নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেশের জন্য কিছু করতে চাই

মোঃরাশেদুজ্জামান রাশেদ

ভালবাসি মাকে আর দেশটাকে। \nবিশ্বাস করি, \"সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।\"ধর্মভীরু তবে ধর্মান্ধ নই। দেশ আর মানুষের কল্যাণে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখি আর চাই স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন।

মোঃরাশেদুজ্জামান রাশেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

না বলা ভালবাসা!

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫১

প্রতিদিনের মতো আজও স্বাভাবিক একটা দিন।কুয়াশা ভেজা একটা ভোর সাথে ভোরের পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ।
আর কুয়াশার চাদর কাঁটিয়ে সূর্যি মামার উকি দেবার চেষ্টা।
এই পরিবেশে একটু ব্যাতিক্রম নামটি হচ্ছে 'স্রোত'!
স্রোত নবম শ্রেণীর ছাত্র, বাকী দুএকটা ভদ্র-সভ্য ছেলের থেকে একটু আলাদা; সরি পুরোটাই আলাদা। দুষ্টামিতে যদি কাউকে গোল্ড মেডেল পাবার রীতি প্রচলিত থাততো সেটা নিশ্চিত ও পেত।
.
নতুন প্রেমে পড়েছে স্রোত। সুধাকে দেখবে বলে ও দাড়িয়ে আছে। কিছুদিন হলো এটিই যেন ডিউটি হয়ে গেছে। মাথার মাঝে অসম্ভব রকমের একটি আবেগ। যেন সারাক্ষণ মনেহয় ওকে দেখতেই হবে।
স্রোতের ডিউটি তিন বেলা থাকে। নতুন পাশের বাসায় ভাড়া এসেছে সুধা। আর মাত্র তিন বেলায় বের হয় তাও প্রাইভেটের উদ্দেশ্যে।
আর এই সময়টা শত দুষ্টামিতে ভরা কাজের মাঝেও কখনোই মিস করেনা ও।

সুধা আসছে, আর স্রোত অপলক চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। তবে নিজেকে আড়াল করে। সুধার সামনে যাবার সাহস কেনজানি ওর হয়না। সামনে আসলেই হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, হাত-পা কাঁপতে শুরু করে, বুকের মধ্যে অসম্ভব রকমের একটি অনুভূতি। সেটি হয়তো লিখে বোঝানো সম্ভব নয়।
এটি আজও ঘটছে। স্রোত এটির কারন কি জানেনা; তবে এটি যেন ও বারবার নিতে চায়।
.
এভাবেই কেঁটে যায় সময়। সূর্য ওঠা, সূর্য ডোবা, শীতের কুয়াশার চাদড় ছাপিয়ে গ্রীষ্মের ঘনঘটা।
ছয় মাস কেঁটে গিয়েছে তবে আজও কিছু বলে ওঠতে পারেনি স্রোত। এখনো সেই চাপা ভয়। এখনো সেই অনুভূতিগুলো যেন একই আদলে কোন ডায়েরী পাতায় সংরক্ষণ করে রাখা।
তবে এর মাঝে সুধা হয়তো বুঝে ফেলেছে স্রোত তাকে কিছু বলতে চায়। সুধা তো একবার দাড়িয়ে স্রোতকে ডেকেছিল কাছে, বলেছিল বলতে চাও আমায় কিছু?
স্রোতের মুখ লাল টকটকে হয়ে গিয়েছিল, ভিতরে এতো না বলা অনুভূতিতে ঠাষা, যে গলার স্বরটা আর বের করতে পারেনি। হাত পা কাঁপছে।
.
২৯ অক্টোবর সাল ২০০৬। প্রতিদিনের মতো সেদিনের দিনটাও ছিল স্বাভাবিক একটা দিন। তবে স্বাভাবিক সময় ভয়ঙ্কর অস্বাভাবিক হতে সময় লাগেনা কখনোই।
এটিই প্রকৃতির সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি লীলাখেলা।
সকাল ১০ টা বেজে ৫৪ মিনিট। প্রতিদিনের মতো আজও সুধার পিছে পিছে স্রোত।
পিছে পিছে হাঁটছে ও। সুধার পড়নে আজ নীল শাড়ী। স্রোতের প্রিয় কালার এটি। স্রোত তো ওকে বলেনি কখনো। তবে ও জানলো কি করে? জানেনা স্রোত। আজ অন্যদিনের তুলনায় ওকে যেন অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। যাবার পথে বেশ কয়েকবার পিছে তাকিয়েছিল ও। আর মুখে ছিল অসম্ভব রকমের মত মাতানো একটি হাঁসি।
এই হাঁসিটির মাঝেই যেন সাড়া জীবন থাকতে চায় ও।

এর মাঝেই একটি ধাক্কা!
সামনে অজস্র রক্ত! কান্না! চিৎকার!
আশাপাশে উৎসুক মায়াভরা আবহাওয়াটি হঠাৎ যেন ধমকে যাওয়া।
একটি চলন্ত বাস ধাক্কা দিয়েছে সুধাকে। গাড়ীর ধাক্কায় পাশের ফুটপাতে ছিটকে পড়েছে ও। মাথা দিয়ে ঝড়ছে অজস্য রক্ত। স্রোত চিৎকার করে ছুটে গিয়েছে ওর কাছে।
ওর মাথাটি নিজের বাহুতে নিয়ে বাঁচাও বাঁচাও, কেউ সাহায্য করো বলে নি:শ্বাসহীন চিৎকার করে চলছে । চারপাশে বোবা মানুষগুলো নিরবতার সাথে দাড়িয়ে দেখছে ওদের। কেউ কেউ করছে ভিডিও। যেন কারো কিছুই করার নেই। স্রোতের সাদা পান্জাবিটি ধারণ করেছে এতক্ষণে লাল বর্ণ।
আর এদিকে স্রোতের বাহুর মাঝে মৃত্যুর অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে সুধা।

স্রোত নিজের কাঁধে উঠায়ে সেদিন ওকে হসপিটালে পৌঁছিয়েছিল। তবে বাঁচানো যায়নি ওকে। হসপিটালে নেবার পর চিৎিকসকের সেই মৃত্যু সংবাদ আজও ওর কানে বাজে।
স্রোতের দু বাহুর মাঝে প্রাণ গিয়েছিল সুধার। শেষ নিশ্বাসে কিছু একটা স্রোতের দিকে তাকিয়ে বলতে চেয়েছিল ও। তবে মৃত্যুর অসহ্য যন্ত্রনা তা হয়তো ওকে আর বলতে দেয়নি।
.
সাল ২০১৮। স্রোত এখন পড়ালেখা শেষ করে একটি হসপিটালে ডাক্তার হিসাবে নিয়জিত।
এই সফল কর্মজীবনে সে সব কিছু করলেও সেই ২০০৬ থেকে এখন অব্দি মানুষের হাজার কথা শোনার পরও কোন মেয়েকে ওর জীবনের সাথে জড়াতে পারেনি । স্রোত এখনো বিশ্বাস করে সুধা তার পাশেই আছে, ঐ সেই নীল শাড়িটি পড়ে। সেই অপরূপ হাসিটা হেঁসে।
আর কোনদিন হয়তো সত্যি সাহস করে বলে দিবে ওর মনের কথাটি। 'সত্যি ভালবাসি তোমায় সুধা, অনেক বেশী ভালবাসি।'

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২০

টিয়া রহমান বলেছেন: কেমন জানি জমে গেলাম! ওপারে ভালো থাকুক সুধা।

২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: আহারে----

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.