নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যখন আমরা মাইকোয়া পাড়ায় পৌছালাম তখন প্রায় মধ্যদুপুর। তীব্র রোদ প্রায় মাথার উপরে। একটা খাড়া পাহাড়ে সেই কত সময় ধরে উঠছি তো উঠছি। মনের একটা অংশ বলছিল এখনই একটু বিশ্রাম নিই কিন্তু আরেকটা অংশ বলছিল যে বিশ্রাম নিলেই ক্ষতি! একটু আগেই তো বিশ্রাম নিয়েছি ! যত জলদি পাড়ায় পৌছাবি তত দ্রুত বিশ্রাম নিতে পারবি! তাই উঠছি তো উঠছি! যখন মনে হল যে আর পারছি না, এবার একটু বসতেই হবে তখনই পাড়ার গেটটা চোখে পড়ল । পাহাড়ে প্রতিটা পাড়াতেই এমন করে প্রবেশ মুখে এই রকম গেট থাকে। তার মানে আমার পৌছে গিয়েছি আমার আজকের গন্তব্যে।
গতকালকে আমরা ছিলাম বুলাই পাড়াতে । গতকাল সকালে আলীকদমে এসে পৌছিয়েছি। সকালের নাস্তা শেষ করে বের হতে হতে আমাদের প্রায় বারোটা বেজে গিয়েছিল। একটা দল কোন প্রকার গাইড না নিয়ে বের হয়ে গিয়েছিল। এখানকার নিয়ম যে বাধ্যতামূলক ভাবে গাইড নিয়েই আসতে হবে। সেটা নিয়েই একটু ঝামেলা চলছি। অন্য কোন গ্রুপকে আর বের হতে দিচ্ছিল না। সেই ঝামেলা মেটাতে মেটাতে বারোটা । আলীকদম বাজার থেকে আমরা বারোটার দিকে বাইক নিয়ে বের হলাম। আর্মিক্যাম্প বাইপাস করে পৌছালাম কী যেন একটা বাজারে। বাজারটার নাম ঠিক মনে নেই এখন। সেখান থেকে দেড়টার দিকে আমাদের হাটা শুরু হয়েছিল। সন্ধ্যার একটু আগে আমরা পৌছিয়েছিলাম বুলার পাড়াতে । রাতটা সেখানেই ছিলাম। এরপর সকালে এই মাইকোয়া পাড়ার জন্য রওয়ানা দিয়েছি। সামনের দুটোদিন আমরা এখানেই থাকব।
আমাদের গাইড ফারুক ভাই আমাদের আগেই পাড়াতে পৌছে গিয়েছিল। সে আমাদের ঘর ঠিক করে রেখে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। আমাদেরকে জানালো যে পাড়াতে এখন খুব একটা মানুষ নেই । সবাই গেছে ঝুম কাটতে । আমরা যে ঘরে থাকব সেখানে এক জন মধ্য বয়স্ক মহিলা রয়েছে যে বাংলা তো বলতে পারেই না, বোঝেও না । তবে সেটা অবশ্য কোন সমস্যা হল না খুব একটা ।
এই পাড়াটা আকারে বেশ বড়ই মনে হল । তবে ঘরের সংখ্যা কম । সব মিলিয়ে আট দশটা হবে। আমাদের ঘরটা ছিল একেবারে পাড়ার শেষ মাথায়।
পাড়াতে পানির ব্যবস্থাটা একটু অদ্ভুত । আগের পাড়াটা একটা ঝিরির পাশে ছিল । পানি সেখান থেকেই আসত। তবে এই মাইকোয়া পাড়াটা প্রায় ২২শ ফুট উচুতে । এখানে আশে পাশে কোন ঝিরি নেই। পাড়ার থেকে একটু ঢালে একটা গর্ত করা রয়েছে। গর্তের উপরে ছাউনি। সেখানে পাহাড় চুইয়ে এসে পানি জমা হচ্ছে। কোন ঝিরি না । এই পানি কোথা থেকে যে আসছে সেটা আমি খুজে পেলাম না। তবে এই উৎস হতেই পুরো পাড়ার খাবার পানি সহ অন্য সব পানির চাহিদা মিটছে।
গোসল শেষ করে আবারও ঘরে ফিরে গেলাম। আজকের মত আর কোন কাজ নেই । শুয়ে বসে থাকা আর পাড়া ঘুরে বেড়ানো। আগামীকাল আমাদের বেশ লম্বা একটা হাটা দিতে হবে। বিকেলে দিকে পাড়ার ঘুরতে বের হলাম। দেখলাম পুরো পাড়াতেই আমাদের মত নারিশ্যা ঝিরি দেখতে আসা মানুষে ভরপুর।
সন্ধ্যার দিকে পাড়ার লোকজন ফিরে আসতে শুরু করল । আমরা যে ঘরে ছিলাম সেই ঘরে তিন জন পুরুষ আর দুইজন তরুণী নারী। আর আগেই বলেছিল একজন মাঝ বয়সী নারী। মূলত তিনিই বাড়ির কর্ত্রী। তার দুই মেয়ে। আর দুইজন পুরুষ হচ্ছে তাদের স্বামী। মজার ব্যাপার যেটা খেয়াল করলাম সেটা হচ্ছে, বাসায় আসতেই মেয়ে দুইজন তাদের বোঝা থেকে ধান নামিয়ে সেগুলো মাড়াই করতে শুরু করল । আর ছেলে দুইজনের একজন রান্না করতে বসল। পুরো দিনে যে মাঝে বয়সী নারী ঘরে ছিল সে কিন্তু কোন রান্না করে নি। সে কেবল একটা বাচ্চাকে সামলেছে। আর কোন কাজ সে করে নি। রান্না কাজ এখানে ছেলেরা করে আর বেশি পরিশ্রমের কাজ সব মেয়েরা করে । যে দুইজন ইয়াং ছেলে ছিল ওরা বাড়ির ছেলে না, ওরা বাড়ির জামাই। এখানে ছেলেরা বিয়ের পরে স্ত্রীর ঘরে এসে থাকে।
পরের দিন অন্ধকার থাকতেই আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করলাম। এই যাত্রাটা অন্য যে কোন যাত্রার থেকে একটু অন্যরকম । আমরা যখন কোন পাহাড় সামিট করি তখন আমরা উপরের দিকে যাই আর ফেরার সময়ে নেমে আসি । পাহাড়ে উঠতে বেশি পরিশ্রম লাগে আর নামতে কম । আর ফেরার সময়ে শরীর একদম ক্লান্ত থাকে তবে নামতে হয় বলে তূলনামূলক ভাবে সেটা সহ্য হয়ে যায়। কিন্তু এখানে ব্যাপারটা উল্টো। আমরা উচু পাড়াতে রয়েছি আর ঝিরিটা নিচে । অর্থ্যাৎ আমাদের আগে নামতে হবে আর শরীর যখন ক্লান্ত থাকবে তখন উঠতে হবে।
আমরা নয়টার ভেতরেই আমাদের গন্তব্যে পৌছে গেলাম । সেখানে কিছু সময় কাটিয়ে এগারোটার দিকে আবার ফেরার পথ ধরলাম । সত্যিই বলতে কী এবার বেশ পরিশ্রম হয়ে গেল। এতো পরিশ্রম এর আগে অন্য কোন ভ্রমনে হয় নি। সম্ভবত আর আগের মত বয়স নেই। শরীর সহ্য করছে না।
একটা পাহাড় এতো খাড়া ছিল সেটা উঠতেই আমাদের প্রায় দেড় ঘন্টা লেগে গেল । তবে সব দুঃখের মত এই কষ্টও এক সময়ে শেষ হল। পাড়াতে দুইটার দিকে এসে হাজির হলাম । গোসল শেষ করে খেয়ে দেয়ে ঘুম । একঘুমে সন্ধ্যা ।
আদিবাসিদের এই পাড়ার জীবন দেখে আমার বড় লোভ হয় । মনে হয় যে যদি এদের মত এতো সিম্পল জীবন যাপন করা যেত। যদিও এখনও ওদের জীবনের ভেতরে টুকটাক আধুনিকতা ঢুকে গেছে। প্রতিটা বাড়িতেই এখন একটা সোলার রয়েছে। এই সোলার দিয়েই ওদের ঘরে আলো জ্বলে। ছেলেদের হাতে স্মার্ট ফোন । ওরা গান শোনে । ব্লুটুথ স্পিকার রয়েছে।
প্রতিদিন সকালে ওরা সবাই কাজে বের হয়ে যায়। ফিরে আসে বিকেলে। রান্না করে, খাওয়া দাওয়া করে এরপর রাতে ঘুমিয়ে পড়ে জলদি। ঘুমানোর আগে ওরা কিছু সময়ে আড্ডা দেয়। এইঘর ঐঘরের মেয়েরা এক সাথে বসে কিছু সময় হাহাহিহি করে। তরপর আটটা সাড়ে আটটার ভেতরে শুয়ে পড়ে। পরদিন আবার সকাল থেকে কাজ শুরু।
এই পাড়ার সব থেকে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে এখানে কোন ওয়াশরুম নেই। সবাইকে জঙ্গলে গিয়ে প্রাকৃতিক কর্ম সারতে হয়। কিন্তু তার থেকেও ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে আপনি যখনই এই কাজ সারতে যাবেন তখন আপনার পেছন পেছন আসবে শুকরের পাল। এরাই ওসব খেয়ে একেবারে খেয়ে পরিস্কার করে ফেলে। এই জন্য এরা কোন ওয়াশরুম তৈরি করে না।
পরের দিন সকাল আমাদের ফেরার সময়। যে পথে গিয়েছিল সেই পথেই আবার ফিরে আসা। দুপুরের খাবার খেলাম বুলাই পাড়ার সুলতান ভাইয়ের দোকানে । কথা ছিল হাঁসের মাংস দিয়ে তবে সেটা পাওয়া গেল না।
এখানে একটা আর্মি ক্যাম্প আছে। এই পাড়াতেই একটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও আছে।
এবার প্রায় এক বছর পরে এসেছিলাম পাহাড়ে। পাহাড়ের জীবন কঠিন এক জীবন। অনেকে বলে যে এখানে কেবল ঘুরতে এলেই বুঝি ভাল লাগবে, থাকতে ভাল লাগবে না। হয়তো সত্যি আবার হয়তো না। একটা চেষ্টা চলছে। একেবারে লম্বা সময়ে পাহাড়ে থাকার একটা ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখা যাক।
কয়েকটি ছবি দিলাম ট্যুরের । যদিও চোখে দেখা আর ছবিতে দেখা দৃশ্যের ভেতরে আকাশ পাতাল পার্থক্য।
ছবিটা দেখতে যতই চমৎকার মনে হচ্ছে বাস্তবে কঠিন রোদ ছিল
জুমঘর
এতো নির্জন এই জায়গাটা
বিখ্যাত ট্রাভেলার
ভোরের মেঘের নদী
দুইদিনের নাইট-স্টে
চলছে রাতের খাবার
ঝিরি পথ পাড়ি দেওয়া
আজকের ব্লগ এখানেই শেষ ।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:১২
অপু তানভীর বলেছেন: পাড়াটা আমার কাছেও বেশ চমৎকার লেগেছে কেবল ঐ একটা জায়গা বাদ দিয়ে । তবে এটা মানিয়ে নিতে পারলে চমৎকার । এখানকার মানুষজন গুলো আমার অন্য যে কোন পাড়ার থেকেও বেশি পরিশ্রমী মনে হয়েছে ।
আমি শুনি নি । অবশ্য হাটা বাদ দিয়ে বেশির ভাগ সময়ে আমি ঘরে শুয়েই কাটিয়েছি । আমার ট্যুরমেটরা অবশ্য খুব পাড়া বেড়িয়েছে ।
২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:২২
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: জটিল সব জায়গায় ঘুরাঘুরি করেছেন, আমার ইচ্ছে আছে পার্বত্য চট্রগামের তিন জেলায় তিন মাস ধরে ঘুরাঘুরি করে সব রহস্য উদঘাটন করার।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:১৩
অপু তানভীর বলেছেন: কেবল বান্দরবানই এতো বড় আর এতো জায়গা দেখার আছে যে এই একটা জেলাতে ঘুরে দেখে শেষ করতেই ছয়মাস লাগবে !
৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:০২
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: খুব ভালো।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:১৪
অপু তানভীর বলেছেন: আপনিও ঘুরে আসুন !
৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:২০
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: লোভ তো সামলাতে পারছি না...
ইচ্ছে হচ্ছে এখনিই ছুটে যায়...
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:১৫
অপু তানভীর বলেছেন: দেরী করবেন না মোটেও । প্রতি সপ্তাহেই ট্যুর গ্রুপ গুলো বান্দরবান যাচ্ছে । এমন একটা গ্রুপের সাথে যুক্ত হয়ে যান।
৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: অসধারণ বর্ণনা আর সাথে চমৎকার সব ছবি। খুবই দুঃসাহী অভিযানে নেমেছিলেন। তার প্রতিফলন আমরা পেলাম লেখায় আর ছবিতে।
শুভকামনা রইলো।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:১৮
অপু তানভীর বলেছেন: ছবি দেখেই যদি আপনার ভাল লাগে তাহলে ওখানে গেলে কী বলবেন ?
এখন প্রচুর মানুষ যাচ্ছে বান্দরবান নিয়মিত । যদি না গিয়ে থাকেন তাহলে ঘুরে আসুন ।
৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৪
আরইউ বলেছেন:
এটা কি আগের কোন লেখার কন্টিনিউশন, অপু? একটু ব্যাকগ্রাউন্ড ইনফো দিলে ভালো হত।
ছবিগুলো ভালো এসেছে। আপনার ভ্রমন বর্ননা ভালো লেগেছে। দুই প্যারাগ্রাফের মাঝে একটু হোয়াইট/নেগেটিভ স্পেস থাকলে পড়তে আরাম পাওয়া যায়।
প্রথম বাক্যে সম্ভবত লিখতে চেয়েছেন “যখন আমরা মাইকোয়া পাড়ায় পৌছালাম তখন প্রায় মধ্যদুপুর”। লেখায় বেশ কিছু টাইপো আছে; দয়াকরে ঠিক করে নেবেন।
পাহাড় আমার প্রিয়। আমি যে এলাকায় থাকি সেটা বেশ ভালো পাহাড়ী, তবে বিল্ট-ইন রোড ফ্যাসিলিটি খুব ভালো। আমার বাসা ৪৬৪ মিটার উচুঁ একটা পাহাড়ের পাদদেশে। পাহাড় থেকে জোৎস্না দেখা যে কী ভয়ঙকর সুন্দর!
পোস্টে আবার আসবো আমার মাউন্ট কোজিয়াসগো ভ্রমনের গল্প ছোট করে বলার জন্য।
ভালো থাকুন।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:২৭
অপু তানভীর বলেছেন: নাহ ! এটা একটাই লেখা । আগের দুই দিনের গল্প পরের প্যারাতেই আছে। মূলত পাড়াতে থাকার দুইদিন নিয়েই লেখা এই পোস্ট।
পাহাড়ি এলাকাতে থাকার ব্যাপারটা সত্যিই খুব চমৎকার একটা ব্যাপার । আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছে এমন পাহাড়ি এলাকাতে বসবাস করা। এমন না যে একেবারেই পাহাড়ের ভেতরেই থাকতে হবে তবে জানালা থেকে যেন পাহাড় দেখা যায় আর কয়েক ঘন্টার জার্নিতে যে যাওয়া যায় সেখানে । তার মানে বলতেই হবে আপনি আমার স্বপ্নের জায়গাতে থাকেন । একদিন আপনার এলাকা নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েন অবশ্যই । সম্ভব হলে আশে পাশের কয়েকটা ছবিও দিয়েন ।
৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৮
শায়মা বলেছেন: ভাইয়ু!!!
তুমি তো প্রায়ই পাহাড়ে ওঠো মনে হয়। আগেও অনেকবার এমন সব ঘুরাগুরির ছবি দেখেছি ফেসবুকেও।
তবে হ্যাঁ সত্যিকারের প্রকৃতির সৌন্দর্য্য ছবিতে কখনই ১০০% আসেই না!!!!!!!!!!
দুচোখ যা দেখে তার সাথে মনেরও চোখ থাকে কিন্তু ক্যামেরার চোখে তো আর মন থাকে না!!!!!!!!!!
অনেক সুন্দর জায়গাগুলা সেটা বুঝাই যাচ্ছে!
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:২৯
অপু তানভীর বলেছেন: জায়গাটা আসলেই অনেক সুন্দর । অবশ্য পাহাড় আমার কাছে সব সময় সুন্দর । সম্ভব হলে আজীবন এই পাহাড়েই থেকে যেতাম ।
৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:২৭
ঢাবিয়ান বলেছেন: ছবিগুলো বেশ লাগল।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৩০
অপু তানভীর বলেছেন: বাস্তবে আরও বেশি চমৎকার ।
৯| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৫৮
আরইউ বলেছেন:
অপু,
একটা কৌতুক পড়ুন।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৩১
অপু তানভীর বলেছেন: এই চাতুকারির কৌতুক আর নতুন কী ! আমরা দেখেই আসছি !
আপনাকে একটা প্রশ্ন করি, সামুর সব থেকে বড় চামচা আর চাতুকারের নাম কী বলেন?
১০| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৩২
শায়মা বলেছেন: ৯নং কমেন্ট আর উত্তর পরে হাসছি আর হাসছি।
আহারে আমার সহজ সরল ভাইয়াটার কমেন্ট স্ক্রিন শটে।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৫৪
অপু তানভীর বলেছেন: একটু তো হাসি আসবেই । এর থেকে বড় কমেডি কি সামুতে আর আছে?
১১| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:০৯
আরইউ বলেছেন:
ব্যাকগ্রাউন্ড ইনফো বলতে মাইকোয়া পাড়াটা কোথায়, কোন জেলায়, কারা থাকেন এসব বুঝিয়েছি।
কোন একসময় আমার পাহাড়টা নিয়ে ছবি দেব।
মাউন্ট কোজিয়াসগো অবশ্য ভিন্ন একটা পাহাড়। এটা অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। আমি কয়েক বছর আগে গিয়েছিলাম। মেলবোন থেকে রোড ট্রিপ টু জিন্দাবাইন গেলাম। সেখান থেকে ড্রাইভ করে মাউন্ট কোজিয়াসগো ন্যাশনাল পার্ক। চিটকোড হিসেবে পাহাড়ের শৃঙ্গ থেকে বেশ খানিকটা দূর (সবচেয়ে বড় অংশটকু) পর্যন্ত গিয়েছিলাম চেয়ার লিফটে করে। হার্ডকোর ট্রেকাররা ঐ জায়গাটুকু হেটেই যান। এরপর হাটা হাটা আর হাটা। হাটার জন্য সুন্দর রাস্তা করা আছে তাই হাটতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। মাঝে মাঝে পাহাড়ি ঝিরির দেখা পেয়েছিলাম, ছিল পাহাড়ি লেক। অসম্ভব সুন্দর একটা জায়গা। আপনি যদি কখনো অস্ট্রেলিয়া ঘুড়তে আসেন মাউন্ট কোজিয়াসগো অবশ্যই যাবেন (শীতের সময় না, তখন সামিট পর্যন্ত যাওয়া যায়না)। যেহেতু ট্রেকিং আপনার পছন্দ, পাহাড় ভালোবাসেন আমি নিশ্চিৎ আপনি মুগ্ধ হবেন চারপাশের সৌন্দর্যে।
@শায়মা, পরেরবার যখন আসবেন ঘুরে যাবেন আপনিও! আমার আরেকবার যেতে হবে শীতের সময়।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:১৪
অপু তানভীর বলেছেন: একবার আমার মনে হয়েছিলো যে যাওয়া আসার বর্ণনা আরেকটু বিস্তারিত লিখি তবে পরে সেটা আর লিখি নি। সেটা লিখতে গেলে পোস্ট বড় হয়ে যেত । কাজ বাদ দিয়ে পাহাড়ে গিয়েছিলাম । ফিরে এসে আবারও সেই কাজে ঝাপিয়ে পড়তে হয়েছে । আরও কয়েকদিন কাজ রয়েছে । বইগুলো বের হয়ে গেল কাজ শেষ হবে ।
আমার অবশ্য পছন্দের পাহাড় হচ্ছে এমন জায়গা যেখানে সহজে যাওয়া যাবে না । রাস্তা করে দিলে তো আর পাহাড় ঘোরা হল না । রাস্তা হতে হবে সরু এবং খানিকটা বিপদজনক । এছাড়া এমন স্থানেও আমার ঘুরতে ভাল লাগে না যেখানে মোবাইলের নেট পাওয়া যায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা আছে । তবে থাকার ভেতরে কাজ চালানোর মত একটা ওয়াশরুম থাকলেই আমি খুশি।
১২| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:১১
আরইউ বলেছেন:
লেখক বলেছেন: এই চাতুকারির কৌতুক আর নতুন কী ! আমরা দেখেই আসছি !
আপনাকে একটা প্রশ্ন করি, সামুর সব থেকে বড় চামচা আর চাতুকারের নাম কী বলেন?
চেনা বামুনগুলোর কি পৈতা লাগে? এত সহজ প্রশ্নে পরীক্ষা আমি দেইনা! হা হা হা।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৫
অপু তানভীর বলেছেন: মাঝে মাঝে আমি ভাবি যে আসলে এই সমস্ত চাটুকারের মনের ভেতরে কী চলে? নিজেদের চেহারা যখন আয়নাতে দেখে এদের কি সামান্যতম লজ্জাবোধ হয় না?
১৩| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:১৬
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া!!!!!!!!!!!!!!
তুমি মেলবোর্নে থাকো!!!!!!!!!!!!
ধরা পড়ে গেছো তুমি রঙ্গিলা জালে!!!!!!!!!!
যাইহোক মাউন্ট কোজিয়াসগো অবশ্যই যাবো আর এরপর আমি শীতেই যাচ্ছি অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু আমার যে ঠান্ডায় গলা বসা সমস্যা। আমি কি টিকবো ঐ পাহাড়ের ঠান্ডায়!!!!!!!!!
আর পাহাড়ে উঠলে আমি সারাক্ষন চিন্তায় থাকি নামবো কেমনে? আর নামলে চিন্তায় থাকি উঠবো কেমনে!!!!!!
১৪| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৪২
আরইউ বলেছেন:
@শায়মা,
হা হা হা। আমি মেলবোন থাকতাম একসময়। সম্ভবত খায়রুলের একটা পোস্টে মন্তব্যে সেটা বলেছিলামও কোন একসময়। এখন আমি আর মেলবোনিয়ান নই!
শীতে গেলেও সমস্যা হবার কথানা। হেটে সামিট পর্যন্ত যেতে পারবেননা এটা নিশ্চিৎ। স্কিং আর স্নোবোর্ডিং করতে পারবেন। আগে কখনো না করলেও সমস্যা থাকার কথা না। আর ওদের গাইডেড ট্যুর, এডভেনচার ট্যুর এসব আছে। চিন্তা করার কিছুই নেই।
শীতে আসলে অবশ্যই (অবশ্যই) ব্রিসবেন আসবেন। সিডনি টু ব্রিসবেন একটা রোড ট্রিপ করবেন কম করে হলেও দিন সাতেক হাতে রেখে। লেক ম্যকুয়ারী, উরমি ন্যাশনাল পার্ক, টাংকারি-ফরস্টার, পোর্ট ম্যকুয়ারী, কফস হারবার, বেরন বে, টুইড হেডস-গোল্ড কোস্ট হয়ে চলে আসবেন ব্রিসবেনে। শীতে ব্রিসবেনের ওয়েদার অসাধারণ। আর অবশ্যই গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ যাবেন (ব্রিসবেন টু কেয়ান্স; ২ ঘন্টার মত ফ্লাইট টাইম)। সম্ভবত অস্ট্রেলিয়া এসে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ না ঘোরা একটা মহাপাপ!
১৫| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
শায়মা বলেছেন: @আরইউ ভাইয়া
ব্রিসবেনে আমার এক ডক্টর মামা আছেন এবং মামীও ডক্টর। যদিও তিনি ৭৫ বছরের বৃদ্ধ তবুও এখনও জবে আছেন। প্রতিবার আমাকে ব্রিসবেন আসতে বলেন। নেক্সট টাইম ঠিকই যাবো। তবে রোড ট্রিপে গেলে কত ঘন্টা লাগবে কে জানে? তুমিই জানো আর বটে।
দিন সাতেক হাতে রাখা কেনো?
লেক ম্যকুয়ারী, উরমি ন্যাশনাল পার্ক, টাংকারি-ফরস্টার, পোর্ট ম্যকুয়ারী, কফস হারবার, বেরন বে, টুইড হেডস-গোল্ড কোস্ট হয়ে চলে আসবেন ব্রিসবেনে। শীতে ব্রিসবেনের ওয়েদার অসাধারণ। আর অবশ্যই গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ যাবেন (ব্রিসবেন টু কেয়ান্স; ২ ঘন্টার মত ফ্লাইট টাইম)। সম্ভবত অস্ট্রেলিয়া এসে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ না ঘোরা একটা মহাপাপ!
এই সব যেতে গেলে কি সবখানেই নাইটস্টে করে থাকতে হবে নাকি??
১৬| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
আরইউ বলেছেন:
লেখক বলেছেন: মাঝে মাঝে আমি ভাবি যে আসলে এই সমস্ত চাটুকারের মনের ভেতরে কী চলে? নিদের চেহারা যখন আয়নাতে দেখে এদের কি সামান্যতম লজ্জাবোধ হয় না?
লজ্জা একটা মানবিক ট্রেইট। এদের মাঝে এটা নেই। ব্লগের লিলিপুট সম্রাট আর তার সবচেয়ে বড় কুম্ভিলক চ্যালাকে আপনার মানুষ মনে হয়!
০১ লা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৭
অপু তানভীর বলেছেন: এদের যে আসলে কী মনে হয় সেটা আমি নিজেও ঠিক জানি না । অন্য কোন প্রাণীর সাথে এদের তূলনাও করতে পারছি না কারণ তাতে হয়তো সেই প্রাণীদের প্রতি অন্যায় করা হবে।
১৭| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৭
আরইউ বলেছেন:
@শায়মা,
ব্রিসবেন থেকে সিডনি মোটামুটি ৯০০/১০০০ কিমি। শহর থেকে বেড়িয়ে এলে পুরো রাস্তাই হাইওয়ে, মোটরওয়ে, বেশিরভাগটাই ১০০ বা ১১০ কিমি/ঘন্টার রাস্তা। একবার আমি ব্রিসবেন থেকে সিডনি গিয়েছি ১০ ঘন্টায়— দু‘জন ছিলাম, হাফ-হাফ ড্রাইভ করেছি। খুব একটা ক্লান্তিকর লাগেনি।
দিন সাতেক হাতে রাখবেন ঘোরাঘুরির জন্য। ধরুন দিনে ২/৩ ঘন্টা ড্রাইভ করবেন; একটা জায়গায় এসে হোটেলে উঠবেন; ঐ জায়গাটাকে কেন্দ্র করে ঘোরাঘুরি করবেন একদিন দু‘দিন; এরপর আবার আরেকটা পয়েন্টে চলে যাবেন; ঘোরাঘুরি করবেন... ...। বিশ্বাস করুন এত এত দেখার আছে, এত সমুদ্র সৈকত, লাইট হাউজ, লুকআউট, ন্যাশনাল পার্ক ৭ দিনও কম মনে হবে!
১৮| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৩
আরইউ বলেছেন:
লেখক বলেছেন: ... আমার অবশ্য পছন্দের পাহাড় হচ্ছে এমন জায়গা যেখানে সহজে যাওয়া যাবে না । রাস্তা করে দিলে তো আর পাহাড় ঘোরা হল না । রাস্তা হতে হবে সরু এবং খানিকটা বিপদজনক । এছাড়া এমন স্থানেও আমার ঘুরতে ভাল লাগে না যেখানে মোবাইলের নেট পাওয়া যায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা আছে । তবে থাকার ভেতরে কাজ চালানোর মত একটা ওয়াশরুম থাকলেই আমি খুশি।
বুঝতে পারছি। আপনার পাহাড়ের ব্যামো হয়েছে, পাহাড়ে হারিয়ে যেতে চান, তাইনা! হা হা হা।
০১ লা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:১৬
অপু তানভীর বলেছেন: আমার বরাবরই এমন পাহাড়ই পছন্দ । যতদিন থেকে পাহাড়ে ঘুরছি ততদিন থেকে এমনই । একেবারে সম্পূর্ণ সব ঝামেলা থেকে দুরে ।
একটা ব্যাপার দেখেন, আমি প্রায় সারাদিনই পিসির মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকি, কাজটাই এমন । তারপরেও আমার ৫ হাজার মিলিএম্পিয়ারের ব্যাটারির ফোনে দিনে একবার চার্য দেওয়া লাগে। আর এই পাহাতে গেলাম, মোট চারদিন ছিলাম । সেখানে পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে আমি কেবল চার্য দিয়েছি যদিও চার্য শেষ হয়েছিলো মাত্র চল্লিশ পার্সেন্ট ! তারপর যখন নেটওয়ার্কের ভেতরে এলাম বান্দরবান শহর থেকে ঢাকা আসতে আসতে ৫০ পার্সেন্ট চার্য শেষ হয়ে গেল।
কতখানি শান্তির ভেতরে ছিলাম একবার ভাবেন।
১৯| ০৯ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:৫৩
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: আমার জীবনের সেরা ট্যুর ছিলো বান্দরবান, থানচি, সাঙ্গু নদী ঘরে রেমাক্রি এরপর নাফাখুম। সময় স্বল্পতার কারণে আর ভিতরে যাওয়া হয়নি। অনেক প্ল্যান করেছি পরে, যোগ্য সঙ্গীর অভাবে আর যাওয়া হলো না। পাহাড়ি ঐ সহজ, সরল অথচ কঠিন জীবন, প্রকৃতির এত সান্নিধ্য বোধহয় আর কোথাও নেই৷ সাজেক তিনবার যাওয়া হয়েছে, তবে ওখানকার জীবন, চারপাশ কেমন আর্টিফিশিয়াল লাগে৷ শীতের সাঙ্গু নদীর স্বচ্ছ জল, রেমাক্রি ঝর্ণার পাশে কাটানো সময়, রাতের বেলা নৌকায় শুয়ে আকাশ দেখা, ভোর বেলা ট্র্যাকিং করে নাফাখুম যাওয়া আজীবন সবচেয়ে দারুণ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হয়ে আছে। ওখানে নেটওয়ার্ক ছাড়া দুইদিন বেশ উপভোগ করেছিলাম। যদিও ওখানকার টাকা পয়সাওয়ালা লোকদের ছেলেপেলের হাতে স্মার্টফোন ছিল, শুধু গান শোনার জন্য। আমার পাওয়ার ব্যাংক ওরা চার্জ দিতে দেয় নাই, মোবাইল ফোন দিয়েছিল। পাওয়ার ব্যাংককে ওরা কী ভেবেছিল, কে জানে? তবে নাফাখুম থেকে আরও ভিতরে যাবার ইচ্ছা আছে। এখন পরিস্থিতি কেমন ওদিককার? মানে নিরাপত্তা কেমন?
১০ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:১৩
অপু তানভীর বলেছেন: নাফাকুম রেমাক্রি জায়গা গুলো এখন বাজার টাইপের হয়ে গেছে। সবাই যাচ্ছে । আর যেখানে সবাই যায় সেখাকার পরিবেশ নষ্ট হতে বাধ্য । নাফাকুমে তো এখন বিদ্যুৎ আর ফ্রিজ পর্যন্ত রয়েছে ।
আমার অবশ্য এমন জায়গা যাওয়া পছন্দ যেখানে এসব কিছুই থাকবে না । সব থেকে বেশি দুর্গম । মাইকোয়া পাড়া তেমনই একটা পাড়া । যদি সম্ভব হয় ঘুরে আসবেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:০৩
তেলাপোকা রোমেন বলেছেন: মাইকোয়া পাড়া অদ্ভুত সুন্দর এক পাড়া। এই পাড়াতে যেহেতু দুইদিন থেকেছেন প্লুং শোনার কথা। এই পাড়ায় প্রায় প্রত্যেকেই প্লুং বাজাতে পারে।