![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুবই খারাপ সময় কাটাচ্ছি ইদানীং
খুবই মেজাজ খারাপ থাকে সারাক্ষণ। কিছু ভালো লাগে না। কিছু করতে ইচ্ছে করে না। কিছু পড়তে ইচ্ছে করে না। এ এক আজাইরা মানসিক রোগ। সকালে একবার আর বিকেলে একবার বের হই স্টুডেন্ট পড়াতে। সেটাও ভালোলাগে না, বাধ্য হয়ে যাই। স্টুডেন্টদের কেউ যদি বেড়াতে গিয়ে থাকে দারুণ খুশি লাগে তখন। একটা কাজিন বারবার ফ্রি ম্যাসেজ দিচ্ছে বাসায় যাওয়ার জন্য, যেতে পারছি না, পারছি না কারণ ওইযে বললাম ভাললাগছে না। কোনওকিছূর প্রতি ভালোলাগা তৈরি করতে কোনও ওষুধ আছে নাকি? থাকতেও পারে। আচ্ছা মনোবিজ্ঞানীরা কি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করে, নাকি সবটাই কন্সালটেন্সি আর কাউন্সিলিং?
নিজে নিজে আবিষ্কার করলাম মন খারাপের কারণ----
১ খুব গরম পড়েছে
২বিদ্যুৎ থাকেই না
৩ইদানীং দুলাভাই বেশিরভাগ সময় বাসায় থাকে।
দুলাভাই বাসায় থাকলে আপুও সারাক্ষণ তার কাছে কাছে থাকে, আমি কম্পিউটারে বসতে পারি না, আর আপুর সঙ্গে বসে সময় কাটাতেও পারি না।
৪ একটা টেলিভিশনে প্রেজেন্টার ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম, ওরা আর ডাকেনি। অবশ্য আমার পরিচিত কাউকেই ডাকেনি, হয়ত ডাকা শুরুই হয়নি,
এই ব্যর্থতাটুকু নিয়ে কাজিনমহলে বেশ অসম্মানজনক ইয়ার্কির ভিতর আছি। সবাই আমাকে সুন্দর বলতো, আমার কথা সুন্দর বলতো, সেই আশায় গিয়েছিলাম। তাছাড়া একমাসের একটা ট্রেনিংও ছিল উপস্থাপনার উপর।
এক কাজিন বলেছিল তুই আয় আমার অনুষ্ঠানটা উপস্থাপনা কর, আমি থোরাই কেয়ার করি, আমি চেয়েছি সংবাদ পাঠিকা হবো। সেও এখন খোঁচায়। কীরে...ঘরে বসে আছিস?
কেন কলেজ আছে না!
ও কলেজে যাস?
যাইতো!
প্রতিদিন যাস?
মাঝে মাঝে যাই না।
কোন গাড়িতে যাস?
একুশ অথবা আলিফ
ভাড়া কত নেয়?
এখন আর কম নিতে চায় না, অপমান করে নামিয়ে দেয়, আর রিস্ক নেই না। ছেলেবন্ধুরা থাকলে ওরা টিকেট কাটে, সাহস লাগে....
ছেলে বন্ধু কয়টা তোর?
গুণে দেখিনি।
দিন দিন স্মার্ট হচ্ছিস? শুনলাম নেটেও নাকি বসিস?
নিয়মিত না, মাঝে মাঝে। দুলাভাই না থাকলে...
দুলাভাইতো থাকেই না
এখন প্রায়ই বাসায় থাকে।
কারণ কি?
মনে হয় তার আড্ডার বন্ধুটা চলেগেছে বলে...
কোথায় গেছে?
কোথায় মানে? সেতো মারা গেছে!
ওহ! ক্যামনে মারা গেলো?
তাতো জানি না। জিজ্ঞেস করিনি। দুলাবাই একদিন ড্রেসপড়ে জানাজা পড়তে যাচ্ছে দেখে আপু জিজ্ঞেস করলো।...
বন্ধুবন্ধবের মুত্যু খুব নাড়া দেয়। তোর দুলাভাইর কি আর কোনও চেইঞ্জ চোখে পড়ে?
বিয়ার আনা বন্ধ। এখন শুধু সিগারেট খায়।
নামাজও শুরু করেছে নাকি?
না।
আচ্ছা রাখি, বিকেলেতো বাসায় আসতে পারিস!
সময় কই। কলেজ থেকে এসে...পড়াতে যাই।
আচ্ছা ঠিক আছে। পারলে আসিস।
আপনি আসেন ভাইয়া।
তোর ভাবি?
তাকে নিয়ে আসেন
ও আসবে? সেদিন এলাম বলে কী করেছে জানিস?
জানি না তবে অনুমান করতে পারি। সেজন্যইতো আপনার ফোন আমি ধরি না। অফিসের নাম্বার হলে ধরি।
ভালো, তোরা সবাই আমারে একঘরে করে দে, না পাই ঘরে একটু ভালো ব্যবহার, না পাই বাইরের কারও কাছে....
রাখি...
কাজিনটা আমারচেও বেশি হতাশ। তার হতাশা আমাকে আনন্দ দেয়, কেন দেয় জানি না। মনের কোথায় যেন একটা ক্ষোভ জমে আছে, সেই শোধটা যেন নেওয়া হয়। সে কি বোঝে এসব? সে কি ভাবে তার দুখেরকথায় আমি দুখিত হই না, প্রতিশোধের আনন্দে উদ্বেলিত হই!
সে জানে না। সে হয়তআমাকে আগের মতোই দেখে। মেয়েদের মনের যে কতোগুলো চেম্বার! তা স্বয়ং মেয়েরাও জানে না। বিধাতাও নাকি জানে না। আমি অবশ্য তা মনে করি না। বিধাতা সব জানে।
কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের একটা ছেলে পিছু লেগেছে। আপু আপু বলে কতো কি যে বোঝাতে চায়। একেবারে নাটকের স্টাইল।
আজ কিন্তু আপু আপনাকে আমি খাওয়াবো
প্রতিদিনইতো তুই খাওয়াস
আজ একটা স্পেশাল জিনিস আছে,
কী?
আছে আগে চলো...সারপ্রাইজ।
নারে আমার সময় নাই। কী করবেন? স্যার নাই ক্লাস হবে না।
তোকে কে বলল, আমাদেরও ক্লাস ছিল রিফাদ স্যারের, সে আসে নাই।
তার কোচিং এর কী হবে? ব্যাচ?
সেখানে নিশ্চই থাকবে!
যত্তোসব! কোচিং এর ধান্দা আর গেলো না।
স্যারটা কিন্তু ভালো।
ভালো না ছাই, ভালো পড়ালেই ভালো না। ভালো নীতিও থাকা চাই। সে জানে অনেক কিছু কিন্তু দিচ্ছেটা কি?...
এই বান্দরটা এমনসব মেসেজ পাঠায় বিরক্ত লাগলেও কোথায় যেন একটা আনন্দের ঢেউ লেগে থাকে। আজব সব লোভ আমাদের মনে। এই ছোট জুনিয়রটাকেও ছেগে দেই না, দেবো কেন? ওই তো পায়ে পড়ে মরতে আসে। আমি যতোই এড়াতে চাই ওতো সরে না।.... আমার কি দোষ?
ওও যদি একটা ফোন দিতো! না থাক! বিরক্ত নিয়ে কথা বলতেও অনেক কষ্ট।আসলে ওকে নিয়ে আমার ভাবনার কোনও কুলকিনারা পাইনা। শুধু একজন মানুষকে এসময় ভীষণ ফিল করি....
সে আমাকে জাগিয়ে তোলে....জাগিয়েই তোলে, পতিত করে না কখনো। আমি শুয়ে থাকলে বলে কীরে তোরকি গায়ে জ্বর? অসুস্থ?
আমার হাত ছোয় কপাল ছোয়, ঢঙ করে গালও টেপে। আমি এড়াবার ভান করি, কিন্তু পুরা শরীরটা বিদ্যুতের মতো শক খায়। ওইটুকুই। তারপর সে আবার ওরুমে যায়, পিচ্চিদের সাথে দুষ্টুমি করে। নেটে বসে। একটা কিছূ খেতে চায়, আমি শুয়েই থাকি, যদি আবার আসে? সে বারবারই এ রুমে আসে, আমাকে মারে, গালি দেয়, দাঁত কিড়মিড় করে। জানি না দাঁতের ফাঁকে কী থাকে। তবে আমি বেশ ফিল করি।....
আমার কেন যেন সন্দেহ হয় এই বুঝি ঝটকরে সে আমায় একটা কিস খাবে, আমি আশঙ্কায় থাকি, প্রস্তুত থাকি কিন্তু সে তা করে না। আমি ভেঙেপড়ি। সম্ভাব্য অপরাধের বিরুদ্ধে নিজেকে তৈরি রেখে যখন দেখি নিরপরাধ তখন নিজের উপর ভীষণ ঘৃণা ধরে।
সে আমাকে একবারেই ফোন করে না। মাঝে মাঝে আইটপ পাঠায়। আমি মিসকল দিলেই ব্যাক করে।
বল!
কিছু না,
ব্যাস্ত আছি রাখি!
দাঁড়াও
কী?
ভাললাগছে না...
ফ্রেন্ডদের ফোন কর...ফোনে টাকা নাই? আমি পাঠাচ্ছি।
ধুর! একটু কথা বলা যায় না।...
একটু পর ৫০টাকা যোগ হয়, কাকে ফোন দেবো?
ছেলেবন্ধুদের কাছে ওয়েট নষ্ট করেতে ইচ্ছে করেনা। মেয়ে বন্ধুদের দিতে কোনও সমস্যা নাই। লিসাকে ফোন দেই। এই মাইয়াডা ভাইয়ার ভীষণ ভক্ত। অবশ্য দেখেনি, আমার কাছে গল্প শুনেই....ও অবশ্য আমার ওই কাজিনটারও ভক্ত কিন্তু বিবাহিত জেনে আগ্রহটা কমে গেছে।....
লিসাকে বললাম আজ বিকেলে ভাইয়া বাসায় আসেছে তুই আসবি নাকি?
আমি?
হ্যাঁ
আমি না হয় এলাম তুই থাকবি?
ও তাইতো। তাহলে ভাইয়াকে না করে দেই।
শুক্রবারে বল না! একবার দেখা হওয়া উচিৎ! যদি তোর কথা সত্যি হয়...আমার গাল টিপে দেবে? হা হা হা...
লিসা আমাদের সাথে কথা বলার সময় মনে হয় ও একটা পুরুষ! ঠা ঠা হাসি, আর ছেলেদের সাথে কথা বলার সময় কেমন ন্যাকামু করে আদুরে ভঙ্গিতে... যত্তোসব।
আবার ভাইয়াকে ফোন দেই
আসবা?
দেখি, যদি কোনও প্রোগ্রাম না থাকে...
তারমানে 'না'
এখন আমার মনটা কে ভালো করে দিতে পারে?
কাকে আমি ফোন দেবো? কোথাওকি বেড়াতে যাবো? ড্রেসই পড়তে ইচ্ছেকরে না। এমন কেন হয়? সবারই কি হয় এমন?
মন ভালো হ, মন ভালো হ, মন ভালো হ...................
©somewhere in net ltd.