![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আপনার সন্তানটি কিছুতেই কোনো কথা শোনে না । যাই বলেন না কেন, সব সময়েই যেন সেটার উল্টোটাই করবে । আর তাই ‘মারের উপর ঔষধ
নেই’ এই ফর্মূলায় চলছেন আপনি ।
কথা না শুনলেই হয় তাকে বাথরুমে আটকে রাখেন অথবা বেদম মার দেন ।
প্রতিদিনের টুকটাক চড় থাপ্পড় তো
আছেই ।
এমন কাজ অনেক বাবা-মায়েরাই করে থাকেন । কিন্তু আপনি কি জানেন এর পরিণাম কী হচ্ছে ??
আপনার মারধরের বিরূপ প্রভাব পড়ছে আপনার সন্তানের পুরো জীবনের
উপর । শুধু তাই নয়, আজ সন্তানকে মারধর ও গালাগালি করার মাসুল
আপনাকেও দিতে হবে নিকট ভবিষ্যতেই ।
আপনি একজন মা
কিংবা বাবা, এই পুরো পৃথিবীতে সন্তানের সবচাইতে আপন । সেই
সবচাইতে আপন আপনি সন্তানকে নির্যাতন করলে কীভাবে চলবে ?
সন্তান কথা শুনছে না কিংবা টিন এজার সন্তান বেয়াদবি করছে, এর
দায়ভারটা কিন্তু আপনারই । আপনি তাঁকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলতে পারেন
নি ।
সন্তান কীভাবে কি পিতামাতার কথা শুনবে যারা কিছু হলেই মুখ
খারাপ করে কিংবা গায়ে হাত তোলে?
সাইকোলজিস্টদের মতে জেনে নেয়া যাক সন্তানকে
মারধোর করার ৭টি ভয়াল পরিণামঃ
মানসিক ভারসাম্য এলোমেলো হয়ে যায়ঃ
ক্রমাগত নির্যাতিত হলে আপনার সন্তানের মানসিক ভারসাম্য এলোমেলো হয়ে যায় । নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে ভুগতে এক
পর্যায়ে সে প্রচন্ড মানসিক চাপে ভোগে ।
এভাবে মানসিক চাপে থাকতেথাকতে সে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে । ফলে নিয়মিত মারধোর করলে আপনার সন্তান সারা জীবনের জন্য
মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতেপারে ।
মা বাবার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নষ্ট হয়ে যায়ঃ
সন্তানকে নিয়মিত মারধোর করলে বাবা মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হয়ে যায় । কথায়
কথায় মার দিলে বাবা মা কে নিজের অনেক দূরের কেউ ভাবতে আরম্ভ
করে সন্তানরা ।
বাবা মায়ের প্রতি
মানসিক টান একেবারেই থাকে না এধরনের নির্যাতিত শিশুদের ।
নিজেকে একলা ভাবে ও বিষণ্ণতায় ভোগেঃ
যেসব শিশুরা নিয়মিত বাবা মায়ের কাছে শারীরিক কিংবা মানসিক ভাবে নির্যাতনের স্বীকার হয় তাঁরা সাধারণত নিজেদেরকে একা ভাবে
এবং প্রচন্ড বিষন্নতায় ভোগে ।
বাবা-মাকে আপন করে না পাওয়া ও নির্যাতনের ভয়ে কুঁকড়ে থাকে এসব
শিশুরা ।
লেখাপড়ায় খারাপ হয়ে যায়ঃ
যেসব শিশুরা খুব ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের অতিরিক্ত কড়া শাসন ও
নির্যাতনের মধ্যে বেড়ে উঠেছে তাঁরা সাধারণত লেখাপড়ায় খারাপ হয় ।
কিছুতেই লেখাপড়ায় মন বসাতে পারে না এই শিশুরা । সারাক্ষণ আতঙ্ক ও হতাশার কারণে পড়ার টেবিলে বসে সারাদিন পড়লেও কিছু মনে রাখতে
পারে না তাঁরা । আর আত্মবিশ্বাস কমে যায় বলে পরীক্ষার খাতাতেও ঠিক মত লিখতে পারে না এসব শিশু ।
কেউ খুব হিংস্র হয়ে বেড়ে ওঠে, কেউ খুব ভীতুঃ
ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের
স্বীকার শিশুরা অধিকাংশই হিংস্র হয়ে বেড়ে ওঠে । আবার কিছু সংখ্যক
শিশু হয় খুব ভীতু । জীবনের চলার পথে
প্রতিটি পা এগুতেও খুব বেশি ভয় পায় তাঁরা ।
ফলে সব সময়েই সবার
পেছনে পড়ে থাকে ।
মা বাবার প্রতি প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছা তৈরি হয়ঃ
আজকে আপনি সন্তানকে নির্যাতন করছেন । কিন্তু মনে রাখবেন একদিন
সন্তানও আপনার ওপরে এটার শোধ নেবে । কারণ আপনার সন্তানের কচি
মনে আপনিই এই বীজ বুনে দিচ্ছেন ।
যেসব শিশুদেরকে ছোট বেলাতে বাবা মায়েরা অতিরিক্ত শারীরিক ও
মানসিক নির্যাতন করেছে তাঁরা সাধারণত বড় হয়ে বাবা মাকে ঘৃণা করতে শেখে এবং একপর্যায়ে বাবা মায়ের সাথে হিংস্র আচরণ করে ।
পৃথিবী সম্পর্কে খারাপ ধারণা জন্মে যায়ঃ
আপনার শিশুটি এই সুন্দর পৃথিবীতে জন্মেছে । সে যত বড় হবে পৃথিবী সম্পর্কে তার ধারণা ও জ্ঞান তত
বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু আপনি যদি তাকে ছোট বেলা থেকেই মারধোর করেন
এবং মানসিক নির্যাতন করেন তাহলে তার শৈশব কৈশোর নষ্ট হবে । ধীরে
ধীরে পৃথিবী সম্পর্কে খারাপ ধারণা জন্মে যাবে তার মনে ।
©somewhere in net ltd.