৃত!
একেকটি মানুষ বুকের মধ্যে কী গভীর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বেড়ায়,
কেউ জানে না।
হঠাৎ একসঙ্গে অসংখ্য দুঃখ
যদি কখনো কেঁদে ওঠে কিংবা যদি
প্রাচীন শিলালিপি থেকে সব শোকের গান
সশব্দে বেজে যায়,
তাহলে যেমন মধ্যাহ্নের আকাশ
সহসা দুঃখে ম্লান হয়ে যাবে
গোলাপ হবে কৃষ্ণবর্ণ,
তার চেয়েও বিষন্নতা নেমে আসবে
মানুষের বুক থেকে এই দীর্ঘশ্বাস
যদি বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে।
তেমন সম্ভাবনা আছে বলেই
মানুষ বুকের মধ্যে দীর্ঘশ্বাস চেপে রাখে
তার চোখে নিয়তই জল ঝরে তবু
দেখা যায় না;
মানুষের ভেতর কতো যে দীর্ঘশ্বাস,
জমাট বেঁধে আছে
কতো যে ক্রন্দন, পাতা ঝরার শব্দ, মৃত্যুসংবাদ
মানুষের বুকের মধ্যে ব্যথিত ব্যাকুল ইতিহাস আর আহত সভ্যতা
মেঘের মতো ঘনীভূত
হতে হতে একেকটি মর্মান্তিক
দীর্ঘশ্বাস হয়ে আছে
মানুষ তাকে বয়ে বয়ে দগ্ধ বেঁচে থাকে।
একেকটি মানুষ বুকের মধ্যে কী গভীর দীর্ঘশ্বাস বয়ে বেড়ায়,
কেউ জানে না।
একেকটি মানুষ নিজের
মধ্যে কীভাবে নিজেই মরে যায়, হায়, কেউ জানে না!
মধুপুরে
মনটা ভীষণ উড়ু উড়ু, আমি যেন
উড়ো পাতা,
ঝাউবনের কান্না শুনি বুকের মধ্যে
সারা দুপুর-
উড়তে উড়তে কোথায় যাবো, ঠিকানা ঠিক
কোথায় পাবো
নাকি শেষে হারিয়ে যাবো,
এই আমি এই উড়ো পাতা, উড়ো পাতা !
মনটা ভীষণ উড়ু উড়ু টেবিলে বই, লেখার কাগজ
ঝড় বয়ে যায় মনের ভেতর; সব
উড়ে যায়
আমিও যাই
মনটা ভীষণ উড়ু উড়ু শালবনে
কার ছায়া দেখি-
লোকাল ট্রেনে যাচ্ছি কোথায় !
আমার এখন মনে পড়ে তোমার চোখে
বৃষ্টি নামা,
তবু উড়ু উড়ু এই দুপুরে মধুপুরে হয় না নামা ।
ফুটেছে ফুল, বিরহী তবু চাঁদ
ফুটেছে ফুল ঠোঁটের মতো লাল
আকাশে চাঁদ- বিরহী চিরকাল;
কে যেন একা গাইছে বসে গান
সন্ধ্যা নামে, দিনের অবসান।
দুর পাহাড়ে শান্ত মৃদু পায়ে
রাত্রি নামে স্তব্ধ নিঝুম গাঁয়ে;
শূন্যে ভাসে মেঘের জলাশয়
এই জীবনে সবকিছুইতো সয়।
বিরহী চাঁদ মোমের মতো গলে
বুকের মাঝে কিসের আগুন জ্বলে;
মন পড়ে রয় কোন অজানালোকে
নিজেকেই সে পোড়ায় নিজের শোকে।
ফুটেছে ফুল ঠোঁটের মতো লাল
বিরহী চাঁদ বিরহী চিরকাল;
ফুটেছে ফুল বিরহী তবু চাঁদ,
বাইরে আলো, ভেতরে অবসাদ।
বেঁচে আছি এই তো আনন্দ
বেঁচে আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দের জন্য আমি
সবকিছু মাথা পেতে নেবো,
যে কোনো দুঃখ, যে কোনো শাস্তি-
শুধু এই ভোরের একটু আলো দ্যাখার জন্য
আমি পথের ভিক্ষুক হতে রাজি
এই যে গোলাপ ফুলটির দিকে যতোক্ষণ খুশি
তাকিয়ে থাকতে পারি
এই সুখে আমি হাসিমুখে সব দুঃখ-
মাথা পেতে নেবো।
বেঁচে আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দের কাছে
কোনো দুঃখই কিছু নয়
এই নির্বাসন, এই শাস্তি, এই
দ্বীপান্তর;
এই মেঘ, এই ঝুম বৃষ্টি, এই শিশিরের শব্দের জন্য
আমি সহস্র বছরের কারাদন্ড- মাথায় নিয়েও বেঁচে থাকতে চাই,
বেঁচে আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দে সব
আঘাত আমি মাথা পেতে নেবো।
অন্তরাল
মানুষের ভিড়ে মানুষ লুকিয়ে থাকে
গাছের আড়ালে গাছ,
আকাশ লুকায় ছোট্ট নদীর বাঁকে
জলের গভীরে মাছ;
পাতার আড়ালে লুকায় বনের ফুল
ফুলের আড়ালে কাঁটা,
মেঘের আড়ালে চাঁদের হুলস্তুল
সাগরে জোয়ার ভাটা।
চোখের আড়ালে স্বপ্ন লুকিয়ে থাকে
তোমার আড়ালে আমি,
দিনের বক্ষে রাত্রিকে ধরে রাখে
এভাবে দিবসযামী।
প্রেমসূত্র
ভালোও বাসি না আমি, মন্দও বাসি না, দুই পায়ে লুটি
মেঘ হয়ে ঝরি আমি, ফুল হয়ে ফুটি;
যদি এই ভালোবাসা হয়, তবে আমিই সর্বাগ্রে
আছি, তার জন্য এক কোটি একশ বছরও যদি লাগে।
তবে এক বাক্যে রাজি এই দণ্ড মাথা পেতে নিতে
এই শাদা পৃষ্ঠা ভরে যতবার বলো দস্তখত দিতে
সাঁতার দেই না আমি সব নিয়ে একেবারে জলে ডুবে যাই
অতল নৈঃশব্দ্যে এই ভালোবাসা আছে আর কিছু নাই।
হই ভোরের শিশির বিন্দু যদি তোমার দু’পায়ে এসে পড়ে
এই নিয়ে বেঁচে থাকি এই জন্মে, আরো বহু জন্ম জন্মান্তরে...
মনে পড়ে
এখন শুধু মনে পড়ে আর মনে পড়ে
মনে পড়ে মেঘ, মনে পড়ে চাঁদ,
জলের ধারা কেমন ছিলো-
সেসব কথাই মনে পড়ে;
এখন শুধু মনে পড়ে, নদীর কথা মনে পড়ে,
তোমার কথা মনে পড়ে,
এখন এই গভীর রাতে মনে পড়ে
তোমার মুখ, তোমার ছায়া,
তোমার বাড়ির ভেতর-মহল,
তোমার উঠোন, সন্ধ্যাতারা
এখন শুধু মনে পড়ে, তোমার কথা মনে পড়ে;
তোমার কথা মনে পড়ে
অনেক কথা মনে পড়ে,
এখন শুধু মনে পড়ে, এখন শুধু মনে পড়ে;
এখন শুধু মনে পড়ে আর মনে পড়ে
আকাশে মেঘ থেকে থেকে
এখন বুঝি বৃষ্টি ঝরে।
দৈন্য
কিনেছি অনেক দামী উপহার
বহু মনোহর কাগজের ফুল;
ভালোবাসা দিয়ে হয় নাই কেনা
একখানি মেঘ একটি বকুল!
জমিজমা আর গৃহ আসবাব
অধিক মূল্যে করে রাখি ক্রয়,
শুধু কিনি নাই কানা কড়ি দিয়ে
একজোড়া চোখ একটি হৃদয়!
বসন্তের একটি বাংলা উদ্ধৃতি
চুনা-ওঠা দেয়ালের মতো প্রকৃতির এই খসখসে গালে
আর কী রং মাখাবে চৈত্র,
তোমার পকেটে ভাঁজ-করা শতবর্ষের শীতকাল,
মাতাল হাওয়ায় যতই এই বার্ধক্য ঢেকে দিতে চাও
তার মুখমণ্ডলে জমে আছে
উত্তর গোলার্ধের অনন্ত বরফ
তার শরীর ২৫ ডিগ্রি মাইনাস শীত রাত্রে;
কেনা জ্যেত্স্না, গোলাপ আর সৌরভের জন্য
হাহাকার করে
আমি কতোকাল শিশুর মতো হামাগুড়ি দিয়ে
এই শীতকাল পেরুব? গুনগুন করা চৈত্রসন্ধ্যা
মধুর দুপুর
এখনো আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে,
আমি সাড়া দেই না;
কেন দেব? আমার শীত কখন অস্ত যাবে,
কেউ জানে না।
হয়ত তবু সদ্যফোটা স্তনের গন্ধে, ঠোঁটের লাবণ্যে
জেগে উঠবে ঝিমিয়ে-পড়া দিনরাত্রি,
একুশ শতকের এই দীর্ঘ শীত পাড়ি দেওয়ার জন্য
আর কতো হিমযুগ পার হতে হবে আমাকে,
বসন্ত, তোমার হাতবাক্সে কি সেই উত্তর লেখা আছে?
চলো বসন্তের একটি বাংলা উদ্ধৃতি শোনাতে শোনাতে
আমরা পৃথিবীর সব নদী পার হই।
বর্ষা, বৃষ্টি কিংবা ভালোবাসার কবিতা
এই একখন্ড সাদা কাগজের উপর মেঘ এসে যখন দাঁড়ায়
তখন প্রতিটি অক্ষর হয়ে ওঠে একেকটি বৃষ্টির ফোঁটা,
শব্দগুলি বর্ষাকাল
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি বিন্দু বিন্দু অশ্রুর কবিতা।
মেঘ ভাঙতে ভাঙতে দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে
উত্তর গোলার্ধে যায়।
সাদা কাগজের উপর পড়ে থাকে স্মৃতি,
ভালোবাসার গন্ধ।
আমি হাত বাড়িয়ে সেই মেঘবৃষ্টির
স্বর্ণমুদ্রা কুড়াতে থাকি,
এই শাদা কাগজ মূহুর্তে হয়ে ওঠে বিরহী মেঘদুত
অথই গীতবিতান।
কাগজ আবিষ্কারের পূর্বে মানুষ প্রেমের কবিতা
লিখে রেখেছে আকাশে।
সেই ভালোবাসার কবিতা এই বৃষ্টি,
এই ভরা বর্ষা।
এক কোটি বছর তোমাকে দেখি না
এক কোটি বছর হয় তোমাকে দেখি না
একবার তোমাকে দেখতে পাবো
এই নিশ্চয়তাটুকু পেলে-
বিদ্যাসাগরের মতো আমিও সাঁতরে পার হবো ভরা দামোদর...
কয়েক হাজার বার পাড়ি দেবো ইংলিশ চ্যানেল;
তোমাকে একটিবার দেখতে পাবো এটুকুভরসা পেলে
অনায়াসে ডিঙাবো এই কারার প্রাচীর,
ছুটে যবো নাগরাজ্যে পাতালপুরীতে
কিংবা বোমারু বিমান ওড়া
শঙ্কিত শহরে।
যদি জানি একবার দেখা পাবো
তাহলে উত্তপ্ত মরুভূমি
অনায়াসে হেঁটে পাড়ি দেবো,
কাঁটাতার ডিঙাবো সহজে,
লোকলজ্জা ঝেড়ে মুছে
ফেলে যাবো যে কোনো সভায়
কিংবা পার্কে ও মেলায়;
একবার দেখা পাবো শুধু এই আশ্বাস পেলে
এক পৃথিবীর এটুকু দূরত্ব
আমি অবলীলাক্রমে পাড়ি দেবো।
তোমাকে দেখেছি কবে, সেই কবে, কোন বৃহস্পতিবার
আর এক কোটি বছর হয় তোমাকে দেখি না।
কবিতা ও স্কেচ
তুমি দরজা নাও খুলতে পারো
আমি কি পাখি যে সারারাত ভাঙ্গাগলায় তোমাকে
ডাকতে পারবো,
আমি কি নদীর ঢেউ যে আছড়ে পড়তে পারবো
তোমার দুয়ারে এসে,
এমন কি কেউ যে অবিরাম করাঘাত করতে করতে
চেনা কণ্ঠে বলতে পারবো,
দরজা খোলো;
আমি তেমন কেউ নই,
নদীর ঢেউ নই,
রাতের পাখি নই,
পুরনো প্রেমিক নই
যার মৃদু করাঘাতে বিশ্বস্ত ডাকে তুমি তৎক্ষণাৎ
দরজা খুলে দেবে।
আমি জলের স্রোতের মতো, বাতাসের কাঁপা কণ্ঠস্বরের মতো
অস্থির শিশিরবিন্দুর মতো নিঃশব্দে তোমার
পায়ে ঝরে পড়ি
সেই জল কখনো তোমার চোখে পড়ে, কখনো পড়ে না;
এই সামান্য সঞ্চয় নিয়ে আমি তোমার কাছে খুব বেশি কী চাইতে পারি?
তুমি ডাক শুনতে পারো, নাও পারো
ফিরে তাকাতে পারো, নাও পারো,
তখনই দরজা খুলে আমাকে অভ্যর্থনা জানাবে
সেতো আশাই করি না।
তুমি চলে যাবে বলতেই
তুমি চলে যাবে বলতেই বুকের মধ্যে
পাড় ভাঙার শব্দ শুনি-
উঠে দাঁড়াতেই দুপুরের খুব গরম
হাওয়া বয়,
মার্সির কাঁচ ভাঙতে শুরু করে;
দরোজা থেকে যখন এক পা বাড়াও আমি
দুই চোখে কিছুই দেখি না-
এর নাম তোমার বিদায়,
আচ্ছা আসি, শুভরাত্রি,
খোদাহাফেজ।
তোমাকে আরেকটু বসতে বললেই তুমি যখন
মাথা নেড়ে না, না বলো
সঙ্গে সঙ্গে সব মাধবীলতার ঝোপ
ভেঙে পড়ে;
তুমি চলে যাওয়ার জন্যে যখন
সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকো
তৎক্ষণাৎ পৃথিবীর আরো কিছু বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যায়,
তুমি উঠোন পেরুলে আমি কেবল
শূন্যতা শূন্যতা
ছাড়া আর কিছুই দেখি না
আমার প্রিয় গ্রন্থগুলির সব
পৃষ্ঠা কালো কালিতে ঢেকে যায়।
অথচ চোখের আড়াল অর্থ কতোটুকু যাওয়া,
কতোদূর যাওয়া-
হয়তো নীলক্ষেত থেক বনানী,
ঢাকা থেকে ফ্রাঙ্কফুর্ট
তবু তুমি চলে যাবে বলতেই বুকের
মধ্যে মোচড় দিয়ে ওঠে
সেই থেকে অবিরাম কেবল পাড় ভাঙার শব্দ শুনি
পাতা ঝরার শব্দ শুনি-
আর কিছুই শুনি না।
বেঁচে আছি স্বপ্নমানুষ
আমি হয়তো কোনোদিন কারো বুকে
জাগাতে পারিনি ভালোবাসা,
ঢালতে পারিনি কোনো বন্ধুত্বের
শিকড়ের একটু জল-
ফোটাতে পারিনি কারো একটিও আবেগের ফুল
আমি তাই অন্যের বন্ধু বলেছি;
আমার হয়তো কোনো প্রেমিকা ছিলো না,
বন্ধু ছিলো না,
ঘরবাড়ি, বংশপরিচয় কিচ্ছু ছিলো না,
আমি ভাসমান শ্যাওলা ছিলাম,
শুধু স্বপ্ন ছিলাম;
কারো প্রেমিকাকে গোপনে বুকের মধ্যে
এভাবে প্রেমিকা ভেবে,
কারো সুখকে এভাবে বুকের মধ্যে
নিজের অনন্ত সুখ ভেবে,
আমি আজো বেঁচে আছি স্বপ্নমানুষ।
তোমাদের সকলের উষ্ণ ভালোবাসা, তোমাদের
সকল প্রেম
আমি সারি সারি চারাগাছের মতন আমার বুকে
রোপণ করেছি,
একাকী সেই প্রেমের শিকড়ে আমি
ঢেলেছি অজস্র জলধারা।
সকলের বুকের মধ্যেই একেকজন নারী আছে,
প্রেম আছে,
নিসর্গ-সৌন্দর্য আছে,
অশ্রুবিন্দু আছে
আমি সেই অশ্রু, প্রেম, নারী ও স্বপ্নের জন্যে
দীর্ঘ রাত্রি একা জেগে আছি;
সকলের বুকের মধ্যে যেসব শহরতলী আছে,
সমুদ্রবন্দর আছে
সাঁকো ও সুড়ঙ্গ আছে, ঘরবাড়ি
আছে
একেকটি প্রেমিকা আছে, প্রিয় বন্ধু আছে,
ভালোবাসার প্রিয় মুখ আছে
ভালোবাসার প্রিয় মুখ আছে
সকলের বুকের মধ্যে স্বপ্নের সমুদ্রপোত আছে,
অপার্থিব ডালপালা আছে
আমি সেই প্রেম, সেই ভালোবাসা, সেই স্বপ্ন
সেই রূপকথার
জীবন্তমানুষ হয়ে আছি;
আমি সেই স্বপ্নকথা হয়ে আছি, তোমাদের
প্রেম হয়ে আছি,
তোমাদের স্বপ্নের মধ্যে ভালোবাসা হয়ে আছি
আমি হয়ে আছি সেই রূপকথার স্বপ্নমানুষ।
যে যে কারনে আমি কষ্ট পাই
খেতে বসে, ঘুমোতে গিয়ে
হাঁটতে হাঁটতে আমি কষ্ট পাই
কোনোদিন হঠাৎ ইচ্ছে হলে
গোলাপ ছিঁড়তে গিয়ে কষ্ট পাই
আমি কষ্ট পাই আকস্মিক, কথা
বলতে বলতে অপ্রত্যাশিতভাবে
আমি কষ্ট পাই রেস্তরাঁয়, পার্কে,
সিনেমা হলে, পোস্টাপিসের বারান্দায়
সহকর্মীদের পাশে বসে চা খেতে খেতে,
আমি প্রতিদিন বিভিন্নভাবে কষ্ট পাই
কারো সাথে কোনো মনোমালিন্য থেকে নয়,
কখনো কারো কুৎসা বা ভৎসনা শুনেও নয়
বন্ধুদের আপ্যায়নে ও উপেক্ষায় আমি কষ্ট পাই
ছবি দেখার মতো পয়সা না থাকলে
কষ্ট পাই, ছবি দেখতে গিয়েও কষ্ট পাই
অনেকদিন কারো চিঠি না পেলে
আমি কষ্ট পাই,
চিঠি পেয়েও কষ্ট পাই
আমার চোখের মধ্যে সূর্যাস্ত দেখে
আমি কষ্ট পাই
আমি কষ্ট পাই সকালবেলার আলোতে
অন্ধকারেও সারারাত
প্রতিদিন এমনি বহুভাবে কষ্ট পাই,
ফুলের জন্যে, পাখির জন্যে
সামান্য একটা শাদা পয়সার জন্যে
অহেতুক এমনি এমনি আমি
কষ্ট পাই।
এই শীতে আমি হই তোমার উদ্ভিদ
শীত খুব তোমার পছন্দ, কিন্তু আমি
শীত-গ্রীষ্ম-বসন্তের চেয়ে তোমাকেই বেশি ভালোবাসি;
যে-কোনো ঋতু ও মাস, বৃষ্টি কিংবা বরফের চেয়ে
মনোরম তোমার সান্নিধ্য, আমি তাই
কার্ডিগান নয় বুকের উষ্ণতা দিয়ে ঢেকে দেই
তোমার শরীর-
আমি হই তোমার শীতের যোগ্য গরম পোশাক;
কোল্ড ক্রিম আর এই তুচ্ছ প্রসাধনী রেকে
আমি তোমাকে করতে চাই আরো হই শীত, হই শীতের উদ্ভিদ;
আমি হই সবচেয়ে বেশি তোমার শীতের উষ্ণ কাঁথা,
হই সকালের উপাদেয রোদ, সারো শুভ্র সানবাথ।
আমিজানি নগ্নতাই শীতের স্বভাব, আমি তাই
তোমার নগ্ন গায়ে দিব্য শতিের কামিজ;
তুমি অবহেলা ভরে যাও আমি
শীরেত শিশির হই ঘাসে-
দুপায়ে মাড়িয়ে যাও, তবু তোমার পায়ের রাঙা আলতা
হই আমি
এই শীতে তোমার নিবিড় উষ্ণতা ছাড়া নিউ ইয়ার্স গিফট
কী আর চাওয়ার বলো আছে!
চিরকুট
হঠাৎ সেদিন হাতে পেয়ে চিরকুট
নিমিষে সময় হয়ে গেলো যেন লুট;
পার হয়ে বহু বছরের ব্যবধান
কানে ভেসে এলো হারানো দিনের গান।
মনে পড়ে গেলো তোমার প্রথম খাম
আদ্যক্ষরে লেখা ছিলো শুধু নাম,
একটি গোলাপ আঁকা ছিলো এককোণে
র-ফলাবিহীন প্রিয় লেখা পড়ে মনে;
খুব সাধারণ খাতার কাগজে লেখা
লুকিয়ে পড়েছি, হয়নি সেভাবে দেখা
তবু মনে আছে কোথায় কী ছিলো তাতে,
এতোদিন পর চিরকুট পেয়ে হাতে
আবার হঠাৎ কেঁপে ওঠে যেন বুক
নিজেই তখন লুকাই নিজের মুখ;
এই বয়সেও একখানি চিরকুট
তোলে শিহরন, কম্পিত করপুট।
তোমাকে ছাড়া
তুমি যখন আমার কাছে ছিলে
তখন গাছের কাছে গেলে আমার ভীষণ আনন্দ বোধ হতো
লতাপাতার উৎসাহ দেখে আমি সারাদিন তার কাছে ঘুরে বেড়াতাম
কোন কোন দিন পাখিদের
বাসভূমিতে আমার অনেক উপাখ্যান শোনা হতো
তুমি যখন আমার কাছে ছিলে
তখন প্রত্যহ সূর্যোদয় দেখতে যেতাম তোমাদের বাড়ির পুরনো ছাদে
তোমার সেই যে দজ্জাল ভাই সারারাত তাস খেলে এসে
পড়ে পড়ে তখনো ঘুমাতো,
তুমি যখন আমার কাছে ছিলে
তখন আমার রোজ ভোরবেলা ঘুম ভাঙতো, যেতাম
প্রকৃতির কাছে মানবিক অনুভূতি নিয়ে
মানুষের দুঃখ দেখে আমার তখন ভীষণ কান্না পেতো ।
এখন আমার আর সেই অনুভব ক্ষমতা নেই
মানুষের নিষ্ঠুরতা ও পাপ দেখেও আমি দিব্যি চায়ের দোকানে
বসে হাসতে হাসতে চা খাই
সেলুনে চুল কাটার সময় পাশেই অবৈধ কতো কী ঘটে যায়
তুমি কাছে না থাকলে আমি দিন দিন অমানুষ হয়ে উঠি
আশেপাশে সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করি
মানুষ ও প্রকৃতির দিকে চেয়ে আমার হিংসা বোধ হয়
তুমি না থাকলে মেয়েদের রূপ কিংবা ফাহমিদা খাতুনের
রবীন্দ্রসঙ্গীত কিছুই আমাকে আকর্ষণ করে না
শিশুদের প্রতি মমত্ববোধ জাগে না আমার
একে একে সকাল দুপুর সারাদিন নষ্ট হয়
কোনোকিছুই করতে পারিনে আমি
তুমি না থাকলে বড়ো দুঃসময় যায়, সর্বত্র বন্ধুবিহীনভাবে
বাস করি
এই ঢাকা শহর ভীষণ রুক্ষ মনে হয়
কাউকে ডাকলে সাড়া দেয় না, সবাই আমার বিরুদ্ধাচরণ করে
তুমি না থাকলে এই বাড়িঘর শহরের লোকজন
সম্পূর্ণ আমার অপরিচিত মনে হয়
নিজেকেই নিজের অচেনা লাগে
মনে হয় দীর্ঘ দিন থেকে আমি যেন কোনো অজ্ঞাত অসুখে ভুগছি
তুমি না থাকলে বাস্তবিক আমি বড়ো কষ্টে পড়ি
বড়োই কষ্ট হয়।
তোমাকে ভুলতে চেয়ে আরো বেশি ভালোবেসে ফেলি
তোমাকে ভুলতে চেয়ে আরো বেশি ভালোবেসে ফেলি
তোমাকে ছাড়াতে গিয়ে আরো বেশি গভীরে জড়াই,
যতোই তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই দূরে
ততোই তোমার হাতে বন্দি হয়ে পড়ি
তোমাকে এড়াতে গেলে এভাবেই আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে যাই
এভাবেই সম্পূর্ণ আড়ষ্ট হয়ে পড়ি;
তোমাকে ছাড়াতে গেলে আরো ক্রমশ জড়িয়ে যাই আমি
আমার কিছুই আর করার থাকে না
তুমি এভাবেই বেঁধে ফেলো যদি দূরে যেতে চাই
যদি ডুবে যেতে চাই তুমি দুহাতে জাগাও।
এমন সাধ্য কী আছে তোমার চোখের সামান্য আড়াল হই,
দুই হাত দূরে যাই
যেখানেই যেতে চাই সেখানেই বিছিয়ে রেখেছো ডালপালা,
তোমাকে কি অতিক্রম করা কখনও সম্ভব
তুমি সমুদ্রের চেয়েও সমুদ্র
আকাশের চেয়েও আকাশ তুমি আমার ভেতরে জেগে আছো।
তোমাকে ভুলতে চেয়ে তাই আরো বেশি
ভালোবেসে ফেলি,
তোমাকে ঠেলতে গিয়ে দূরে আরো কাছে টেনে নেই
যতোই তোমার কাছ থেকে আমি দূরে যেতে চাই
ততো মিশে যাই নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে,
ততোই তোমার আমি হয়ে পড়ি ছায়ার মতন;
কোনোদিকে যাওয়ার আর একটুও জায়গা থাকে না
তুমিই জড়িয়ে রাখো তোমার কাঁটায়।
তোমাকে ছাড়তে গিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে আরো জড়িয়েছি
তোমাকে ভুলতে গিয়ে আরো ভালোবেসেছি
তোমাকে।
মন ভালো নেই
বিষাদ ছুঁয়েছে আজ, মন ভালো নেই,
মন ভালো নেই;
ফাঁকা রাস্তা, শূন্য বারান্দা
সারাদিন ডাকি সাড়া নেই,
একবার ফিরেও চায় না কেউ
পথ ভুলকরে চলে যায়, এদিকে আসে না
আমি কি সহস্র সহস্র বর্ষ এভাবে
তাকিয়ে থাকবো শূন্যতার দিকে?
এই শূন্য ঘরে, এই নির্বসনে
কতোকাল, আর কতোকাল!
আজ দুঃখ ছুঁয়েছে ঘরবাড়ি,
উদ্যানে উঠেছে ক্যাকটাস
কেউ নেই, কড়া নাড়ার মতো কেউ নেই,
শুধু শূন্যতার এই দীর্ঘশ্বাস, এই দীর্ঘ পদধ্বনি।
টেলিফোন ঘোরাতে ঘোরাতে আমি ক্লান্ত
ডাকতে ডাকতে একশেষ;
কেউ ডাক শোনে না, কেউ ফিরে তাকায় না
এই হিমঘরে ভাঙা চেয়ারে একা বসে আছি।
এ কী শান্তি তুমি আমাকে দিচ্ছো ঈশ্বর,
এভাবে দগ্ধ হওয়ার নাম কি বেঁচে থাকা!
তবু মানুষ বেঁচে থাকতে চায়, আমি বেঁচে থাকতে চাই
আমি ভালোবাসতে চাই, পাগলের মতো
ভালোবাসতে চাই-
এই কি আমার অপরাধ!
আজ বিষাদ ছুঁয়েছে বুক, বিষাদ ছুঁয়েছে বুক
মন ভালো নেই, মন ভালো নেই;
তোমার আসার কথা ছিলো, তোমার যাওয়ার
কথা ছিল-
আসা-যাওয়ার পথের ধারে
ফুল ফোটানো কথা ছিলো
সেসব কিছুই হলো না, কিছুই হলো না;
আমার ভেতরে শুধু এক কোটি বছর ধরে অশ্রুপাত
শুধু হাহাকার
শুধু শূন্যতা, শূন্যতা।
তোমার শূন্য পথের দিকে তাকাতে তাকাতে
দুই চোখ অন্ধ হয়ে গেলো,
সব নদীপথ বন্ধ হলো, তোমার সময় হলো না-
আজ সারাদিন বিষাদপর্ব, সারাদিন তুষারপাত-
মন ভালো নেই, মন ভালো নেই।
এ জীবন আমার নয়।
এ জীবন আমার নয়, আমি বেঁচে আছি
অন্য কোনো পাখির জীবনে,
কোনো উদ্ভিদের জীবনে আমি বেঁচে আমি
লতাগুল্ম - ফুলের জীবনে;
মনে হয় চাঁদের বুকের কোনো আদিম পাথার আমি
ভস্মকণা,
ভাসমান একটু শ্যাওলা আমি;
এই যে জীবন দেখছো এ জীবন আমার নয়
আমি বেঁচে আছি বৃক্ষের জীবনে,
পাখি, ফুল, ঘাসের জীবনে।
আমি তো জন্মেই মৃত, বেঁচে আছি
অন্য এক জলের উদ্ভিদ-
আমার শরীর এইসব সামুদ্রিক প্রাণীদের
সামান্য দেহের অংশ,
আমি কোটি কোটি বছরের পুরাতন একটি
বৃক্ষের পাতা
একবিন্দু প্রাণের উৎস, জীবনের
সামান্য একটি কোষ;
এ জীবন আমার নয় আমি সেইসব অন্তহীন
জীবনের একটি জীবন,
আমি বেঁচে আছি অন্য জীবনে, অন্য
স্বপ্ন-ভালোবাসায়।
তোমার সলজ্জ টেলিফোন
সেদিন সন্ধ্যার কিছু আগে হঠাৎ উঠলো বেজে
আমার নিথর টেলিফোন
রিসিভার তুলে শুনলাম খুব মৃদু স্বরে যখন একটি ছোটো নাম…
মনে হলো এই সূর্যাস্ত উঠলো ভরে ফের ভোরের আলোয়
প্রায় অস্তমিত আমি পুনরায় হয়ে উঠলাম যেন উদিত সকাল;
কতোকাল নিথর নীরব পড়ে থাকা এই ব্যর্থ টেলিফোন
কানায় কানায় বরে গেলো, হয়ে উঠলো মুহূর্তে যেন চঞ্চল হরিণ;
মনে হলো এই টেলিফোনে একসঙ্গে বেজে ওঠে হাজার তারের বীণা
বিসমিল্লা খাঁর স্পন্দিত সানাই,
হেমন্তের সব অপূর্ব লাবণ্যময গান্ত
সহসা আমার মাথার ওপরে মনে হলো এক দিব্য চায়াময়
স্নিগ্ধ নীলাকাশ।
বুঝি আর কখনো আমার বুকে ওঠেনি এমন তোলপাড় করা ঝড়
চারদিক ঢেকে অঝোর ধারায় নামেনি বর্ষণ।
টেলিফোন তুলে শুনি এ যে স্বপ্নপুরীর রহস্যবার্তা একে একে
কবিতার অপরূপ শব্দরাজি সদ্যফোটা শিউলির মতো
টেলিফোন বেয়ে টুপটাপ শুধু ঝরে পড়ে-
কিংবা বর্ষার অজস্র কদমফুলের মতো মনে হয়
দূর থেকে ভেসে আসা সেই শব্দগুলি;
এইখানে টেলিফোনের সামনে বসে আমি তাই
কেবলই আড়ষ্ট হয়ে পড়ি
পাই না মোটেও খুঁজে একটিও যোগ্য শব্দ
বলি খুব সাধারণ দু’একটি কুশল সংবাদ-
অসহায় তোতলার মতো দুটি জড় ঠোঁটে কেবল আটকে যায় কথা
মনে হয় জীবনে কখনো আর ধরিনি কারুর টেলিফোন।
টেলিফোন হাতে নিয়ে হঠাৎ আমার মনে হলো বুষি
নিঃশ্বাস এক্ষুনি বন্ধ হয়ে যাবে
আর একটিও শব্দ বেরুবে না এই নির্বাক নিস্পন্দ কণ্ঠ দিয়ে
আমি বুঝি চিরতরে বোবা হয়ে যাবো;
আর কেবল আমার বুকের ভেতর বেজে যাবে
অন্তহীন এই গাঢ় টেলিফোন।
আমি তাই টেলিফোনে কী বলতে কী যে বলেছি
কিংবা যা বলা উচিত ছিলো তার কিছুই বলিনি
হায় বোকা, টেলিফোনে কেউ কি কখনো এমন সুখের কথা বলে,
এমন দুঃখের কথা বলে!
কেন ভালোবাসি, কেন কষ্ট পাই
তুমিও যেমন জানো আমিও তো তাই!
তবু ভালোবাসি, তবু ভেজে চোখ
এভাবেই বেঁচে থাকা, এভাবেই শোক ।
তুমি
আমাকে যত বেসেছো ভালো তুমি
আমায় যতোই ছুঁয়েছো বেদনায়,
ততোই কেঁপে উঠেছে মনোভূমি
শিশির ততো জমেছে চেতনায় !
আমাকে ভালোবেসেছো তুমি যতো
আমাকে যতো দিয়েছো তুমি ঋণ,
ভালোবাসায় ততোই বেদনাহত
চোখের জলে ততোই উদাসীন !
আমাকে তুমি বেসেছো যতো ভালো
আমার যতো দিয়েছো ভরে প্রাণ,
ততোই চোখে পড়েছে এসে আলো
ছুঁয়েছে ততোই সুদূর অভিমান !
আমাকে যতো করেছো ঘৃণা তুমি
আমায় যতো করেছো অবহেলা,
আমার ততো হয়েছো প্রিয় তুমি
অপেক্ষাতে কেটেছে ততো বেলা !
আমাকে ঘৃণা করেছো তুমি যতো
আমাকে তুমি করেছো যতো হীন,
ততোই ভালোবাসায় হয়েছি নত
ততোই সঁপেছি তোমাকে আগামী দিন !
আমাকে তুমি করেছো যতো ঘৃণা
আমাকে যতো করেছো অপমান,
ততোই প্রাণে মুখর তোমার বীণা
যোগ্য ততোই হয়েছে আমার গান ।
আমার জীবন
আমার জীবন আমি ছড়াতে ছড়াতে
এসেছি এখানে,
আমি কিছুই রাখিনি-
কুড়াইনি তার একটিও ছেঁড়া পাতা,
হাওয়ায় হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছি শিমুল তুলোর মতো
সব সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, স্মৃতি,
আমি এই হারানো জীবন আর খুজি নাই
সেই ফেলে আসা পথে;
ছেঁড়া কাগজের মতো ছড়াতে ছড়াতে এসেছি আমাকে।
পথে পড়ে থাকা ছিন্ন পাপড়ির মতো
হয়তো এখানো পড়ে আছে
আমার হাসি ও অশ্রু,
পড়ে আছে খেয়ালি রুমাল, পড়ে আছে
দুই এক ফোঁটা শীতের শিশির;
এখনো হয়তো শুকায়নি কোনো কোনো অশ্রুবিন্দুকণা,
বৃষ্টির ফোঁটা
চঞ্চল করুণ দৃষ্টি, পিছু ডাক,
হয়তো এখনো আছে সকালের মেঘভাঙা রোদে,
গাছের ছায়ায়
পদ্মাপকুরের স্থির কালো জলে,
হয়তো এখনো আছে হাঁসের নরম পায়ে
গচ্ছিত আমার সেই হারানো জীবন
সেই সুখ-দুঃখ
গোপন চোখের জল।
এখনো হয়তো পাওয়া যাবে মাটিতে
পায়ের চিহ্ন
সেসব কিছুই রাখিনি আমি
ফেলতে ফেলতে ছড়াতে ছড়াতে এখানে এসেছি;
আমি এই জীবনকে ফ্রেমে বেঁধে রাখিনি কখনো
নিখুঁত ছবির মতো তাকে আগলে রাখা হয়নি আমার,
আমার জীবন আমি এভাবে ছড়াতে ছড়াতে এসেছি।
আমার সঞ্চয় আজ কেবল কুয়াশা, কেবল ধূসর মেঘ কেবল শূন্যতা
আমি এই আমাকে ফ্রেমে বেঁধে সাজিয়ে রাখিনি,
ফুটতে ফুটতে ঝরতে ঝরতে আমি এই এখানে
এসেছি;
আমি তাই অম্লান অক্ষুণ্ন নেই, আমি ভাঙাচোরা
আমি ঝরা-পড়া, ঝরতে ঝরতে
পড়তে পড়তে
এতোটা দীর্ঘ পথ এভাবে এসেছি
আমি কিছুই রাখিনি ধরে কোনো মালা, কোনো ফুল,
কোনো অমলিন স্মৃতিচিহ্ন
কতো প্রিয় ফুল, কতো প্রিয় সঙ্গ, কতো উদাসীন
উদ্দাম দিন ও রাত্রি
সব মিলে হয়ে গেছে একটিই ভালোবাসার মুখ,
অজস্র স্মৃতির ফুল হয়ে গেছে একটিই স্মৃতির গোলাপ
সব সাম মিলে হয়ে গেছে একটিই প্রিয়তম নাম;
আমার জীবন আমি ফেলতে ফেলতে ছড়াতে ছড়াতে এখানে এসেছি।
সুন্দরের হাতে আজ হাতকড়া, গোলাপের বিরুদ্ধে হুলিয়া
সুন্দরের হাতে আজ হাতকড়া, গোলাপের বিরুদ্ধে
হুলিয়া,
হৃদয়ের তর্জমা নিষিদ্ধ আর মননের সম্মুখে প্রাচীর
বিবেক নিয়ত বন্দী, প্রেমের বিরুদ্ধে পরোয়ানা;
এখানে এখন পাখি আর প্রজাপতি ধরে ধরে
কারাগারে রাখে-
সবাই লাঞ্ছিত করে স্বর্ণচাঁপাকে;
সুপেয় নদীর জলে ঢেকে দেয় বিষ, আকাশকে
করে উপহাস।
আলোর বিরুদ্ধাচারী আঁধারের করে শুধু স্ততি,
বসন্তের বার্তা শুনে জারি করে পূর্বাহ্নে কারফিউ,
মানবিক উৎসমুখে ফেলে যতো শিলা ও পাথর-
কবিতাকে বন্দী করে, সৌন্দর্যকে পরায় শৃঙ্খল।
বর্ষা বৃষ্টি কিংবা ভালোবাসার কবিতা.....
এই একখন্ড সাদা কাগজের উপর মেঘ এসে যখন দাঁড়ায়
তখন প্রতিটি অক্ষর হয়ে ওঠে একেকটি বৃষ্টির ফোঁটা,
শব্দগুলি বর্ষাকাল
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি বিন্দু বিন্দু অশ্রুর কবিতা।
মেঘ ভাঙতে ভাঙতে দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে
উত্তর গোলার্ধে যায়।
সাদা কাগজের উপর পড়ে থাকে স্মৃতি,
ভালোবাসার গন্ধ
আমি হাত বাড়িয়ে সেই মেঘবৃষ্টির স্বর্ণমুদ্রা কুড়াতে থাকি,
এই শাদা কাগজ মূহুর্তে হয়ে ওঠে বিরহী মেঘদুত
অথই গীতবিতান।
কাগজ আবিষ্কারের পূর্বে মানুষ প্রেমের কবিতা
লিখে রেখেছে আকাশে
সেই ভালোবাসার কবিতা এই বৃষ্টি,
এই ভরা বর্ষা।
মুছে যাওয়া নামগুলির জন্য এলিজি
কত নাম মুছে গেছে জলে ভেজা অক্ষরের মতো
কত ছবি হয়ে গেছে মেঘের আকাশ,
এত নাম ধরে রাখা ছিল, মেমোরি কিছুই রাখেনি
সব খালি ডিস্ক, সাদা পৃষ্ঠা
কত নাম ঝরে গেল ঝরাপাতার মতন;
কিছুই পাবে না ফিরে, শৈশব, সৌরভ,
মর্নিং স্কুল
হাতে লেখা চিঠিগুলি কাগজের নৌকা হয়ে
ভেসে গেছে জলে,
ছেড়ে গেছে ইস্টিমার, পদ্মা এক্সপ্রেস
লোডশেডিংয়ের মতো বিষণ্ন স্টেশন,
বন্ধ দরজায় শুধু বারবার ব্যর্থ কড়া নাড়ি।
মুছে গেছে কত উজ্জ্বল অক্ষর, নক্ষত্রপুঞ্জের মতো
নাম,
ধুয়ে গেছে আঙুলের মিষ্টি গন্ধ, রুমালের ঘ্রাণ
বকুল ফুলের মধুর দুপুরবেলা,
আজ সব খালি ডিস্ক, সাদা পৃষ্ঠা;
কখন যে বুকপকেটে রাখা চিঠিগুলি সব
জলে ভিজে গেছে,
কখন যে হারিয়ে গেছে সমস্ত কয়েন, বাড়ির নম্বর
মুছে গেছে সবটুকু স্লেট, সবটুকু কাগজের
পাতা,
আছে শুধু ক্ষতচিহ্নের মতো জলের করুণ কিছু
দাগ, কত অশ্রুভেজা অবুঝ অক্ষর।
১২ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:২৩
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: ধন্যবাদ । ভালো আছি, কিন্তু দেশের কথা ভাবলে আর ভালো থাকা যায়না । মহাদেব সাহা আমার ও প্রিয় একজন কবি। ভালো থাকবেন।
২| ১০ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২০
ফারজানা শিরিন বলেছেন: ব্লগ আর ফেসবুকের বাইরে আমার কবিতার বই পড়া হয় নাই । শুধু সুকান্ত, কিছু সুকুমার আর রবীন্দ্রনাথের কবিতা পড়া হইছে । ভালো থাকবেন ।
১২ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:২২
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: কবে কোথায় কিভাবে কবিতাকে ভালবেসেছিলাম আজ আর তা মনে নেই,কিন্তু আমি এখনো কবিতার প্রেমে আকণ্ঠ নিমজ্জিত । যেখানেই পাই সেখানেই পড়ি । আপনিও ভালো থাকবেন ।
৩| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০১
কথক পলাশ বলেছেন: মহাদেব সাহার একটা কবিতার দুটো লাইন মনে আছে। পুরো কবিতাটা খুঁজছি। থাকলে জানাবেন প্লিজ।
"যেদিক তাকাই দগ্ধ চোরাবালি,
ছায়া'রা দেয় শূণ্যে হাততালি।
অফটপিকঃ
প্রতিটি মন্তব্যের ঘরে যেখানে তারিখ লেখা থাকে-যেখানে কার্সর নিলে সবুজ একটা তীর চিহ্ন পাবেন। ওটাতে ক্লিক করে মন্তব্যের জবাব লিখতে পারবেন।
১২ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:২১
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: শেষ মন্তব্যটি করার সময়ই খেয়াল করেছিলাম ব্যাপারটা,এমন সময় আপনিও জানালেন । খুঁজে দেখছি লাইন দুটি ।পেলে অবশ্যই জানাবো ।ভালো থাকবেন ।
৪| ১৫ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: ভাল কালেকশন
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৫০
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: ধন্যবাদ !
৫| ২১ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৬:৪৫
এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল স্বর্ণা বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ, পোষ্টের জন্য।
আপনি কি সাংবাদিক?
২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:০০
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ স্বর্ণা । না আপু,আমি সাংবাদিক নই । অনেক অনেক ভালো থাকবেন ।
৬| ২৯ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৬:৩১
অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: মহাদেব সাহা আমার প্রিয় কবি নন তবে তার কিছু কবিতা বেশ লাগে। ভাল থাকবেন।
০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৫:৫০
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: যে কোন কবিরই শত ভাগ কবিতা ভালো লাগা দুষ্কর । আপনিও ভালো থাকবেন ।
৭| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:০৮
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
মহাদেব সাহা কে ভালো পাই।
সহজিয়া বয়ানের কবি, এজন্যই হয়তো।
এবার বই মেলায় কয়েকটা বইয়ে অটোগ্রাফ নিয়েছিলাম, মিশুক মানুষ ও।
পোস্টে ভালো লাগা।
কবিতার জয় হোক।
০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:১৯
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: কবিতার জয় হোক । বই মেলায় যাবার সৌভাগ্য আমার কখনোই হয়নি ।
৮| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১১
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: সুন্দর পোস্ট। উনার প্রেমের কবিতাগুলো খুজছিলাম
১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৪০
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: ধন্যবাদ
৯| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৫:৩২
ফারজুল আরেফিন বলেছেন: অনেক সুন্দর পোস্ট, ধন্যবাদ।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:২৬
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।
১০| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:৩২
ইমানুয়েল নিমো বলেছেন: আপাতত প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম। পরে সবগুলো কবিতা পরে দেখব।
সুন্দর সংগ্রহের জন্য আপনাকে প্লাস।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:২৬
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
১১| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩
সকাল রয় বলেছেন:
আমি হয়তো কারো বুকে জাগাতে পারিনি ভালোবাসা...............
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কেমন আছেন আপনি?মহাদেব সাহা আমার প্রি য় কবিদের একজন।