নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্রিপিপাস্তাসঃ হোয়্যার দ্যা ব্যাড কিডস গো...

৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৯



ক্রিপিপাস্তাস শব্দটা অনেকের কাছে নতুন মনে হতে পারে । ক্রিপিপাস্তাস হল ওয়েব ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানান ধরনের ভয়ের গল্প । সামাজিক মাধ্যম, বিভিন্ন ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানান ভয়ের গল্প গুলোকেই বলে ক্রিপিপাস্তাস । এই গল্প গুলো পড়তে গেলে দেখা যাবে যে গল্প গুলো আমাদের পরিচিত । এই গল্প গুলো থেকে অনুপ্রানিত হয়ে অনেক বই, শর্টফ্লিম সিরিজ এমন কী মুভিও বানানো হয়েছে । এই রকম বেশ কিছু গল্প আমি পড়েছি নিয়মিত পড়ছি নেট থেকে । বেশ কয়েকটা ওয়েবসাইট আছে যেখানে এই গল্প গুলো পোস্ট হয় । এছাড়া একটা বইও হাতে এসেছে । সেই অনেক গুলো গল্পের ভেতরে আজকে একটা গল্প ।

এই গল্পটা একটা লেবানন সাংবাদিকের । তখন তার বয়স ছিল অল্প । বাচ্ছা ছিল সে । সেই সময়ে লেবাননে যুদ্ধ চরমে । প্রায় দিনই গুলি কিংবা বোমা বর্ষন হচ্ছে । এই কারণে কর্তৃপক্ষ থেকে সবাইকে বলা হয় যে তারা যেন কোন ভাবেই বাড়ির বাইরে না বের হয় । বড়রা নিজেদের জীবন বাঁচাতে সব সময় ঘরের ভেতরেই থাকা শুরু করলো কিন্তু বাচ্চারা কি আর এতো কিছু বোঝে ! বাচ্চা সুযোগ পেলেই বাইরে বের হয়ে যেত । বাচ্চাদের এই হুটহাট বের যাওয়া বন্ধ করতে প্রতি সপ্তাহে একটা অনুষ্ঠান প্রচার করা শুরু করলো সরকার। সেই অনুষ্ঠানে প্রতিবার আলাদা আলাদা কাহিনী দেখানো হত । সব কাহিনীর শেষ পর্যায়ে দেখানো হত যে একটা বাচ্চাকে এক মুখোশ পরা মানুষ একটা দরজার সামনে নিয়ে যাচ্ছে । সেই দরজায় লেখা ''হোয়্যার দ্যা ব্যাড কিডস গো'' । যেখানে খারাপ বাচ্চারা যায় । বাচ্চাটাকে সেই জং ধরা লোহার দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করানো হত । তারপর সেই মুখোশ পড়া লোক নিজেও সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতো । দরজা বন্ধ হয়ে যেত । ঠিক তারপরই বাচ্চার চিৎকার শোনা যেত । মূলত বাচ্চাদের বাইরে যাওয়া থেকে দুরে রাখতেই এমন ভয়ের অনুষ্ঠান প্রচার করা হত । যেন তারা কোন ভাবেই বাড়ির বাইরে না বের হয় !
কিন্তু যতই দিন যেতে লাগলো অনুষ্ঠানের বিভৎসতা আরও ভয়ংকর হতে শুরু করলো । বাচ্চা গুলোতে যেভাবে অত্যাচার করা হত সেটা খুব বেশি জীবন্ত মনে হত খুব । লেবানন এই সাংবাদিক খুব মনযোগ দিয়ে প্রতিটা অনুষ্ঠানই দেখতো ।

তারপর যখন যুদ্ধ শেষ হল সেই অনুষ্ঠানও প্রচার হওয়া বন্ধ হয়ে গেল । সবাই যেন ভুলে গেল অনুষ্ঠানটার কথা । আমাদের গল্পের মুল চরিত্র সেই অনুষ্ঠানটার কথা ভুলল না ।

তারপর বড় হয়ে সে সাংবাদিকতায় যোগ দিল । সে মিডিয়ার অনেক কিছুর সাথে সে পরিচিত হতে শুরু করলো । তখনও তার মনে সেই অনুষ্ঠানের কথা রয়েই গিয়েছে । তখন সে খোজ খবর করা শুরু করলো । কোন স্টুডিওতে সেই অনুষ্ঠানটা সুটিং হয়েছিলো কে কে ছিল অভিনেতা প্রডিউসার এই সব। কিন্তু খুব বেশি কিছু বের করতে পারলো না । তবে অনেক খোজ খবরের পর এক প্রবীন সাংবাদিক তাকে একটা ঠিকানা যোগার করে দিতে সক্ষম হল । সেই ঠিকানা মোতাবেগ গিয়ে হাজির হল সে । সে স্টুডিওর ভেতরে প্রবেশ করেই বুঝতে পারে যে এই স্টুডিও অনেক দিন আগে থেকে পরিত্যাক্ত । ভেতরে আসলে কোন কিছুই নেই । এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে সে হাজির হল একটা দরজার সামনে । এবং দরজার সামনে গিয়েই তার বুকটা ধরাক করে উঠলো । কারণ সে একটা মরচে পড়া লোহার দরজার সামনে এসে দাড়িয়েছে এবং এই দরজাটাই হচ্ছে সেই অনুষ্ঠানের দরজার সেখানে বাচ্চাদের ভেতরে ঢোকানো হত ।

দরজায় কোন তালা লাগানো ছিল না । সাংবাদিক মশাই দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলেন এবং সাথে সাথেই আতংঙ্কে জমে গেলেন । তিনি দেখলেন ছোট ঘরটার ভেতরে দেওয়া কালচে হয়ে আছে রক্তের দাগ । এছাড়া এদিক ওদিক ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য মানুষের হাড়গোড় মাথার খুলি । হাড় খুলির সাইজ দেখে মনে হচ্ছিলো যেন সেগুলো সব বাচ্চাদের । এই দৃশ্য আর সাংবাদিক সহ্য করতে পারলেন না । অজ্ঞান হয়ে গেলেন ।
যখন তার জ্ঞান ফিরলো তখন নিজেকে আবিস্কার করলো হাসপাতালে । ডাক্তার জানালো যেন পুরানো স্টুডিওর রাস্তার পাশে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিল যে । লোকজন ধরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে ।
পরে তিনি পুলিশ নিয়ে আবারও সেই স্টুডিওর কাছে গিয়ে হাজির হন । তারা পুরো স্টুডিওর খোজ করেন কিন্তু সেই পুরানো লোহার দরজার আর খুজে পান না । এমন কোন দরজা যেন সেখানে ছিলই না !

রেফারেন্স
Where Bad Kids Go
Where the bad kids go
বই ক্রিপিপাস্তাস - লুৎফুল কায়সার


লেখাটি পূর্বে নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত


ছবি উৎস

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:০৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ভয়ের গল্পগুলি এখন আমার পড়তে ইচ্ছে করে না।

৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:০৮

অপু তানভীর বলেছেন: সেকি !
বয়স কি বেশি হয়ে গেছে ?

গল্প বলতে গেলে ভয়, থ্রিল আর এডভেঞ্চারের গল্প থাকবে সবার আগে । আর বলতেছেন কিনা ভয়ের গল্পই ভাল লাগে না ! এইডা কুনো কথা হইলো !

২| ৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:০৬

জুল ভার্ন বলেছেন: লুতফুল কায়সারের বইটা আমার পড়া। ক্রিপাপাস্তা মূলত ভৌতিক কিম্বা অতি ভৌতিক গল্প- একদা পড়তাম এখন আমি ভুল করেও পড়িনা।

৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:১০

অপু তানভীর বলেছেন: লুৎফুল সায়সারের আরবান লেজেন্ড বইটাও আমার হাতে আছে । এটাও বেশ চমৎকার একটা বই । তিনি এই বিষয় গুলো সংগ্রহ করে লেখেন । এই ব্যাপার গুলো আমার পছন্দের একটা ব্যাপার !

আপনি ভুলেও কেন পড়েন না ?

৩| ৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:১৭

জুন বলেছেন: দেখেন অপু ভয়ের গল্প এক জিনিস আর বীভৎসতা আরেক জিনিস। ভয়টা সহ্য হয় যেমন ভুত দেখলাম, প্রেত দেখলাম :-&
কিন্ত তাদের বীভৎস আচরণ আমার কাছে অন্তত গ্রহণযোগ্য নয়।

৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:২০

অপু তানভীর বলেছেন: এখানে অবশ্য আপনার সাথে আমার মিল আছে । বীভৎসতা আমার একদম সহ্য হয় না । এমন কি মুভিতে যখন এই দৃশ্য গুলো দেখানো হয়ে আমি সেগুলো টেনে দিই । বইতে লেখা থাকলে সেটা স্কিক করে চলে যাই !

তবে ভয়ের পেতে অবশ্য বেশ লাগে ।

৪| ৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:২২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
গল্প বলতে গেলে ভয়, থ্রিল আর এডভেঞ্চারের গল্প থাকবে সবার আগে । আর বলতেছেন কিনা ভয়ের গল্পই ভাল লাগে না ! এইডা কুনো কথা হইলো !
থ্রিল, এ্যাডখেঞ্চার, মিস্ট্রি, ক্রাইম ভালো লাগে। সেগুলিতে অবশ্যই ভয় জড়িয়ে থাকে। তবে অকারণ ভয় ভালো লাগে না। শুধু ভয় ভালো লাগে না। টর্চারের কাহিনী ভালো লাগে না।
কিউব দেখেছেন?
সেদিন একজনের মন্তব্যের কারণে দেখলাম। আমার কাছে মিনিংলেস লেগেছে।
এই ধরনের ভয় আমার কাছে ভালো লাগে না।

৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৩০

অপু তানভীর বলেছেন: টর্চারের কাহিনী আমারও ভাল লাগে না । আমি আজ পর্যন্ত এখনও একটা স মুভি দেখতে পারি নি । অকারণ কাটাকুটি আমার মোটেও পছন্দ না !

কিউবটা দেখা হয় নি । ট্রেইলার দেখলাম । এই ধরণের মুভিও যে আমার খুব বেশি ভাল লাগে সেটা বলবো না ! আমারও এই ধরনের ভয় মোটেও পছন্দ না !

৫| ৩০ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৩৯

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ব্লগার মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন, গল্প বলতে গেলে ভয়, থ্রিল আর এডভেঞ্চারের গল্প থাকবে সবার আগে । সহমত

০১ লা জুলাই, ২০২২ সকাল ৯:৫০

অপু তানভীর বলেছেন: সত্য। আমার কাছে ভয় বলতে ভৌতিক ভয়ের গল্পটা সব থেকে বেশি পছন্দের !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.