![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরেকটি ঘুর্নিঝড় আসছে। বাংলাদেশের সব মানুষই শংকিত। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ব্যাপরটা অন্যরকম। আমার হাত পা কাপতে শুরু করেছে, গলা শুকিয়ে আসছে এখুনি, দুপুরে ভাত খেতে পারিনি। আল্লাহর কাছে সারাক্ষন প্রার্থনা করছি কোনমতে যেন এ ঝড় বাংলাদেশে যেন আঘাত না হানে। আমি জানি এ ধরনের ঘুর্নিঝড় এর তান্ডব। আমি নিজেই যে এর শিকার হয়েছিলাম।
১৯৯১ সালের কথা। আমরা থাকতাম চট্টগ্রামের হালিশহরে ১ তলা একটা বাসায়। সম্ভবত ২৯ এপ্রিল সকালে ১০ নম্বর সিগনাল দেয়া হয়। আমরা খুব একটা গুরুত্ব দেইনি কারন এর আগে আরো দুবার সিগনাল দিলেও সে ঝড় অন্য দেশের ওপর দিয়ে গেছে। ২৯ তারিখ সারা দিন গুমোট ছিলো আবহাওয়া। বিকেল ৩ টার দকে হালকা বাতাস শুরু হয়। সাড়ে ৫টার দিকে শুরু হয় ঝড়। সেকি প্রচন্ড ঝড়। আমাদের ১ তলা বিল্ডিং এর ছাদ উড়ে যাবার দশা। এক পর্যায়ে একটি দরজা ভেংগে যায় ঝড় এ। আমরা সবাই ভাংগা সে দরজা চেপে ধরে দাড়িয়ে থাকি যাতে সেটা আরো না ভাংগে।
রাত সাড়ে ৮ টার দিকে হঠাত চিৎকার শুনি বাইরে "পানি পানি" বলে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাসায় পানি উঠে যায়। মিনিট খানেকের মধ্যেই ঘরে প্রায় ৩ ফুট পানি চলে আসে। আমরা কোন মতে বের হয়ে সামনের দোতলা বিল্ডিং এ গিয়ে উঠি। তখন ওই এলাকায় একটিই দোতলা বিল্ডিং ছিলো। সেখানে তখন কয়েকশ মানুষ। কোনমতে ঠেলেঠুলে উঠে পরলাম। ঝড়ের গতি তখোনো বাড়ছে। পানিও বেড়ে প্রায় ১ তলার ছাদ ছুয়েছে। আশ্চর্যের কথা হলো তখন যদিও রাত ১০ টা কিন্তু দিনের আলোর মতো পরিষ্কার ছিলো আকাশ।
১১ টার দিকে সে দোতলা বিল্ডিং টাও কাপতে লাগলো ঝড়ে। কার্নিশের কিছুটা অংশ উড়ে গেলো বাতাসে। সবাই জোড়ে জোড়ে আল্লাহকে ডাকতে লাগলো। কেউবা আযযান দিতে শুরু করলো। এমনি করে বিভীষিকাময় কয়েকটি ঘন্টা পার করে ভোররাত ৪ টার দিকে ঝড়ের গতিবেগ কমে এলো। সকালে আমরা ফিরে এলাম লন্ড ভন্ড আমাদের বাসায়।
জীবনে অনেক কিছুই ভুলে যাবো ভলবো না সে রাতে বিভীষিকা। আল্লাহ যেনো কোনদিন কাউকে এমন অভিজ্ঞতা না দ্যান। আমীন।
নোট : যারা জানেন না তাদের বলছি সেদিনের সে ঝড় বাংলাদেশের উপকুলে ২২৫ কি:মি: বেগে আছড়ে পরেছিলো। এতে সরকারী হিসেবেই মারা যায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ আর বেসবরকারী হিসেবে ৩ লাখ। এক পরিবারের ১০ জনের সবাই মারা যাবার কথাও শুনেছি। পরদিন দৈনিক ইত্তেফাক ৮ কলামে শিরোনাম করে : কাদো, বাংলাদেশ কাদো।
১৩ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:০০
অর্ফিয়াস বলেছেন: Ha vai, asun sobai mile doa kori.
২| ১৩ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৫
জেনো বলেছেন: একই অভিজ্ঞতা আমারও। আমরা আই ব্লকে ছিলাম। আপনি?
১৪ ই মে, ২০১৩ সকাল ৮:২৭
অর্ফিয়াস বলেছেন: আমি ছিলাম এ ব্লকে। ১ নম্বর লাইনের শেষ মাথায়।
৩| ১৩ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আমি ঢাকাতেই ছীলাম। সারা রাত রেডও ছেড়ে আপডেট শুনছিলাম। আর কায়মনোবাক্যে মানুষের নিরাপত্তা আর কম ক্সয়ক্ষতির জন্য দোয়া করছিলাম।
সেকি চাপ বুকের ভেতর। আহারে যারা উপকূলে আছে কি অবস্থায়ই না যাচ্ছে তাদের।
আজ আবার সেই শংকা!!!
হে । মাবুদ, তুমি হেফাজত করো।
১৭ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২২
অর্ফিয়াস বলেছেন: আল্লাহ আমাদের মুনাজাত শুনেছেন।
৪| ১৩ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:০২
বাবুই পািখ বলেছেন: ঠিক আমার মনের কথা বলেছেন।
আমরা sailors colony-2 ছিলাম। ৫ তলা বিল্ডিং এর ৪ তলায় ছিলাম। সেদিন বাবা জাহাজে dutyতে ছিলেন। মা , ছোট ভাই এবং আমি কিভাবে যে বিভীষিকাময় রাতটি পার করেছিলাম, ভাবলে আতঙ্কিত হই।
১৭ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২২
অর্ফিয়াস বলেছেন: এমন রাতে যেন আর না আনে কারো জীবনে।
৫| ১৬ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১:২৭
মুহিব বলেছেন: আমরা আরএ পরে গিয়েছিলাম হালিশহরে। শুধু শুনেছি সেই ভয়াল রাতের কথা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩
হেডস্যার বলেছেন:
আগ্রাবাদের একটা একতলার বাসায় ছিলাম। একই রকম অনুভুতি আমার। ছোট ছিলাম, রাত ১১টার দিকে ঘুম ভেঙ্গে যায়।
দরজা প্রায় ভেঙ্গে গেছিলো। বড় ডাইনিং টেবিল দিয়ে রক্ষা করলাম।
আম্মা বড় ভাইরে দিয়া আজান দেয়ালো। বাসায় পানি উঠে গেলো।
পরের কয়েকটা দিন যে কি দুর্ভোগে কাটলো....!!!
সেই রাতের কথা মনে পড়লে এখনো আতঙ্কিত হই।
দেশে একনিতেই অনেক দুর্যোগ চলতেছে। দোয়া করতেছি আল্লাহ যাতে এরকম আরেকটা দুর্যোগ দিয়ে দুর্ভোগ না বাড়ায়।