নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় গ্রামবাসী ঠিক করল যে তারা নামাজ পড়ে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করবে। উপরওয়ালার কাছে প্রার্থনা করে বৃষ্টি তারা নামাবেই। নির্ধারিত দিনে সবাই মাঠে গিয়ে হাজির। এদের ভেতরে দেখা গেল একটা বাচ্চা ছেলে সাথে করে ছাতা নিয়ে এসেছে। অর্থ্যাৎ যে মনে প্রাণে বিশ্বস করেছে যে এই দোয়ার ফলে বৃষ্টি নামবেই। আর কারো মনে এই বিশ্বাস ছিল না। আচ্ছা আপনাদের ভেতরে কয়জনের এি বাচ্চা ছেলের মত বিশ্বাস আছে?
এই গল্পের আসলে এই লেখার সাথে খুব একটা সম্পর্ক নেই । গল্পটা বললাম কারণ আগে যখন ছোট ছিলাম তখন এমন গল্প প্রায়ই শুনতাম । গ্রামে গ্রামে এমন তীব্র গরমের সময়ে মানুষ দল বেধে নামাজ পড়ছে এবং প্রায় সব জায়গাতেই নাকি নামাজের পরপরই বৃষ্টি নামত। আমি যদিও নিজ চোখে কোন দিন দেখি নি তবে শুনেছি । তবে এমন একটা চল আমাদের দেশে রয়েছে । অন্য মুসলিম দেশগুলোতে এই রকম কিছু আছে কিনা সেটা অবশ্য আমার জানা নেই । এই ধরনের নামাজকে বলে ইসতিসকার নামাজ। এই নামাজে মুসলমানরা দল বেধে খোলা মাঠে বা কোন প্রান্তরে গিয়ে হাজির হন । সেখানে নামাজ পড়েন এবং এরপরে বৃষ্টির জন্য দোয়া করেন । আমার কখনও এমন নামাজ পড়ার সুযোগ হয় নি তবে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে ।
কয়েকদিন ধরে এই ইসতিসকার নামাজের খবর কয়েকটা গনমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে । সেই সাথে আরও একটা মজার খবরও দেখা যাচ্ছে । সেটা হচ্ছে ব্যাঙের বিয়ে। আগে মানুষ বিশ্বাস করত যে ব্যাঙের বিয়ের দিলে নাকি বৃষ্টি হয় । এই বিশ্বাসটা এখনও রয়েছে গেছে । অনেকে দুটো ব্যাঙ ধরে নিয়ে এসে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দিচ্ছে । বিয়ের পরে আবার খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা যাচ্ছে । মূলত এই চল টা এসেছে সনাতন ধর্মীয় লোকেদের কাছ থেকে । তাদের বিশ্বাস যে ব্যাঙের বিয়ে দিলে দেবতা বরুণ দেবের সন্তুষ্টি পাওয়া যাবে এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি নামবে। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আরেকটা কথা প্রচলিত ছিল । এমন অনেক সময় দেখা যেত যে আকাশে রোদ রয়েছে । অর্ধেক মেঘাচ্ছন্ন । কিন্তু তার পরেও বৃষ্টি নেমেছে । তখন আমরা বলতাম রোদ হচ্ছে বৃষ্টি হচ্ছে খ্যাক শিয়ালের বিয়ে হচ্ছে ।
ইসতিসকারের নামাজের কথা অনেক আগে থেকেই জানা ছিল । ব্যাঙের বিয়ের ব্যাপারটাও জানা ছিল । তবে আজকে কী মনে হল আরও এই ধরনের কিছু আছে সেটা জানার জন্য গুগলে সার্চ দিলাম। দেখা গেল যে এই দুইটা ছাড়াও আরও বেশ কিছু লোকসংস্কৃতি আমাদের দেশে রয়েছে যা আমাদের দেশের মানুষ আগে পালন করত বৃষ্টির আশায় । ডেইলি স্টারে বেশ চমৎকার একটা প্রতিবেদন করেছে । কিছু অংশ সেখান থেকে তুলে দিচ্ছি।
তালতলার শিন্নিঃ গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, দুধ, গুড় তোলা হত তারপর সেগুলো দিয়ে শিন্নি বানানো হয় কোন তাল গাছের নিচে । সেই শিন্নি খেতে গ্রামের সবাই এসে হাজির হত । শিন্নি খাওয়ার পরে সেখানে বসেই বৃষ্টির জন্য প্রার্থণা করা হত । শিন্নির স্থানে খিচুড়ি রান্নারও প্রচলন ছিল ।
কুলা নামানিঃ কুলা নামানি প্রথাটা আমার কাছে বেশ চমৎকার মনে হল । প্রথমে একটা কুলাতে নানান ধরনের জিনিসপত্র রাখা হয়। ধান, ফুল, ঘাস, কাকের বাসার খড় কাটি। এরপর সেটা বসানো হয় একটি কলসির উপরে। কলসির ভেতরে থাকে সোনারূপা ভেজানো পানি । তারপর সেখান থেকে কুলাটি গ্রামের কোন কিশোর বা কিশোরির মাথায় তুলে দেওয়া হয়। এই কিশোর এবার সেটা মাথায় করে পুরো গ্রামে ঘুরে বেড়ায় । তার পেছনে থাকে আরও অনেক কিশোর কিশোরির দল । এদের সবার মুখে চুন এবং কালী দেওয়া হয়। চুন কালী হচ্ছে মেঘের প্রতীক। এই দল প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তোলে । চাল ডাল তেল ইত্যাদি । সেই চাল ডাল দিয়ে কোন এক বাড়িতে খিচুড়ি রান্না হয় । রান্নার সময় বৃষ্টির প্রার্থনার গান গাওয়া হয় । উপরের ছবিটা এমন এক কুলা নামানি প্রথার ছবি।
মেঘপুজাঃ এটি উত্তরবঙ্গের একটা প্রথা । এই পুজাতে কেবল মেয়েরা অংশগ্রহন করতো । এখানে কোন পুরুষ থাকত না।
হুদমা গানঃ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বিশ্বাস যে মেঘের দেবতা হুদমাকে সন্তুষ্ট করা গেলে বৃষ্টি নামবে । তাকে সন্তুষ্ট করতে গাওয়া হত হুদমা গান!
এছাড়া আগে আরও একটা প্রথা প্রচলিত ছিল। সেটা হচ্ছে কুয়োতে কুমারি উৎসর্গ। এখানে বৃষ্টির জন্য গ্রামের কোন কুমারিকে নির্বচিত করা হত । তাকে নিয়ে দল বেঁধে নেচে গেয়ে সারা গ্রাম ঘোরানো হত । এরপর তাকে কুয়োতে ফেলে দেওয়া হত ।
বিবিসির একটা ভিডিও দেখতে পারেন
আরো বিস্তারি পড়তে
ডেইলি স্টারের ফিচার
কুলা নামানি (ছবি উৎস)
বৃষ্টি নামাতে প্রচলিত মিথ
২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২৭
অপু তানভীর বলেছেন: নামাজ পড়া কিংবা না পড়ার সাথে আসলে বৃষ্টির কোন সম্পর্ক নেই । যদি বৃষ্টি হয় তাহলে সেটা নামাজ পড়লেও হবে না পড়লেও হবে।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৯
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: এগুলোর অনেক কিছুই আমিও শুনেছি। ছোটবেলায় বিশ্বাস করলেও এই বয়সে এসে এগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য তেমন কিছু মনে হয় না কারন এগুলোর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অলৌকিক বিষয়ে বিশ্বাস আছে তবে সেটা অহরহ ঘটার মতো কিছু বলেও মানতে আমার সমস্যা আছে। যেহেতু সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী, তাই তার কাছে প্রার্থনা বা চাওয়ার মাঝে কোন দোষ দেখি না। যদিও সেটা কোন গ্যারন্টিড কোন বিষয় নয়। ধন্যবাদ।
২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৪১
অপু তানভীর বলেছেন: হ্যা উপরওয়ালার কাছে প্রার্থণা করার পেছনে কোন দোষ নেই । তবে এটা কোন নিশ্চয়তার বিষয় নয় । যদি আমরা বিশ্বাস করি যে নামাজ পড়ার ফলেই বৃষ্টি হয়েছে সেটা একটা ভুল ধারণা দিবে । যখন বৃষ্টি হওয়ার আসলে তখন বৃষ্টি হবে।
৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৪
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: বৃষ্টি হোক। গরম কমুক।
২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২
অপু তানভীর বলেছেন: সিলেট থেকে ঘুরে আসতে পারেন । সেখানে বৃষ্টি হচ্ছে ।
৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৪
অহরহ বলেছেন: মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: বৃষ্টি হোক। গরম কমুক।
ভাইয়া, বৃষ্টির নামাজ পড়েছেন?
৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭
অহরহ বলেছেন: ব্যাঙের বিয়ে দেয়ার কারনেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হছ্ছে। আর কিছু দিন পর সারা দেশেই বৃষ্টি হবে।
৬| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৬
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: গত বছর খুব গরম এর সময় শায়েখ মাহমুদুল্লাহ ইসতিসকার নামাজ পড়েছিলেন। কিছুটা জানান দিয়েই (ঘোষণা দিয়ে)। আমি ব্যাপারটা পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। আবহাওয়া বৃষ্টির অনুকুলে ছিল না। কিন্তু আল্লাহর রহমতই বলব, উনার নামাজ শেষ হওয়ার পরপরই বৃষ্টি হয়েছিল। এবছরও গতকাল বা গত পরশু ইস্তিকার নামাজ পড়েছেন। কিন্তু এবার বৃষ্টি হয় নি।
২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৩
অপু তানভীর বলেছেন: ঝড়ে বক পড়ার মতই ব্যাপার । বৃষ্টি সাথে নামাজের কোন সম্পর্ক নেই । যখন বৃষ্টি হওয়ার তখন হবে । নামাজ পড়লেও হবে না পড়লেও হবে।
৭| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২৪
নতুন বলেছেন: আধুনিক আবোহাওয়া পূর্বাভাসরাডার সিসটেম ব্যবহার করে।
দুবাইয়ের বৃস্টির পূর্বাভাস আমরা কয়েক দিন আগেই পেয়েছিলাম।
এমনকি আপনি নিচের সাইটে গেলে এক ঘন্টা পরে মেঘের অবস্থান কেমন, কেমন বৃস্টি হতে পারে সেটাও বুজতে পারেন।
https://mobile.ncm.gov.ae/maps-radars/uae-radars-network?lang=en
দুবাইতে এমন বড় বৃস্টি ১৬ তারিখে সারাদিন পড়েছে যেটা গত ৭৫ বছরের সবচ্চ বৃস্টি।
২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৪
অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের দেশের আবহাওয়া অফিস আরেকটু ভাল কাজ করলে ভাল হত । কবে যে আমাদের এখানে বৃষ্টি হবে কে জানে !
৮| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করলে আল্লহ তাঁর বান্দাদের আশাহত করেন না। বৃষ্টির প্রার্থনা হতো ছোটবেলা হতেই দেখতাম। বৃষ্টিও আসতো। তবে ব্যাঙা ব্যাঙির বিয়া দেখতাম কিন্তু তখনও বিশ্বাস করতাম না এখনো না। আমাদের গ্রামে হিন্দু ছেলেদের দল, ব্যাঙ নিয়ে আসতো চাউল নিয়ে যাইতো আর উঠানে নাচতো আমরা পানি ঢালতাম তাদের উপর
২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৫
অপু তানভীর বলেছেন: এগুলো আমাদের গ্রাম বাংলা সংস্কৃতি । বহু বছর ধরে গ্রাম বাংলার মানুষ এই সব প্রথা পালন করে আসছে ।
৯| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৪
শায়মা বলেছেন: ব্যাঙ ধরে বিয়ে দিচ্ছে দেখে তো আমি অবাক! এইভাবে ব্যাঙকে কষ্ট দেবে নাকি!!! হায় হায় !!!
২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
অপু তানভীর বলেছেন: এটা আমার মনে হয়েছে । ব্যাংয়ের মত এতো নীরিত একটা প্রাণীর উপর এই জোবরদস্তি চালানো ঠিক হচ্ছে না মোটেও।
১০| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫০
ঢাবিয়ান বলেছেন: @ নতুন, দুবাইয়ে বন্যার ছবিসহ পোস্ট দেন। একটা ভিডিওতে দেখলাম, শপিংমলে বন্যার পানির সাথে মাছও ঢুকেছে।
১১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫১
করুণাধারা বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো। এই যুগেও মানুষ এইসব বিশ্বাস করে, এত আচার পালন করে।
কিন্তু বুঝতে পারলাম না, ব্যাঙের পায়জামাটা দর্জি এত মাপমতো বানালো কী করে!!
২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯
অপু তানভীর বলেছেন: কেবল বিশ্বাস না । আসলে এগুল গ্রাম বাংলা সংস্কৃতি বলতে পারেন । অনেকটা উৎসবে পরিনত হয়েছে । তবে এগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে ।
ছবিটা দেখে আমিও হেসেছি অনেক। একেবারে মাপ মত হয়েছে।
১২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫১
নতুন বলেছেন: ঢাবিয়ান ভাই আমি আমাদের এলাকায় পানির সমস্যা হয়নাই। এলাকা থেকে মুল সড়কে উঠতে একটু পানি পার হতে হয়েছে। বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ করেছিলো।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সারজার মানুষ। এখনো অনেক স্থানে পানি জমা আছে, কিছু জায়গায় বিদূত নাই।
আমি এই পানি পার হয়েছি ৩ দিন।
আমার বাসার জানালা থেকে তোলা
১৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৪
নতুন বলেছেন: ঢাবিয়ান ভাই আমি আমাদের এলাকায় পানির সমস্যা হয়নাই। এলাকা থেকে মুল সড়কে উঠতে একটু পানি পার হতে হয়েছে। বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ করেছিলো।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সারজার মানুষ। এখনো অনেক স্থানে পানি জমা আছে, কিছু জায়গায় বিদূত নাই।
আমি এই পানি পার হয়েছি ৩ দিন।
আমার বাসার জানালা থেকে তোলা। এমন বৃস্টি হয়েছে প্রায় সারা দুবাইয়ে ৩ বার। ২৮৫ মিলি যা গত ৭৫ বছরের সবচ্চ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩২
নাহল তরকারি বলেছেন: গত রমজান মাসে খুব গরম পড়েছিলো। আমি ও আমাদের ইমাম সাব বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়ানোর জন্য মনস্থির করেছিলাম। নামাজ আর পড়া লাগেনি। বৃষ্টি এমনিই এসেছিলো।