নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এসো সরল সোজা পথে যে পথ গিয়েছে জান্নাতের দিকে

এ জগতে মানুষ কারা

বিলাসী

সময় খুব কম, স্রষ্টাকে যেন ভুলে না যাই

বিলাসী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেমন হবে ভবিষ্যতের ওয়েব

২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৪১

এটাকে রীতিমত বলা যেতে পারে এক ধরনের অবিশ্বাস্য ঘটনা। মাত্র বিশ বছর আগে একজন বিজ্ঞানীর তথ্য বিনিময়ের প্রত্যাশার ভাসা ভাসা ধারণার ওপর ভিত্তি করে যে ওয়েব চালু হয়েছিল, এখন তা পরিণত হয়েছে দুনিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষমতাধর যোগাযোগ মাধ্যমে।

ওয়েবের এই প্রসার ঘটেছে কোনো বাঁধাধরা নিয়মকানুন ছাড়াই। সরকার কিংবা বিভিন্ন কমিটি আর কোম্পানির সামান্যই নির্দেশনা ছিল এর পেছনে।

এখন অবশ্য বিজ্ঞানীরা এই প্রবাদপ্রতিম যোগাযোগের মাধ্যম, ওয়েবের খুঁটিনাটি এবং ভবিষ্যতে কোন পথে ওয়েবের প্রসার ঘটবে তাও বোঝার চেষ্টা করছেন।

ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলীয় সাউদাম্পটনে ওয়েব সায়েন্স নামের এক নতুন বিজ্ঞানের স্থপতিরা বিভিন্ন সম্পর্কিত তথ্যের একটি নেটওয়ার্ক তৈরির নতুন ধরনের ওয়েবের কথা বলছেন, যে নেটওয়ার্ক নাকি আমরা কী করতে চাই ওয়েবে তা আরও ভালো বুঝতে পারবে।

সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটির দুই কম্পিউটার বিজ্ঞানী ওয়েন্ডি হল এবং নাইজেল শ্যাডবল্টের সঙ্গে মিলে ওয়েবের স্রষ্টা টিম বার্নার্স লি এই নতুন ধারণা উদ্ভাবন করেছেন।

ঠিক কী কী ধরনের নতুন ক্ষমতা দেবে এই নতুন ধরনের ওয়েব?

সে প্রশ্নের জবাবে সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞানী নাইজেল শ্যাডবল্ট বলছেন যে, এই ক্ষমতার মূল বিষয় হচ্ছে, ওয়েবে কোনো তথ্য খোঁজা বা সার্চ করার সুবিধা আরও বাড়বে, আরও সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাওয়া যাবে।

ট্রেনের সময়সূচি, কোন রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া উচিত, কোথায় সবচেয়ে ভালো দামে সবচেয়ে ভালো খাবার পাওয়া যাবে—এসব তথ্য সার্চ করলে পাতার পর পাতা তথ্য আসবে না বরং ওয়েবের সব তথ্য যাচাই করে একটা উত্তর আসবে। কাজেই ওয়েব শুধু ল্যাপটপেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং অন্যান্য মাধ্যমেও ওয়েবের সেবা মিলবে।

এই ধারণাটি হয়তো শুধুই কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের স্বপ্ন পূরণ করবে কিন্তু আমাদের জন্য নতুন ধরনের ওয়েব কি পার্থক্যের সূচনা করবে?

আসলে ওয়েবের এই উত্তরণের মাধ্যমে একে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্কে পরিণত করার প্রক্রিয়া কিন্তু শুরু হয়ে গেছে।

আর সে কারণেই পরিবর্তনটা সেভাবে চোখে পড়ছে না সাধারণ ব্যবহারকারীদের।

কম্পিউটার বিজ্ঞানী ওয়েন্ডি হল চান যেন ওয়েবের এমন উত্তরণ ঘটে, এবং তা যেন কম্পিউটারের ওপর নির্ভর না করে।

তিনি বলছেন, তার অবাক লাগে যে আমরা এখনও কিবোর্ডসহ নানা যন্ত্রপাতির ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে আছি। তার মনে হয় অ্যাপল এই বাঁধন ছিঁড়ে কিছুটা বেরিয়ে আসতে চাইছে এবং যেখানে মানুষের মুখের কথা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

ভবিষ্যতে ওয়েবে নানাভাবে ব্যবহৃত হবে তথ্য

তিনি মনে করছেন, যখন সবখানে কম্পিউটার থাকবে, যেদিকে তাকাব সেদিকেই সেন্সর থাকবে, যে কোনো জায়গা থেকে ইন্টারনেটে ঢোকা যাবে প্রায় কোনো যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই।

‘আমরা হয়তো চোখে কোনো কাচের চশমা বা তেমন কিছু পরে সেই ওয়েব দেখতে পাব। মোবাইল ওয়েবই তখন বহুল ব্যবহৃত হবে আর আমি সত্যি বিশ্বাস করি, আজকে আমরা ব্রাউজার যেভাবে চিনি সেটা হারিয়েই যাবে।

কিন্তু ওয়েবের ব্যবহার এতটাই ব্যাপক আমাদের প্রতিদিনকার জীবনে যে এর উপস্থিতির বিষয়টিতেই আর তেমন করে সচেতন নই আমরা। ওয়েন্ডি হল বলছেন, আমি বহু আগেই এ নিয়ে লিখেছিলাম। মানে আমি বলতাম, ওয়েব খুব শিগগিরই পর্দার অন্তরালে চলে যাবে।

তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে লোকে কীভাবে ওয়েব ব্যবহার করবে তার একটা আদর্শ উদাহরণ হচ্ছে আইফোন।

ওয়েন্ডি হল বলছেন, আইফোনেও কিন্তু ওয়েব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় কিন্তু আপনি সেটা বুঝতে পারেন না। আপনি শুধু ওই যল্কন্ত্রটাই খালি ব্যবহার করেন। ভবিষ্যতে এসব যন্ত্রেরও প্রয়োজন পড়বে না।

আশঙ্কার বিষয় হলো, যদিও আমরা আর সেভাবে টের পাব না কিন্তু ওয়েব তো থেকেই যাবে। বরং আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরও শক্তিশালী হবে এবং এর নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াইও নিশ্চিতভাবেই আরও জোরদার হবে।

শুধু কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা নন, শক্তিধর কর্পোরেশনগুলোও কাজ করছে এই নতুন ধারণার উন্নয়নে। একসময় যে মাইক্রোসফট ওয়েবের গুরুত্ব বুঝতেই দারুণ গড়িমসি করছিল, তারাই এখন গুগলের সঙ্গে ওয়েবে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নেমেছে।

ইন্টারনেট ভবিষ্যতে কীভাবে ব্যবহার হবে তার নমুনা অ্যাপেলের আইফোন

ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে মাইক্রোসফটের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগার রয়েছে। অ্যান্ড্রু হার্বার্ট মাইক্রোসফট ল্যাব চালান। তিনি বলছেন, ‘আমি ওয়েবকে দুটো অংশে ভাগ করে দেখি। ব্রাউজার—যার মাধ্যমে আমরা ওয়েব ব্যবহার করি এবং সেখানে থাকা বিভিন্ন কনটেম্লট আর অ্যাপলিকেশন পাই। আরেক অংশ হলো যারা আমাদের এসব কনটেম্লট আর অ্যাপলিকেশন সরবরাহ করে।’

মাইক্রোসফটের মি. হার্বাটের মতে, ব্রাউজিংয়ের অভিজ্ঞতায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। তিনি বলছেন, আগে ওয়েবে শুধু লেখা থাকত। এখন গান, ভিডিও, ডায়াগ্রাম সবই ঢুকে গেছে। আমাদের এখন যত রকমের যন্ত্রপাতি আছে, টাচ স্ক্রিনসহ সেখানে কিন্তু থ্রি ডি গ্রাফিক্সের মতো কম্পিউটার গেমিংয়ের প্রযুক্তিও ব্যবহৃত হয়।

তিনি বলছেন, অন্যদিকে এ ধরনের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের কথা বলছি। যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা সব তথ্য এবং অ্যাপলিকেশন পাব ওয়েবের মাধ্যমে।

মি. হার্বার্টের মতে, কীভাবে আমরা ওই ক্লাউডের ভেতরে বড় তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলব, কীভাবে সেসব তথ্য পাওয়া যাবে সেগুলো বের করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। একভাবে বলা যেতে পারে যে, ওয়েব নিজেই এখন বিরাট একটা কম্পিউটারে পরিণত হচ্ছে।

একটা বিষয় পরিষ্কার—ওয়েবের ভবিষ্যত্ হচ্ছে মোবাইল। অন্তত গুগল সেটাই বিশ্বাস করছে। গুগলের প্রধান এরিক স্মিডট বলছেন, ‘খুব মৌলিক একটা পরিবর্তন আসছে। ফোন আর শুধু ফোন নয়, ফোন পরিণত হয়েছে এক অভিন্ন সত্তায়।’

মি. স্মিডট বলছেন, ‘ফোন এখন আর আপনি শুধু ব্যবহারই করেন না, আপনি যা যা করেন তার সঙ্গেই অপরিহার্য হয়ে পড়েছে ফোন। আমাদের মতো হয়তো তেমন চিন্তা করতে পারে না ফোন, কিন্তু এর স্মৃতিশক্তি আমাদের চেয়ে ভালো।’

মোবাইলকেই ভবিষ্যতের পথ হিসেবে দেখছে গুগল। এরিক স্মিডট বলছেন, ‘আমরা ঠিক কোথায় আছি তা ধারণা করতে পারে ফোন, ছবি তুলতে পারে। কাজেই নতুন যুগে মোবাইলই হবে প্রথম কথা।

এম. হারুন আর রশিদ সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.