নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

একদিনের ঝটিকা অভিযানঃ দামতুয়া ঝর্ণা ভ্রমন

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪১

মাথার ভেতরে হঠাৎ কিছু মনে হলে সেটা না করা পর্যন্ত আমার শান্তি লাগে না । গত মাসের শেষের দিকে কী মনে হল যে একটা ট্যুর দেওয়া লাগবে বান্দরবানে । সেই মোতাবেক ট্যুর বুকিং করলাম । একেবারে শে মুহুর্তে সেটা ক্যান্সেল হয়ে গেল । সেইদিনই অন্য জায়গাতে যাওয়ার চেষ্টা করলাম বটে তবে কোন কাজ হল না । সেই থেকে মাথার ভেতরে বান্দরবান যাওয়ার জন্য মন আকুপাকু করতে লাগলো । শেষ পর্যন্ত গতকাল গিয়ে হাজির হলাম । একদিনের ঝটিকা ট্যুর । রাত রওয়ানা দিবো । সারা দিন ঘুরে সন্ধ্যায় আবার ঢাকার বাসে ফিরে আসবো ।

রাতে ফকিরাপুল যাত্রা শুরু । তবে বাসের ড্রাইভার যেভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলো মনে হচ্ছিলো যে জীবনে এই শেষ বাস জার্নি । একবার একদম সামনের হানিফের সাথে ধাক্কা লেগেই গিয়েছিলো । কোন মতে রক্ষা পেয়েছে । মনের ভেতরে ভয় ঢুকে গিয়েছিলো বেশ । তবে শেষ পর্যন্ত আলীকদম পৌছালাম । সকালের নাস্তা শেষ করেই রওয়ানা দিলাম আমাদের নির্ধারিত গন্তব্যের দিকে । চাঁদের গাড়িতে করে আলীকদম থানচি সংযোগ সড়কের ১২ কিলো নামক স্থানে আমাদের নামিয়ে দেওয়া হল । স্থানীয় গাইড নিয়ে আমরা রওয়ানা দিলাম দামতুয়া ঝর্নার দিকে !

এই ট্যুরের একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে বৃষ্টি, রোদ আর শীতের আমেজ আমি সব গুলোই পেয়েছি । ১২ কিলো থেকে হাটা শুরুর সময়ই বৃষ্টি শুরু । সাথে রেইণকোট ছিল । সেটা পরে হাটা দিলাম টুকটুক করে । যাত্রা পথে কয়েকটা ছবি দেখা যাক !


এটাই হচ্ছে সেই ১২ কিলো নামক স্থান । এখান থেকে হন্টন শুরু ।



পাহাড়ের রাস্তা


ঐতো আমাদের টিমের লোকজন আসতেছে


চলতি পথে পাশের পাহাড়


আরেকটা দৃশ্য



মাঝে কে জানি এই পুকুরটা কেটে রেখেছে । এই দেখেন শাপলা ফুল ।



দামতুয়ার ঠিক আগে এই ঝর্ণাটা আছে । নাম আমার এখন মনে পড়ছে না ।



এই সেই দামতুয়া ঝর্ণা যা দেখার জন্য প্রায় চার ঘন্টা হেটে এসেছি । পাশে আরও একটা রয়েছে । সেটা বেশি উচু । নিচে ছবি দেওয়া হল ।



যাওয়ার সময় এই ছবিটা তুলতে মনে ছিল না । এটা ফেরার সময়কার ছবি !

এইবার ট্যুরে বেশ কষ্টই হয়েছে বলা চলে । সেই শীতের শেষের দিকে ক্রিসতং গিয়েছিলাম । ব্লগে সেই গল্প অর্ধেক লিখে আর লেখা হয় নি । বাকিটা লিখবো জলদিই । যাই হোক সেই ট্রেকিংয়ের পর আর হাটাহাটি হয় নি । এই কারণে উঠতে একটু কষ্ট হয়ে গেছে এবার । মোট তিনট বেশ উচু পাহাড় আমরা টপকিয়েছি । সাথে ছোট ছোট আরও ছয় সাতটা হবে । মাঝের বেশ কিছুটা সমতল ছিল । সেখানে হাটতে কষ্ট হয় নি ।

সব চেয়ে সুবিধা হয়েছে যাত্রা শুরুটা হয়েছে বৃষ্টির মধ্যে । এই কারণে আরামে হেটেছিল । অবশ্য মাঝে বৃষ্টি শেষ হয়ে রোদ উঠেছিলো । তখন একটু হাসফাস লাগছিল বটে ।

পাহাড়ে যখন প্রতিবার আমি যাই আমার ঠিক কোনটা দেখতে যাচ্ছি সেটা নিয়ে কখনই মাথা ব্যাথা থাকে না । পাহাড় হোক কিংবা ঝর্না আমার সব সময় আকর্ষন করে পাহাড়ি নির্জন পথে হেটে বেড়ানোটা । বেশির সময়ে এমন হয় যে টিম ছেড়ে হয় আমি সামনে কিংবা একদম পেছনে থাকি । একা একা চারিদিকে দেখি নির্জন গল্প শুনি । কত অদ্ভুত ডাক যে তখন কানে আসে । মাঝে মাঝে এমন হয় যে খুব সামনে চলে গেছে তখন কোন মানুষের আওয়াজ শোনা যায় না । কারো আওয়াজ নেই । তখন মনে হয় যেন পুরো এলাকাতে মানুষ বলতে আমি একাই । এই অনুভূতিটা বারবার আমাকে বিমহিত করে ।

ব্লগারদের নিয়ে একবার একটা ট্রেকিং ট্যুরের আয়োজন করা যেতে পারে ! আজকের ট্যুরের গল্প এখানেই শেষ । এবার বেশি ছবি তুলি নি । চারিদিকে প্রকৃতি দেখাতেই ব্যস্ত ছিলাম বেশি । আর আমার কম দামী ক্যামেরাতে ছবি যে খুব বেশি ভাল আসে না সেটা তো আপনারা জানেনই ।

আমাদের ১২ কিলো থেকে হেটে যেতে প্রায় চার ঘন্টা সময় লেগেছিলো । আমরা সাড়ে দশটায় হাটা শুরু করেছিলাম । ওখানে পৌছেছিলাম দেড়টার দিকে । আমি বেশ আগেই পৌগিয়েছিলাম । আমাদের পুরো টিম আসতে আরও একটু দেরি করেছিল । ঝর্ণাতে সময় কাটিয়ে আবারও পনে তিনটার দিকে ফেরার পথ ধরলাম । আমাদের সবার ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো । সকালে আমাদের বাস পৌছিয়েছিলো একটু দেরি করে । যদি নয়টার দিকে রওয়ানা দিতে পারতাম তাহলে সন্ধ্যা হত না । তবে সব মিলিয়ে চমৎকার ট্রেকিং ট্যুর ছিল । তবে যাদের হাটার অভ্যাস নেই, তাদের এই ট্যুরে প্রথমবার না যাওয়াই ভাল । আগে অপেক্ষাকৃত কম পরিশ্রমের ট্যুর গুলো দিয়ে অভ্যাস করে নিয়ে তারপর এদিকে যাওয়া ভাল !


মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:২৯

রেজাউল৮৮ বলেছেন: আহারে!

:(
পেটের দায়ে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন জেলায় ঘোরাঘুরি করি। কিন্তু পাহাড়ে যাওয়া হয় না। পাহাড়ের বিষয়ে পোস্ট দেখলে মনটা আকুলি পাকুলি করে :(

পাহাড় নিয়ে একটা হরর গল্প লেখার অনুরোধ থাকলো। ইমন জুবায়ের ভাই মাঝে মাঝেই লিখতেন। এখন এরকম গল্প ব্লগে কম দেখি

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৪৪

অপু তানভীর বলেছেন: আরে একদিন বের হয়ে যাবেন কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই । দেখবেন যে গেলেই হয়ে গেল ! একদিন দুইদিনের মামলা ! এই বেড়ানোর আফসোস সব থেকে বড় আফসোস বিশেষ করে যখন শরীরে সামর্থ্য বিদ্যমান আছে । বয়স থাকতেই বনে বাদারে ঘুরে বেড়ানো দরকার ! কারণ এক সময় সব দেখবেন টাকা পয়সা সময়ও আসবে কিন্তু কেবল শরীরের কারণে কোথাও যাওয়া হবে না । আর পেছনে ফিরে তাকালে মনে হল যে যে দরকার গুলোকে প্রাধান্য দিয়েছেন সেগুলোতে এতো প্রাধান্য না দিলেও চলতো !

পাহাড় নিয়ে গল্প আসলেই কম ব্লগে ! ইমন ভাই ই যা লিখেছেন । পাহাড় নিয়ে আমার বেশ কিছু গল্প আছে । ইভেন কয়েক দিন আগেও একটা লেখা হয়েছে যদিও সামুতে প্রকাশ হয় নি । আপনি আমার সাইটে একটু ঢু মারতে পারেন । সেখানে পাবেন !

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৮

জুল ভার্ন বলেছেন: একদা আমিও কোনো প্রকার পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই এমন দুঃসাহসিক অভিযানে রেড়িয়ে পরতাম। ১৯৮৪-১৯৮৭ সন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার পার্বত্য চট্টগ্রামের দূর্গম এলাকায় গিয়েছি। তখন ঐ এলাকা শান্তিবাহিনী নামক বাহিনীর অশান্তি যেমন ছিলো- তেমনি সেনাবাহিনীর সাপোর্ট ছাড়া অনেক এলাকায় ভ্রমণ নিষিদ্ধ ছিল। একবার হুমায়ুন আহমেদের সাথে হ্যালীর ধুমকেতূ দেখার জন্য ছয় দিনের প্রোগ্রামে যেয়ে চিম্বুক পাহারের চুড়ায় তাবুতে থেকেছি। একবার লামা-আলীকদম এলাকায় দলবদ্ধ হাতীর আক্রমণ থেকে বেঁচে গিয়েছি। আর একবার ডুলাহাজরায় মোটর সাইকেল নিয়ে হাতীর পালের সামনে পড়ে মোটর সাইকেল ফেলে গাছে পড়ে রক্ষা পেলেও হাতীরা আছড়ে মোটর সাইকেল ভেংগে ফেলেছিলো।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫২

অপু তানভীর বলেছেন: আপনার দেখি সত্যিই বিচিত্র জীবন । আমার মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে পাহাড়ে গিয়ে বসবাস করতে । হোম টাউন চট্টগ্রাম কিংবা বান্দরবান হলে খুব ভাল হত । তখন একা একা ছুটে চলে যাওয়া যেত । এখন পাহাড়ে যেতে হলে আগে গাড়ি করে লম্বা সফর পার করতে হয় ! এটা আসলেই খুব প্যারার একটা কাজ !

তাবুতে থাকা হয় নি আমার কোন । তবে ইচ্ছে আছে । ক্যাম্পিং করবো সামনে কোন একদিন !

আপনি এই অভিজ্ঞতা গুলো নিয়ে ব্লগে লিখতে পারেন । আমরা পড়ে আনন্দ পাই !

৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৭

জুল ভার্ন বলেছেন: পাহাড়ে ভ্রমণ নিয়ে এই ব্লগেই লিখেছিলাম ২০০৯-২০১০ সনে।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৪

অপু তানভীর বলেছেন: আমার সেই লেখা গুলো পোস্ট করতে পারেন ব্লগে । সেই সময়ে এখনকার কেউ ই ছিল না ।

৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৫৮

ইমরোজ৭৫ বলেছেন: ভালো।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:০৩

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩০

শেরজা তপন বলেছেন: বান্দরবান বরাবরই আমার প্রিয় জায়গা। ২০০২ সাল থেকে যাই। বরাবরই থেকেছি মিলনছড়ির রিগ্রিখ্যাং এ, এখন হিলসাইড
রিসোর্ট। গাইড এন্ড ট্যুরস যেভাবে তাদের ট্যুর এন্ড ট্রাভেল প্রজেক্ট টা শুরু করেছিল- সেটা বেশ খানিকটা এগিয়ে গোত্তা খেয়ে এখন বন্ধ হবার পথে! এর উদ্যোক্তার ছেলে এখন দিনরাত গবেষণায় পড়ে থাকে ' সোয়াচ অফ নো ল্যান্ড' এ তিমি আর ডলফিন নিয়ে। আপনি কি জানেন বাংলাদেশ বিরলতম দেশের একটা যেখানে নোনা পানির(ওশেন),নোনা ও মিঠা পানির( মোহনায় বিচরনকারি) আর মিঠা পানির ডলফিন (শশুক) পাওয়া যায়- এমনকি এখানে বিরলতল গোলাপি ডলফিন এর দেখা মেলে? একবার সুযোগ পেলে গভীর সুমুদ্রে ঘুরে আসবেন।

ঝটিকা ট্যুরের সব পথ ঘাট আমার অতি চেনা। ভাল লাগল।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫৩

অপু তানভীর বলেছেন: প্রিয় জায়গা যেহেতু একই স্থান তাহলে একবার প্লান করে যাওয়া যাবে ।

পাহাড় যেমন আমার পছন্দ তেমনি সমুদ্রও পছন্দ । ঘন্টার পর ঘন্টা আমি সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে থেকেছি । ঢেউকে আছড়ে পড়তে দেখেছি কুলে । কাছে আসতে আর দুরে যেতে দেখেছি । আমার এই সমুদ্রের ঢেউ গুলোকে কেন জানি আমার পরিচিত মানুষ গুলোর কথা মনে করিয়ে দেয় । সবাই একটা সময় কী আপন হয়েই না কাছে এসেছে আবার চলেও গিয়েছে আমাকে ছেড়ে !

আমার ডলফিন দেখার বেশ ইচ্ছে । কপালে যদি থাকে যাওয়ার ইচ্ছে আছে ।

৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৩১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আহারে কতো কিছুই দেখা হলো না!!
চমৎকার লিখেছেন, ছবিও ভালো হয়েছে।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:০২

অপু তানভীর বলেছেন: জীবন এখনও শেষ হয়ে যায় নি । সামনে দেখবেন অবশ্যই একদিন !

৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: পাহাড় হোক কিংবা ঝর্না আমার সব সময় আকর্ষন করে পাহাড়ি নির্জন পথে হেটে বেড়ানোটা। একা একা চারিদিকে দেখি নির্জন গল্প শুনি । কত অদ্ভুত ডাক যে তখন কানে আসে । মাঝে মাঝে এমন হয় যে খুব সামনে চলে গেছে তখন কোন মানুষের আওয়াজ শোনা যায় না । কারো আওয়াজ নেই । তখন মনে হয় যেন পুরো এলাকাতে মানুষ বলতে আমি একাই । এই অনুভূতিটা বারবার আমাকে বিমহিত করে ।

আমার নিজের ভ্রমণ অনুভব ও এমন ই। আপ্সুস বান্দরবন দেখা হয় নাই :(

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:০৪

অপু তানভীর বলেছেন: আমি প্রতিবার কেবল এই একটা জিনিসের জন্য পাহাড়ে ছুটে যাই । আবারও দৌড় দিবো খুব জলদি !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.