নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা আমাদের কাজ কর্ম আর জীবন নিয়ে এমন ব্যস্ত সব সময় আমাদের এক সময়ে যা ভাল লাগতো যা এক সময়ে পছন্দ ছিল সেই সব কাজ করতে ভুলে যাই । কিংবা সেই সব কাজ যা এক সময়ে আমাদের আনন্দ দিতো, এখনও আনন্দ দিবে তারপরেও সেই কাজ গুলো আমরা করি না কিংবা করতে পারি না । আমাদের অনেক কাজ কেবল মনের ইচ্ছেই নয়, বরং সেই সাথে আরো কত কিছুর সাথে যে জড়িতো তার কোন ঠিক নেই । তাই হয়তো চাইলেও আমরা সেই কাজ গুলো করতে পারি না । তবে আমি এই দিক থেকে অনেকটাই স্বাধীন । আমি সব সময় মনে যা এসেছে তাই করে এসেছি । কে কী ভাবলো সেটা নিয়ে এখনও খুব একটা চিন্তিত হই নি । সামনে কী হবে সেটা অবশ্য বলা যাচ্ছে না ।
গতকাল বই মেলাতে গিয়েছিলাম । এটা নিয়ে এই বছরে তৃতীয়বার বই মেলায় যাওয়া হয়েছে । তবে গতকালকে একটু ব্যতীক্রম ঘটনা ঘটেছে । অন্যান্য দিন আমি মেলায় সোজা যাই, বই কিনে সোজা বাসায় চলে আসি । আজকে শাহবাগে এসে রিক্সা নিতে যাবো তখনই আমার কী মনে হল আমি রিক্সা নিলাম না । প্লান ছিল সোজা রিক্সা নিয়ে মগবাজার যাবো । মগবাজারে একজনের সাথে দেখা করে আবার বাসায় ফিরে আসবো । রিক্সা হয়তো সোজা যেতে দিবে না তবে কাটাবন দিয়ে ঘুরে যেতে হবে । কিন্তু শাহবাগে কিছু সময় আমি বিমুঢ় হয়ে দাড়িয়ে রইলাম । ২০১৫ সাল পর্যন্ত আমি এই শাহবাগের মোড়ে প্রায় প্রতিদিন আসা যাওয়া করতাম । তবে তারপর কালে ভাদ্রে এই পথে আসা হয় । আজকে শাহবাগের মোড়ে কিছু সময় দাড়িয়ে থেকে আমি গাড়ি ঘোড়া দেখতে থাকলাম । তারপর আস্তে আস্তে হাটা শুরু করলাম ।
আমার মনে আছে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন চলছে তখন আমার প্রায় প্রতিদিনের একটা রুটিন ছিল ক্লাস শেষ করে এই শাহবাগেই নেমে পড়তাম । তখন বাজতো বিকেল চারটা কিংবা সাড়ে চারটা । আমার টিউশনি থাকতি সন্ধ্যার সময় । সন্ধ্যার দিকে । মাঝে এই দেড় ঘন্টা আমার কোথাও যাওয়ার ছিল না । শাহবাগে না নেমে সোজা মোহাম্মাদপুর গেলে টাইটাই সময় হয়ে যেত । বাসায় গিয়ে আবার টিউশনিতে আসাটা একটা হ্যাপার ব্যাপার ছিল । তাই এই দেড় ঘন্টা এই এলাকাতেই ঘোরাঘুরি করতাম । শাহবাগ নেমে সোজা শেরাটনের সামনে দিয়ে হেটে শেরাটনের পেছনে যে রমনা পার্কটা রয়েছে সেখানে গিয়ে হাজির হতাম ।
তারপর সেখানেই একটা বেঞ্চে বসে চারিদিকের মানুষজন আর গাছপালা দেখতে শুরু করতাম । সাথে বই থাকতো । বঈ পড়তাম এখানে বসেই । এখানে ঘন্টা খানেক সময় চলে যেত চোখের পলকে । কত মানুষ এখানে আসতো । বুড়ো জোয়ান থেকে শুরু করে পিচ্চি পাচ্চা । মাঝে মাঝে দেখতাম কোনার দিকের কোন বেঞ্চে কাপলরা বসে আছে । কী সব করছে তা না হয় নাই বললাম । আমার এসব দেখতে ভালই লাগতো । আমি আমার কত গল্পই এখানে বসে লিখেছি তার কোন ঠিক নেই । সময়ের কিছু আগেই বের হয়ে যেতা, পার্ক থেকে । তারপর হাজির হতাম মিন্টুরোডে । ঢাকা শহরের ভেতরে সব থেকে পছন্দের একটা জায়গার নাম হচ্ছে এই মিন্টুরোড । এখানে আমি কত সময় যে কাটিয়েছি তার কোন ঠিক নেই ।
গতকাল একই রকম ভাবে রমনা পার্কে গিয়ে হাজির হলাম । হাতে খুব বেশি সময় ছিল না । তবে একটা বেঞ্চে বসে রইলাম কিছু সময় । সাথে করে কিনে আনা বই পড়লাম কিছু সময় ধরে । পাশেই ঢাকার ব্যস্ততম রাস্তা । গাড়ির হর্নের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে তারপরেও একটা আলাদা শান্তি আছে এই পার্কে । বসে থাকলে কেবল বসেই থাকতে ইচ্ছে করে ।
ফিরে আসার সময় একটা কুকুরকে দেখতে পেলাম কী যেন খাচ্ছে । এটাকে দেখে একজনের কথা মনে হল । এখন এমনই হয়েছে । একটা ছবি তুলে নিয়ে এলাম ।
এরপর আবার হাটতে শুরু করলাম । মিন্টুরোডের সামনে গিয়ে হাজির হলাম ।
ভেবেছিলাম আরো কিছু ছবি তুলবো তবে সেটা না করে আমি আমার হাটা উপভোগ করতে শুরু করলাম । এরই মাঝে আযান দিয়ে দিল । এমনই হত আমার সেই অতীতে । প্রায় দিনই এই রাস্তায় হাটার সময় আযান দিয়ে দিতো । আমি টুকটুক করে হাটতে শুরু করতাম । এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে যেতাম । মাঝে মাঝে এই ফুটপাতের উপরে বসে পড়তাম । একেবারে ডিবি অফিসের সামনে গিয়ে প্রায় দিনই চা খেতাম । এখান ভাল চা পাওয়া যায় । এখনও পাওয়া যায় কিনা জানি না । আগের দোকানটা ছিল খুবই ছোট । দেওয়ালের গ্রিলের ওপাশে দাড়িয়ে চা বিক্রি করতো । এখন অবশ্য বেশ ভাল দোকান হয়েছে । একবার মনে হল চা খাই তবে খাওয়া হল না ।
আমি সাইকেল চালাতে শুরু করার পরে পায়ে হেটে এই রাস্তায় আসাই হয় না একদম । সাইকেলে গেলে পুরো রাস্তাটা এক রকম লাগে আর পায়ে গেলে অন্য রকম । কয়েকদিন আগে অবশ্য এই রাস্তায় এসেছিলাম । আমাদের ব্লগের একজনের সাথে সাইকেল চালাতে । সেই নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম ছবি সমেত !
বাসায় ফিরতে ফিরতে নয়টা বেজে গেল । রাতে শুয়ে শুয়ে বারবার ঘুরে ফিরে সেই মিন্টুরোড আর রমনা পার্কের দিন গুলোর কথা মনে হতে লাগলো । মাঝ দিয়ে প্রায় দশ বছর পার হয়েছে । অথচ আমার মনে হয় যেন সেই দিনই আমি পার করেছি । জীবন এখন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে । সামনে আরো কোন দিকে যাবে কে জানে ঢাকার জীবনের এই সময়টা আমার কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ন হয়ে থাকবে সব সময় । এই রোডকে কেন্দ করে আমার বেশ কয়েকটা গল্প লেখা আছে । যতবার গল্প গুলো সামনে আসবে ততবার আমি ঘুরে ফিরে জীবনের এই দিনের কথা মনে হবে ।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৫
অপু তানভীর বলেছেন: মানুষের জীবনে সব গুলো সুন্দর মুহুর্ত গুলো আমাদের অতীতের দিন গুলোতে অবস্থিত । আমরা বর্তমানে বসে সেই দিন গুলোর স্ম্বতি রোমন্থন করতে ভালোবাসি ।
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৫
কাঁউটাল বলেছেন: sweet precious memories
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৮
অপু তানভীর বলেছেন: এমন স্ম্বতি সবারই থাকে ।
৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:১৭
জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২২
অপু তানভীর বলেছেন: এই স্মৃতি আসলে আমার জীবনের একটা চমৎকার স্মৃতি হয়ে আছে । ঢাকার জীবনের এক চমৎকার সময় আমার কেটেছে এখানেই ।
৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৩৯
দারাশিকো বলেছেন: আপনার মতো হয়তো রেগুলার যেতাম না, কিন্তু রমনা পার্ক আর মিন্টো রোড আমার অত্যন্ত পছন্দের জায়গা ছিল একসময়। সপ্তাহ দুয়েক আগে রমনা পার্কে গিয়েছিলাম। সেখানে তো এখন টিকটকারদের ভীড়। বাচ্চাদের একটা কর্নার আছে, সেখানে আমার বাচ্চাদের বাবা-মার ভীড়। মন্দ লাগেনি।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩৫
অপু তানভীর বলেছেন: ঢাকাতে আসার পে থেকে একদিন হঠাৎ করেই আমি এই রাস্তা আবিস্কার করি । তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত আমি আমি প্রায়ই যাই নিয়মিত ভাবে ! এই রাস্তাটার সাথে আমার সম্পর্ক অনেক অনেক দিনের ! ঢাকা থেকে চলে যাওয়ার পর এই রাস্তাটাকে আমি সব থেকে বেশি মিস করবো !
৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:২৯
চৌধুরী আসিফ বলেছেন: খুব ভাল লাগলো
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩৯
অপু তানভীর বলেছেন: অতীত স্মৃতি মনোরম হয়ে থাকে ।
৬| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:১৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- রমনায় মাধবী ফুটেছে। যাবো যাবো করেও যাওয়া হয়ে উঠে নাই।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:০৩
অপু তানভীর বলেছেন: যাওয়ার আগে নক দিয়েন তো ! আমিও গিয়ে হাজির হব !
৭| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৩৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ১৯৭৬ সালের দিকে প্রথম রমনা পার্কে গিয়েছিলাম বাবা মার সাথে। আমার খুব আবছাভাবে মনে আছে।
শুনেছি এক সময় পুরো ঢাকা শহর অনেক নিরিবিলি এবং সুন্দর ছিল। ধানমণ্ডিতে ধান খেত সত্যিই ছিল।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:১০
অপু তানভীর বলেছেন: ৪০০ বছরের ঢাকা নামের একটা ফেসবুকে গ্রুপে আমি এড আছি । সেখানে মাঝে মাঝে পুরানো ঢাকার ছবি দেখা যায় । নিচে ১৯৬৬ সালের ধানমণ্ডি ৭/৮ এর একটা ছবি দেখেন । একন এই ছবি কল্পনা করা যায়?
আমি এখন যেখানে থাকি ২০০০ সালের দিকেই এখানে বিল ছিল । কিন্তু এখন কী চমৎকার হাউজিং হয়ে গেছে ।
৮| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:০৩
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: এই পার্কে আমারও অনেক অনেক স্মৃতি আছে, অনেকদিন ধরে যাওয়া হয় না। ভাবছি এবার পহেলা বৈশাখে যাবো। রমনা পার্কে না গেলে পহেলা বৈশাখটাই যেন অপূর্ণ থেকে যায়।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪২
অপু তানভীর বলেছেন: ভুলেও এই কাজ করবেন না । আমি আমার জীবনে একবার মাত্র রমনাতে গিয়েছিলাম পহেলা বৈশাখের সময় । সেখানে যে মানুষের ভিড় দেখেছি তারপর কানে ধরেছি যে আর কখনই যাবো না এই দিন । অন্য যে কোন সময়েই যেতে পারেন ।
৯| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:১৮
শাওন আহমাদ বলেছেন: কেউ স্মৃতিচারণ করবে আর আমি সেটা দেখেও চলে যাব সেই সামর্থ্য আমার নেই।স্মৃতিচারণ করছিলেন আপনি কিন্তু ভাসছিলো আমার চোখে। বেঁচে থাক স্মৃতিরা।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৪
অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের সবাই এমন হয় । আশা করি একদিন আবারও আপনি আপনার পছন্দের স্মৃতিময় স্থানে ঘুরে যেতে পারবেন ।
১০| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২৭
শায়মা বলেছেন: এ পথে আমি যে গেছি বার বার
একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত আছে।
সার্চ দিয়ে শোনো।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৬
অপু তানভীর বলেছেন: একদিন চলে আসো তো ! আমি আর তুমি এক সাথে এই পার্কে হাটাহাটি করা যাবে !
আচ্ছা সার্চ দিয়ে শুনবো ।
১১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২৯
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আপনার সাথে একটা ব্যাপারে একমত। হাঁটতে থাকলে একটা রাস্তাকে একরকম লাগে। সাইকেল বা অন্য যেকোন যানবাহনে চড়লেই সেই রাস্তাটা অন্যরকম হয়ে যায়।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৪১
অপু তানভীর বলেছেন: সত্যিই তাই । হাটলে রাস্তা গুলো অন্য রকম লাগে !
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:০৫
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: আমার শিশু-শৈশব কেটেছে তেঁজকুনি পাড়ায়। বাবার সাথে নিয়মিত যাওয়া হতো ফার্মগেট পার্কে/সংসদ ভবন চত্তরে আর মাঝে মাঝে যাওয়া হতো রমনায়। আহ! চোখ বন্ধ করছে এখনো দেখি বাবার সাথে আমি হাটছি/দৌড়াচ্ছি। আপনার স্মৃতিচারন পড়তে পড়তে আমিও হারিয়ে গেলাম নিজের স্মৃতিতে।