![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কতোটা পথ পেরুলে তবে পথিক বলা যায় ......
বর্তমানে ১০৫ ক্যারাট ওজনের কোহিনুর ই একসময় পৃথিবীর সর্ববৃহত্তম হীরা ছিল । অনেক ভারতীয় রাজা মহারাজা হয়ে এটি এখন ব্রিটিশ রাজ পরিবারের মুকুটের শোভা বৃদ্ধি করছে । বহু শতক আগে শুরু হওয়া কোহিনুর এর ইতিহাস অনেক পুরাণ ও কল্প কাহিনী দিয়ে পূর্ণ । কথিত আছে যে কোহিনুর ৫০০০ বছরের পুরনো । অন্ধ্র প্রদেশের বিখ্যাত গোলকুণ্ডা হীরক খনি থেকে হীরাটি পাওয়া যায় । সংস্কৃত ভাষায় লেখা শ্যামান্তাকা রত্ন নামক ভারতীয় পুরাণেও এর উল্লেখ আছে ।এই হীরা প্রথম ছিল ভারতের প্রাচীন নগরী উজ্জয়িনীর রাজা বিক্রমাদিত্যের মুকুটে । তারপরে মাল্য রাজ পরিবারের শাসকদের মুকুটে শোভা পেত এই হীরা ।
১৫২৬ সালে মুঘল সম্রাট বাবুর এর অধিকারী হন । বাবুর উল্লেখ করেন যে হীরাটি ১৩ শ শতকে গোয়ালিওর এর রাজ পরিবারের কাছে ছিল ।এরপরে বহু দিন ধরে মুঘল সম্রাটদের আয়ত্বে ছিল কোহিনূর । সম্রাট শাহ জাহান এর নির্দেশে মুঘল রাজ সিংহাসন ময়ূর সিংহাসনে লাগানো হয় ।পরবর্তীতে সম্রাট পুত্র আওরঙ্গজেব এটি লাহোর এর বাদশাহী মসজিদে নিয়ে যায় । সেখান থেকে ১৭৩৯ সালে চুরি করে এই হীরার পরবর্তী অধিকার নিয়ে নেয় পারস্যের সম্রাট নাদির শাহ । এর ঝলক দেখে অভিভূত নাদির শাহ বলেছিলেন: “কোহ-ই-নূর!” (“আলোর পাহাড়!”), এই ভাবেই এই পাথরের বর্তমান নামকরণ হয়েছিল। তারপরে এই হীরের মালিক হয়েছিলেন আফগানিস্তানের আমীর বংশ, তাদের থেকেই এই পাথর এসেছিল শিখ মহারাজ বংশের দখলে । আফগান শাসক সুজা শাহ্ দুররানী তাকে আফগান সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারে সাহায্য করার বিনিময়ে ১৮১৩ সালে এটি পুনরায় ভারতের কাছে প্রত্যাবর্তন করেন । ১৮৪৮ সালে দুটি শিখ রেজিমেন্টে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল, তখন সমস্ত হীরে, মাণিক্য ও স্বর্ণালঙ্কার ইংরেজ বাহিনী নিজেদের যুদ্ধ জয়ের ট্রফি হিসেবে নিয়ে গিয়েছিল. কোহিনূর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী পাঞ্জাবের সামরিক বাহিনীর আত্ম সমর্পণের পরে লাহোর চুক্তির মধ্যেই কেড়ে নিয়েছিল. ১৯৪৯ সালের ২৯শে মার্চ এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল পাঞ্জাব সামরিক বাহিনীর পক্ষে মহারাজ দলীপ সিংহ ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর প্রতিনিধি লর্ড ডালহৌসীর মধ্যে। দলীপ সিংহের তখন বয়স ছিল ১১ বছর। সেই বছরেই ১৮৬ ক্যারেট (৩৭গ্রাম)_ওজনের পালিশ না করা এই হীরে ইংল্যান্ডের রাণী ভিক্টোরিয়াকে দেওয়া হয়েছিল উপহার হিসাবে । তিনি আদেশ করেছিলেন এই হীরে কেটে পালিশ করার, যা করার পরে হীরের ওজন কমে হয় একশ নয় ক্যারেট। কাটার পর এটি ডিম্বাকৃতির হয়ে যায় এবং এর উজ্জ্বলতাও কিছুটা কমে যায় বলে অভিযোগ করা হয় । ১৯১১ সালে রাণী মেরির যখন অভিষেক হয়েছিল, তখন তাঁর প্রধান অলঙ্কার হয়েছিল এই ঐতিহ্যময় পাথর।
এই পাথরের দীর্ঘ ইতিহাসে এর আঠেরোজন মালিকের মধ্যে একদল মারা গিয়েছিল বিশ্বাসঘাতকের হাতে, অন্যেরা যুদ্ধে, তৃতীয় একদল বহিষ্কৃত হয়ে নিঃস্ব হয়ে মারা পড়েছিলে। এই কারণেই এই হীরার কুখ্যাতি রয়েছে। ভারতে মনে করা হয়েছিল যে, “এই হীরা যার কাছে থাকবে, সারা দুনিয়া তারই হবে, কিন্তু এই বিশ্বের সমস্ত দুর্দশাও তাকে ভোগকরতে হবে। শুধু ঈশ্বর ও নারী এই হীরা বিনা শাস্তিতে ধারণ করতে পারে।এমনকি ব্রিটিশ রাজ পরিবারে ও শুধুমাত্র নারী সদস্যরাই এই হীরা ব্যবহার করেছেন । এরা হলেন মহারানী ভিক্টোরিয়া,রানী আলেক্সান্দ্রা ( রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের স্ত্রী ),রানী মেরী এবং রানী এলিজাবেথ ।
ভারতে এই ঐতিহ্যময় সম্পদের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।১৯৯৭-এ স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী উদযাপনে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভারত সফরের সময়েও এই হীরা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়। এই হীরা ফেরত নেওয়ার প্রসঙ্গ বহুবারই ভারত সরকার উত্থাপন করেছে । ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভারতীয় বংশোদ্ভূত সদস্যরা এমনকি কোহিনূর দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ আন্দোলনও করেছেন। এই প্রসঙ্গে ভারতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সফরের সময়েও তোলা হয়েছিল. কিন্তু লন্ডন এই ঐতিহ্যময় হীরা ফেরতের ব্যাপারে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না, অন্য কোনও মূল্যবান জিনিসও ফেরত দিতে তারা তৈরী নয়, যা ভারতে ব্রিটেনের উপনিবেশবাদী লোকরা লুঠ করেছিল ।জালিওয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডকে `লজ্জাজনক` বলে আখ্যা দিলেও উপনিবেশের প্রাপ্তি `কোহিনুর` যে রানির সম্পত্তি সেকথা জানিয়ে দিলেন ভারতে সফররত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যক সম্পর্কে গড়ে তুলতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জানান অতীত নয়, বর্তমান ও ভবিষ্যতের উপরেই নজর দিচ্ছেন তিনি।
রাণীর মুকুটে খচিত ১০৫ ক্যারাটের এই হীরা বর্তমানে টেমসের তীরে টাওয়ার অফ লন্ডনে শোভা পাচ্ছে। হীরাটি রাণী এলিজাবেথের মা কুইন মাদারের সময় রাণীর মুকুটে খচিত হয়।
ডাচেস অফ কেমব্রিজ উইলিয়াম পত্নী কেট মিডিলটন রাণী হলে এই রাজ মুকুটটি পরবেন।
দরিয়া -এ -নূর হীরা
কোহিনুর এর মতোই আরেকটি বিখ্যাত হীরা দরিয়া এ নুর ।১৮২ ক্যারাট এর এই হীরক পারস্যের রাজ মুকুটে সজ্জিত আছে ।
তথ্যসূত্র http://bengali.ruvr.ru
উইকিপিডিয়া
প্রথম আলো
২৫ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:৩২
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: আপনার নিকটাও সুন্দর । পোস্টে এই প্রথম + পেয়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ । পরে ফেলুন না কোহিনুর এর মুকুট ।
২| ২৫ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৬:১৫
একজন আরমান বলেছেন:
দারুন তথ্যবহুল পোস্ট।
প্রিয়তে রাখলাম।
হ্যাপি ব্লগিং
২৬ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:৩২
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: ধন্যবাদ ।
৩| ২৬ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯
শব্দহীন জোছনা বলেছেন:
পড়তে
তো চাই -ই, তবে তথ্য সূত্রের মত যদি কোহিনুর এর লিঙ্ক ও দিয়া দিতেন তাইলে হয়তবা ট্রাই করা যাইত।
২৭ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:৩৪
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: জোছনার আলোর কাছে কোথায় লাগে কোহিনুর এর দ্যুতি ! কেন যে হীরা ফেলে কাঁচ মানে জোছনা ফেলে হীরার দিকে ঝুঁকছেন ! তবুও বলছেন যখন, কোহিনুর এর লিঙ্কটাও দিয়ে দেবো, শুধু পোস্ট খেয়াল করবেন ।
৪| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯
ত্রিভকাল বলেছেন: মিস, আমার কাছে হীরা, রত্ন, সোনা দানা, গয়না এগুলো কখনো টানেনি, তাই স্বচক্ষে দেখার ইচ্ছাও জাগেনি কখনো। কিন্তু আপনি এতো সুন্দর করে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন যে, এখন মনে হচ্ছে এটা স্বচক্ষে না দেখে মরে যাওয়টা ঠিক হবে না আমার.. অসম্ভব ভালো লাগলো, তবে প্লাস দিতে পারছি না। প্লাস বাটনে অনেকক্ষণ গুতাগুতি করেও লাভ হলো তাই মুখে মুখে ইনফিনিটিভ প্লাস দিয়ে দিলাম..
৫| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৫
আদম_ বলেছেন: তাহলে হুমায়ুন আহমেদের বাদশাহ নামদার বইতে যে পড়লাম সম্রাট হুমায়ুন, পারস্যের বাদশাহ কে কোহিনুর হীরা উপহার দিলেন...........
সবকিছু গুবলেট হয়ে গেল।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৪৪
শব্দহীন জোছনা বলেছেন:
সুন্দর তবে লোভ জাগানিয়া পোস্ট
এখন তো মুকুটে কোহিনুর পড়তে ইচ্ছে করতেছে।
++++++++