নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার একটি (প্রায়) ভুত দেখার অভিজ্ঞতা

০৩ রা মে, ২০২৩ রাত ১১:৪৭



বোধ করি আপনারা সবাই ভুত দেখার গল্প শুনেছেন । আমি একটা ব্যাপার খেয়াল করে দেখেছি যে যাদের মুখে আমরা এই ভুতের গল্প গুলো শুনেছি তারা নিজেরা কেউ ভুত দেখে নি । তার মামার বড় ভাই, চাচার শ্বশুরের ছোট বোন জামাই, দাদীর মেঝ মামা টাইপে মানুষেরা সেই ভুত দেখেছে । মানে আমি বলতে চাইছি যে আপনি কি এমন কোন মানুষকে দেখেছেন যে নিজে বলেছে যে হ্যা সে নিজ চোখে ভুত দেখেছে ! আমি অবশ্য দেখি নি । আপনারা হয়তো দেখতে পারেন । ব্লগারদের ভেতরেই হয়তো এমন কাউকে পাওয়া যাবে যে নিজ চোখে ভুত জ্বীন এসব দেখেছে । যাক, সে সব কথা পড়ে থাক । আজকে আমি আমার ভুত দেখার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করি ।

সময়টা ছিল ২০১২/১৩ সালের দিকে । সম্ভবত গরমের ছুটিতে বাসায় গিয়েছি । আমার আগের কিছু পোস্ট যারা পড়েছেন তাদের আমাদের বাড়ির ব্যাপারে একটা ধারণা আছে । তারপরেও একটা ছোট বর্ণনা দেওয়া যাক। আমাদের বাড়ির পেছনে উঠন রয়েছে বেশ খানিকটা জুড়ে । সেখানে নানান ধরনের গাছ পালা রয়েছে । পুরো বাড়িটা তখন টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল । বাড়ির একেবারে শেষ সীমানাতে এক দিকে রয়েছে একটা বড় আম গাছ । আর অন্য দিকে তখন ছিল একটা কাঁঠাল গাছ তার পাশে লিচু গাছ । বাড়ির সীমানার পেছনে ছোট গ্রামের রাস্তা তার পরে একটা কাঁনা পুকুর । পুকুরের একদিকে বড় আম বাগান। বারির অন্য একপাশে ছিল বড় বাঁশ ঝাড় । এখন অবশ্য বাঁশ ঝাড় নেই । কেটে ফেলা হয়েছে । এবং তখন আমাদের বাড়ির আশে আমাদের নানীর বাড়ি ছাড়া আর কোন বাড়ি ছিল না । এখন অবশ্য অনেক বাড়ি হয়ে গেছে ।

এবার আসা যাক আসল গল্পে । আমি বাসায় গিয়েছি । বাসায় গেলে তখন একটা সমস্যা হত যে রাত এগারোটার ভেতরে আমার বাড়ির সব মানুষজন ঘুমিয়ে পড়তো । আমি যেহেতু ঢাকাতে রাত জেগে থাকতাম তাই আমার ঘুম আসতো অনেক দেরিতে । এই সময়ে আমি দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে আসতাম । আমার ঘরের পেছন দিক দিয়ে আলাদা একটা দরজা ছিল । সেটা দিয়েই বের হওয়া যেত। এছাড়া আমি ওয়াশরুমের জন্য বাইরে যেতাম । বাসার ভেতরের গুলো ব্যবহার করতাম না ।

এমনই এক রাতের কথা । আমি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি । সময় তখন রাত দুইটা থেকে আড়াইটা হবে । বিছানাতে যাওয়ার আগে আমি বাইরে বের হলাম ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য । কাজ শেষ করে কলপাড় থেকে হাত ধুলাম । তাকালাম পুরো উঠোনের দিকে। চারিদিকে নিশ্চুপ হয়ে গেছে । গ্রামের কেউ আর জেগে আছে বলে মনে হয় না । রাস্তার পাশে বাড়ি হওয়ার কারণে মাঝে মাঝে একটা দুইটা নাইটকোচ যাওয়ার শব্দ ভেসে আসছে অথবা ভারি মালামাল সহ ট্রাক যাচ্ছে । এই আওয়াজ ছাড়া আর কোন আওয়াজ নেই । সব নিশ্চুপ।

আমি কলপাড় থেকে তাকালাম আম গাছটার দিকে । ঠিক সেই সময়েই আমার বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো । বাড়ির সামনের দিকে একটা আলো জ্বলে সারা রাত কিন্তু বাড়ির পেছনের দিকে কোন আলো জ্বলে না । এই দিকটা একেবারে অন্ধকার হয়ে থাকে । তবে বাড়ির সামনের দিকের আলোটা একেবারে কর্ণারে সেট করা তাই সামান্য আলো আসে । সেটা না আসার মতই । পেছনটা তাই অন্ধকারই থাকে । পেছনে পুকুর আর তারপরে ধারে কাছে কোন বাড়ি নেই তাই আর কোন আলো আসে না । কিন্তু আমি কলপাড় থেকেই পরিস্কার দেখতে পেলাম যে আম কাছের ডালে একটা আলো নড়ছে । খানিকটা জমাট আলো । আমার মনে হল আমি ভুল দেখলাম । চোখ বন্ধ করে আবার চোখ খুললাম । এবং তখনও দেখতে পেলাম আলোটা রয়েছেই এবং সেটা স্থির না । নড়ছে ।

আকাশের উপর দিয়ে আগুনের গোলা যাওয়া, গাছের ডাল আগুনের খেলা করার গল্প আমি অনেক শুনেছি নানী খালাদের কাছে । আজকে আমিও এমন কিছু দেখে ফেললাম । আমি কলপাড় থেকে কেবল একটা লাফে আমার ঘরের দরজায় চলে এলাম । ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম । দরজা বন্ধ করে অনুভব করতে পারছিলাম যে আমার বুকের ভেতরটা কেমন লাফাচ্ছে । আমার তখনই ইচ্ছে হল যে আলো বন্ধ তখনই শুয়ে পড়ি । বেশ কিছুটা সময় আমি সেখানে সেভাবে দাড়িয়ে রইলাম ।

তারপর কিছুটা সময় পরে আমার ভয়টা একটু কমে গেল । সেখানে জমা হল কৌতুহল । মনে হল আরেকবার দেখা যাক আলোটা আছে কিনা ! আমি ভয়ে ভয়ে দরজা খুললাম । তারপর আবারও আম গাছের দিকে তাকালাম । এবং অবাক হয়ে দেখলাম যে আলোটা এখনও আছে এবং নড়ছে । আমি দরজা বন্ধ করতে যাবো তখনই আমার আলোটাকে একটু যেন অন্য রকম মনে হল । মানে কলপাড় থেকে যেমন দেখেছিলাম এই দরজার কাছ থেকে আলোটাকে তেমন মনে হচ্ছে না । তারপর আরো একটু ভাল করে খেয়াল করলাম । এবং তখনই নিজেকে বড় গাধা মনে হল ! গাছের ডালের আলোর রহস্যও সমাধান করে ফেললাম সাথে সাথেই ।

আপনারা ভিসিআরের নাম শুনেছেন নিশ্চিত । অনেকে হয়তো দেখেছেন । সিডির যুগের আগে এই ভিসিআর ছিল । আমাদের বাসায় এই ভিসিআর ছিল । সেই সাথে ছিল ভিডিও ক্যাসেট । ভিসিআর নষ্ট হয়ে গেছে । তবে তখনও কিছু ভিডিও ক্যাসেট ছিল আমাদের বাসায় । আমার ভাইয়ের ছেলে তখন একটু বড় হয়েছে । সে এই ক্যাসেটের ফিতে বের করে সারা গাছের ডালে বেঁধে রেখেছে । এমনই একটা ফিতে বাড়ির সামনের জ্বলতে থাকা আলো সরাসরি রিফ্লেক্ট করে আমার চোখে এসেছে আর আমি ভেবেছি যে এটা বুঝি কোন আলো । আর বাতাসে যেহেতু ফিতে নড়ছিলো আমারও মনে হচ্ছিলো বুঝি আলো নড়ছে ।

আমি এবার গাছের কাছে গিয়ে হাজির হলাম । দেখলাম সত্যিই তাই। আমার ভয়ডর সব কোথায় দৌড় দিল ।
ঘরে এসে ধীরে সুস্থে শুয়ে পড়লাম । শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম যে যদি আমি আবার দরজাটা না খুলতাম তাহলে হয়তো একদিন আমার এই ভয় পাওয়ার গল্প আমি ভুত এফএমের রাসেল ভাইকে লিখে পাঠাতাম । সেখানে রাসেল আমার এই গল্প পড়েও শোনাতো । কিন্তু কৌতুহলের কারণে গল্পটা আর ভুতের গল্প হয়ে উঠলো না ।


pic source

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০২৩ সকাল ১১:০৫

শাওন আহমাদ বলেছেন: আমি নিজেই দেখেছি; কিন্তু কৌতুহল দেখিয়েও সেটার সমাধান হয়নি কারণ সেটা সত্যিই অশরীরী ছিলো।

০৪ ঠা মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৪২

অপু তানভীর বলেছেন: আরে একজন জীবনে পাওয়া গেল যে নিজ চোখে ভুত দেখেছে । নিজের অভিজ্ঞতা কি আপনি ব্লগে লিখেছেন? না লিখে থাকলে একটা পোস্ট দিয়ে ফেলুন । আমরা পড়ি ।

২| ০৪ ঠা মে, ২০২৩ দুপুর ১:১৯

শেরজা তপন বলেছেন: ইন্টারেস্টিং বিষয়। সময় করে আসছি পড়তে।

০৫ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩১

অপু তানভীর বলেছেন: বেশির ভাগ ভুতের গল্প গুলোতে যদি আমরা কৌতুহল নিবারন করতে যাই তাহলে আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে ফলাফল আমার মতই হবে ।

৩| ০৪ ঠা মে, ২০২৩ দুপুর ২:৪৪

শাওন আহমাদ বলেছেন: ব্লগে লেখা হয়নি, তবে সময় করে একদিন লিখব ইন শা আল্লাহ।

০৫ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩১

অপু তানভীর বলেছেন: লিখে ফেলুন । দেরি করবেন না লিখে ফেলুন !

৪| ০৪ ঠা মে, ২০২৩ বিকাল ৩:২৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: গ্রামে এবং পাহাড় জঙ্গলে অনেক জীন আছে। অনেক জীন মাদ্রাসায় পড়ে। শহরেও আছে। তবে কম। পরিত্যক্ত বাড়িতে জীন থাকতে পারে। অনেক সময়
মেয়ে জীনেরা ছেলেদের উঠিয়ে নিয়ে যায় আবার কয়েক মাস পরে ফিরিয়ে দেয়। এমন একজনকে আমি দেখিছি। একজনকে চিনি যে ১০,০০০ বছর বয়সের এক জীনের সাথে কথা বলেছে। অনেক উচ্চ শিক্ষিত প্রতিষ্ঠিত মানুষ তিনি। আগে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। এখন ভালো চাকরী করেন। আরেকজন সামরিক অফিসার (অবসরপ্রাপ্ত) এক মাসের মত একটা বাসায় জীনের সাথে ছিলেন। উনিও ভালো চাকরী করেন। এদেরকে মানসিক রোগী ভাববেন না আবার। সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষ।

আমার এক কাজিন সিস্টার সূরা জীন বা অন্য কোন একটা সূরা পড়ার পরে লম্বা দাড়িওয়ালা একটা বামন জীন দেখেছিল বাসার মধ্যে। জীনটার দাড়ির দৈর্ঘ্য দুই ফুট উচ্চতার জীনটার সমান হবে। ভাগ্য ভালো তুলে নিয়ে যায় নি।

০৫ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭

অপু তানভীর বলেছেন: আমার নানার বাড়িতে এক বিডিয়ার ফ্যামিলি ভাড়া থাকতো । তার বড় পড়াশোনা করতো যশোরের এক বড় মাদ্রাসায় । হাফেজ পড়তো । পড়তে থাকা অবস্থায় সে একবার নাকি কৌতুহল থেকে সুরা জ্বীন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছিলো । এবং তারপরই সে প্রায় ৪০/৪৫ দিনের মত গায়েব ছিল । কোথায় ছিল কেউ জানে না । এমন কি যখন সে ফিরে এসেছিলো তখন সে নিজেও কিছু বলতে পারে না ।

জ্বীনদের মাদ্রাসায় পড়াশোনা করার ব্যাপারটা ভুতের গল্পে খুবই পরিচিত একটা থিম ।

৫| ০৪ ঠা মে, ২০২৩ রাত ৮:৪৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমি দুটি প্রায় ভূতিক গল্প লিখবো বলে ভালছি অনেকদিন ধরে।

০৫ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৭

অপু তানভীর বলেছেন: লিখে ফেলুন দেখি ! ভুতের গল্প আমি সব সময় পছন্দ করি । জলদি জলদি লিখে ফেলুন !

৬| ০৪ ঠা মে, ২০২৩ রাত ১০:৫৩

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: রহ্স্য পত্রিকায় এমন অনেক ঘটনা আসত এগুলোকে বলা হত হয় ভৌতিক অভিজ্ঞতা না হয় বিচিত্র অভিজ্ঞতা । আর খসু চৌধুরী ও অরণ্য সারোয়ার তো সোজা সত্য ঘটনাই লিখত যদিও অরণ্য সরোয়ারের অনেক ঘটনা আমার কাছে বুজরুকি বলে মনে হয় । আপনার এই ঘটনা আরেকটা কথা মনে করিয়ে দিল , " ডরাইলে ডর না ডরাইলে কিসের ডর ! "

০৫ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:১১

অপু তানভীর বলেছেন: আমি নিজেও রহস্য পত্রিকায় এমন অনেকংহটনা পড়েছি । বয়স যখন কম ছিল তখন এসব পড়তে বেশ চমৎকারই লাগতো । তবে বয়স যখন বাড়তে থাকে তখন আসতে আসতে মনে হল যে এসব কেবল গল্পই ।

৭| ০৫ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১০

ইসিয়াক বলেছেন: মাথা ঠান্ডা করে ভাবলে অনেক সমস্যার সমাধান মিলে যায়।একা একা অত রাত্রে বাইরে বের হয়েছেন আপনার সাহস আছে মানতেই হবে। আমিও একবার বাজী ধরে কবরখানায় একঘন্টা কাটিয়েছিলাম।অদ্ভুত সে অভিজ্ঞতা। তবে ভয় পাই নি।
আমিও কোনদিন ভূত বা জ্বীন দেখি নি তবে কিছু ঘটনায় বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম পরে অবশ্য বুঝতে পেরেছিলাম সেই ঘটনার কার্য কারণ তখন নিজেকে বোকা মনে হয়েছে হা হা হা।
একসময় পর্যন্ত সন্ধ্যার পর এ ঘর থেকে অন্য ঘরে একা একা যাতায়াত করতে পারতাম না।যখন ঢাকাতে ছিলাম আর কি।আব্বা ভীষণ রাগ করতো বকাও দিতো খুব কিন্তু আমার সেই সময় মনে হতো সব খাটের নীচেই ভূত থাকে।আমাকে একলা পেলেই পা ধরে টেনে নিয়ে যাবে।যদিও তেমনটা কখনও হয় নি।

০৫ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:১৪

অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের তখনকার বাড়িটাই আসলে এমন ছিল । ছোট থেকে আমি বাঁশ ঝাড়েই নিচেই বড় হয়েছি, এই কারণেই এই পরিবেশ ভয় লাগে নি । এটা আমার কাছে খুবই স্বাভাবিক একটা পরিবেশ ।
আমি অবশ্য কখনই এই রকম বাজি ধরি নি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.