নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিকেল বেলাতে হাসপাতালের একটু ভীড় বেড়ে যায় । এই সময়ে রোগীদের একটু ছাড় দেওয়া হয় । তাদের পরিচিত মানুষজন তাদের সাথে দেখা করতে আসে । দুঃখী দুঃখী একটা ভাব করে তাদের সাথে কথা বলে । রোগীদের এই অবস্থায় তারা খুবই ব্যাথিত এবং দুঃখিত । যদিও রেহনুমা সুলতানার মনে হয় সবাই কেবল মুখে একটা মেকি দুঃখীবোধ নিয়ে বসে থাকে । বাস্তবে তারা মোটেই অতখানি দঃখিত নয় ।
এই দিক দিয়ে অবশ্য রেহনুমা সুলতানা একেবারেই ঝামেলা মুক্ত । তাকে আসলে কেউ দেখতে আসে না । এই সব মেকি ভালবাসার অনুভূতি তাকে স্পর্শ করে না । সে একদিন যদি এই হাসপাতালে একটু সুখেই আছে । তবে দুঃখবোধ যে তার হয় না সেটা সে জোর দিয়ে কোন ভাবেই বলতে পারবে না ।
যখন সে কেবিন ছেড়ে করিডোরে হাটাহাটি করে তখন মাঝে মাঝেই পাশের কেবিন গুলোর দরজা খোলা দেখতে পায় । সেখানে দেখা যায় কোন দুই এক বছরের বাচ্চা মেয়ে অথবা ছেলে ছোটাছুটি করছে । কখনও বা কেউ একম ছোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে করিডোরে হাটাহাটি করছে । এই ধরনের দৃশ্য দেখলেই রেহনুমা সুলতানার মন বিষাদে ছেয়ে । তখন বুকের ভেতরে বেড়ে ওঠা সেই টিউমারটা অস্বাভাবিক আচরন শুরু করে ।
-মিসেজ রেহনুমা ! আপনি আবারও কেবিনের বাইরে বের হয়েছেন?
রেহনুমা পেছন ফিরে তাকালো । নতুন নার্সটা এসেছে । এই মেয়েটা নতুন জয়েন করেছে হাসপাতালে । কোথায় নতুন নতুন জয়েন করলে যেমন সব কিছু ঠিক ভাবে করার কিংবা নিয়ম গুলো ঠিক ঠিক পালন করার একটা প্রবণতা থাকে এই মেয়ের ভেতরেও সেই ব্যাপারটা খুব আছে । তবে রেহনুমা খুব ভাল করেই জানে যে কদিনের মাঝেই সেও অন্যান্য নার্সের মত নিয়ম নীতি পালনে এতো তৎপর থাকবে না ।
রেহনুমা বলল বলল, কেমন আছো মীরু ?
-ভাল আছি । কিন্তু আপনার না এই ভাবে হাটাচলা করা নিষেধ ! আপনি কেন বের হয়েছেন ?
-আরে বাবা একা একা আর কত সময় শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করে বল ! একটু হাটলে কি সমস্যা ?
মীরু বলল, এটা আপনার শরীরের উপর চাপ সৃষ্টি করবে ! আপনি কি জানেন না ? টিউমারটার অবস্থা খারাপ হতে পারে !
-হলে হোক ! এতো চিন্তা করে লাভ কি ! কোন লাভ নেই !
-আপনি আসুন আমার সাথে । এখনই আসুন ! একটু পরেই ডাক্তার আসবে ! আপনাকে এখানে দেখলে আমার উপর চিৎকার চেঁচামিচি করবে । প্লিজ আসুন !
মীরু রেহনুমা সুলতানার হাত ধরলো । তারপর তাকে আস্তে আস্তে নিজের কেবিনের দিকে নিয়ে যেতে শুরু করলো । রেহনুমা সুলতানার বয়স বিয়াল্লিশ ! কমাস আগেও তার শরীর বেশ সুস্থ সবল ছিল । তাকে দেখলে কোন ভাবেই বোঝা যেত না যে তার বয়স বিয়াল্লিশ । তবে যখন থেকে শরীরের ভেতরে টিউমারটা ধরা পরেছে তখন থেকে শরীর খারাপ হতে শুরু করেছে । এই কমাসের তার বয়স যেন খুব বেশি বেড়ে গেছে । মীরু তাকে কেবিনে শুইয়ে দিল । তারপর তার পেশারটা মেপে নোটে লিখে রেখে গেল । একটু পরেই ডাক্তার সোবাহান উদ্দিল আসবে রেহনুমাকে দেখতে ।
ডাক্তার এলো আরও পনের মিনিট পরে । রেহনুমা তখন নিজের কেবিনে রয়েছে । যদিও তার শুয়ে থাকার কথা তবে সে শুয়ে নেই । বিছানার উপর বসে বই পড়ছিলো । ডাক্তার এসে প্রথমেই রেহনুমার দিকে তাকিয়ে একটু হাসি দিল । তারপর বলল, আপনি দেখছি ডাক্তারের সব পরামর্শই দেখি ভঙ্গ করছেন ? বাইরে এতো হাটাহাটি করাটা এখন আপনার জন্য মোটেই ভাল না । এটা কি আপনি বুঝতে পারছেন না ?
রেহনুমা একটু মুখ তুলে তাকালো কেবল । ডাক্তারের কথার কোন জবাব দিল না । ডাক্তার আবার বলল, যাক সে কথা । আপনার ফ্যামিলির কেউ আসে নি ? আমি যে আসতে বলেছিলাম !
রেহনুমা বলল, ওদের আসলে কারো সময় নেই । সবাই নিজেদের ফ্যামিলি নিয়ে ব্যস্ত ।
-আর আপনার ফ্যামিলি ?
হঠাতই রেহনুমা মনটা কেমন যেন উদাস হয়ে গেল । তার নিজের পরিবার বলতে আসলে কেউ নেই । রেহনুমার বয়স যখন ২৬ তখন তার বিয়ে হয়েছিলো । বিয়েটা প্রথম প্রথম ঠিকঠাক চললেও একটা সময় সেটা আর টিকে নি । রেহনুমার স্বামীর সাথে নানান বিষয় নিয়ে রেহনুমার ঝগড়া লেগেই থাকতো । রেহনুমা সব সময়ই স্বাধীনচেতা মানুষ । কখনই কারো উপর নির্ভর করে নি । পড়াশুনা শেষ করে ভাল চাকরিতে ঢুকেছিলো । স্বামীর একটা আপত্তি ছিল বটে তবে সেটা সে আমলে নেয় নি । সে নিজে চাকরি করবে এখানে অন্য কারো কোন বক্তব্য থাকতে পারে না ।
প্রথম প্রথম তার স্বামী সব কিছু মেনে নিয়েছিল । কিন্তু দিন যতই যেতে লাগলো রেহনুমা লক্ষ্য করতে শুরু করলো যে স্বামীর আচরণ বদলে যেতে শুরু করেছে । একটা সময় রেহনুমা স্বামীর পরকীয়া হাতে না হাতে ধরে ফেললেন । তখন অবশ্য অনেকে বলেছিলেন যে এবারের মত স্বামীকে ক্ষমা করে দিয়ে আবার নতুন করে সব কিছু শুরু করতে । তবে রেহনুমা সেটা করে নি । স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় । আর নতুন ভাবে সংসার করা হয় নি । বাবার বাসায় ফিরে আসে আবার । নিজের পায়ে দাড়ানো ছিল বলে কেউ ওকে কিছু বলতে পারেনি ।
তারপর আর বিয়ে করা হয়ে ওঠে নি । বাসা থেকে বের কয়েকবার চেষ্টা চালানো হয়েছিলো অবশ্য । তবে বাবা মারা যাওয়ার পরে সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে । তারপর থেকে রেহনুমা নিজের মতই আছে । বাবার বাড়ির ভাইদের সাথেই থাকে । দোতলার কোনার দিকের একটা ঘরে তার বসবাস ।
ডাক্তারের কথায় আবার বাস্তবে ফিরে এল সে । ডাক্তার তাকে আবারও জিজ্ঞেস করলো, আপনার ফ্যামিলির কাউকে নিয়ে আসতে পারবেন না ?
রেহনুমা বলল, কি বলার আমাকে বলুন । সমস্যা নেই । আমি সব কিছুই সহ্য করতে পারবো । অবস্থা কি খুব খারাপ কিছু ?
ডাক্তার কিছু সময় চুপ করে থেকে বলল, আমি আপনাকে আসলে মিথ্যা আশা দিবো না । অবস্থা খুব একটা ভাল বলবো না । আপনার টিউমার অবস্থা বেশ খারাপ । এখন এমন একটা অবস্থায় আছে যে যদি আমরা এটাকে কেটে বাদ দিতে চাই তাহলে এটা ফেটে যেতে পারে । না বাদ দিলেও ফেঁটে যাওয়ার একটা সম্ভবনা আছে । দুই ক্ষেত্রেই এটা থেকে ক্যান্সার সৃষ্টির একটা বড় সম্ভবনা রয়েছে ।
-তাহলে ? এখন কি করনীয় ?
আমাদের পরামর্শ হবে যে আমরা এটা আরও কিছুদিন অবজার্ভেশনে রাখবো । যতদুর চেষ্টা করবো যে টিউমারটা ঔষধ দিয়ে কমিয়ে নিয়ে আসার । এটাই হচ্ছে সব থেকে ভাল উপায় ।
-তাহলে সেটাই করুন ।
-এর জন্য আপনাকে বেশ কিছু দিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে !
-সমস্যা নেই। আমি এখানে থাকি আর বাসায় থাকি আমার জন্য আসলে একই ব্যাপার !
ডাক্তার আরও কিছু সময় রেহনুমা সুলতানার সাথে কথা বললেন । তাকে আরও কিছু নিয়ম নীতির কথা বলে কেবিন ছেড়ে চলে গেলেন । রেহনুমার মুখ দিয়ে কেবল একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে এল ।
ডাক্তারেরা রেহনুমার পরিবারের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন । এক দিন কেবল তার বড় ভাই ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানালো যে তারা আসলে ঐভাবে তার বোনের খোজ খবর নিতে পারবে না। তারা নিজেদের জীবন নিয়ে খুব বেশি ব্যস্ত । তবে চিকিৎসার খরচ নিয়ে যেন তারা কোন চিন্তা না করে । তার বোন নিজে বেশ ভাল পরিমান টাকার মালিক । এছাড়াও রেহনুমার বাবা তার নামে বেশ ভাল পরিমান টাকা পয়সা রেখে গেছে । সুতরাং চিকিৎসা চালিয়ে নিতে কোন প্রকার সমস্যা হবে না ।
এদিকে হাসপাতালে রেহনুমার জীবন কাটতে লাগলো নিসঙ্গ ভাবে । অবশ্য নিসঙ্গ জীবনের সাথে রেহনুমা সুলতানার অনেক আগে থেকেই পরিচয় আছে। সেটা নিয়ে সে খুব বেশি চিন্তিত হল না। তবে মাঝে মধ্যেই তার মনে এই কথাটা আসতো যে যদি ঐ সময়ে সে তার স্বামীর থেকে আলাদা না হয়ে যেত তাহলে আজকে তার এই অসুস্থতার সময় নিশ্চয়ই তার স্বামী তার পাশে থাকতো। হয়তো তার দুই একটা বাচ্চাকাচ্চাও থাকতো। তারা তো অবশ্যই তাকে দেখতে আসতো নিয়ম করে। এভাবে একদম একা একা নিসঙ্গ ভাবে কেবিনে শুয়ে থাকতে হত না তার। একা একা করিডোরে হাটতে হত না। হয়তো নিজের শিশু কন্যার হাত ধরেই হাটতো এখানে।
প্রতিদিনকার মত আজও রেহনুমা করিডোর দিয়ে একা একা হাটছিল আর এই সব কথা ভাবছিল। তখনই লোকটাকে দেখতে পেল সে। বয়স অনুমান করার চেষ্টা করলো। পঞ্চাশের বেশি। মাথায় অনেক চুলই পেঁকে গেছে। মুখে বয়সের ছাপ স্পষ্ট। তবে এখনো খানিকটা শক্ত সমর্থ চেহারা। রিসিপশনের এক পাশে দাড়িয়স সে লোকটার দিকে তাকিয়ে রইলো। আর নার্সের সাথে তার কথা বার্তা শুনতে থাকলো।
লোকটা নার্সকে বলছে, সিস্টার আমার সম্ভবত একটা মাইনর এটাক হয়েছে।
সিস্টার লোকটার দিকে তাকিয়ে জানতে চাইলো, কিভাবে বুঝলেন?
লোকটা আবার বলল, গতকাল রাতে ঘুমানোর আগে একটু গরম লাগছিলো। এসি ছাড়া ছিল তার পরেও৷ আমি ভেবেছিলাম হয়তো এলার্জিটা হয়তো আবার দেখা দিয়েছে। আমার আবার এলার্জির সমস্যা আছে।
-তারপর?
-আমি ঔষধ আর পানি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে সব কিছু ঠিক ছিল কিন্তু আমি মাঝেমধ্যে বুঝতে পারছি যে আমার কথা জড়িয়ে যাচ্ছে। হাত পা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে মাঝেমধ্যে।
নার্স এবার একটু সিরিয়াস হল মনে হচ্ছে। লোকটার দিকে তাকিয়ে বলল, আপনার সাথে কে এসেছে?
লোকটা বলল, কেউ আসে নি।
-কাউকে খবর দিন তাহলে।
-আসলে খবর দেওয়ার মত কেউ নেই দেশে। সবাই দেশের বাইরে। সমস্যা নেই আমি একাই সামাল দিতে পারবো!
নার্স বলল, আচ্ছা সব চেয়ে ভাল হয় আপনি এখনই ইমার্জেন্সি তে ভর্তি হয়ে যান। ওখান থেকে দেখুন কি পরামর্শ দেয়। ঠিক আছে? ডান দিক দিয়ে সোজা গেলেই ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড টা পেয়ে যাবেন।
-আচ্ছা!
রেহনুমা দেখতে পেল লোকটি আস্তে আস্তে ডান দিকের করিডোর দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
রেহনুমা একটু হাসলো মনে মনে। তার নিজের সাথে লোকটাকে খানিকটা তুলনা করে দেখলো। রেহনুমার ঐভাবে আপন বলতে আসলে কেউ নেই। তাই এই হাসপাতালে একা একা পড়ে আছে। আর সামনের এই লোকটার সবাই থাকা সত্ত্বেও লোকটা একা একা হাসপাতালে এসেছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। মানুষের জীবন কি অদ্ভুত । লোকটার সব কিছু থেকেও সে একা আর সে তো সেই শুরু থেকেই। রেহনুমা আর কিছু না ভেবে নিজের কেবিনের দিকে হাটা দিল। একটু পরেই আবার ডাক্তার চলে আসবে তাকে চেক আপ করার জন্য। তাকে কেবিনে না পেলে হয়তো বকাবকি করতে পারে !
রেহনুমা লোকটা কথা ভুলেই গিয়েছিল। এই হাসপাতালে প্রতিদিন কত মানুষ আসে। সবার কথা কি আর মনে থাকে। তবে ভাগ্যে হয়তো অন্য কিছু লেখা ছিল। লোকটার সাথে রেহনুমার আবার দেখা হয়ে যায়।
ডাক্তার তাকে খুব বেশি হাটাচলা করতে করতে নিষেধ করেছে । তারপরে রেহনুমা সুযোগ পেলেই তার কেবিন থেকে বের হয়ে যায় । পুর হাসপাতালটা ঘুরে বেড়ায় । মানুষজনকে দেখে । তাদেরকে লক্ষ্য করতে তার ভালই লাগে । আজকেও সে এই কাজটাই করছিলো । ইসিজি রুমের কাছে আসতেই সে সেদিনের সেই বয়স্ক লোকটাকে দেখতে পেল । একটা রিপোর্ট হাতে নিয়ে ইসিজি রুমের সামনে দাড়িয়ে আছে । লোকটাকে দেখে রেহনুমার কি মনে সে সামনে এগিয়ে গেল । তারপর লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বলল, আপনার কোন রিলেটিভ এখনও দেশে আসে নি ?
রেহনুমার কাছ থেকে এই প্রশ্নটা শুনেই লোকটা কেমন যেন একটু চমকে গেল । রেহনুমার দিকে তাকিয়ে রইলো বেশ কিছুটা সময় । সম্ভবত রেহনুমাকে চেনার চেষ্টা করছে । অনেক সময় মানুষের বয়স বেড়ে যায় তখন অনেক কিছু সে ভুলে যায় । অনেকের চেহারা তার মনে থাকে না । লোকটি খানিকটা লজ্জিত ভাবে হেসে বলল, দুঃখিত, আমি ঠিক আপনাকে চিনতে পারছি না !
রেহনুমা বলল, আপনার দুঃখিত হওয়ার কোন কারন নেই । আপনি আমাকে চিনেন না ।
-তাহলে আমার আত্মীয় স্বজনরা যে বিদেশ থাকে এটা কিভাবে জানেন আপনি ?
রেহনুমার মনে হল খানিকটা রহস্য করে দেখা যাক লোকটার সাথে । কিন্তু পরক্ষনেই সেই চিন্তাটা বাদ দিয়ে দিল সে । বলল, আসলে সেদিন আপনি যখন রিপিশনে কথা বলছিলেন আমি আপনার আশে পাশেই ছিলাম । তখনই শুনেছি সব ।
-ও আচ্ছা !
-তা আপনার কি হয়েছে ? যেটা ভেবেছিলেন সেটাই ?
লোকটা মাথা নাড়ালো । তারপর বলল, হ্যা । সেটাই । একটা মাইনর এটাকই হয়েছিলো । তবে খুব বেশি ভয়ের কিছু নেই । ডাক্তারেরা তাই বলেছে । আর কিছুদিন এখানে থাকতে হবে । তাহলেই বাসায় ফিরতে পারবো !
রেহনুমা হাসলো ।
-যাক ! দ্রুত বাসায় ফিরুন । এই কামনা করি !
-আপনি কতদিন ধরে আছেন এখানে ?
-এই সপ্তাহ তিনেক ।
-এতোদিন !
-হুম !
-কি হয়েছে আপনার ?
-কি যে হয়েছে ঠিক মত বলতে পারবো না । ডাক্তারেরা বলেছে যে নাড়িভূড়ির কোথায় যেন একটা টিউমার হয়েছে । এমন একটা অবস্থা যে সেটা না যাচ্ছে কেটে ফেলা না যাচ্ছে রেখে দেওয়া । ঔষধ দিয়ে কমানোর চেষ্টা চলছে । তারপর হয়তো অপারেশন করা যাবে !
-আচ্ছা আচ্ছা !
-আপনি কি কেবিন পেয়েছেন ?
-হ্যা কেবিনেই আছি ! থার্ড ফ্লোরে বি থ্রি ফোর টুতে । আপনি ?
-আমি সেকেন্ড ফ্লোরে আছি । এ টু ফাইভ টু !
লোকটা আরও কিছু বলতে যাবে তার আগেই ইসিজি রুমের ভেতর থেকে একজন নার্স বের হয়ে এল । লোকটাকে কেবিনের ভেতরে ডেকে নিয়ে গেল । রেহনুমা কিছু সময় দরজার সানে দাড়িয়ে থেকে আবারও তার হাসপাতাল ভ্রমনে বের হয়ে গেল । তবে এইবার কেন জানি লোকটার কথা মন থেকে চলে গেল না । মাথার ভেতরে ঘুরতে থাকলো ।
রেহনুমা যখন নিজের কেবিনে এসে ঢুকলো তখনই তার মনে হল লোকটার নামটা আসলে জানা হয় নি । এমন কি নিজের নামটাও তাকে সে বলতে ভুলে গেছে । রাত ভয় কেন কেন জানি এই চিন্তাটা তার মাথায় ঘুরতে থাকলো । মনে হল যে আরও কিছু সময় সেখানে দাড়িয়ে থাকলে হয়তো লোকটা বের হয়ে আসতো । তখন হয়তো আরও কিছু কথা হত । এমনটা তার কেন মনে হল সেটা রেহনুমা নিজেও জানে না ।
পরদিন আবারও লোকটার সাথে রেহনুমার দেখা হল । হাসপাতালের পেছনে রোগীদের হাটাহাটির জন্য একটা বাগান রয়েছে । সেখানে একটা বেঞ্চে রেহনুমা বসে ছিল । এমন সময় কেউ এসে তার পাশে বসলো । বসতে বসতে বলল, আপনার কেবিনের সামনে গিয়েছিলাম !
রেহনুমা অন্য মনস্ক হয়ে কিছু একটা ভাবছিলো । লোকটার কথা শুনে বাস্তবে ফিরে এল । লোকটার হাস্যজ্জল চেহারা দেখে কেন জানি রেহনুমার বেশ ভালই লাগলো । বলল, তাই নাকি ?
লোকটা বলল, হ্যা । কাল যে ভেতরে চলে গেলাম আমমি ভেবেছিলাম বাইরে বের হয়ে আপনাকে দেখতে পাবো ।
কথাটা শুনে রেহনুমা নিজেও খানিকটা চমকে গেল । ঠিক এমন কিছুই সে ভাবছিলো । লোকটা আবার বলল, এই জন্য যাওয়ার আগে বিদায় জানাতে ভুলে গিয়েছিলাম । নিজের পরিচয়টাও দেওয়া হয় নি । যাক সে কথ । আমি সৈয়দ সায়েদুর জামান । আপনি ?
রেহনুমা হাসলো । তারপর বলল, আমি রেহনুমা সুলতানা ! আপনার সাথে পরিচিত হতে পেরে ভাল লাগলো ।
রেহনুমা আস্তে আস্তে লক্ষ্য করলো সায়েদুর জামান নামের লোকটার সাথে রেহনুমার কথা বলতে বেশ ভাল লাগছে । কথা বলতে বলতে কখন যে সন্ধ্যা পার হয়ে গেল সেটা কারোই লক্ষ্য রইলো না । অন্ধকার হয়ে গেলে তারপর তারা উঠলো ।
নিজের বিছানাতে শুয়ে শুয়ে রেহনুমার বারবার কেবল এই কথাটাই মনে হতে লাগলো । সায়েদুর জামান নামের মানুষটাকে সে চেনে খুব বেশি হলে কয়েক দিন । গতকালকে প্রথম কথা হল । আর আজকে তার সাথে কথা বলার সময় রেহনুমার মনে হল যেন কতদিন ধরেই না দুজন দুজনকে চিনে । কত পরিচিত ভঙ্গিতে কথা বলছিলো ওর সাথে ।
সায়েদুর জামানও ঠিক একই ভাবে রেহনুমার কথাই ভাবছিলো । তার জীবনে সে কবে এমন ভাবে কারো সাথে মনখুলে কথা বলেছে সেটা বলতে পারবে না । আত্মীয় স্বজন যা আছে সবাই সারা জীবন কেবল প্রয়োজনে তার কাছে এসে হাজির হয়েছে । যখন তার নিজের দরকার পড়েছে কাউকেই সে কাছে পায় নি । এমন কি নিজের স্ত্রী সন্তানকেও না ।
সায়েদুর জামানের বিবাহিত জীবনটা খুব বেশি সুখের ছিল না । বাবার ইচ্ছেতে বিয়ে হয়েছিলো । তবে মন থেকে সে তার স্ত্রী রেবেকাকে কখনই ভালবাসতে পারে নি । একই ব্যাপার রেবেকার বেলাতেও । এক সাথে থাকতে হয় তাই বলে হয়তো রেবেকা থেকেছে তার সাথে । এর বেশি কিছু নয় । এখন সে ছেলের সাথে জার্মানিতে থাকে । সেখানেই তার থাকার ইচ্ছে । ছেলে জার্মান একটা মেয়েকে বিয়ে করে সেখানেই স্থায়ী বসবাস শুরু করেছে । তাকেও যেতে বলেছিলো তবে সায়েদুর জামান নিজের কাজ কর্ম ছেড়ে সেখানে যেতে রাজি হন নি । সেখানে যাওয়া মানেই ছেলের উপর নির্ভরশীল হয়ে যাওয়া । পুরো জীবনে সে কখনও অন্যের উপর নির্ভরশীল হন নি ।
আর দুদিনের পরিচিত এই রেহনুমা মানের মানুষটা তার সাথে কত চমৎকার ভাবে কথা বলছে । সারা জীবনে সম্ভবত এই একটা ব্যাপারই সায়েদুর জামানের কমতি ছিল । মনের মত একটা কথা বলার মানুষ । এখনও যখন সে জার্মানিতে ছেলে কিংবা স্ত্রীকে ফোন করে, সায়েদুর জামানের মনে হয় সে যেন কোন অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বলছে ।
আজকে রাতের বেলা যখন স্ত্রীকে ফোন করলেন তখন তিনি হঠাৎ করেই রেহনুমার কথা বলল । তার একজন নতুন বন্ধু হয়েছে সেটা নিজের স্ত্রীকে বলতে তার কেন জানি ভালই লাগলো ।
এরপর থেকে ধীরে ধীরে সায়েদুর জামান আর রেহনুমার মেলামেশাটা বাড়তেই থাকলো। দিনের বেশির ভাগ সময়ে দেখা গেল দুজন এক সাথে হাটাহাটি করছে নয়তো কোথায় বসে গল্প করছে । রেহনুমা নিজে বেশ অবাক হয়ে গেল এই ভেবে যে এতো কথা তার ভেতরে কোথায় লুকিয়ে ছিল । এতো কথা তো জীবনে সে আর কারো সাথে করে নি । একটার পর একটা কথা বের হয়েই আসতো ।
দেখতে দেখতে সায়েদুর জামান একেবারে সুস্থ উঠলেন । তার হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার সময় হয়ে এল । রেহনুমার আরও কিছুদিন থাকতে হবে । যাওয়ার দিন সায়েদুর জামান রেহনুমাকে বলল, আমি আবার আসবো তোমাকে নিতে । ঠিক আছে ? যেদিন আসবো সেদিন হয়তো তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করবে !
রেহনুমা হেসে বলল, আমি অপেক্ষা করে থাকবো !
গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় বারবার সায়েদুর জামান পেছন ফিরে তাকাচ্ছিলো । তার কাছে কেবল মনে হচ্ছিলো যে সে কিছু যেন ফেলে যাচ্ছে । এই অনুভূতিটা বাসায় ফিরে আরও তীব্র আকার ধারন করলো । সায়েদুর জামান আবিস্কার করলো যে রেহনুমা নামের সেই ৪২ বছরের মহিলাকে সে ভালবাসে । তার সাথে আর যে কয়টা বছর বাকি আছে সেই সময়টা কাটাতে পারলে মন্দ হত না ।
কিন্তু এই বয়সে যদি সে এমন কিছু করে তাহলে মানুষ কি বলবে ? সমাজ কি বলবে ? সে তো সবার কাছে হাসির পাত্র হয়ে যাবে ! রাত ভয় এই চিন্তায় সে খানিকটা অস্থির হয়ে গেল । এই কথাটা সে যখন তার স্ত্রীকে জানালো তাকে অবাক করে দিয়ে রেবেকা বলল যে সায়েদুর জামান যদি তাকে এখন ডিভোর্স দিয়ে ঐ মহিলাকে বিয়ে করতে চায় তাহলে তাতে তার কোন আপত্তি নেই । সে খুশি খুশি মনেই কাজটা করবে । জীবনে সবারই খানিকটা সুখ পাওয়ার অধিকার আছে ।
কাগজ পত্র তৈরি করতে সায়েদুর জামানের আরও কিছু সময় লেগে গেল । সব কিছু প্রস্তুত করে সে আবারও সেই হাসপাতালে হাজির হল । আজকে সে রেহনুমাকে বলবে সব কথা । তাকে সে বিয়ে করতে চায় এবং এখান থেকেই নিজের বাসায় নিয়ে যেতে যায় !
রেহনুমার কেবিনে হাজির হয়ে দেখতে পেল সেখানে রেহনুমা নেই । সায়েদুর জামান ভাবলেন সম্ভবত রেহনুমা হাটতে বের হয়েছে । কিছু সময় পরেই ফিরে আসবে । তাকে দেখে নিশ্চয়ই চমকে যাবে । খুশি হবে খুব ।
কিন্তু ঘন্টা খানেক বসে থেকেও রেহনুমার দেখা পেলেন না তিনি । কিন্তু ঐ কেবিনে নতুন একজনকে উঠতে দেখলেন তখন তার মনটা খানিকটা উতলা হয়ে উঠলো । রেহনুমা তাহলে কেবিন ছেড়ে দিয়েছে । বাসায় চলে গেছে সে ??
দ্রুত রিসিপশনের দিকে হাটা দিল । রেহনুমার কেবিন নম্বর বলে তার খোজ করলেন । রিসিপশনের মেয়েটা নিজের কম্পিউটারে কিছু সময় টেপাটেপি করে বলল, সরি স্যার উনি আর বেঁচে নেই ।
সায়েদুর জামানের মনে হল তিনি ভুল শুনলেন । তিননি আবার বললেন, কি বললেন?
-উনি মারা গেছেন । গত পরশু দিন !
-কিভাবে ?
-সেটা স্যার আমি বলতে পারবো না । আপনি ডাক্তার আমেরের সাথে কথা বলুন । উনি ট্রিটমেন্ট করছিলেন !
সায়েদুর জামানের বুকের ভেতরে তখন তোলপাড় শুরু হয়েছে । অদ্ভুত ভাবে তার বুকের ভেতরটা লাফাচ্ছে । ডাক্তার আমেরকে কেবিনেই পাওয়া গেল । রেহনুমার কথা জানতে চাইলেই তিনি খানিকটা উদাশ হয়ে গেলেন । তারপর বললেন, আসলে ব্যাপারটা এমন যে হবে আমরা বুঝতে পারি নি ।
-কি হয়েছিলো ! আমি যতদুর জানি ওর টিউমারটা তো নিয়ন্ত্রনে চলে এসেছিলো ।
-হ্যা আসছিলো । কিন্তু আমরা জানতাম না যে উনি এন্টি ডিপ্রেশনের ঔষধ খাচ্ছিলেন । শেষের দিকে উনি কোন কারনে খুব বেশি ডিপ্রেসড হয়ে পড়েছিলেন । অনেক আগে থেকেই উনি এই ঔষধ খেতেন । এখানে আমাদেরকে না জানিয়েই খাচ্ছিলেন ।
-তারপর ?
-এটার সাইড ইফেক্টের পড়ে টিউমারটা উপর । সেটা ব্লাস্ট করে । সেখান থেকে পুরো শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে খুব দ্রুত । আমরা কিছু করার সুযোগই পাই নি ।
সায়েদুর জামান কি বলবেন কিছু বুঝতে পারলো না । বুকের ভেতরে একটা তীব্র কষ্ট হতে শুরু করলো । তিনি সম্ভবত রেহনুমার ডিপ্রেসনের কারনটা ধরতে পারছেন । সায়েদুর জামান স্পষ্টই বুঝতে পারতেন যে তার প্রতি রেহনুমার একটা আলাদা অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে । তার চোখে মুখেই সেটা ফুটে উঠতো পরিস্কার । ঠিক একই অনুভূতি তার নিজেরও ছিল । তবে রেহনুমা এটা নিয়ে চিন্তিত ছিল যে সায়েদুর জামানের স্ত্রী পুত্র আছে । এই স্ত্রী পুত্র ছেড়ে কি সে তার কাছে আসবে কোন দিন ? এটা কারনেই হয়তো সে ডিপ্রেশনে পড়েছিলো !
ডাক্তার আমের বলল, মারা যাওয়ার আগে রেহনুমা সুলতানা একটা খাম দিয়েছিলো আমার হাতে । বলেছিলো একদিন না একদিন তার খোজে কেউ আসবে । তাকে যেন এই খামটা দেওয়া হয় !
তারপর খামটা বের করে সায়েদুর রহমানের হাতে দিল । ডাক্তারের সামনেই খামটা খুলে ফেলল সে ! গোটাগোটা অক্ষরে কয়েক লাইনের চিঠি !
প্রিয় সায়েদুর,
আমি জানি তুমি হয়তো নিজেকে দোষী ভাবছো । ভাবছো তুমি যদি আমাকে আরও পরিস্কার করে বলতে তাহলে হয়তো আমার সাথে এমন কিছু হতো না । কিন্তু তুমি কি নিজেই জানতে ? যে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছো সেটাও আদৌও সম্ভব হবে কি না সেটা তুমি নিজেও জানতে না । তাই নিজেকে দোষ দিও না । শুধু এই টুকু জেনে রেখো, তোমার সাথে কাটানো ঐ সময় টুকু আমার জীবনের সব থেকে মধুর সময় ছিল । নিজেকে আমি এর আগে কোন দিন এতো সুখী অনুভব করি নি । তুমি ভাল থেকো । এই পাড়ে তো আমাদের দেখা হল না, ঐ পাড়ে নিশ্চয়ই আমাদের এক সাথে থাকাটা লেখা আছে ! ভাল থেকো ।
ইতি,
রেহনুমা
চিঠিটা পড়া শেষ করে শূন্য দৃষ্টিতে কিছুটা সময় সেদিকে তাকিয়ে রইলো সায়েদুর জামান । চোখ দিয়ে একটা ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো চিঠিটার উপর !
এই গল্পের লেখক আমি হলেও গল্পটা ঠিক আমার না ! জনৈক প্রাক্তন প্রেমিকার সাথে কথা বলার সময় সে একদিন আমাকে এই গল্পের থিম টুকু বলে এবং বলে যদি তার এই থিম থেকে আমি একটা গল্প লিখতে পারি তাহলে আমার জন্য পুরস্কার আছে ! পুরস্ককার পেয়েছিলাম কি পাই নি সেই প্রশ্ন থাকুক । তবে গল্প একটা লেখা হয়েছিল ! এটাই সে গল্প । আরও একটা থিম সে আমাকে দিয়েছিলো । সেটা দিয়ে গল্প লেখার আগেই সেখারিয়ে গেল । তাই সেটা এখনও লিখা হয় নি । তবে হয়তো কোন দিন লেখা হবে । গল্পটি আগে নিজেস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে !
pic source
২২ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১২:০৮
অপু তানভীর বলেছেন: আসলে বিয়ে করাটা আমার কাছে একান্তই নিজেস্ব আর ব্যক্তিগত ব্যাপার ! জীবনে বিয়ে করতে হবে, নাকি হবে না- এমন টা যার যার নিজের চিন্তার উপরে ছেড়ে দেওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি !
২| ২২ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:২৪
ইসিয়াক বলেছেন: একা থাকা যায় না আবার যায় ও। অতীত সুখের না হলে বিশ্বাস হারিয়ে গেলে মানুষ একা থাকে অন্য কোন কিছুকে অবলম্বন করে। তবু মানুষের ভালোবাসার তুলনা নেই তবু.... ভালোবাসা ফিরতে চায় বারবার। কেউ তার নাগাল পায় কেউ পায় না।...
সুন্দর গল্প।
২২ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:১৭
অপু তানভীর বলেছেন: কেউ ভালোবাসার মানুষ নালাগ পায় না । বড় সত্যি কথা । মানুষের জীবনের জন্য ভালোবাসার মানুষের দরকার আছে ! কিন্তু তবুও অনেকেই একা থাকাটাকেই অশান্তির থেকে শ্রেয় মনে করেন !
৩| ২২ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:২৬
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: অনেক বড় গল্প পরে সময় করে পড়ার চেষ্টা করবো।
২৩ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:৪৯
অপু তানভীর বলেছেন: পরে সময় করে পড়ে ফেলার চেষ্টা করুন
৪| ২২ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:৪৪
নীল আকাশ বলেছেন: কিছু মানুষের জীবন শুধু দুঃখেই কেটে যায়। কেন যায় সেটা কেউ জানে না।
২৩ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:৫২
অপু তানভীর বলেছেন: সত্য কথা । এই কেনর কোন উত্তর আসলে জানা নেই !
৫| ২২ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:২৭
ফয়সাল রকি বলেছেন: শিরোনামটা এমন যে, গল্প পড়তে পড়তে ভাবছিলাম, রেহনুমা সুস্থ হয়ে উঠবে। তারপর দুজনের মিলন হবে.... কিন্তু হলো না। চমকটা ভালো ছিল।
২৩ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:৫৯
অপু তানভীর বলেছেন: একবার মনে হয়েছিলোও যেন মিল করিয়ে দিই । কিন্তু থিমটা অন্যজনের ছিল । সেই বলে দিয়েছিলো যে সেই রকমই ভাবেই শেষ হয় !
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য !
৬| ২৩ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:০৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: রেহনুমার বিদায়টা কষ্টদায়কই ছিল। সুন্দর বেদনাঘন, ছিমছাম গল্প। ভালো লিখেছেন।
২৩ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:০৯
অপু তানভীর বলেছেন: এটাই আসলে সব থেকে স্বাভাবিক পরিণতি । আমার গল্পে বেশির ভাগ সময়ই সুখের সমাপ্তি হয় বাস্তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমনটা আমরা দেখতে পাই না !
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য !
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:০৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: একটা মানুষ একা কখনো থাকতে পারে না। এটা তো বিবাহিত জীবনের গল্প। আমার অফিসে কত সুন্দর আপা ভাইয়েরা বিয়ে করে ন। এদের দেখলে মন খারাপ হয়। এরা কেন ভবিষ্যতের জীবনটাকে বিবেচনায় আনে না কে জানে। নিজের রক্তের আপনজন ছাড়া কে হয় এত আপন। দুনিয়াটাই স্বার্থপরের জায়গা।
আজকের গল্পে কষ্ট লাগলো তবুও ভালোবাসার অনুভূতি ভালো লাগলো