নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুদ্রাক্ষ

তোমায় গান শোনাবো,তাইতো আমায় জাগিয়ে রাখো... ওগো ঘুমভাঙানিয়া,ওগো দুখজাগানিয়া ...

ব্যবচ্ছেদ

একাকী আমি লিখছি জীবনের গলিতে গলিতে যে জীবন-গল্পের শেষ নেই... অন্তহীন !

ব্যবচ্ছেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিরালালঃ নক্ষত্রের গল্প

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১২

ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রকার হিরালাল সেনের জন্ম মানিকগঞ্জের বগজুরী গ্রামে ১৮৬৬ সালে ,এক সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশে । এই আমাদের বাংলাদেশেই । ভাবতে সত্যিই আশ্চর্য লাগে । ১লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গমাইলের ছোট্ট এই দেশটা অনেক অনেক প্রতিভাবান মহারথীর জন্ম দিয়েছে। যাঁদের আজ আমরা বিলক্ষণ ভুলতে বসেছি । ।অথচ ওঁদের কর্মে আজ আমাদের অস্তিত্বের প্রকাশ,বিশ্বদরবারে মাথা তুলে দাঁড়াবার অন্তহীন অনুপ্রেরণা ।



হিরালাল সেনের বাবার নাম চন্দ্রমোহন সেন,মায়ের নাম বিধুঁমুখী । চন্দ্রমোহনের আট সন্তানের ভেতর হিরালাল ছিলেন দ্বিতীয় । স্থানীয় মাইনর স্কুলে তাঁর শিক্ষাজীবনের সূচনা । মাইনর স্কুল শেষে তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন । তারপর বাবার কর্মসূত্রে দেশে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে কলকাতার কলেজে ভর্তি হন । আইএসসি পর্যন্ত পড়ে তাঁর পড়ালেখায় ছেদ ঘটে । তারপর তিনি চলচ্চিত্রের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন ।

হিরালাল সেনকে বাংলা চলচ্চিত্রের জনক বলা হয় । তিনি ৪০টিও বেশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন ।তার মধ্যে মোটে একটাই পূর্ণদৈর্ঘ্যের ।ছবিটির নাম “আলিবাবা ও চল্লিশ চোর” (১৯০৩) । তবে দুঃখের বিষয় হল ছবিটি মুক্তি না পাওয়ার কারণে ছবিটির সম্পর্কে বেশি কিছু জানা যায় না । যেমনঃ অভিনেতা-অভিনেত্রী,ছবির দৈর্ঘ্য ইত্যাদি । হিরালাল সেনকে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম রাজনৈতিক চলচ্চিত্রকারও বলা হয় (Anti-Partition Demonstration and Swadeshi movement at the Town Hall, Calcutta on 22nd September;1905)।



১৮৯৮ সালে হিরালাল সেন ভাই মতিলাল সেনের সহযোগিতায় লন্ডনের ওয়ারউইক ট্রেডিং কোম্পানি থাকে “আরবান বায়োস্কোপ” কিনেন,যেটা পরের বছরে “রয়্যাল বায়োস্কোপ” নামে আত্মপ্রকাশ করে ।রয়্যাল বায়োস্কোপ থেকে চিত্রায়িত প্রথম চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ১৯১৩ সালে । কিন্তু তাঁর পরিচালিত প্রথম কাজ হল “A Dancing scene from the Opera” । তাঁর পরিচালিত কয়েকটি ছবি হল, "বুদ্ধদেব", “ভ্রমর”, “হরিরাজ”, “the flower of Persia”, “সীতারাম”, “সরলা”, “দোললীলা”, “সোনার স্বপন”, “মনের মতন” ।



হিরালাল সেনের বিয়ে হয় হেমাঙ্গিনী দেবীর সাথে । তাঁদের তিন সন্তান । মজার ব্যাপার হল প্রখ্যাত অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন হিরালালের আত্মীয় হন । হিরালালের তৃতীয় কন্যা প্রতিভা সেনের স্বামী নরনাথ সেনের ভাইপো হলেন আমাদের “হারানো সুরের” নায়িকা সুচিত্রা সেনের স্বামী ।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে বছর প্রথম বাঙালি হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পেলেন ঠিক সেই ১৯১৩ পর্যন্তই হিরালালের কর্মজীবন ব্যাপ্তি । এরপর অর্থনৈতিক বিভিন্ন সমস্যা তাঁকে গ্রাস করতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল । মরণব্যধি ক্যান্সার হানা দিল তাঁর শরীরে । মৃত্যুর ঠিক কিছুদিন আগেই তাঁর নির্মীয়মাণ সকল ছবি অগ্নিকান্ডে বিনষ্ট হয়ে যায় । মৃত্যুর আগেই আরো একবার মরলেন তিনি। অবশেষে ১৯১৭ সালের ২৯ অক্টোবর তিনি মারা যান ।



এই মহারথীর আজ ৯৬তম মৃত্যুবার্ষিকী ।চলচ্চিত্রশিল্প যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন হিরালালও বেঁচে থাকবেন,চলচ্চিত্রপ্রেমী প্রতিটি অন্তরে



মৃত্যুবার্ষিকীতে নতজানু শ্রদ্ধাঞ্জলি ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.