নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

Studio Ghibli এর দুটি চমৎকার এনিমেশন মুভি

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪৭

কদিন আগেই মাই নেইবার টোটোরো এনিমেশন মুভি সম্পর্কে বলেছিলাম । এর পরে আরও বেশ কয়েকটা মুভি পরপর দেখে ফেলেছি যার সব গুলোই Studio Ghibli এনিমেশন বানিয়েছে । এতো চমৎকার সব কাহিনী নিয়ে মুভি গুলো বানানো হয়েছ যে প্রতিটি মুভি দেখার পর মনের ভেতরে এমন একটা আন্দোলন তৈরি হয় সেটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না । Studio Ghibli এনিমেশন কোম্পানী ১৯৮৫ সালে জাপানের টোকিওতে তার কার্যক্রম শুরু করে । এখনওপর্যন্ত প্রায় ২২টা এনিমেশন মুভি তারা বানিয়েছে । তার ভেতর থেকে আমার দেখা ৫টা মুভি নিয়ে আজকের এই পোস্ট । গতদিনের মাই নেইবার টোটোরো মুভিটাও তারাই বানিয়েছে । সালটা ছিল ১৯৮৮ ।

আমার দেখা মুভি লিস্টের প্রথম মুভিটার নাম Castle in the Sky । মুভিটা মুক্তি পায় ১৯৮৬ সালে ।
ছবি উৎস- fathomevents.com

মুভিটার প্রধান দুই চরিত্রের নাম সীটা এবং পাজু । মুভির শুরুতেই দেখা যায় যে আকাশ দস্যু ডোলা এবং তার ছেলেরা একটা প্লেনকে আক্রমন করে । সেখানে সীটা থাকে । মুসকা নাকের আরেকজন সরকারী সিক্রেট সার্ভিসের অফিসারও সেখানে থাকে । মূলত মুসকা সীকাকে নিয়ে যাচ্ছিলো । সীতা তার কাছ থেকে নিজের গলার লকেট ছিনিয়ে নেয় । তারপর মুসকা এবং দস্যুদের হাত থেকে বাঁচতে সেই প্লেন থেকে পালাতে চায় কিন্তু ঘটনা ক্রমে প্লেন থেকে পরে যায় । তবে তার গলায় এক আশ্চর্য লকেট থাকায় সে বাতাসে ভেসে ভেসে নিচে পড়ে । সীটাকে খুজে পায় পাজু !
কিন্তু দস্যু ডোলা এবং গভার্মেন্টের লোকেরা তাদের পিছু ছাড়ে না । ওদের হাত থেকে দুজন পালাতে গিয়ে একটা পরিত্যাক্ত মাইনে ঢুকে পরে । সেখানে এক বৃদ্ধের কাছে জানতে পারে লাপুটা সম্পর্কে তথ্য পায় । পাজুর বাবা এই লাপুটা খুজে পেয়েছিলো । কিন্তু লোকজন তার কথা বিশ্বাস করে নি । পাজুর জীবনের লক্ষ্যই হচ্ছে এই লাপুটা খুজে বের করা এবং বাবাকে সত্যবাদী প্রমান করা ।

লাপুটার পেছনে কেবল পাজুই নয় সেই গভার্মেন্টের লোকজনও পরে আছে । মূলত লাপুটাতে লুকাতে ধনসম্পদ লুট করার জন্য দস্যু ডোলা এবং সেই গভার্মেন্টের মুসকা কাজ করছে । এবং সীটার গলায় যে লকেট টা রয়েছে সেটা লাপুটার খোজ দিতে পারে ।

একসময় সীটা এবং পাজু মুসকার হাতে ধরা পরে । মুসকা সীটাকে বোঝায় যে যদি সে মুসকাকে সাহায্য করে তাহলে পাজুকে তারা ছেড়ে দিবে । সীটা রাজি হয় । কিন্তু পরে পাজু পাইরেট ডোলার সাথে একত্র হয়ে সীটাকে মুসকার হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে । সেই উদ্ধারের সময় সে লাপুটা সম্পর্কে তার প্রযুক্তি সম্পর্কে একটা পরিস্কার ধারনা পায় । তবে উদ্ধারের সময় সীটা তার গলার লকেট হারিয়ে ফেলে । মুসকা সেই লকেটের সাহায্যে এক সময় লাপুটা খুজে পায় । এদিকে সীটা আর পাজুও লাপুটাতে গিয়ে হাজির হয় । তারপর .... সেখানে সীটার আসল রহস্য জানা যায়, লাপুটার সাথে তার কি সম্পর্ক সেটাও পরিস্কার হয় । মুসকা কেন লাপুটা খুজছিলো আর লাপুটার মানুষজন কেন লাপুটাকে ত্যাগ করে চলে গেছে সবই শেষটাতে এসে জানা যায় !
আপনিও তৈরি হয়ে যায় এই চমৎকার মুভিটা দেখার জন্য !

এর পরের মুভিটার নাম Kiki's Delivery Service
ছবি উৎস - rottentomatoes.com

Ghibl স্টুডিওর প্রতিটি মুভির কাহিনীই আলাদা এবং চমৎকার । এই মুভিটাও তার ব্যতীক্রম নয় । কিকি হচ্ছে একজন উইচ বা ডাইনি । তবে আমরা গল্প উপন্যাসে ডাইনি বলতে কেবল বিকৃত চেহারার খারাব বুড়িকেই বুঝি যারা কেবল মানুষের অপকার করে কিন্তু জাপানের কালচারে এই উইচদেরকে ভাল ভাবেই দেখানো হয়েছে যারা মানুষকে নানা ভাবে সাহায্য করে । কিকিই এবং তার মাও তেমন উইচ । তারা মানুষকে নানা ভাবে সাহায্য করে এবং মানুষ্য সমাজে তারা গ্রহনযোগ্য ।

যাই হোক কাহিনী শুরু হয় কিকির বাড়ি ছাড়া নিয়ে । উইচদের ট্রেডিশন অনুযায়ি যখনই কোন উইচের বয়স ১৩ হবে তখনই তাকে পরিপূর্ন উইচ হয়ে ওঠার জন্য বাড়ি ছেড়ে এক বছর বাইরে থাকতে হবে । বাইরের জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে । কিকিও তার বছর পূর্ন হওয়ার পর এক রাতে বাড়ি ছেড়ে অজানার পথে রওয়ানা দেয় । সাথে সঙ্গী হয় তার কালো বিড়াল জিজি । জিজির কথা সে পরিস্কার বুঝতে পারে । সে তার ঝাড়ুতে করে উড়াল দেয় । গিয়ে হাজির হয় এক বড় শহরে । কিন্তু সেখানে গিয়ে পড়ে বিপদে । শহরে একলা একটা ১৩ বছরের মেয়েকে কোন হোটেল থাকতে দিতে চায় না । তখনই ঘটনা ক্রমে কিকি এক প্রেগনেন্ট বেকারীর মালিককে সাহায্য করে । সেই মহিলা খুবই চমৎকার একজন মানুষ । সে কিকিকে তারই বেকারির পেছনের একটা ঘরে থাকতে দেয় ।
কিকি সেখানে তার ডেলিভারি সার্ভিস চালু করে । নিজে যেহেতু ঝাড়ুতে করে উড়ে বেড়ায় সেহেতু জিনিস পত্র পৌছে দিতে তার খুব একটা কষ্ট হয় না । নানান মানুষের সাথে তার পরিচয় হয় ।
সেখানে টমবো নামের এক ছেলের সাথেও তার পরিচয় হয় । টমবো তাকে খুবই পছন্দ করে । কিন্তু টমবো অন্যান্য বন্ধুদের আচরনে কিকি নিজেকে খানিকটা অবাঞ্চিত মনে করে । এক পর্যায়ে এটা নিয়ে কিকি খানিকটা মানসিক কষ্টে পড়ে । এবং সে তার পাওয়ার হারিয়ে ফেলে । আর উড়তে পারে না, তার বেড়ালের কথাও বুঝতে পার না ।

তখন তার আরেক আর্টিষ্ট বন্ধুর সাথে দেখা দেয় । সকল ঝামেলা থেকে কিছু দিন দুরে থাকার জন্য সে আর্টিষ্ট বন্ধুর সাথে তার কেবিনে গিয়ে হাজির হয় । তখন আর্টিষ্ট বন্ধুটি বলে তারও এমন হয়, মাঝে মাঝে সে আঁকতে পারে না । মানসিক ভাবে অশান্তিতে থাকলে এমন হয় তারপর একটা সময়ে ঠিকই আকার শক্তি ফিরে আসে । কিকিকেও বলে যে এক সময়ে তার উইচের শক্তিও ফিরে আসবে । কেবল নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে !

সেই ঘটনাই ঘটে কয়েকদিন পরে । তার বন্ধু টমবো বিপদে পড়ে । একটা বেলুনশিপের দড়ি ঝুলে উড়ে যায় । তাকে উদ্ধার করতে কিকি এগিয়ে যায় । কিন্তু সে তো তার উড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে । তাহলে শেষ পর্যন্ত কি কিকি তার উড়ার শক্তি আবার ফিরে পাবে ? রক্ষা করতে পারবে তার বন্ধুকে !

Studio Ghibli এর মুভি গুলো মনের উপরে একটা আলাদা প্রভাব ভেলে । নতুন একটা জীবনবোধ তৈরি করে । আমি বলবো মুভি গুলো দেখার পরে আমি আবার যেন একটু নতুন ভাবে ভাবতে শুরু করি । নতুন ভাবে সব কিছু এপ্রিশিয়েট করতে শুরু করি । যত গুলো মুভি তারা বানিয়েছে সব গুলো দেখে ফেলার ইচ্ছে আছে আমার । কয়েকটা দেখে ফেলেছি । বাকি গুলোও দেখে ফেলবো আশা রাখি । আপনারাও দেখতে পারেন । বিশেষ করে আপনারা যারা আপনাদের সন্তানদের নিরাপদ এবং সুস্থ বিনোদন নিয়ে চিন্তিতা তারা নিশ্চিন্তে এই মুভি গুলো দেখতে দিতে পারেন ।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫৮

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: ওহ্ দারুন লাগল। এখনই যাচ্ছি দেখতে!

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৪

অপু তানভীর বলেছেন: দেখে ফেলতে পারেন । সময় চমৎকার কাটবে আশা রাখি । বাচ্চাদের সাথে নিয়ে দেখলে তারাও আনন্দ পাবে !

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০২

অগ্নিবেশ বলেছেন: ৯৯ পারসেন্ট মুসলমানের দ্যাশে ব্যাংগচলচ্চিত্র দেখতে উৎসাহ দ্যান। আপ্নেরে শয়তানে পাইছে।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৫

অপু তানভীর বলেছেন: শয়তান তো এই ৯৯ পারসেন্ট মুসলিমের দেশে পার্মানেন্ট ভাবে থাকে । দেখা সাক্ষাক হইতেই পারে।

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: একটাও দেখি নাই

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৮

অপু তানভীর বলেছেন: দেখে ফেলুন আজই ।

৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: দেখি নি। তবে দেখব।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৮

অপু তানভীর বলেছেন: দেখে ফেলুন

৫| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ২:১৩

সোহানী বলেছেন: এই ছোট ছোট এ্যানিমেশান মুভিগুলো আমি অসম্ভব পছন্দ করি। আর বাচ্চাদেরকে নিয়ে এ আবেগীয় মুভিগুলো দেখতে খুব ভালো লাগে।

সিজিআই, সোনি, ডিজনি, সিজিমিটআপ, স্টুডিও নিউইয়র্ক........... এরকম অসংখ্য স্টুডিও এর সর্ট এ্যানিমেশান আছে যা মন ছুঁয়ে যায়।

০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫২

অপু তানভীর বলেছেন: Studio Ghibli প্রতিটি মুভি দেখতে পারেন । সব গুলোই চমৎকার ।

৬| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:১৪

অব্যর্থ বলেছেন: এই সুযোগে আমি কয়েকটা অ্যানিমে (anime) সাজেস্ট করে যাই। ব্লগে শুধুমাত্র একজন ব্লগারই Anime নিয়ে ব্লগ লিখতেন। তিনি অনেক বছর আগেই ব্লগ ছেড়ে দিয়েছেন। এখন আর কেউ আনিমে নিয়ে লেখালেখি করে না।

Your name, A silent voice এর মত অ্যানিমে কমবেশি সবাই দেখেছি, যারা আনিমে কি বুজিনা তারাও। তাই এগুলার কথা বললাম না। ব্লগাররা যেহেতু বাস্ত থাকেন তাই আনিমে সিরিজও বাদ দিলাম। নারী ব্লগারদের জন্য থাকলো The girl who lept through time, The Garden of Words, Weathering With You, The Light of a Firefly Forest, I want to eat your Pancreas, Maquia B-) . রোমান্টিক পুরুষরাও চাইলে দেখতে পারেন :D । Grave of Fireflies আর Into the corner of the world - এই দুইটা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়কার সত্য কাহিনি অবলম্বনে বানানো আনিমে; সব বয়সী বাচ্চা-বুড়ো নিয়ে দেখতে পারবেন। সোহানী আপুর পিচ্চিদের জন্য রইল My neighbor totoro, Wolf children, Princess monnoke আর Spirited away :-P .

০৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: বেশির ভাগই দেখা হয়েছে । চমৎকার !
বাকি গুলোও দেখে ফেলবো । আপনাকে ধন্যবাদ !

৭| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৪৬

সোহানী বলেছেন: @ অব্যর্থ : Princess monnoke আর ছাড়া My neighbor totoro, Wolf children, Spirited away দেখেছি। কানাডার সমস্যা হলো চাইলেই কিছু ডাউনলোপ করতে পারি না। পয়সা দিয়ে মুভি দেখতে চাই না। আইপি টিভি নামের আমাদের এখানে একটা চ্যানেল আছে, সেখানে মাসে ২০ ডলার দিয়ে মেম্বারশিপ ফি দেই। আর মোটামুটি লেটেস্ট মুভি দেখতে পারি। কোয়ালিটি খারাপ না।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৬

অপু তানভীর বলেছেন: নেটফ্লিক্স থেকে দেখতে পারেন । আর পয়সা দিয়ে মুভি না দেখতে চাইলে টরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন । যদিও টরেন্ট ব্যাপারটা ইলিগ্যাল । আমাদের দেশে কোন সমস্যা হয় না । ঐ দেশে হবে কিনা কে জানে !

৮| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৫

অব্যর্থ বলেছেন: @সোহানী: https://9anime.to থেকে যেকোনো japanese অ্যানিমেশন মুভি/সিরিজ দেখতে পারবেন। সাইটে ঢুকে serach box-এ শুধু নাম লেখলেই পেয়ে যাবেন। এডের জ্বালায় বিরক্ত লাগলে ব্রাউজারে একটা Adblock Extenstion ইন্সটল করে নিবেন।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭

অপু তানভীর বলেছেন: এর থেকে টরেন্ট ভাল। ঝামেলা বিহিন । সব কিছু ওখানেই পাওয়া যায় !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.