উধাও !

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬

সৈন্যসামন্ত সমেত ঝটিকা সফরস্বরুপ প্রমোদভ্রমণে গিয়েছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে । সাথে ছিল অবেলার আশ্বিনী ঝড়ো বৃষ্টি । টুপটাপ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘোরাও সাঙ্গ হল । ফেরার সময়ও ঘনিয়ে এল । নীলক্ষেতে এসে সবার “উধাও” হতে ইচ্ছে হল ।১০০ টাকার বিনিময়ে বলাকায় “উধাও” হতে হবে। উধাও প্রক্রিয়া চলছে । বিরক্তিতে মাথা ধরে গেল ।একরকম বাধ্য হয়েই ঘুমের দেবতাকে আহ্বান করলাম । অব্যর্থ আহ্বান ! ঘুমের দেবতা মাথা তুলতেই দিচ্ছেন না ।দুর্মূল্যের বাজারে ১০০টা টাকা খরচ করেছি বাংলা ছবির পিছনে ! মাশুল আদায় করতেই হবে বৈকি । দুই হাত দিয়ে দুইচোখ মেলে ধরে “উধাও” হচ্ছি ! তবুও বিরক্তি ...বিরক্তি আর বিরক্তি ... এবার বিরতি ...





উধাওয়ের মোড় ঘুরে গেল বিরতির পরেই । চোখে আর ঘুম নেই মোটেও । ঘুমের বদলে অপার বিস্ময়। শরীর বারংবার কেঁপে উঠছে, লোমকূপ শিহরণে শিহরণে শীতার্ত । শেষ দৃশ্যে সব জল্পনার অবসান । সত্যি বলছি,আজ পর্যন্ত কোনও হলিউডি-বলিউডি ছবিতেও শেষ টুইস্টে এত টুইস্ট দেখিনি ! চমৎকার,অসাধারণ ব্যতিক্রমি এক কাহিনি। ছবিটির অনেক দুর্বলতা সত্বেও ভালো লেগে গেল । একজন শেকড়বিচ্ছিন্ন মানুষকে তাঁর শেকড়কে পুনরায় পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আরেকজন মানুষের নিরন্তর প্রচেষ্টার গল্প। বাংলা ছবির কাহিনি এই পর্যায়ে যেতে পারে সেটা আমার ধরণারও বাইরে ছিল । আজ নতুন একটা ধারনা পেয়েছি যে বাংলা ছবি বদলাতে শুরু করেছে... আমরা বদলে যাচ্ছি ।





ছবিটা সবার দেখা দরকার । একটা চরম মুহূর্তে পৌঁছে একজন মানুষের সিদ্ধান্ত নেবার সিদ্ধান্তিক মানসিক দ্বন্দ্বটাই ছবিটার মূল উপজীব্য । এর আগে সাইকোলজিকে বাংলা ছবিতে উপস্থাপন দেখা যায়নি । সূচনাকারী ছবি “উধাও” ।



ছবিটা সবাই দেখবেন আশা রাখি । আমি যদি বিল গেটস বা কার্লোস স্লিম হতাম তবে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে ছবিটি দেখার জন্য ১৬ কোটি টিকিট কিনে দিতাম ! না হলে একটা বিশাল মাঠে প্রদর্শনীর আয়োজন করতাম ! কিন্তু হায় !



ছবিটির ক্ষেত্রে যে নীতি কাজে দেবে সেটা হল “শেষ ভালো যার,সব ভালো তার” ...



“উধাও” বাংলাদেশের ছবি হয়েও “বাংলা ছবি” নয় এটাই বোধ হয় ছবিটার প্রাণশক্তি । আসুন “উধাও” হয়ে যাই !

০ টি +০/-০