![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কতোটা পথ পেরুলে তবে পথিক বলা যায় ......
স্বাধীনতার ৪২ বছর অতিক্রম করলাম আমরা। ত্যাগ, তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরব গাথা ইতিহাসের অংশীদার। তৎসময়ে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার একটি নতুন ভূখণ্ড,স্বাধীন দেশ দেখার জন্য স্বপ্ন দেখেছিলেন তাদেরই একজন বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলাবাসীর অহংকার ইউ কে চিং বীর বিক্রম (৭৭)।
সারাদেশের১৭৫জন বীরবিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে তিনি একজন।মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধের শীর্ষ খেতাবধারী পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের একমাত্র বীর বিক্রম ইউ কে চিং ।
তাঁর অসামান্য অবদানের কথা এসে যায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পাতা উল্টালেই। তাঁর মতো আরও অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার অবদানে আজ দেশ স্বাধীন। দেশ স্বাধীন করে বীরবিক্রম উপাধি পেলেও সাংসারিক জীবনে তিনি একজন পরাজিত সৈনিক।ইউ কে চিংয়ের আসল নাম ইউ কে চিং মারমা। এক সাধারণ মারমা আদিবাসী পরিবারের সন্তান তিনি। তাঁর বাড়ি বান্দরবান জেলায়। জেলা সদরের লাঙ্গিপাড়ায়। তাঁর বাবার নাম বাইসাউ মারমা, মা ম্রাংসানু মারমা। স্ত্রী তুইকানু মারমা। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। স্বাধীনতার পর তিনি বিজিবিতে চাকরি করেন। ১৯৮২ সালে অবসর নেন।বয়সের ভারে নুঁয়ে পড়লেও মানুষটি এখনো শক্ত মনোবল নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছে সময় পেলে মুক্তিযুদ্ধের আনন্দ-বেদনা মিশ্রিত লোমহর্ষক ঘটনা বলতে ভুল করেন না। জীবনের চলার পথে আর্থিক দৈন্যতা যার নিত্য সঙ্গী ’নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ এমন অবস্থার কথা মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হলেও দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যানে মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ট্রাষ্ট এগিয়ে আসেনি। গতবছর এই বীরের প্রতি সম্মান জানাতে এগিয়ে আসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে সেনাবাহিনী। অভাব তাঁর নিত্য সঙ্গী হলে ও তার ব্যাক্তিত্বকে বিসর্জন দেননি কোন দিন। কারো কাছে হাত পাতেননি তিনি। পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সাংগু নদীর তীর ঘেঁষে পাহাড়ের পাদদেশে লাংগী পাড়ায় পরিবার নিয়ে তিনি বাস করেন। তার এ দুরাবস্থার কথা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর নজরে আসে গতবছর বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কর্তৃপক্ষের। বান্দরবান ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের পক্ষ থেকে পার্বত্যাঞ্চলের একমাত্র বীর বিক্রম ইউ কে চিং এর বাড়িটি পুননির্মাণ করে দেয়া হয়। বাড়ির পাশেই আরো ১০ হাজার টাকার মালামাল দিয়ে একটি ছোট্ট দোকান করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। বর্তমানে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ সহায়তা পেয়ে বীর বিক্রম ইউ কে চিং জীবনের শেষ বেলাতে এসে চলছেন কোন রকমে। রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবীতে যখন বাংলা ভাষাভাষীরা সোচ্ছার ঠিক তখনেই ইউকে চিং ১৯৫২ সালে যোগদেন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস(ইপি আরে)। ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার সাথে সাথে তিনি পরিবার-পরিজন ত্যাগ ও জীবনের মায়া না করে একটি স্বাধীন দেশ ও দেশের লাল সবুজের নতুন এক পতাকা দেখার প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার সাথে সাথে তিনি পরিবার-পরিজন ত্যাগ ও জীবনের মায়া না করে একটি স্বাধীন দেশ ও দেশের লাল সবুজের নতুন এক পতাকা দেখার প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ ইপিআরের নায়েক হিসেবে রংপুর জেলার হাতিবান্ধা বি ও পি তে কর্মরত ছিলেন। পরাধীনতার শেকল থেকে দেশেকে মুক্ত করতে ও নিজেদের অধিকারের কথা চিস্তা করে বিওপিতে কর্মরত এক বিহারি ও ২ পাঞ্জাবিকে হত্যা করেন এবং ৯ বাঙালি ইপিআর সৈনিককে নিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে তিনি সবসময়ই নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হন। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীসংলগ্ন চৌধুরীহাটের যুদ্ধের ঘটনা তাঁর প্রায়ই মনে পড়ে। ওই যুদ্ধের স্মৃতি তাঁকে বেশ পীড়া দেয়। সেখানে মুক্তিবাহিনীর লেফটেন্যান্ট সামাদসহ (আশফাকুস সামাদ, বীর উত্তম) তাঁর আরও কয়েকজন সহযোদ্ধা শহীদ হন। তিনিও মারা যেতে বা আহত হতে পারতেন। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জের অন্তর্গত চৌধুরীহাট। সীমান্তবর্তী এলাকা। নভেম্বরের মাঝামাঝি একদল মুক্তিযোদ্ধা রায়গঞ্জে অবস্থান নেন। তাঁরা কয়েকটি দলে বিভক্ত ছিলেন। একটি দলে ছিলেন ইউ কে চিং। সেখানে ছিল পাকিস্তানি সেনাদের একটি শক্ত অবস্থান। রাতে তাঁরা পাকিস্তানিদের অবস্থানে আক্রমণ করেন। সারা রাত যুদ্ধ চলে। ভোররাতে পাকিস্তানিদের দিক থেকে গোলাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। রায়গঞ্জের পূর্ব দিকে দুধকুমার নদ। ইউ কে চিংরা ছিলেন এর উত্তর পাড়ে। লে. সামাদও সেদিকে ছিলেন। তাঁরা সেদিক দিয়ে রায়গঞ্জের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় পাকিস্তানি সেনাদের অ্যামবুশে পড়েন। সেখানে একটি সেতুর নিচে বা বাংকারে ছিল পাকিস্তানিদের এলএমজি পজিশন। তা ক্যামোফ্লেজ করা ছিল। ফলে মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা রেকি করেছেন, তাঁরা পাকিস্তানিদের ওই সুরক্ষিত অবস্থান টের পাননি। পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি টের পাওয়ামাত্র সেখান থেকে বৃষ্টির মতো গুলি করতে থাকে। এরপর মুক্তিবাহিনীর মূল দল আসে। তাঁদের প্রচণ্ড আক্রমণে পাকিস্তানিরা সেখান থেকে পিছু হটে নাগেশ্বরীতে অবস্থান নেয়।
ইউ কে চিং চৌধুরীহাট ছাড়াও হাতীবান্ধা, পাখিউড়া, ভূরুঙ্গামারী, রৌমারীসহ আরও কয়েক স্থানে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। শুধু অস্ত্র নিয়েই নয়, তিনি কখনো কখনো আদিবাসীদের প্রতিরোধ ও আত্মরক্ষার কৌশল প্রয়োগ করেও যুদ্ধ করেন। এর মাধ্যমে তিনি কয়েক স্থানে পাকিস্তানি সেনাদের হতাহত করেন। তাঁর এ কৌশল দেখে অনেকে অভিভূত হন। নিজের জীবন বাজি রেখে নয় মাস যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সরকার তাঁকে বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত করেন।
বীরবিক্রম ইউকেচিং , তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবেনা ! আমরা অকৃতজ্ঞ জাতি, তোমাদের উপযুক্ত সম্মানটুকু আজো দিতে পারিনি । আমাদের ক্ষমা কর ।
তথ্যসূত্র : বাংলা বার্তা,প্রথম আলো ।
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:৫৫
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: ভালো লাগলো জেনে আমারও ভালো লাগলো ।
২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:০৯
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
দারুন পোস্ট।
প্রথম আলো অনেক ভন্ডামির মাঝে ও ভালো কিছু দেয় মাঝে মাঝে।
এজন্যই ঘুরে ফিরে এখানেই থাকতে হয়।
০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৭:৫২
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: এজন্যই ঘুরে ফিরে এখানেই থাকতে হয়।
৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:০০
এসএমফারুক৮৮ বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৭:৫২
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: ধন্যবাদ ।
৫| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬
আশিকুজ্জামান পিয়াশ বলেছেন: ভালো লাগল পড়ে। ধন্যবাদ
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:০৪
অপরাজিতা মুন্নি বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:৪৩
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট ভাল লাগা।