এবং একটি গোলাপ দিবস

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৫৩

কোন এক শান্ত-অলস বিকেল , দুরুদুরু বুক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো ছেলেটি , চোখে মুখে চাপা আনন্দের শিহরণ !

হাতে ছিলো একগুচ্ছ গোলাপ , পুরোপুরি এক গুচ্ছ নয়, তবে অর্ধ গুচ্ছ তো বলাই চলে- গুনে গুনে পাঁচটি রক্তগোলাপ , ওর সাথে প্রথম দেখা হওয়ার পাঁচটি মাস কেটে গেছে যে তাই এই হিসাব করা পাঁচটি !!



বাম হাতে গোলাপ গুলোকে পিছনে লুকিয়ে রেখে ডান হাতে মোবাইল নিয়ে ফোন দিলো মেয়েটিকে , যেন ফোন রিসিভ করলেই কোন অদৃশ্য চোখ দিয়ে গোলাপ গুলো দেখে ফেলবে মেয়েটি !! এমন ভয় তার মনে!

হুম, ফোন দিলো সে মেয়েটিকে , মেয়েটির বাসার ঠিক নিচে দাঁড়িয়ে, একবার নয় টানা কয়েক বার

প্রতিবারই ফোনের শব্দ মিলিয়ে গেলো অন্য পাশে, ছোট্ট একটা ‘টিট’ শব্দে।

গোলাপ গুলোর দিকে তাকালো সে । গোলাপ গুলো যেন তাদের নিয়তি বুঝতে পেরে চুপসে গেছে অনেকটাই !!

অপেক্ষা করতে করতে শেষে চলে গেলো ছেলেটি , কে জানে তার মনটা হয়তো পরে ছিলো ঐ চার তলার বারান্দায়, নিচে দাঁড়িয়ে ফোন দিলেই চলে আসতো যেখানে মেয়েটি!



ছেলেটির অপেক্ষার অবসান ঘটলো অবশেষে, তবে একটু দেরি করেই বোধ হয় !

ফোন এলো মেয়েটির সন্ধ্যারাতে -



-এতোবার ফোন দিলা যে , কোন জরুরি দরকার ছিল ,সরি বাবু, আমি তো ঘুমায় ছিলাম,

#না এমনি,কথা বলতে মন চাইতেছিলো তো তাই আর কি !

-কি করো পাখি !আজকে না জানো রোজ ডে !



#রোজ ডে !! এইটা আবার কি !!

-ধুর বুদ্ধু , গোলাপ দিবস এইটা , এই দিনে গোলাপ দেয় মানুষ ভালোবাসার মানুষ কে ।

#অহ তাই নাকি , আগে বলবা নাহ !!

-বললে কি হইতো

#তাহলে না হয় এক বস্তা পোকা পচা গোলাপ নিয়ে চলে আসতাম তোমার এইখানে! তুমি পচা গোলাপের গন্ধ নিতে যেই না যাইতা ,সাথে সাথে পোকা গুলা তোমার নাকে চলে যাইতো ,নাক থেকে তোমার মাথায় যাইতো , ঐখানে বাসা বানাইতো , আর ডেইলি সকাল বেলা আমার নাম ধরে ডাকতো তারা, তুমি চাইলেও তুমি আমাকে ভুলতে পারতা নাহ !!



-আহা আহা , ঢং কতো

#হাহ ওকে ! বুঝলি না তুই বুঝলি নাহ , জানপাখি বলে ডাকলি নাহ !!(বিড়বিড় করে গান ধরে ছেলেটি)

-আচ্ছা , তুমি কি সত্যি ই জানো না আজকে রোজ ডে ! আর জানলে কি সত্যি ই আসতা !



ছেলেটা হাসলো , অদ্ভূত হাসি,

মেয়েওটি বুঝলো ও না , এই হাসির সাথে যে মিশে আছে গভীর কষ্ট ! ছেলেটির গোলাপ গুলো না দিতে পারার কষ্ট আর সাথে গোলাপ গুলোর কষ্ট –নিজের স্নিগ্ধ লালকে কে ড্রেনের কালোতে হারানোর কষ্ট !!



ছেলেটিও বুঝলো নাহ হয়তো মেয়েটির মনের ছোট্ট একটু কষ্ট টুকু –সারাদিন(শুধু ওই বিকেলটা বাদে, তখন সে মন খারাপ করে ফোনটাও সাইলেন্ট করে শুয়ে ছিলো) কারোর আশায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকে ব্যর্থ অপেক্ষার আর “গোলাপের হাতে ভালোবাসি শুধু তোমায়” শুনতে না পাওয়ার !

২ টি +০/-০