![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সর্বপ্রথম প্রিয় ব্লগারকে তার পরিশ্রমী গবেষণা ও ব্লগের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি। লেখক দীর্ঘ একটি ব্লগ প্রকাশ করেছেন। অনেক বড় লেখা। এই সময় এত বড় লেখা মানুষকে খাওয়ানো একটা যোগ্যতা। সেক্ষেত্রে ব্লগার সফল। আমিও পাঠক হিসেবে একটা দারুন সময় কাটালাম।
যাই হোক। লেখাটির কিছু বিষয়ে দ্বিমত জানাতেই এই ব্লগ। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে মন্তব্য বক্সে মতামত জানিয়ে আসলেই মন ভরে না।
প্রথম দ্বিমত আদিবাসী শব্দে।
যদিও লেখক তার প্রতিমন্তব্যে একাধিকবার এই শব্দের ব্যবহার নিয়ে তার যুক্তি তুলে ধরেছেন। লেখকের যুক্তি দুটি- ১, প্রবলেমেটিক সাইন ('আদিবাসী' এ প্রকাশ এবং ২- আত্মপরিচয়ের অধিকার। প্রথমত, লেখক শব্দটিকে প্রবলেমেটিক সাইনে প্রকাশ করে এখানে বিতর্ক থাকার দিকটি স্বীকার করেছেন। দ্বিতীয়ত, ঐ শব্দ ব্যবহারের কারন হিসেবে বলেছেন, ঐ জাতিস্বত্বাগুলো যদি এই নাম ধারন করতে চায়, তাহলে তাদেরকে এই নামে ডাকা যেতেই পারে। এছাড়াও এক্ষেত্রে লেখক একটি মন্তব্যে মতামত দিয়েছেন যে, সরকারী ভাবে উপজাতি লেখা হলেও, কোন জাতির পরিচয় নির্ধারনের অধিকারী কারা, তা নিয়ে তার সংশয় আছে। এই ছিলো তার ব্যাখ্যা।
এবার আসি, আদিবাসী বা ইন্ডিজেনাস শব্দ নিয়ে কিছু বিষয় প্রসঙ্গে।
এটা অবশ্যই সভ্যতার মানদন্ডে পড়ে যে, যে কোন ব্যাক্তি বা গোষ্ঠী নিজেদের পরিচয় নির্ধারনের অধিকার রাখে। কী নামে তারা পরিচিত হবেন সেটা তাদের একান্ত ব্যাপার। কিন্তু একই সাথে এটাও মনে রাখতে হবে, কোন ''আইনত টার্ম'' ইউজের ক্ষেত্রে অবশ্যই তা শুধুমাত্র ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে না। কোন ব্যাক্তি নিজের নাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা পোপ অথবা কোন জাতি নিজেদের নাম এলিট আর্মি রাখতে গেলে অবশ্যই এখানে কিছু বিবেচনাও যৌক্তিক হয়ে উঠবে।
আদিবাসী শব্দে সমস্যা কোথায়?
প্রথমত, প্রবলেমেটিক সাইন আমাদের দেশের কত শতাংশ মানুষ বুঝেন সেটাও বিবেচনায় রাখা জরুরি।
দ্বিতীয়ত, জাতীসংঘে 'আদিবাসী' বা ইন্ডিজেনাস শব্দ নিয়ে আলাদা কনসার্ন আছে। আদিবাসীদের অধিকারের উপর জাতিসঙ্ঘের ঘোষণাপত্র : ধারা ৩ -- 'আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার' অংশে বলা হয়েছে-
"United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples: Article 3 -- Right to Self-determination
Article 3 -- Right to Self-determinationIndigenous peoples have the right of self determination. By virtue of that right they freely determine their political status and freely pursue their economic, social and cultural development."
ধারা ৩ -- আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আছে। এই অধিকারের বলে তারা স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে (অর্থাৎ তারা কি কোন দেশের মধ্যে থাকবে, না সেই দেশ থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন দেশ গঠন করবে -- সেটা তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে, যেমন উপজাতিরা কি বাংলাদেশের মধ্যে থাকবে, না বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে পার্বত্য এলাকাকে নিয়ে কিংবা পরবর্তীতে সমগ্র বাংলাদেশের সমতলীয় উপজাতি এলাকা যুক্ত করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড গঠন করবে -- তা একান্তই উপজাতিদের রাজনৈতিক ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে) এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন অনুসরণ করবে।
-এই ধারার আলোকেই বিনা রক্তপাতে পশ্চিমা দেশগুলোর ও জাতীসংঘের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সম্প্রতী সময়ে স্বাধীনতা লাভ করেছে পূর্বতীমুর। যা অখন্ড ইন্দোনেশিয়ার অঞ্চল ছিলো। 'আদিবাসী' শব্দ চর্চার বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের অজ্ঞতাকে পুঁজি করেই এক শ্রেনীর মানুষ পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের দক্ষীণ এশীয় এজেন্ট হিসেবে এদেশে সক্রিয় বলে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে।
তাই শুধুমাত্র একটি জাতি নিজেদের একটা নামে পরিচিত করাতে চাওয়ার কারনে ঐ নামে ডাকার ভদ্রতা 'আদিবাসী' শব্দের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারেনা। অন্যদিকে এই দেশে এ জাতীয় শব্দের যেকোন প্রকারের প্রচলনও বিপদজনক।
আদিবাসী বনাম উদবাস্তু-
ব্লগার অগ্নি সারথির লেখার শুরুতেই মারমাদের ইতিহাস এসেছে। বার্মার অসহিস্নু অবস্থার কারনে, সর্বোচ্চ ৪০ লাখ পর্যন্ত মারমা উদবাস্তু কক্সবাজারে এসে উঠতে বাধ্য হবার করুন ইতিহাস বর্নিত হয়েছে। একই ইতিহাস পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশির ভাগ উপজাতীয়দের জন্য প্রজোয্য। এখানকার বেশির ভাগ গোষ্ঠীই বার্মা অঞ্চল থেকে এসেছেন বলেই বর্মীয় সংস্কৃতির প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। এটা মোটেও আশ্চর্যজনক কিছু নয়। কিংবা ব্যাখ্যাহীন কোন বিষয় নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে বার্মার জাতিগত জনগোষ্ঠী থাকার কারনে সংস্কৃতি বার্মিজ অধ্যুষিত হয়েছে। এক সময়ের উদবাস্তুদের নামের সাথে আদিবাসীর মতন ভূমিপুত্র পরিচয়ের সুস্পষ্ট ইঙ্গিতবাহী পরিচিতি জুড়ে দেয়ার প্রবল আপত্তি তৈরি হওয়া খুব স্বাভাবিক। আজকের বার্মিজ রোহিঙ্গারাও কক্সবাজারের কিছু বনভূমি সাফ করে বসবাস শুরু করেছে। এরা সবাই উদবাস্তু। এখন থেকে দুইশ বছর পর রোহিঙ্গারা নিজেদেরকে ঐ বনভূমিময় অঞ্চলে আগে এসে বসতি গড়ার অজুহাতে 'আদিবাসী' পরিচয় দাবী করলে যে হাস্য রসিকতার সৃষ্টি হবে, আজ পার্বত্য উপজাতিদের দাবিতেও ঠিক সে রকম পরিবেশের সৃষ্টি হবার কথা। দুঃখজনক হল, লেখক বর্নিত 'আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা-অবিচ্ছিন্নতার রাজনীতিতেই' আমাদের মিডিয়া প্রধান ভূমিকা রাখছেন বলে, হাসির বদলে বাঙ্গালীদের কান্নার কারন তৈরি হয়েছে।
পার্বত্য অঞ্চলের তদানিন্তন বৃটিশ গভর্ণর তথা প্রথম Deputy Commissioner Mr.T.H Leween ( মিঃ টি, এইচ,লুইন), তার লিখিত গ্রন্থ " The Hilltracts of Chittagong and the dwellers There in" এর ২৮ নাম্বার পৃষ্ঠায় উল্লখ করেন যে, " A greater portion of the hilltrives at present living in the Chittagong hills undoubtedly came about two generation ago from Aracan. This is asserted both by their own traditions and by records in the Chittagong colllectorate".অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান বাসিন্দা উপজাতীয়দের অধিকাংশ নিঃসন্দেহে প্রায় দুই পুরুষ পূর্বে আরাকান থেকে এসেছে। তাদের ঐতিহ্য আর চট্টগ্রামের রাজস্ব দপ্তরে রক্ষিত দলিলপত্র দুই সূত্রে প্রমাণিত যে, তারা আরাকানী।
দ্বিতীয় দ্বিমত- পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী বসতি বনাম ১৯০০ কনভেনশন।
ব্লগার লিখেছেন-
"পার্বত্যবাসীর সহজ-সরল জীবন যাত্রায় অন্য কেউ যেন ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই ব্রিটিশ সরকার তৈরি করেছিলেন CHT REGULATION ,1900 Act। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন হতে মুক্ত হয়ে দ্বিজাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে পাকিস্তান ও ভারত নামের দুটি আলাদা রাষ্ট্র গঠিত হয়। ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অর্থনৈতিকভাবে সম্পূর্ণরূপে পূর্ব পাকিস্তানের উপর নিরভরশীল’ এই যুক্তি দ্বার করিয়ে রেডক্লিফ কমিশন, চাকমা রাজা দ্বারা শাসিত স্বায়ত্ব শাসিত অঞ্চলকে যুক্ত করে পাকিস্তানের সাথে। আর সেই থেকে শুরু পার্বত্য এলাকায় বাঙ্গালীদের অবাধ অনুপ্রবেশ । ১৯৪৭ এর আগে যে পার্বত্য এলাকায় বাঙ্গালী বাস করত না বিষয়টা তেমন নয়, তবে সংখ্যায় তারা খুব ই অল্প ছিল। আর তারা সেখানে বসবাস করত চাকুরী অথবা ব্যবসার খাতিরে।"
এক্ষেত্রে টি এইচ লুইনের উদ্ধৃতিই তুলে ধরছি-
এইসব এথনিক জাতিগোষ্ঠী আরাকান হতে বিতাড়িত হবার পর পার্বত্য চট্টগ্রামেরর পাহাড়ের পাদদেশসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় গ্রহন করলে বার্মার আরাকান রাজা বৃটিশ গভর্নর টি, এইচ, লুইন কে একটি চিঠি দিয়ে তাদের অবস্থান সম্পর্কে অবগত করেন।
T.H Leween এর লিখিত গ্রন্থ " The Hilltracts of Chittagong and the dwellers There in" এর ২৯ পৃষ্ঠায় এই চিঠির উদ্ধৃতি রয়েছে, " Duncan, Chakma, and kieocopa, Lies, moring and other inhabitants of Aracan have now absconded abd taken refuge near the mountains within your border. " অর্থাৎ, দুমকান, চাকমা, কুকি, লুসাই, মুরং এবং অন্যান্য অনেক আরাকানী স্বদেশ ত্যাগ করে আপনার সিমান্তের পাহাড়গুলির আশেপাশে আশ্রয় নিয়েছে।
তাছাড়া, বৃটিশ সরককার কর্তৃক ১৯০০ সালে প্রণীত আইনেও চাকমা ও মগদের উপজাতি, (আদিবাসী পাহাড়ি নয়,) বরং 'অভিবাসী পাহাড়ি' বলে অভিহিত করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১/১৯০০ এর ৫২ ধারায় উল্লেখ আছে যে, " Immigration in to the Hilltract...Save as hereinafter provided no person other than a Chakma, Moghor a member of any hilltrives indigenous to the Chittagong Hilltracts, The Lushain hills, the Aracan Hilltracts or the state of Tripura shall enter or reside within the Chittagong Hilltracts. Unless he is inpossession of a permit granted by Deputy Commissioner at his discretion. অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রামে অভিবাসন... নিম্মোক্ত ব্যবস্হাবলী থাকা ব্যতিরেকে চাকমা, মগ অথবা এমন কোন উপজাতিয় সদস্য যে পার্বত্য চট্টগ্রামের লুসাই পাহাড়, আরাকান অঞ্চল অথবা 'ত্রিপুরা রাজ্যের আদিবাসী' বলে পরিচিত এমন লোক ব্যতিত অপর কোন পাহাড়ি পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ অথবা বসবাস করতে পারবেনা, যদি না জেলা প্রশাসকের প্রদত্ত কোন অনুমতি পত্র থাকে।
এর দ্ধারা ষ্পষ্টত যে, পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়িরা এদেশের আদিবাসী নয়, বরং তারা অভিবাসী, উদ্বাস্তু, ভিনদেশের বাসিন্দা মাত্র। আর ভূমিপুত্রদের থেকে উদবাস্তুদের রক্ষার জন্যই ঐ আইন। ফলে ঐতিহাসিক ভাবেই পার্বত্য অঞ্চলের ভূমিপুত্র ও উদবাস্তু নিয়ে বিতর্কের সমাধান হয়ে আছে।
কলোনিয়াল দখলদার ইংরেজরা এদেরকে বহিরাগত উদবাস্তু হিসেবেই ভূমিপুত্রদের অনুমোদনের বাইরে গিয়ে আধিপত্যের জোর খাটিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে আশ্রয় দেয়। ১৯০০ কনভেনশন ভূমিপুত্র মানুষদের থেকে উদবাস্তু বার্মিজদের রক্ষা কবচ। একই সাথে তাদেরকে অবৈধ ভাবে আশ্রয় দেয়ার কলোনিয়াল আইন। কক্সবাজারের বসতিহীন বন্যভূমি গুলো রোহিঙ্গারা দখল করছে। ঠিক তেমন করে এই বার্মিজ জাতিগোষ্ঠীও উদবাস্তু অবস্থায় এসে আমাদের পাহাড় দখল করেছিলো। আজ ইউএন যেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয় ক্ষুব্ধ বাঙ্গালীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে তাদের রক্ষা করছে, ঠিক একই ভাবে ইংরেজরা পার্বত্য চট্টগ্রামেও তা করেছিলো। আজ থেকে মাত্র ৮ বছর আগেও পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিরা নিজেদেরকে উপজাতি পরিচয় দিতো। সেভাবেই তারা শান্তি চুক্তিও করেছিলো। তখন আদিবাসী বলে কোন শব্দের অস্তিত্বই এদেশে ছিলোনা। সর্বপ্রথম এই শব্দের প্রচলন ঘটানোর সময় রাজা দেবাষীশ নিজেও এর প্রতিবাদ করেছিলেন। এখন জাতীসংঘের ধারা জানার পর সম্পূর্ণ অবৈধ এক উচ্চাকাংখা থেকে আজ তারা এই পরিচয় পেতে উঠে পড়ে লেগেছেন!
তৃতীয় দ্বিমত-
দ্বিমত না বলে, বলা যায় অসন্তুষ্টি। লেখক তার ব্লগে একপর্যায়ে শান্তি বাহিনীর নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন। একই ভাবে তাদের অব্যাহত সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি এখন পর্যন্ত কীরুপ বিভীষিকা তৈরি করে রেখেছে তারও খানিক স্বরুপ তুলে ধরেছেন। কিন্তু যেভাবে স্পেসিফিক উপজাতীয় গণহত্যার কথা তুলে ধরেছেন, তদ্রুপ উপজাতিদের নৃশংসতা ও নিরস্ত্রের ওপর চালানো দৃষ্টান্তহীন জংলি গণহত্যার কথাগুলো তুলে ধরলে পার্বত্য চট্টগ্রামের পুরো পরিস্থিতির নিরোপেক্ষ বর্ণনার দাবী পূরণেই সহায়ক হত। যদিও একটি মন্তব্যে তিনি এ নিয়ে তার অজানার কথাও অকপটে স্বীকার করেছেন।
চতূর্থ দ্বিমত-
স্থানীয় বাঙ্গালীদের সেটেলার বলা প্রসংগে লেখক পুরোপুরি উপজাতিদের অবস্থান থেকে সেটেলার বলার কারন ও এই শব্দের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অথচ বার্মা থেকে আগত ঐতিহাসিক বার্মিজ উপজাতিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালীরা 'বার্মিজ সেটেলার' হিসেবে উদ্ধৃত করে থাকেন এবং এই পরিচয়ের যথার্থ ইতিহাসও তিনি তুলে ধরতে পারতেন।
মূলত, বৃটিশ কলোনিয়ালদের দ্বারা আশ্রয়-প্রশ্রয় প্রাপ্ত বার্মিজ উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা গোটা বাংলাদেশকেই কলোনিয়াল বলে থাকে। অবাক করা ব্যাপার হল, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে এই ব্যাপারে আমাদের দেশীয় মিডিয়াতে স্বতঃপ্রণোদিত কোন তৎপরতাও নেই। এক সময়ের উদবাস্তু ও আশ্রয়প্রাপ্তরাই যখন ঐ অঞ্চলের ভূমিপুত্রদেরই উল্টো কলোনিয়াল দাবি করে, তাদেরকে সেটেলার বলে ডাকে, তখন এর জবাব আসা প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু তার বদলে আদিবাসী শব্দের সাথে সাথে ঐ অঞ্চলে সেটেলার শব্দেরও প্রসার ঘটানো হচ্ছে। আর তাকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার কাজও হচ্ছে!
পঞ্চম দ্বিমত- রাজা
ইংরেজরা যখন দলে দলে বার্মা ছড়ে আসা উদবাস্তুদের আশ্রয় দিয়েছিলো তখন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো ব্যবসায়িক। তারা চেয়েছিলো এদের মত পাহাড়বাহীদের দিয়ে পাহাড় আবাদ করতে। ফলে সমতল দখলের পাশাপাশি পাহড় থেকেও তারা খাজনা আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলো। স্বাভাবিক ভাবেই ভূমিপুত্র বাঙ্গালীদের তরফ থেকে আগত বিদেশী বিরোধী প্রতিরোধকে নস্যাৎ করতেই ১৯০০ কনভেনশন সৃজন। পাহাড়ের খাজনা আদায়ের জন্য তাদের ভেতরেই সার্কেল চিফ বানিয়ে দেয়া হয়েছিলো। যারা ছিলো ট্যাক্স কালেকটর (জমিদার নয়)। বহিরাগত হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামে উদবাস্তু উপজাতিদের মাঝে কাউকেই জমিদারী প্রদান করেনি দখলদার ইংরেজরা। একজন ট্যাক্স কালেকটর কি করে কিং বা রাজা হতে পারে? তাছাড়া খোদ চাকমা নামেই কোন জাতির অস্তিত্ব নেই। এই দলটি হল বার্মার থেট/থেক সম্প্রদায়ের উগ্র অংশ। মগ দস্যুদের মত জাতি হতে একটি আলাদা থাকা দস্যু শ্রেণীর গোষ্ঠী। দেখুন বার্মার এথনিক গ্রুপগুলোতে 'চাকমা' বলে কিছু নেই-
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_ethnic_groups_in_Myanmar
পরিশেষে লেখকের উদারতার জন্য ধন্যবাদ না দিলে সেটা ঠিক হবেনা। একটি মন্তব্যে লেখক স্বীকার করেছেন যে, উপজাতিদের তথ্য সংগ্রহের ব্যাপারে তিনি যতটা উদ্গ্রীব ছিলেন বাঙ্গালীদের ক্ষেত্রে ততটা ছিলেন না। আমার মনে হয়েছে, এই আত্মস্বীকৃতি টি পাঠকের মাঝে পার্বত্য বিষয়ে জানার উৎসাহকে ধরে রাখবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের গতি-প্রকৃতি ও ইতিহাস নিয়ে আরো নতুন নতুন তথ্য খুজে বের করতে চাইবেন তারা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে রয়েছে চরম বার্মিজ জাতীয়তাবাদে আবদ্ধ কিছু জাতীগোষ্ঠী। এরা পুরো অঞ্চলকেই বার্মিজ অধ্যুষিত রাখতে তীব্র সচেষ্ট, এর পেছনে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে ইংরেজ দ্বারা সুবধাপ্রাপ্ত স্থানীয় কালেকটার ও ক্ষমতাশীল শ্রেণীটি। আধুনিক কালে স্বাধীনচেতা বাঙ্গালীরা এদের সামন্তবাদী প্রথায় আনুগত্যের ক্ষেতে অনীহা দেখাবেন, বলেই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বার্মা ও ইন্ডিয়ান ৭ রাজ্য থেকে বার্মিজ সংস্কৃতির লোকজন সহজেই বসতিহীন অঞ্চলগুলোতে এসে বাড়ি বানাতে পারলেও, বাঙ্গালীরা প্রতীরোধের শিকার হন। অথচ একটি স্বার্বভৌম দেশে প্রতিটি নাগরিক সমান ও ন্যায্য অধিকার লাভ করেন। এইসব উদবাস্তু উপজাতিদেরকেও এই অঞ্চলের ইতিহাসে প্রথম বারের মত বাংলাদেশ সৃষ্টি পর নাগরিকত্ব দিয়ে বরন করা হয়েছে। কিন্তু ঐ অঞ্চলের কতিপয় ক্ষমতাবিলাসী ব্যাক্তির কারনে ঐ দিক থেকে নৈতিক সাড়া আসেনি।
৩০ লাখ বাঙ্গালীর রক্তে রঞ্জিত সমগ্র বাংলাদেশ হোক নিরাপদ বাংলাদেশী স্বার্বভৌমত্বের প্রতীক। কেটে যাক সকল বহিঃশক্তির আগ্রাসন। শান্তির দেশে মানবিক সাহায্য অব্যাহত থাকুক। সততা ও মানবিকতা গুলো দূর্বলতা বলে চিহ্নিত না হোক। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যেন পূর্ববর্তী প্রজন্মের দয়াকে ভুল হিসেবে নিন্দা করতে না পারে! তা নিশ্চিত করার দ্বায়িত্বও এই প্রজন্মের! সংগ্রাম ও সততার নিদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ বেঁচে থাকুক।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:০৯
পানিখোর বলেছেন: ওয়েলকাম প্রিয় ব্লগার।
২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪১
কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: একদম মনের কথাগুলো। গুছাতে পারিনি তাই বলতে পারিনি। প্লাস
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:১৩
পানিখোর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। সচেতন ব্যাক্তি মাত্রই রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩৩
উচ্ছল বলেছেন: সমতলে থাকি। পাহাড়ি অনেক ঘটনাই কানে আসে। স্থানীয় বাঙ্গালীদের ওরা বহিরাগত সেটেলার বলে। অথচ বাঙ্গালীরা অনেক আগে থেকে সেখানে বসবাস করে আসছে।
দেশের প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাহাড়িদের কোটা করে সুবিধা দেওয়া হয় অথচ নানান বাহানায় এটা সেটা বুঝ দিয়ে ওরা নিগৃহিত বোঝাতে চায়। ঢাকায় তো অনেক উপজাতি ছেলে মেয়েদের দেখি সকালবেলা কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে চলাচল করছে। ওদের তো ভিন্ন চোখে দেখিনা। আমার দেশের নাগরিক বাংলাদেশি হিসেবেই দেখি।
অথচ পার্বত্য এলাকায় ওরা নাকি জুম চাষের মিলের কারনে আলাদা রাষ্ট্র জুম্মল্যান্ড চায়। অদ্ভুত। বিশ্বের কোন দেশে চাষাবাদের ভিত্তিতে কোন জাতি রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে জানা নেই।
আমার মনে হয় বাংলাদেশকে খন্ডিত করার লক্ষ্যে পুরোটাই ইসরাইল-মার্কিন-ভারতের মদদে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের একটা চক্রান্ত চলছে সেখানে।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:২০
পানিখোর বলেছেন: একমত। তাদের দিকে হাত বাড়ানো আছে। এখন তারা বাড়িয়ে দিলেই হয়। নচেত একতরফা কোন সম্পর্ক সম্ভব হয় না। অযৌক্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদ দমন করাই যৌক্তিকতা।
৪| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:০৭
ching বলেছেন: আরাকান হতে বিতাড়িত সম্প্্রদায় হল রাখাইন।
ঙ্গালীরা অনেক আগে থেকে সেখানে বসবাস করে আসছে?
শান্তিচুত্তি বাস্তবায়ন করা হউক
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:২৬
পানিখোর বলেছেন: পার্বত্য চট্টগ্রামে মাইগ্রেটরদের ইতিহাস স্পষ্ট করেই উধৃত সহ বর্ণনা করা হয়েছে। তাই পুরাতন প্রশ্ন ঠিক হবেনা। নতুন কোন প্রশ্ন আছে কি?
শান্তিচুক্তির ব্যাপার পুরোটাই সরকারের বিষয়। অন্য পক্ষ পার্বত্য উপজাতীয় জনগণ। এদিক থেকে বাংলাদেশ যেমন দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যদিকে উপজাতীয় জনগনও। ইউপিডিএফ এর স্বশস্ত্র অবস্থা প্রথম দিন থেকেই শান্তিচুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য নস্যাৎ করে দেয়।
৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০১
বিজন রয় বলেছেন: অনেক যুক্তি দেখিয়েছেন।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:২৬
পানিখোর বলেছেন: হা হা হা । এটা কি কমেন্ট করলেন দাদা? ধন্যবাদ।
৬| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:২২
বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: আগে পড়ে গিয়েছিলাম। আপনার পোস্টের ব্যাপারেও কিছু দ্বিমত আছে। সময় নিয়ে ফেরত আসবো।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:২৭
পানিখোর বলেছেন: কর্ডিয়ালি ওয়েলকাম ডিয়ার ব্লগার!
৭| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৫১
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: বাংলাদেশে আদিবাসী কারা-এই নিয়েও একটি বিতর্ক ইদানীং চালু হয়েছে। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর যে অংশটি নিজেদের হঠাৎ আদিবাসী বলে দাবি করতে শুরু করছে তারা কিন্তু কয়েক বছর আগেও নিজেদের এ পরিচয়ে পরিচিত করাতে চায়নি। তারা দীর্ঘ দিন ধরে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা অথবা নিজস্ব গোত্র পরিচয়েই পরিচিত হবার দাবি করে আসছিল। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে জাতিসংঘ সদর দপ্তর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ৬১তম অধিবেশনে The United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples অর্থাৎ ‘আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্র’ জারি হওয়ার পর হঠাৎ করে তারা নিজেদের আদিবাসী বলে দাবি করতে শুরু করেন। এরকম হঠাৎ করে আদিবাসী হতে চাওয়ার নজির বিশ্বে আর কোথাও নেই। ইস্যুটি পুরাতন না হলেও তা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের উপর প্রভাব ফেলেছে। যে বিষয়টি সবচেয়ে ভয়ংকর এবং আত্মঘাতী তা হচ্ছে আমাদের মিডিয়া ও সুশীল সমাজের একটি অংশের জোরাল সমর্থন ও আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে তারা ইতোমধ্যে বিষয়টিকে মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী সরকার তাদের দাবির কাছে কিছুটা নমনীয় হয়ে বাংলাদেশের সংবিধানে এ সকল জাতিসত্ত্বাকে ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আর এই সুযোগে ‘তফসিলী সম্প্রদায়’ভুক্ত জনগোষ্ঠীও (যারা উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হওয়ার বৈশিষ্ট্যধারী নয়) ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে গেছে। অথচ এ সকল জনগোষ্ঠীর মূল অংশ ভারতে এখনো সাংবিধানিকভাবে ‘তফসিলী সম্প্রদায়’ (Schedule Cast) হিসেবে চিহ্নিত, পরিচিত ও সুবিধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:০৮
পানিখোর বলেছেন: জাতি হিসেবে আমাদের সরলতা অতিরিক্ত মাত্রায় বিদ্যমান। এটা এক প্রকার অপরাধ বটে। নিজেদের পরবর্তী প্রজন্মকে বঞ্চিত রাখা অপরাধই তো!
আদিবাসী দাবি করতে গিয়ে তারা অদ্ভুত একটা বিষয়ের অবতারনা করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় কেটে, বন ধ্বংস করে এরা এ অঞ্চলের ভূমিতে বসবাসের যায়গা তৈরি করার কারনে উদবাস্তু পরিচয় ঝেড়ে আগে এসে বসবাস করার যুক্তিতে 'আঞ্চলিক আদিবাসী' দাবী করে! যেহেতু বাংলা ও এইসব অঞ্চলে বাঙ্গালীদের বসতি গড়ার স্মরনাতীত কালের ইতিহাস আছে, সেহেতু তারা নিজেদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক আদিবাসী দাবী করার কৌশল গ্রহন করেছে। অথচ এদের বসতি নির্মান ও উদবাস্তু হওয়া পুরোটাই ছিলো অবৈধ কলোনিয়ালদের অধিনে। তারা চলে যাবার পরও মানবিক দিক বিবেচনায় বাঙ্গালিরা এদের তাড়িয়ে দেয়নি!
অন্যদিকে চিরো অসভ্যতার অঞ্চল বার্মায় আজও জাতিগত সহিংসতা চলছে। সেই সহিংসতায় বার্মিজ রোহিঙ্গারাও কালের উদবাস্তু। ভার পড়েছে বাংলাদেশে। তারাও কক্সকাজার, উখিয়া, রামুতে বনভূমি সাফ করে যায়গা দখল করে বাড়ি বানাচ্ছে। কথা হল বন ভূমি দেশের অবিচ্ছেদ্য ও অতিগুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেই বনভূমি কিংবা প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাহাড়কে ধ্বংস করে উদবাস্তদের গৃহ নির্মানকে মানবিক দিক থেকে দেখার ঠিক ২-৩ শ বছর পর উক্ত স্থানে ভূমি পূত্রদের আগে এসে বসতি গড়ার কথা বলে ও ভূমি পুত্রদের থেকে আলাদা সাংস্কৃতিক বোইশিষ্ট্যের সুযোগ নিয়ে নিদেরে আদিবাসী দাবি করে বিচ্ছিন্নতাবাদ প্রচলন ঘটানোর মত অমানবিকতাকে কোন সংজ্ঞায় ফেলা হবে?
এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম দয়া বিমুখ হয়ে গড়ে উঠতে বাধ্য হবে। দয়ার একটি নোংরা প্রতিক্রিয়া তাদের মনে স্থায়ী হবে। চিরন্তন দয়ালু বৈশিষ্ট্য ধরে রাখা ও মানবিকতার সম্মান জানানোর জন্যই এইসব বার্মীজিয় জোচ্চুরির যথার্থ গবেষণা, সচেতনতা ও পর্যালোচনা হওয়া উচিত।
৮| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:০০
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: আদিবাসীর সংজ্ঞা ও জাতিসংঘ কনভেনশন/ঘোষণা :
আদিবাসী বিতর্কের সমাধানে প্রথমেই আমাদের আদিবাসীর সংজ্ঞা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। আদিবাসী বিষয়ে দুই ধরনের সংজ্ঞা পাওয়া যায়। একটি আভিধানিক সংজ্ঞা এবং অন্যটি জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত সংজ্ঞা। প্রথমেই দেখা যাক আভিধানিক সংজ্ঞায় আদিবাসী মানে কী? আদিবাসী শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Indigenous People. অনেকে আবার আদিবাসী শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে Aborigine শব্দটি ব্যবহার করেন। যাতে প্রকৃতপক্ষে সার্বজনীনভাবে আদিবাসী বোঝায় না। Aborigine বলতে সুনির্দিষ্টভাবে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের বোঝায়। প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ মর্গানের সংজ্ঞানুযায়ী ‘আদিবাসী হচ্ছে কোনো স্থানে স্মরণাতীতকাল থেকে বসবাসকারী আদিমতম জনগোষ্ঠী যাদের উৎপত্তি, ছড়িয়ে পড়া এবং বসতি স্থাপন সম্পর্কে বিশেষ কোনো ইতিহাস জানা নেই’।
এখন দেখা যাক জাতিসংঘ উপজাতি ও আদিবাসীর সংজ্ঞা কীভাবে নির্ধারণ করেছে। উপজাতি ও আদিবাসী বিষয়ে জাতিসংঘ ও এর অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে এ পর্যন্ত প্রধানত তিনটি চার্টারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
(১) জাতিসংঘের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ILO) ১৯৫৭ সালের ৫ জুন অনুষ্ঠিত ৪০তম অধিবেশনে প্রদত্ত Indigenous and Tribal Populations Convention -1957 (No.107);
(২) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ১৯৮৯ সালের ৭ জুন অনুষ্ঠিত ৭৬তম অধিবেশনে প্রদত্ত Indigenous and Tribal Populations Convention -1989 (No.169) এবং
(৩) ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ৬১তম অধিবেশনে The United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples বা ‘আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্র’।
উপর্যুক্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রথম চার্টার দুটি (No.107 Ges No.169) বিশেষভাবে লক্ষণীয় যাতে আদিবাসী ও উপজাতি বিষয়ক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সংযোজন করা হয়েছে। এই কনভেনশন দুটিতে উপজাতি ও আদিবাসীদের জন্য আলাদা সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। কনভেনশনে পাস হওয়া ধারাগুলো একই সাথে আদিবাসী ও উপজাতি নির্ধারণ এবং তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে; শুধু আদিবাসীদের নয়। অথচ বাংলাদেশে এই চার্টারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একান্তভাবে আদিবাসীদের হিসেবে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে।
অন্যদিকে ২০০৭ সালের The United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples-শীর্ষক ঘোষণাপত্রটি শুধুমাত্র আদিবাসীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে। এই ঘোষণাপত্রটিতে উপজাতিদের বিষয়ে কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয়নি; এমনকি আদিবাসীদের সংজ্ঞাও নির্ধারণ করা হয়নি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রথম চার্টার দুটি ১০৭ ও ১৬৯ মতে পাশের ছকে উল্লেখিত দুটি সংজ্ঞা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক উপজাতি ও আদিবাসী সংজ্ঞার মূল পার্থক্য হচ্ছে নির্দিষ্ট রাষ্ট্রে বংশানুক্রমে বসবাস বা অধিকৃত হওয়ার বা উপনিবেশ সৃষ্টির পূর্ব থেকে বসবাস করা। বাকি শর্তগুলো মোটামুটি একই রকম। আইএলওর এই সংজ্ঞাটি যদি বাংলাদেশের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণের ক্ষেত্রে বিচার করা হয় তাহলে পরিষ্কার বোঝা যায় এরা আদিবাসী নয়; উপজাতি। কিন্তু বাংলাদেশের মিডিয়া ও সুশীল সমাজের কিছু ব্যক্তিবর্গ জাতিসংঘ কনভেনশনের উপস্থাপিত সংজ্ঞাটির Tribal বা ‘উপজাতি’ অংশটি সম্পূর্ণ চেপে গিয়ে শুধু Indigenous বা ‘আদিবাসী’র সংজ্ঞাটি উপস্থাপন করেন।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:২৩
পানিখোর বলেছেন: আপনার কন্ট্রিবিউশনে প্রীত হলাম
৯| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:০৬
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: মানবতাবোধে উদ্বেল (!) কারও কাছে মনে হতে পারে, ডিকশনারির সংজ্ঞায় কি আছে কি নাই সেটা খোঁজার দরকার কি, এরা যখন এত করে চাইছে আদিবাসী নামে পরিচিত হতে, ডাকলেই হয়! আসলে ব্যাপারটা এত সোজাসাপ্টা নয়, এর পেছনে রয়েছে ভয়ানক ষড়যন্ত্রে নীলনক্শা! আদিবাসী বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষনার ক্ষতিকর ধারাগুলো পড়লে আৎকে উঠার মত, সংক্ষেপে বিধিগুলো পর্যালোচনা করা হল:
** আর্টিক্যাল ২৫-২৯, (পার্ট ৬ – ভূমি ও সম্পদ): ভূমি ও সম্পদ। এই ধারায় ঐতিহ্যগত ভূমি ও সম্পদের মালিকানা, ব্যবহার, উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের অধিকার আদিবাসীদের। এর ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি ও সম্পদের উপর সরকারের কোন অধিকার থাকবে না। অর্থাৎ, উপজাতিরা চাইলেই বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র সরিয়ে নেয়ার জন্য সরকারকে বাধ্য করতে পারে। আর বাঙালিদের কোন ভূমির কোন অধিকার তারা দেবে না, এটাতো তারা কখনও লুকোছাপা করে বলেনি, প্রতিদিন জোর গলায় বলে যাচ্ছে। এমনকি, কারা আদি বাঙালি ও কারা সেটেলার বাঙালি – সেই সার্টিফিকেটও দেবে উপজাতি রাজারা!
** আর্টিক্যাল ৩০, (পার্ট ৭ – ভূমি ও সম্পদ): সামরিক কার্যক্রম। আদিবাসী জনগণের অবাধ ও নিশ্চিত পূর্ব-সম্মতি ব্যতিত আদিবাসীদের ভূমিতে কোন সামরিক কার্যক্রম চালানো যাবে না, যদি না সমাজের সকলের সার্বিক মঙ্গলের জন্য আদিবাসীদের জনপ্রতিনিধির পরামর্শ মোতাবেক হয়। অর্থাৎ, স্পষ্টতই সেনাবাহিনী মোতায়েনের ক্ষমতা উপজাতি নেতৃবৃন্দের কাছে চলে যাবে যারা যুগ যুগ ধরে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। সেনাবাহিনীকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তারা যে তথাকথিত স্বাধীন জুম্মল্যান্ড ঘোষনায় মুহূর্ত মাত্র অপচয় করবে না, বলাই বাহুল্য।
** আর্টিক্যাল ৩৩, (পার্ট ৭ – স্বায়ত্ব শাসন এবং আদিবাসী আইন): পরিচয়, সদস্যপদ ও নাগরিকত্ব। তাদের অধিকার থাকবে যে তাদের রীতিনীতি ও ঐতিহ্য অনুযায়ী কারা তাদের সদস্য। অর্থাৎ, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের ভোটাধিকারসহ নাগরিক অধিকার চলে যাবে। কারণ তারা কখনও বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দা হিসাবে মেনে নেয়নি।
** পার্ট ৮ - বাস্তবায়ন। আদিবাসীদের অধিকার থাকবে ধারাগুলো বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা নেয়ার। অর্থাৎ, পার্বত্য উপজাতিরা জাতিসংঘ বা কোন ক্ষমতাধর রাষ্ট্রকে বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি ব্যতিত ডেকে এনে গণভোট আয়োজন করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ডের জন্য আর কোন বাধা থাকবে না।
কোন ন্যূনতম কান্ডজ্ঞান ও দেশপ্রেমসম্পন্ন কেউ এইসব ধারার ক্ষতির পরিমাণ কল্পনা করতে সমর্থ হবেন। উপজাতিরা সত্যিকারের আদিবাসী হলেও কোন ন্যূনতম বোধজ্ঞানসম্পন্ন সরকার দশমিক ০৫ শতাংশের জনগোষ্ঠির জন্য দেশের এক-দশমাংশ ভূমি বিলিয়ে দেবে না, এমন ক্ষেত্রে উপজাতিদের আদিবাসী পরিচয়ের মিথ্যা দাবি মেনে এই সর্বনাশ ডেকে আনার কোন কারণ থাকতে পারে না।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:১৬
পানিখোর বলেছেন: গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট গুলো আনার জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার!
১০| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:১৫
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: চাকমাদের নিজস্ব ইতিহাস থেকে জানি, চাকমারা অজ্ঞাত চম্পকনগরে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বার্মা হয়ে সুবে বাংলার অধীন তৎকালিন চট্টগ্রামের পাহাড়ি অংশে তথা বর্তমানের পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে বসতি গড়েছিল। মার্মারাও বার্মার রাখাইন রাজ্য থেকে এসে ঠাঁই গেড়েছে, ইতিহাসে তাদের পরিচয় কুখ্যাত ‘মগ’ হিসাবে (অগ্নি সারথি ভিন্নমত দিয়েছেন)। বর্তমানের পার্বত্য চট্টগ্রাম তৎকালে চট্টগ্রামের অংশ হিসাবে বাঙালিদেরই ছিল, সুবে বাংলার অধীনেই ছিল। বাঙালিরা তাদের পাহাড়ি জমি পতিত ফেলে রাখায় উপজাতিরা এসে বসতি গড়তে পেরেছিল সত্যি, কিন্তু তাতে পাহাড়ের উপর বাঙালির ঐতিহাসিক অধিকার রদ হয়ে যায় না, বরং স্বাধীন বাংলাদেশের অংশ হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপরে তার রয়েছে স্বাভাবিক নাগরিক সম-অধিকার।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:২২
পানিখোর বলেছেন: সেদিন ভুটান রাজার চমৎকার একটি স্পিচ শুনছিলাম। তিনি তার পোষাক দেখিয়ে গর্ব করছিলেন। তিনি গর্বের সাথে উচ্চারণ করছিলেন যে তাদের দেশ কার্বন নেগেটিভ দেশ। (যদিও বলা হয় কার্বন নিউট্রাল।) তিনি তার পোশাকের বিশাল পকেট থেকে দেশের সংবিধান বের করে বলছিলেন তাদের সংবিধানের ধারা অনুযায়ী সবসময় ভুটানে ৬০ ভাগ বনভূমি থাকবে। আর বর্তমানে আছে ৭০ ভাগ!
এটা থেকে স্পষ্ট হয়, বনভূমি, পার্বত্য বনভূমি ফেলনা বিষয় নয়। এমন কোন বিষয় নয় যে, কোন দেশের বনভূমিতে লোক বাস করে না বলে সেটা দখলে নিয়ে ২-৩ শত বছর পর সেখানকার ভূমি পুত্র দাবী করার সুযোগ থাকে।
বরং যদি কোন দেশ উদ্বাস্তুদের এভাবে গ্রহণ করে ও বণভূমি পরিস্কার করে বসত গড়ার অনুমোদন দেয় তাহলে তা আত্মঘাতী দয়া হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। যে নিজে আহত হয়ে অন্যকে বাচায় তার প্রতি অবিচারের মনভাবকেই 'জিঘাংসা' বলা হয়। হিংসা ও জিঘাংসার পার্থক্য বুঝতে শিশুকালে আমার অনেক সময় লেগেছে। আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম এর এক দশমাংশ বাংলাদেশই আমাকে জিঘাংসা দেখিয়ে দেয়!!
১১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩২
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: শান্তিচুক্তির পরপরই সরকারের আহ্বানে পাহাড়ে ইউএনডিপি হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করে। সব দাতা সংস্থার ফান্ড ইউএনডিপি হয়ে যায় এনজিওগুলোতে, ফান্ড পেয়ে ফুলেফেঁপে উঠেছে ইউএনডিপির কার্যক্রম। ২০০৩ এ শুরু হয়ে ২০০৯ সালে যা শেষ হবার কথা তা চলছে এই ২০১৫ সালেও। পার্বত্যাঞ্চলে যত দেশি-বিদেশি এনজিও আছে তার প্রায় সব কয়টি ইউএনডিপি থেকে ফান্ড পেয়ে থাকে ইউএনডিপির উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য। এই ফান্ডের ৯৭ শতাংশ উপজাতিদের সমৃদ্ধি ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে; বাঙালিদের উন্নয়ন ও অস্তিত্ব বলতে গেলে অস্বীকার করা হয়েছে। এই ইউএনডিপির বাংলাদেশি চাকুরেরা অধিকাংশ উপজাতি, নির্দিষ্ট করে বললে চাকমা। তারা সর্বতোভাবে বাঙালিদের জন্য যে কোন প্রজেক্টের বিরোধিতা করে, কাগজেকলমে হলে মাঠে বঞ্চিত করে।
এখানে উদ্দেশ্য পরিস্কার, উপজাতিদের নিয়ে পশ্চিমাদের এজেন্ডা আছে... সে এজেন্ডায় সুলতানা কামাল, ড. জাফর ইকবাল প্রভৃতিদের দ্বারা কথিত স্বাধীন জুম্মাল্যান্ডের জন্য কাজ করিয়ে নেয় ইউরোপীয় এনজিও 'সিএইচটি কমিশন'। তাদের পক্ষে কাজ করে স্টাবলিশমেন্ট ও আর্মিবিদ্বেষী বামপন্থী রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়া। তাদের আর্মিবিদ্বেষের মাত্রা জনৈকের মতে, অন্য দেশের বুদ্ধিজীবীদের কাছে শত্রুর জন্য ঘৃনার চেয়ে অধিক।
বিদেশি এনজিওগুলো, বিশেষত ইউরোপীয় এনজিওর একটা অন্যতম অঘোষিত উদ্দেশ্য হল পরোক্ষে খ্রিস্টধর্ম প্রচার ও প্রসার – পার্বত্য উপজাতিদের মাঝে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হওয়ার হার অত্যন্ত উদ্বেগজনক, উপজাতিদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কাঠামো ও বন্ধন দ্রুত ক্ষয়ে যাচ্ছে। বান্দরবানে খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর হার প্রায় ৩৫ শতাংশ, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতেও খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিতকরণ ক্রমশ বাড়ছে। ধর্মান্তরিতকরণে তাদের লক্ষ্য থাকে উপজাতিরা, বাঙালির খ্রিস্টান হওয়ার ঘটনা সাধারণত ঘটে না, ফলে এনজিওগুলোর উন্নয়ন পরিকল্পনার লক্ষ্য তারাই। অবশ্য ইদানিং রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের দুর্দশাকে পুঁজি করে নানান প্রলোভনে খ্রিস্টান বানানো শুরু হয়েছে। সাদা চামড়ার খ্রিস্টান ইউএনডিপি-এর কর্তারা তাই দাতাদের অলিখিত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার প্রয়াস পাবেন, বলাই বাহুল্য। পশ্চিমা মননে লালিত মুসলমানবিরোধী ধ্যানধারণা যে নানান উছিলায় এমন একপাক্ষিক উন্নয়নের পক্ষে কাজ করে যাবে, বিচিত্র কি! অবিশ্বাস্য শুনাবে, উপজাতিদের সকল দাবি, সকল প্রচারণা, সকল অভিযোগের সাথে ইউএনডিপি ও এইসব এনজিওগুলো সম্পূর্ণ একমত। বাংলাদেশকে আইএলও সনদ ১৬৯ ও জাতিসংঘের আদিবাসী ঘোষনা স্বাক্ষর করানোর ব্যাপক দায় তাদের।
ষড়ষন্ত্র বুঝতে হবে...
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২
পানিখোর বলেছেন: একমত
১২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:১৭
বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: একটু পেছন থেকে শুরু করি, প্রিলিউড দরকার কথা বলতে গেলে। এই কথাগুলো অন্তর্জালে থেকে যাবে...
কাপ্তাই লেকে গিয়েছেন কখনো? কত সুন্দর লাগে দেখতে, না? আপনি কি জানেন পার্বত্য অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বসতি ছিল এখানে? ছিল চাকমা কিংবা মারমা রাজা কিংবা সার্কেল চীফ যাই বলেন না কেন, তাদের সাদাসিদা প্রাসাদ কিংবা পাহাড়িরা যাকে রাজবাড়ি বলে তাও ছিল সেখানে। সবই এখন লেকের তলে। কাপ্তাই জলবিদ্যুত কেন্দ্রের কথা তো জানেন, এই জলবিদ্যুত কেন্দ্রের কারণে গড়ে তোলা হয় কাপ্তাই লেক, বাধ দিয়ে। কাপ্তাই লেক একটি কৃত্তিম হ্রদ। এই লেকের জলের সাথে মিশে আছে, জলের নীচে চাপা পড়ে গেছে হাজার মানুষের অশ্রু, করুণ স্মৃতি। মূল অসন্তোষের শুরু সেখান থেকেই, সেই পাকিস্তান আমলে।
আরও আগে দেশভাগের কাহিনীতে যাই,
বাংলায় সবচেয়ে বড় ইস্যুগুলোর মধ্যে ছিলো পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল কার অধীনে যাবে এটা এবং মালদা, মুর্শিদাবাদ, খুলনা এবং আসামের সিলেট জেলার করিমগঞ্জ সাব-ডিভিশন কোথায় যাবে সেটা নিয়ে কিছুটা সংশয়। প্রধানত পশ্চিমবঙ্গ চলে যায় ভারতের অধীনে আর পূর্ববঙ্গ চলে যায় পাকিস্তানের অধীনে। ১৯৫৫ সালে সংবিধান সংশোধনের সময় ‘ইস্ট বেঙ্গল’ বা ‘পূর্ব বাংলার’ নাম পরিবর্তন করে ‘ইস্ট পাকিস্তান’ বা ‘পূর্ব পাকিস্তান’ রাখা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ৯৭ ভাগ লোক ছিলো অমুসলিম (বেশিরভাগই বৌদ্ধ), কিন্তু এই অঞ্চলকে দেয়া হলো পাকিস্তানের ভাগে। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনতা সংঘের মাধ্যমে আপত্তিপত্র দেয়া হলেও সেটা আমলেই নেয়া হয়নি। ভারতীয়রা মনে করেছিলো যে অমুসলিম অঞ্চল হিসেবে এটা ভারতের অংশই হবে। তবে এর পেছনে কাজ করে বেশ কিছু কারন। প্রথমত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতের সাথে থাকলে সেটা ভারতের পক্ষে যোগাযোগের জন্য দুর্গম হতো এবং উন্নতি বাধাগ্রস্থ হতো। পাকিস্তানের সাথে থাকলেই বরং সুবিধা বেশি পাবে সেই হিসেবে এটাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৫ তারিখেও কেউ জানতেন না এটা কার অধীনে গেছে, ১৭ তারিখ অনেকটা বিস্ময়ের জন্ম দিয়েই এটা পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। এর পর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনতা সংঘ সেই সিধান্ত না মেনে ভারতের পতাকা উড়িয়ে দেয়, তবে পাকিস্তান সরকার সেনাবাহিনী প্রেরন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে।
কলকাতা পড়লো ভারতের ভাগে। আরো সমস্যা ছিলো খুলনা, মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং সিলেটের ভাগাভাগি নিয়ে। খুলনায় কিছুটা হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠতা (৫২% এর কিছু বেশি) থাকলেও তা পাকিস্তানের অধীনে দেয়া হলো। আবার মুর্শিদাবাদ এবং মালদা জেলা মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ভারতের অংশে দেয়া হলো। এর পেছনে কারন ছিলো খুলনাকে পাকিস্তানে দেয়ার বিনিময় করবার মত। খুলনাকে ভারতের ভাগে দিলে সেটা চারদিক দিয়ে পাকিস্তানে আবদ্ধ থাকতো যেটা সে জেলার মানুষকে বন্দী করে ফেলে আরেক সমস্যার তৈরী করতো। তবে এর পুরস্কার হিসেবেই অনেকটা মুর্শিদাবাদ আর মালদাকে ভারতের ভাগে দেয়া হলো, তবে মালদার অংশ কিংবা উপজেলা নবাবগঞ্জ কে পাকিস্তানের ভাগে দেয়া হয় যা চাপাইনবাবগঞ্জ নামে এখন পরিচিত। আবার কলকাতাকে ভারতের অংশ করবার বিনিময়ে পুরস্কার হিসেবেই পার্ব্যত্য চট্টগ্রামকে জোরপুর্বক পাকিস্তানের সাথে জুড়ে দেয়া হয়। আরেকটা সমস্যা ছিলো সিলেটের ভাগাভাগি। সিলেট কার ভাগে যাবে এটা ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। ৬০-৪০ অনুপাতের ব্যবধানে সিলেট ভোটের মাধ্যমে পাকিস্তানে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয়, তবে সমতা রক্ষার জন্য সিলেটের একটা অংশ কিংবা সাব-ডিভিশন করিমগঞ্জকে ভারতের অংশ করা হয়। করিমগঞ্জ এখনো একটি মুসলিম প্রধান জেলা এবং ভারতের আসাম রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত।
১৯৭২ সালে জেএসএস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও তঃকালীন সংসদ সদস্য (বলা যায় একমাত্র বিরোধীদলীয় সদস্য) এম এন লারমা যখন সংসদে দাঁড়িয়ে “উপজাতি” হিসেবে সংবিধানে স্বীকৃতি চাইলেন, তখন বাঙালি নেতারা এম.এন লারমাকে তিরস্কার করেছিলেন। তারা “উপজাতি” মানতে রাজী ছিলেন না। শেখ সাহেব ও তার দলের নেতারা (বর্তমান সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীও ছিলেন) এম এন লারমাকে বললেন, “তোরা উপজাতি না। তোরা বাঙালি জাতির অংশ।মানে সবাই “বাঙালি”। এম.এন লারমা বোঝাতে চাইলেন, “আমরা বাঙালি নয়, বাপ দাদা চৌদ্দপুরুষ কেউ বলেনি আমরা বাঙালি”।তিনি জোর দিয়ে বললেন, “আমরা বাংলাদেশী”। একথা বলাতে তৎকালীন আওয়ামীলীগের নেতারা এম.এন লারমাকে সংসদে তুলো ধুনো করেছিলেন। এক এমপি তো (বর্তমান পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী) রীতিমত অসৌজন্যমূলকভাষায় সংসদে এম.এন লারমাকে হুমকি দিয়েছিলেন।
এম. এন লারমার সেই “উপজাতি” হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবী তৎকালীন নেতারা মানেননি। শেখ সাহেব রাঙামাটির এক সভায় বলেছিলেন, “আজ থেকে তোমাদের উপজাতি থেকে [বাঙালী] জাতিতে প্রমোশন দেয়া হল”। সংবিধানে এরকম অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করে তা পুরোপুরি পাকাপোক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়।
এরপর এলো ১৯৮০ সন, এর বছরখানেক আগে থেকে জেনারেল জিয়াউর রহমান একটা অশুভ প্রকল্প শুরু করেছিলেন, সমতল ভূমি থেকে গণহারে হাজার হাজার দুস্থ পরিবারকে জমি দেওয়া হবে আর নগদ টাকা দেওয়া হবে এই লোভ দেখিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বসিয়ে দেওয়া। মনে রাখতে হবে যে এটা কোন সাধারণ প্রক্রিয়ার নিজ দেশে এক জেলা থেকে গিয়ে আরেক জেলায় মানুষের বসবাস স্থাপন না। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে একদল ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষকে জোর করে পাহাড়ি এলাকায় স্থাপন করে দিচ্ছে একটা সুদূরপ্রসারী অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে। উদ্দেশ্য হচ্ছে ঐ এলাকার ডেমোগ্রাফিক ক্যারেক্টার বদলে দেওয়া, আদিবাসী কিংবা উপজাতি যাই বলেন না কেন তাদেরকে নিজ গ্রামে সংখ্যালঘু বানিয়ে দেওয়া।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জাতিগত আত্মপরিচয় ও অধিকার রক্ষার যে রাজনৈতিক আন্দোলনটা চলছিল মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে সেই আন্দোলনটা সেই সময়ে সশস্ত্র রূপ পরিগ্রহন করে। এছাড়া সম্ববত পাহাড়িদের সেসময় আর কোন উপায়ও ছিল না। কারন রাজনৈতিক আন্দোলনের পথ মোটামুটি ১৯৭৫এর আগস্টের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মানবেন্দ্র নায়ার্যন লারমা সহ জনসংহতি সমিতির নেতৃত্ব তখন সীমানা পেরিয়ে ওপারে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। শান্তি বাহিনী গঠিত হয়েছিল আগেই, ১৯৭৯-১৯৮০ সনে শান্তি বাহিনী এখানে সেখানে গেরিলা হামলা শুরু করে দিয়েছে।
আবার ফেরত আসবো, আলোচনা শুরুর আগে কিছু ভুমিকার দরকার ছিলো তাই এতো কথা তুলে দিলাম...
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৪
পানিখোর বলেছেন: ১- কাপ্তাই লেক
এখানে যেহেতু উদবাস্ত নিয়ে কথা হয়েছে। আপনি নিজেও জানেন বার্মা থেকে আসা ভিনদেশী উদবাস্তর জন্য রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন বন্ধ থাকবে না। পাকিস্তান আমলে তারা নাগরিক ছিলোনা। যে কোন বৈদেশিক সরকার মানবিক ভাবে সাময়িক আশ্রয় দিতে পারে, চিরোদিন নয়। তাছাড়া বাংলাদেশের দায় কোথায়?
২- ভাগের প্রশ্ন
ভাগাভাগি হয়েছে বিভিন্ন বিবেচনাকে ঘিরে। স্বীদ্ধান্ত সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কংগ্রেস-মুসলিম লীগের মাঝে হাতাহাতিও হয়েছে। এরপর পার্বত্যকে পাকিস্তানের সাথে আনার বিনিময়ে পাঞ্জাবের একটা অংশ ভারতকে দেয়া হয়। বিনিময়ের বিষয় শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামেই স্বীমাবদ্ধ ছিলোনা অন্যান্য এলাকাতেও ছিলো, তা আপনিও উল্লেখ করেছেন। অন্যান্য এলাকার সাথে পার্বত্যর পার্থক্য হল, অন্যান্য এলাকা সংখ্যাগুরু ধর্ম ভিত্তিক হলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম একেবারেই নিরাপত্তা ইস্যুতে পাকিস্তানের সাথে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে আদায় করা হয়েছে। কারন একই সাথে সভেন সিস্টার্সের নিরাপত্তা ইস্যুতেও ভারতের পার্বত্য চাহিদা ছিলো। অন্যদিকে বোমাং রাজার ইস্যু আপনি স্বযত্নের সাথে এড়িয়ে গেছেন। এটাই হল জ্ঞানপাপ। বোমাং রাজা মিয়ানমারের পতাকা উত্তলন করেন! বোল্ড করে পার্বত্যের ক্ষেত্রে "জোর পূর্বক" শব্দ আনলেন। অথচ আরো এলাকা একই ভাবে ভাগাভাগি করার বর্ননা দিলেন, সেখানে এই বোল্ডনেস ও জোর করার দিকটা ছিলোনা!
৩- জাতিসত্বা
বহিরাগত সম্প্রদায়ের ব্যাপারে যে 'নিচুতা' দেখানো হয়েছে তাতে আমারও আপত্তি আছে। 'নিচুতা' দেখানোর আগে তাদের জানা উচিৎ ছিলো যে এরা নাগরিকত্ব পাবার অধিকারী কিনা? কিংবা সেটা পাবার যোগ্যতা এদের আছে কিনা? নাগরিকত্ব দেয়ার পর কোন কিছু চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়।
আবার বিরোধী দলের ওপর রাজনৈতিক নোংরামী ভারতীয় উপমহাদেশে একমাত্র বাংলাদেশেই ছিলো, ব্যাপারটা তেমন নয়। এখনও সে নোংরামীর চুড়ান্ত রয়ে গেছে! তাই নোংরামী দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদের বিবেচনা হয়না। ইতিহাস সবচেয়ে বড় ফ্যাক্ট। তারা চাকমাও নয়, তারা থেট সম্প্রদায়। তারা ঐতিহ্যগত বৌদ্ধও নয়। কালিন্দিনী রায় থেকে বৌদ্ধ। এর আগে প্রকৃতি পুজারী ও মুসলিম ধর্ম সহ নানা ধর্মের মাধ্যমে এসেছে। এবসোলিউট স্ট্যান্ড কখনোই ছিলোনা। জাতিগত পরিচয় কিংবা ধর্ম সকল মৌলিক ক্ষেত্রেই।
৪- "এরপর এলো ১৯৮০ সন, এর বছরখানেক আগে থেকে জেনারেল জিয়াউর রহমান একটা অশুভ প্রকল্প..."
রাষ্ট্রের জন্য যা শুভ আপনার জন্য তাই 'অশুভ'? শান্তিবাহিনীর বিচ্ছিনতাবাদী আন্দোলন, ত্রিদিবের রাজাকারী, আজীবনের তরে ঐ কাপ্তাই নেতাদেরই প্রজা হওয়া... এই ধারাবাহিকতার কিছুই তো আপনার কাছে অশুভ হলনা!?
কাউকে সংখ্যালঘু বানানোর উদ্দেশ্য থাকলে তাকে নাগরিকত্ব দেয়া হতনা। বরং তাদের নিয়ে সুন্দর দেশ গঠন উদ্দেশ্য ছিলো বলেই তাদেরকে সমমর্যাদা দেয়া হল। অন্যদিকে তাদের সামন্তবাদী দের ট্যাপের জন্য যখন রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা হুমকিগ্রস্থ হচ্ছিলো তখন একই সাথে খাস জমিতে ভূমীহীনদের ভূমি লাভের নাগরিক অধিকার প্রদান, বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অনুগত্য পরায়ন নাগরিকদের নিয়োগ করে রাষ্ট্র রক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক দুটি দিক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বার্মিজ সংস্কৃতি ভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদ না হলে এখানে বাঙ্গালী আনার কোন মানেই ছিলোনা। ফলে এটি কোন জাতি সত্বাকে সংখ্যালঘু বানানোর চেয়েও বিচ্ছিন্নতাবাদকে দূর্বল করাটাই বড় সত্য। আর এই সত্যের সবচেয়ে বড় প্রমাণ উপজাতিদের উন্নয়ন অব্যাহত রাখা ও নাগরিকত্ব কেড়ে না নেয়া।
৫- "এছাড়া সম্ববত পাহাড়িদের সেসময় আর কোন উপায়ও ছিল না। কারন রাজনৈতিক আন্দোলনের পথ মোটামুটি ১৯৭৫এর আগস্টের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল." আপনার এই কথা আর পূর্বে বর্নিত "তিনি জোর দিয়ে বললেন, “আমরা বাংলাদেশী”। একথা বলাতে তৎকালীন আওয়ামীলীগের নেতারা এম.এন লারমাকে সংসদে তুলো ধুনো করেছিলেন। এক এমপি তো (বর্তমান পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী) রীতিমত অসৌজন্যমূলকভাষায় সংসদে এম.এন লারমাকে হুমকি দিয়েছিলেন।"- এই বক্তব্যে প্রমাণ হয় রাজনৈতিক নোংরামীর শুরুটা আ-লীগ নয় বরং সামন্তবাদী ভাবধারার উপজাতি নেতারাই শুরু করেছিলো। আর আ-লীগের ক্ষোভ সেই নোংরামীর প্রতিবাদ ছিলো।
একদিকে 'বাংলাদেশী' হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাইলেন। অন্যদিকে সাংবিধানিক 'বাংলাদেশী' স্বীকৃতি দেয়ার পরেও তথাকথিত অস্ত্রবাজী বন্ধ না করে ১৫ আগস্টের সুযোগে বিচ্ছিন্নতাবাদ বাড়িয়ে দিলেন। তাহলে আনুগত্য পরায়ন নাগরিকদের বদলে কী ইন্ডিয়া কিংবা বার্মা থেকে আরো চাকমা নিয়ে এসে নাগরিক বানানো যৌক্তিক ছিলো??
'বাঙ্গালী' থেকে 'বাংলাদেশী' হবার বাসনা থাকলে ১৫ আগষ্টের পর জিয়াকেই আপনারা বন্ধু ভেবে আলোচনা করতেন। কিন্তু আপনারা আপনাদের চরম জিঘাংষা পূর্ণ উদ্দেশ্য থেকেই জিয়ার আগমনকে আলোচনার পক্ষে না ভেবে ১৫ আগষ্টের বিশৃংখলাকে বিচ্ছিন্নতাবাদের কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন।
শেষ কথা-
ভূমিকাতেই এত মিথ্যাচার ও উদ্দেশ্যপূর্ণ বাকোয়াজ করলে বিস্তারিত বাকোয়াজ শুভেচ্ছা পাবে কি করে??
১৩| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৫
বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: এখন আসি বাঙ্গালীরা পাহাড়িদের উপর বেশি অত্যাচার করেছে নাকি পাহাড়িরা আমাদের উপর। একদম নিরপেক্ষ উত্তর আমাদের বিপক্ষেই যাবে। সহিংসতার সুত্রপাত হয় জিয়ার আমল থেকে যখন সেটেলারদের ওই অঞ্চলে ঠেলে দেয়া হয় এবং জোরপূর্বক জমিজমা দখল করে কিংবা অধিগ্রহন করে বসতি স্থাপন করতে দেয়া হয়। এই সেটেলার কারা ছিলো? এরা ছিল প্রধাণত উপকূলীয় অঞ্চলের ভুমিহীন বাঙ্গালীরা। যারা জীবনের তাগিদে টিকে থাকতে স্বভাবগত ভাবেই কিছুটা উগ্র ছিল, ছিল বেপরোয়া। ব্যাপকহারে বাঙ্গালী সেটেলার পাঠানোর সিদ্ধান্তটা ছিল একটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এবং এর মাত্রাও ছিল ব্যাপক। স্বাধীনতার পর পর পাহাড়ি আর বাঙ্গালীর শতকরা হিসেব এর প্রমাণ। সেগুলো তুলে নিয়ে আসা বিশাল পরিসরের ব্যাপার, তাই এড়িয়ে যাচ্ছি।
তবে পাহাড়ি সসস্ত্র গোষ্ঠীদের কোন ধরনের সহিংসতার জবাব যে বাঙ্গালীরা আরও ভয়ঙ্করভাবে দিয়েছে তা নিশ্চয়ই অস্বীকার করবেন না। ২৫শে মার্চ ১৯৮০ সালের কোন ঘটনা কিংবা এরশাদের আমলের সেখানকার জিওসির দেয়া, "আমি প্রতিটি পাহাড়ি মহিলার কোলে বাঙ্গালী সন্তান দেখতে চাই" এসব কিছু শোনেননি? প্রতিটা দেশ কিংবা জাতির সেনাবাহিনীর আচরণ প্রায় একই হয়, পাকিস্তানী সেনারা যা করেছিল আমাদের সাথে, বাঙ্গালী সেনারা মাত্রায় অতটা না গেলেও কম কিন্তু করেনি। আমরা এসব বিষয়ে কম জানি, কারণ রাষ্টীয় গণমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ এবং পাহাড়িরা অশিক্ষিত ছিল। চাইলেও কিভাবে প্রচার করতে হয় জানা নেই তাদের। একদম সাম্প্রতিক সময়ের কিছু সহিংসতার শিকার মানুষদের হিসাবও দেখতে পারেন। বছর কয়েক আগে পাহাড়ি বাঙ্গালী দাঙ্গায় শতশত ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। এর কয়টা বাঙ্গালীদের আর কয়টা পাহাড়িদের ছিল হিসেবটা আপনি নিরপেক্ষ ভাবে হিসেব কষতে পারেন। বাঙ্গালীরা এখনো ক্ষুদ্র অংশ সেখানে, তারপরেও এতো দাপটে দাঙ্গায় অংশ নেয়া সেনাদের ছত্রছায়া ছাড়া সম্ভব নয়। তাই না?
আর বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছিলো কাদের মদদে? প্রধাণত ভারতের প্রত্যক্ষ মদদে। মুজিবের আমলে অবশ্য মদদদাতা ছিলো আইএসআই। আর এন কাউ এর ইনসাইড 'র' বইতে কেন এবং কিভাবে প্রশিক্ষণ এবং আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি সম্পন্ন করা হতো তা উল্লেখ আছে। মুজিবের মৃত্যুর পর দেশে আসে ভারত বিদ্বেষী সরকার। তারা সেভেন সিস্টার্সের বিচ্ছিন্নতাবাদে মদদ দিত এবং ভারত এদিকে বাংলাদেশের পাহাড়িদের দিত। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার কথা মনে আছে? ডিজিএফআই এর সহযোগিতায় ওগুলো সেভেন সিস্টার্সেই যেতো, অর্থ জোগানদাতা পাকিস্তান। আমরা আরেক দেশকে খোচা দিলে সে দেশ আমাদের এখানে খোচা দেবে না, এতটা আশা করাও বোকামী। আওয়ামী সরকার আসবার পর দেখবেন সেভেন সিস্টার্সও শান্ত, আমাদের পার্বত্য অঞ্চলও শান্ত।
বন্ধুত্বের কারণে রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়িতে বেড়াতে গিয়েছি।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:২৬
পানিখোর বলেছেন: ১- "সহিংসতার সুত্রপাত হয় জিয়ার আমল থেকে যখন সেটেলারদের ওই অঞ্চলে ঠেলে দেয়া হয় এবং জোরপূর্বক জমিজমা দখল করে কিংবা অধিগ্রহন করে বসতি স্থাপন করতে দেয়া হয়।"
আগের বলা ইতিহাস পুরোটা ভুলে জিয়ার আমলকে সহিংসতার 'সূত্রপাত' বলাটা কতটুকু সততার প্রমাণ?
পার্বত্য চট্টগ্রামে যে পরিমান বনভূমি সাফ করিয়ে ভূমীহীন মানুষদের আবাস দেয়া হয়েছে তা কোন উপজাতির মালিকানাধীন জমি নয়। বৃটিশ আমল থেকে (তথাকথিত পূজনীয় ১৯০০ কনভেনশন বিবেচনা করলেও) বিপুল বনভূমী সরকারী খাস ছিলো। সেখানেই ভূমীহীনদের (বাঙ্গালীদের বললে মিথ্যাচার ও অসততা করা হবে। কারন এরা বাঙ্গালী হবার কারনে নয় বরং ভূমীহীন ও রাষ্ট্রীয় আনুগত্য পরায়ন হবার কারনে পার্বত্য এলাকায় স্থান পায়) স্থান দেয়া হয়। তাছাড়া ৩ একর করে চাষাবাদের আইনেও উপজাতিদের কোন দলিল কিংবা নির্দিষ্ট এলাকা ছিলোনা (এটা কোন বংসীয় আইন নয়, দখলদার ব্রিটিশদের দেয়া উদবাস্ত সংক্রান্ত আইন)। সেখানে নাগরিকত্ব ও ভূমির অধিকার দেয়া হয়েছে! যদিও ফাও খাবার প্রবনতা এতই খারাপ যে অন্য দেশে আশ্রয় পেয়েও তার অভিলাস যায়না।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বার্মিজ সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ পুরোটাই উদবাস্তু জাতীয়তাবাদ যা ভূমিপুত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে! অথচ তাদের নাগরিকত্ব না দিয়ে বের করে দেয়া সম্ভব ছিলো! বাংলাদেশ তা করেনি!!
২- সেটেলার
পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমীহীনদের যে নামে ডাকা হয় তা মানবতার যেকোন বিবেচনায় অমানবিক। উত্তর বঙ্গেও দক্ষিন বঙ্গের ভূমীহীনদের স্থান দেয়া হয়েছে। সারা দেশেই এমন ভূমীহীনদের খাসে স্থান দেয়া হয়েছে। একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামে বার্মিজ জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে নিজেরাই বার্মিজ সেটেলার হয়ে আশ্রয়দাতা দেশের নাগরিকদের সেটেলার বলা, উপরন্তু নিজেদের উদবাস্তু সুবিধার সুযোগে নিজেদেরকে আশ্রয়দাতা দেশের বিরুদ্ধে আদিবাসী বলা কোন মানসিকতা থেকে আসতে পারে? প্রশ্ন রইলো।
শতকরা হিসাব মানে কি? বাংলাদেশে আজ রাতের আধারে কত শতাংশ ইন্ডিয়ান নাগরিক ঢুকে পড়েছে, নির্দিষ্ট এলাকায় তার শতকরা হিসাব কোনদিন কি আইনত অধিকার লাভ করবে?
৩- দাঙ্গা
একতা দেশে আশ্রয় নিয়ে বহিশক্তির উস্কানিতে তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার উস্কানি দিলে স্বাভাবিক ভাবেই সেনাবাহিনী তার প্রতিরোধ করবে। যুদ্ধ ঘোষণা কী সেনাবিহিনী দিয়েছে নাকি শান্তিবাহিনী দিয়েছে? যুদ্ধ ঘোষণার পর তারা কাদের আশ্রয়ে হামলা করতো?
এসব প্রশ্নের জবাব দিয়ে দাঙ্গা বনাম বিচ্ছিন্নতাবাদ দমনের সঙ্গায় আসতে হবে।
বাঙ্গালীরা ছিলো নিরস্ত্র, ভূমিহীন ও দূর্বল। তাদের ওপর নির্বিচার সামরিক হামলা আর দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর তাদের প্রতিরোধের মুখোমুখী হওয়া কোন যুক্তিতে এক পাল্লায় মাপা যায়??? আশ্চর্য!!!
৪-
"আর বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছিলো কাদের মদদে? "
বাহ দারু বলেছেন!!! ঐতিহাসিক স্বাধীন রাজ্যভুক্ত ৭ টা স্বাধীন জাতির স্বাধীনতা আন্দোলন আর বহিরাগত উদবাস্তু উপজাতিদের বিচ্ছিন্নতাবাদ কী সুন্দর করে এক করে দিলেন? আবার ন্যায্য জাতির ন্যায্য স্বাধীনতা আন্দোলনে সহায়তাকেও 'অন্য দেশকে খোচা দেয়া' বুঝলেন!!! কিন্তু আশ্রয় নিয়ে খোদ ঐ দেশের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরাও আপনার কাছে 'অধিকার'!!!
তাছাড়া রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আপনি র কিংবা আইএসআই এর সাহায্য তথা বহিশক্তির উস্কানি গ্রহণ করবেন আর তার ক্লাসিফাই করবেন???? র কিংবা আইএসআই কোনটাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্লাসিফাই হবার যোগ্যতা রাখেনা। স্পষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদ স্বীকার করার পর আর কোন কথা থাকেনা।
বিচ্ছিন্নতাবাদ দমন বাংলাদেশের অধিকার।
১৪| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:১২
বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন:
পাহাড়িরা আসলেই আদিবাসী নাকি আক্ষরিক অর্থে আদিবাসী নাকি আভিধানিক অর্থে আদিবাসী কিংবা লতায় পাতায় জাতি উপজাতি সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। একটা মানুষের পরিচয় এভাবে হয় না। তার অধিকার কি সেটাও এর অর্থ কি হবে তার উপর নির্ভর করে না। এসব খুঁজে একজন মানব সন্তানকে কেবল অপমানই করা যায়। কে কবে বাংলাদেশের নানা অঞ্চলে এসেছে তারচেয়ে বড় কথা হলো এই ভুখন্ডের কেউ কারো চেয়ে ছোট নয়। মানুষের পরিচয় তার আচরণে। কোন জাতি কবে এসে কোন ভুখন্ডে এসে বসতি গেড়েছে তার ভিত্তিতে সেই ভুখন্ডের মালিকানা দেয়া লাগবে এই চিন্তাও হাস্যকর। ব্যাপারটা এমনও না যে পাহাড়ে পাহাড়ি জনসংখ্যা অনেকবেড়ে গেছে আর ওরা সেখান থেকে এসে বাকী অংশের মানুষকে ধরে ধরে মারছে, নির্যাতন করছে, সম্পত্তি কেড়ে নিচ্ছে। কোন ধরণের অধিকার হারাবার প্রশ্ন যদি আসে, তাহলে হারাবার আশংকা কেবল পাহাড়িদেরই আছে।
এবার আসি মুল প্রসঙ্গে, পার্বত্য অঞ্চলে প্রথম বসতি স্থাপনকারী আগে কারা ছিলো? সেটা ৫ পুরুষ আগেই হোক বা দুই পুরুষ আগেই হোক। আমার তো মনে হয় এক্ষেত্রে পাহাড়ে এখন যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ তাদেরকেই বলতে হবে। প্রকৃতপক্ষে তারাই পার্বত্য অঞ্চলে প্রথম ব্যাপকহারে বসতি স্থাপনকারী, অর্থাৎ আদিবাসিন্দা ও অভিবাসী দুটোই। আমরা দাবী করছি সব উপজাতি পার্বত্য অঞ্চলে বহিরাগত। বাঙ্গালীরাই সেখানের আদিবাসী। দাবীটাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে হাস্যকর বলে মনে করি। বাংলাদেশ সরকার এখন এই ‘আদিবাসী’ বির্তকটিকে উস্কে দেওয়ায় ‘আদিবাসী’ এবং ‘আদি অধিবাসী’ শব্দদুটিকে গুলিয়ে ফেলে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করছে। আর এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উস্কে দেওয়া ভাষাগত সংখ্যালঘু জনজাতির আত্বপরিচয় ও অস্তিতকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
এই মতটি প্রতিষ্ঠা পেলে পাহাড়ে এবং সমতলের আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলের অধিবাসীদের ভু-সম্পদে বাঙ্গালীদের সহজ প্রবেশদ্বার উন্মুক্ত হবে। তখন তারা তাদের স্বাতন্ত্র্য কতটা ধরে রাখতে পারবে তা বড় প্রশ্ন। সবাই তার অকৃত্তিম ব্যাপারগুলো ধরে রাখতে চায়। পাকিস্তানীরাও আমাদের উপর ভাষা এবং সংস্কৃতির নানা বিষয় চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। আমরা যেন তেমন না করি। আমরা কি মনে করছি ওই অঞ্চলের সম্পদ বেশি দেখে তার অধিকার আমাদের নিতে হবে? এই ব্যাপারটাও কিন্তু বাংলাদেশের আলাআ হয়ে যাবার একটা বড় কারণ ছিল।
দুনিয়ার বুকে আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা মানুষ। উচু জাত, ভালো জাত, প্রভাবশালী জাত প্রভৃতির ধোয়া তুলে কর্তৃত্ব কায়েম করতে গেলেই শুরু হবে সমস্যা। নাজীদের মত না হই আমরা, না হই পাকীদের মতন। বাঙ্গালী পরিচয়টা যে মহৎ তা আমাদেরও তাদের কাছেপ্রমান করবার দরকার আছে। ওদের ভেতর ঢুকে না গিয়ে ওদেরকে আমরা নিজের দিকে টেনে আনবার চেষ্টা বেশি করছি না কেন? বাঙ্গালী জাতটাই একটা মিশ্র জাত। ওদেরকে ওদের সব সহ না বদলে দিয়ে বরং আমাদের থেকে কিছু দিয়ে নিজেদের আপন ভাববার ব্যবস্থা করলেই তো ভালো। নাকি ওদের পাহাড়ের সম্পত্তির ভাগ আমাদের লাগবেই?
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৫৬
পানিখোর বলেছেন: ১- "পাহাড়িরা আসলেই আদিবাসী নাকি আক্ষরিক অর্থে আদিবাসী নাকি ... তাহলে হারাবার আশংকা কেবল পাহাড়িদেরই আছে।"-
আপনার মত নির্লজ্জ হতে পারছিনা দুঃখিত। আপনার বাড়িতে কত জন এতিমকে আশ্রয় দিয়েছেন?
মানুষ হিসেবে নির্লিপ্ত অধিকার স্বীকার করছেন, আপনি আপনার ইনকামের কত শতাংশ গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দেন?
উত্তর দিবেন।
২- "পার্বত্য অঞ্চলে প্রথম বসতি স্থাপনকারী আগে কারা ছিলো?"
আপনার যুক্তি দেশ হাস্যকর। আমাকে জবাব দিন- রামুর জঙ্গল গুলো সাফ করে রোহিঙ্গারা সরকারী অনুমোদনহীন বসতি গড়ছে। আজ থেকে ৩০০ বছর পর ওইসব জঙ্গলে কিছু বাঙ্গালীও বসতি গড়তে পারে। এখন ঐ অঞ্চলের 'আদিবাসী' (আপনার যুক্তিতে) রোহিঙ্গারা ঐ এলাকায় 'আদিবাসী' হিসেবে তাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারন সংক্রান্ত ইউএন এর ঘোষণা পত্র বাস্তবায়ন করতে চাইলো। ব্যাপারটা আপনার কাছে ঠিক মকতটা মানবিক??? বিপুল জনসংখযা অধ্যুষিত বাংলাদেশে এককালে আশ্রয় নেয়া উপজাতিরা আজ ঐ দেশের এক দশমাংশকে সাংস্কৃতিক ভিন্নতার নামকে নিজেদের করে নিতে চাচ্ছে! বাংলাদেশ কোন যুক্তিতে সেটা মানবে?
আশ্রয় প্রাপ্ত গোষ্ঠী কোনদিন স্বাভাবিক মাইগ্রেটের স্বীকৃতি পায়না। এটা বিশেষ সময়ে দেয়া বিশেষ সুযোগ। প্রতিটি যুদ্ধ বিদ্ধস্ত্ দেশের মানুষ সাময়িক আশ্রয় পায়, দখল পায়না।
৩- আদিবাসী/পরিচয়
আপনার হাসি পেতেই পারে। কারন হাসার অধিকার তো আপনারই আছে। আদিবাসী নিছক পরিচয় নয়। অতি ভদ্রতার বিষয়ও নয়। এটা আইনগত টার্ম। আইন নিয়ে বালখিল্যপনার যুগ এটা নয়। এই যুগে পাগলও আইন জানে।
এ বিষয়ে ব্লগেই লিখা আছে। পাল্টা যুক্তি না থাকলে অযথা বিতর্ক করবেন না।
৪- "সবাই স্বাতন্ত্র বজায় রাখতে চায়"
সেটা কেউ অস্বীকার করেনি। আপনি আপনার মালিকানায় স্বাতন্ত্র বজায় রাখুন। যে দেশ থেকে এসেছেন সেখানে গিয়ে জাতীয় গান করুন! আমার ভূমিতে আশ্রয় নিয়ে আমার ভূমিতে প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আমার অধিকার হরন হয়। আমি তো আমার অধিকার ছেড়ে আপনার শখ বাস্তবায়ন করব না!!! পাকিস্তান আর পার্বত্য এক নয়। বাংলাদেশ বাঙ্গালীদের ঐতিহাসিক দেশ। পার্বত্য উপজাতিদের ঐতিহাসিক উদবাস্তু এলাকা।
৫- "দুনিয়ার বুকে আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা মানুষ।"
তাহলে অন্যের দেশে এসে আদিবাসী পরিচয়তে ডাকাতি করার শখ কেন?? পাহাড়ের সম্পত্তিও ওদের নয়, কক্সবাজারও রোহিঙ্গাদের নয়।
তাই পাগলামো বন্ধ করুন।
১৫| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৩৬
বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: আপনি নিজেই তো উদবাস্তু বলে চরম মিথ্যাচার অবলীলায় চালিয়ে যাচ্ছেন। আপনার জানা ইতিহাস সম্ভবত ১৯০০ সাল থেকেই শুরু হয়, এর আগে কিছু নেই।
আপনার সাথে আমার এই উদবাস্তু শব্দটাতেই চরম দ্বিমত। আমি মনে করি তারা স্থানীয় জনগণ এবং আদি অধিবাসীও।
মারমারা কবে সেখানে এলো এ ব্যাপারে উইকি থেকে টুকে দেই।
the records of East India Company and others provide that Marmas migrated from Arakan kingdom of Burma to the Chittagong of Bangladesh in two phases of migrations during 14th to 17th centuries in the golden period of Mrauk U. In the first phase during the Mrauk U period Arakanese kingdom was expanded to even some parts of Chittagong Division.
তার মানে দাঁড়ায় লিপিবদ্ধ তথ্য থেকে জানা যায় ১৪ শতক থেকেই মারমাদের সেখানে বসতি স্থাপন শুরু হয়। এরপর অগ্নি সারথির পোস্ট থেকে আবার টুকে দেই,
কিন্তু কথিত আছে যে, ১৭৮৪ সালের দিকে বর্মিরাজ ভোদফ্রা নামক ব্যাক্তি আরাকান জয় করলে, আরাকান চিরদিনের জন্য স্বাধীনতা হারায়। এরপর হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হয়ে কক্সবাজার,চট্রগ্রাম,পার্বত্য চট্রগ্রাম ও পটুয়াখালীতে এসে বসতি গড়ে। ১৭৯৭ থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
আপনি এ সময়টার ভিত্তিতেই মারমা সহ সবাইকে উদবাস্তু বলছেন। এ সময়টাও কত বছর আগে হয়? দুইশত বছরেরও বেশি। সে সময়টা কি ওই অঞ্চল বাঙ্গালী অধ্যুষিত ছিলো?
১৯৬১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী পার্বত্য এই জেলায় পাহাড়ী- বাঙ্গালীর শতকরা হার ৮৮.২৩% (পাহাড়ি)-১১.৭৭% (বাঙালি ) এ গিয়ে দাঁড়ায়। যেটা ১৯৪১ সালে ছিল-পাহাড়ি ৯৭.০৬% এবং বাঙালি ০২.৯৪% (Bangladesh Buearu of Stastic)।
কারণটা পাবেন এখান থেকে,
আইয়ুব খানের শাসনামলে ১৯৫৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ণে, কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ কার্য শুরু হয় ও ১৯৬২ সালে এর নির্মাণ সমাপ্ত হয়। ইন্টারন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এবং ইউতাহ ইন্টারন্যাশনাল ইনকর্পোরেট ৬৭০.৬ মিটার দীর্ঘ ও ৫৪.৭ মিটার উচ্চতার এ বাঁধটি নির্মাণ করে। এই বাধ নির্মানের ফলে প্রায় ৪০% ভাগ চাষযোগ্য জমি প্লাবিত হয় (৫৪০০০ একর চাষের জমিসহ প্রায় ৪০০ বর্গমাইল এলাকা)। প্রায় চল্লিশ হাজারের ও অধিক চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিবেশী দেশ ভারতে এবং ৩০ হাজারের মত মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে বার্মায় (মিয়ানমার) স্থানান্তরিত হয়।
হাজার হাজার মানুষ প্রতিবেশী দেশে চলে না গেলে ১৯৬২ সালেও পাহাড়িদের শতকরা হার ৯৭%ই থাকতো। আইয়ুব খানের এমন অমানবিক প্রকল্প আপনার কাছে সঠিক মনে হয়। কখন না জানি ইয়াহিয়া খানের অপারেশন সার্চ লাইটকেও আপনি যৌক্তিক বলে দাবী করে বসেন এই আশংকাও মন থেকে সরিয়ে দিতে পারছিনা বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এবার আসি পার্বত্য অঞ্চলের প্রায় অর্ধেক মানুষ চাকমাদের ব্যাপারেঃ
The Arakanese referred to the Chakmas as Saks or Theks.
In 1546 CE, when the king of Arakan, Meng Beng, was engaged in a battle with the Burmese, the Sak king appeared from the north and attacked Arakan, and occupied the Ramu of Cox's Bazar, the then territory of the kingdom of Arakan.[2]
Diego de Astor, a Portuguese, drew a map of Bengal, which was published as Descripção do Reino de Bengalla in the book Quarta decada da Asia (Fourth decade of Asia) by João de Barros in 1615 CE.[3] The map shows a place called "Chacomas" on the eastern bank of the Karnaphuli River, suggesting that this is where the Chakmas used to live at that time.
The Arakan king Meng Rajagri (1593–1612 CE) conquered this land, and in a 1607 CE letter to a Portuguese merchant named Philip de Brito Nicote, addressed himself as the highest and most powerful king of Arakan, of Chacomas and of Bengal.[4]
Defeated by the Arakanese, the Chakmas entered the present Chittagong Hill Tracts and made Alekyangdong, present-day Alikadam, their capital. From Alekyangdong they went north and settled in the present-day Rangunia, Raozan, and Fatikchari upazilas of Chittagong District.
In 1666 CE, Shaista Khan, who was then Mughal Governor of Bengal, defeated the Arakanese, conquered Chittagong, and renamed it Islamabad.[5] However, in the early days the Mughal supremacy was confined only to the plain areas of Chittagong, and the Chakmas remained practically unaffected.
After a few years, when a dispute developed between the Mughals and the Chakmas, the Mughals demanded tribute from the Chakmas for trading with Chittagong.[6]
In 1713 CE, peace was established, and soon a stable relationship developed between the Chakmas and the Mughals; the latter never demanded complete subjugation from the former.
The Mughals also rewarded the Chakma king Shukdev Roy, who established a new capital in his own name, in an area is still known as Shukbilash.
There are still ruins of the royal palace and other establishments.
Subsequently the capital was shifted to Rajanagar, Ranirhat, Rangunia Upazila, Chittagong District.
পড়ে দেখুন, সেই ষোড়শ শতকেই আলীকদমকে রাজধানী করে চাকমাদের এ অঞ্চলে আলাদা রাজ্য ছিল। ওদের আপনি আরাকানী কিংবা মারমাদের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না যেন।
আর সার্কেল চীফ জমিদার কিংবা রাজা টাইপের কিছু নয় দাবী করেছেন তো পোস্টে, এর আগে কি ছিলো সেসবও একটু জানবার চেষ্টা করবেন।
২- ভাগের প্রশ্ন
পাঞ্জাবের অংশের বিনিময়ে এ অঞ্চলকে পাকিস্তানের সাথে দেয়া হয় কে বলেছে? বাংলা এবং পাঞ্জাব বাউন্ডারী কমিশন ছিলো সম্পূর্ণ আলাদা। আর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার মতামতকে প্রাধাণ্য না দিলে তা জোরপূর্বকই বলা যায়। যদিও আমি মনে করি পাকিস্তানের ভাগে এসে তাদের জন্য ভালোই হয়েছে। বোমাং রাজার ব্যাপারটা আমার জানা ছিল না। সুত্র জানালে উপকৃত হবো।
৩- জাতিসত্বা
আমার উপরের কথাগুলোর প্রেক্ষিতেই বলবো আমি তাদের উদবাস্তু মনে করি না, তাই নাগরিকত্ব তাদের এমনি চলে আসে। কোন অংশকে রাষ্ট্রের সাথে যুক্ত করা মানে তার এলাকা যোগ করা নয়, সাথে মানুষগুলোকেও তার অংশ করে নেয়া।
৪- "এরপর এলো ১৯৮০ সন, এর বছরখানেক আগে থেকে জেনারেল জিয়াউর রহমান একটা অশুভ প্রকল্প..."
রাষ্ট্রের জন্য যা শুভ আপনার জন্য তাই 'অশুভ'? শান্তিবাহিনীর বিচ্ছিনতাবাদী আন্দোলন, ত্রিদিবের রাজাকারী, আজীবনের তরে ঐ কাপ্তাই নেতাদেরই প্রজা হওয়া... এই ধারাবাহিকতার কিছুই তো আপনার কাছে অশুভ হলনা!?
কাউকে সংখ্যালঘু বানানোর উদ্দেশ্য থাকলে তাকে নাগরিকত্ব দেয়া হতনা। বরং তাদের নিয়ে সুন্দর দেশ গঠন উদ্দেশ্য ছিলো বলেই তাদেরকে সমমর্যাদা দেয়া হল। অন্যদিকে তাদের সামন্তবাদী দের ট্যাপের জন্য যখন রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা হুমকিগ্রস্থ হচ্ছিলো তখন একই সাথে খাস জমিতে ভূমীহীনদের ভূমি লাভের নাগরিক অধিকার প্রদান, বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অনুগত্য পরায়ন নাগরিকদের নিয়োগ করে রাষ্ট্র রক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক দুটি দিক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বার্মিজ সংস্কৃতি ভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদ না হলে এখানে বাঙ্গালী আনার কোন মানেই ছিলোনা। ফলে এটি কোন জাতি সত্বাকে সংখ্যালঘু বানানোর চেয়েও বিচ্ছিন্নতাবাদকে দূর্বল করাটাই বড় সত্য। আর এই সত্যের সবচেয়ে বড় প্রমাণ উপজাতিদের উন্নয়ন অব্যাহত রাখা ও নাগরিকত্ব কেড়ে না নেয়া।
অগ্নি সারথির দেয়া এই তথ্যগুলো স্বীকৃত। আবার পড়ুন,
১৯৮০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং সেটেলাররা মিলে কাউকজালি নামক একটা গ্রাম আক্রমন করে এবং ৩০০ মানুষ সেই আক্রমনে নিহত হন। একই বছর ৩ মার্চে আরেকটি ম্যাসাকারে সেনাবাহিনী প্রায় ৩০০০ থেকে ৪০০০ আদীবাসী মানুষকে হত্যা করে। ২৫ মার্চ ১৯৮১ সালে সেটেলার এবং সেনাবাহিনী মিলে মাটিরাঙ্গা নামক স্থানে ৫০০ আদীবাসীকে হত্যা করে। ১৯৮৯ সালে লংগদুতে ৪০ জন আদীবাসীকে হত্যা করা হয় এবং প্রায় ১৩০০০ এর মত মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। ১৯৮৯ সালে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী ছাত্রদের একটা দলে আক্রমন করে প্রায় ১০০ জনকে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৫০০ জুমিয়া নারী ধর্ষিত হন।
এবার সে অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার সাথে ৭১ এ আমাদের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে হিসেব করে দেখুন। সহিংসতার মাত্রাটা পাকিস্তানী সেনাদের আচরনের সমপর্যায়েরই হয়ে যায়। রাষ্ট্র মানুষের জন্য, আর মানুষের জন্য যে রাষ্ট্র তার আচরণও হওয়া উচিত মানবিক। নাহলে, পাকিস্তানীদের সাথে আমাদের পার্থক্য থাকলো কোথায়? কোন বিচারেই আপনি গণহত্যা কিংবা একটামাত্র ধর্ষনকেও যৌক্তিক বলতে পারেন না।
৫- "এছাড়া সম্ববত পাহাড়িদের সেসময় আর কোন উপায়ও ছিল না। কারন রাজনৈতিক আন্দোলনের পথ মোটামুটি ১৯৭৫এর আগস্টের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল." আপনার এই কথা আর পূর্বে বর্নিত "তিনি জোর দিয়ে বললেন, “আমরা বাংলাদেশী”। একথা বলাতে তৎকালীন আওয়ামীলীগের নেতারা এম.এন লারমাকে সংসদে তুলো ধুনো করেছিলেন। এক এমপি তো (বর্তমান পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী) রীতিমত অসৌজন্যমূলকভাষায় সংসদে এম.এন লারমাকে হুমকি দিয়েছিলেন।"- এই বক্তব্যে প্রমাণ হয় রাজনৈতিক নোংরামীর শুরুটা আ-লীগ নয় বরং সামন্তবাদী ভাবধারার উপজাতি নেতারাই শুরু করেছিলো। আর আ-লীগের ক্ষোভ সেই নোংরামীর প্রতিবাদ ছিলো।
একদিকে 'বাংলাদেশী' হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাইলেন। অন্যদিকে সাংবিধানিক 'বাংলাদেশী' স্বীকৃতি দেয়ার পরেও তথাকথিত অস্ত্রবাজী বন্ধ না করে ১৫ আগস্টের সুযোগে বিচ্ছিন্নতাবাদ বাড়িয়ে দিলেন। তাহলে আনুগত্য পরায়ন নাগরিকদের বদলে কী ইন্ডিয়া কিংবা বার্মা থেকে আরো চাকমা নিয়ে এসে নাগরিক বানানো যৌক্তিক ছিলো??
'বাঙ্গালী' থেকে 'বাংলাদেশী' হবার বাসনা থাকলে ১৫ আগষ্টের পর জিয়াকেই আপনারা বন্ধু ভেবে আলোচনা করতেন। কিন্তু আপনারা আপনাদের চরম জিঘাংষা পূর্ণ উদ্দেশ্য থেকেই জিয়ার আগমনকে আলোচনার পক্ষে না ভেবে ১৫ আগষ্টের বিশৃংখলাকে বিচ্ছিন্নতাবাদের কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন।
আগের কথাগুলোর আলোকেই বলি, আইয়ুব খানের ভুলের পথ বর্জন কিংবা তাদের সেই ৭২ সালে উপজাতির স্বীকৃতির দাবীও তো সরকার মেনে নেয়নি। বরং জোর করে বাঙ্গালী বানিয়ে দিতে চাইলো। একজন মানুষ নিজেকে কি নামে পরিচয় দেবে সেটা তার অধিকার। তারা তো তখন বলেছিলোই তারা বাংলাদেশী। আর বিচ্ছিন্নতাবাদী ফ্র্যাকশন থাকেই, কিন্তু দমনের নামে হত্যা ধর্ষন কিংবা তাদের আধিক্য খর্ব করতে পরিকল্পিতভাবে সেটেলার পাঠানো ঠিক কাজ হয়নি। অল্প সময় আগেই পাকিস্তানীদের নির্যাতনের শিকার একটা জাতি অন্য মানুষের উপরে সামান্যতম অন্যায় করলেও তাতে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে গর্বের কিছু নেই। আমি এটাকে রাষ্ট্রের কলংকজনক আচরণ হিসেবেই দেখি।
শেষ কথা-
ভূমিকাতেই এত মিথ্যাচার ও উদ্দেশ্যপূর্ণ বাকোয়াজ করলে বিস্তারিত বাকোয়াজ শুভেচ্ছা পাবে কি করে??
আমি কোন তহ্যটা মিথ্যা দিয়েছি বলেন তাহলে বুঝতাম মিথ্যাচার করেছি কি না। আর যারা নিজেরা বাকোয়াজে অভ্যস্ত তারা চোখে মুখে শয়নে স্বপনে বাকোয়াজই দেখতে পাবে তাতে অবাক হবার কিছু নাই। আমিও হলাম না।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৭
পানিখোর বলেছেন: প্রতিটি দাবির পক্ষে রেফারেন্স দিয়ে কথা বলেছি। মূল পোস্টেই আপনার বহু প্রশ্নের জবাব এসেছে। তাই আপনার সাথে অযৌক্তিক মাঠ্রে নামতে অপারগতা প্রকাশ করছি।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৯
প্রামানিক বলেছেন: ১ম হইলাম। পরে পড়বো