নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পার্বত্যনিউজ/parbattanews.com

সম্পর্ককে খুব গুরুত্ব দিই।

পার্বত্যিনউজ

সব সময় সৎ থাকতে চেষ্টা করি, সৎ চিন্তুা করি, অন্যের উপকার করতে চাই নিজের ক্ষতি করে হলেও। সম্পর্ককে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

পার্বত্যিনউজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শান্তির জন্য খালেদা জিয়ার প্রচেষ্টা মূল্যায়িত হয়নি

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৭





মেহেদী হাসান পলাশ

দেশের গণতন্ত্র রক্ষায়, সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, জনগনের জান মালের নিরাপত্তা রক্ষায়, আইন শৃঙ্খলার অবনতি রক্ষায়, সর্বোপরি দেশের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি যেন না হয় তার জন্য শান্তির সকল পথে হেঁটেছেন বেগম খালেদা জিয়া। সঙ্গীহীন হয়েও একা হেঁটেছেন। অনেকে একে তাঁর দূর্বলতা, অক্ষমতা, আপোষকামিতা বলে নিন্দা-বিদ্রুপ করেছে কিন্তু শান্তির পথে তিনি অবিচল থেকেছেন। শান্তি চেয়ে অশান্তির কাঁটা পেয়েছেন, সহযোগিতা দিয়ে অসহযোগিতার আঘাত সয়েছেন, মিত্রতা দিতে গিয়ে শত্রুতার তীরে বিদ্ধ হয়েছেন কিন্তু থেমে জাননি ।



নবম জাতীয় সংসদের শুরু থেকেই বারবার তিনি বলেছেন, এ সরকারকে আমরা সহযোগিতা করতে চাই। শুধু মুখে বলেননি। কাজেও বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন।কিন্তু শত্রুতার কাঁটা ছাড়া বন্ধুত্বের ফুল তাঁর দিকে কেউ এগিয়ে দেয়নি। শহীদ স্বামীর উপর, অসুস্থ সন্তানের উপর, পরিবারের উপর, এমনকি তার নিজের উপর একের পর এক আঘাত যারা করেছেন তাদেরকেও তিনি সহযোগিতা দিতে চেয়েছেন। শহীদ স্বামীর স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে অপমানজনকভাবে বের করে দেয়ার পরও তিনি সহযোগিতার কথা বলেছেন, হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সে হাত ধরেনি অন্য পক্ষে।



২০০৮ সালের নির্বাচন কিভাবে হয়েছে, তিনি জানতেন। তবুও সেসব মেনে সহযোগিতার কথা বলেছেন। ৫টি বছর নিজের উপর পরিবারের উপর, দলের উপর একের পর এক জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন সয়েও সহযোগিতার কথা বলে কোনো কঠোর কর্মসূচী দেননি। নেতাকর্মীদের চাপের মুখে ঈদের পরে, রোজার পরে, শীতের পরে, গরমের পরে, বন্যার পরে, পরীক্ষার পরে কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে বললেও এমন কোনো কর্মসূচী দেননি যাতে গণতন্ত্র ব্যহত হয়।

উষ্কানী অনেক ছিল। দেশের ভেতর-বাইর সবখান থেকেই উষ্কানী ছিল, মাঠ গরম করার। খালেদা জিয়া মাঠ গরম করলেই, পানি ঘোলা করলেই শিকারীরা শিকারে নেমে পড়তেন শিকারে। কিন্তু খালেদা জিয়া তাদের নূন্যতম সুযোগ করে দেননি। তার ও তার পরিবারের উপর চরম আঘাত আসা সত্ত্বেও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এক মুহুর্তের জন্যও ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পায়, গণতন্ত্র ব্যহত হয় এমন কেনো কর্মসূচী তিনি দেননি। সে কারণেই বর্তমান সরকার নির্বিঘ্নে ৫ বছরের মেয়াদ শেষ করতে পেরেছে। কেউ স্বীকার করুক আর না করুক, ইতিহাসে একদিন লেখা থাকবে এর বড় কৃতিত্ব বেগম খালেদা জিয়ার। এজন্য তাকে অনেক কটু কথা সইতে হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীদের দিকে থেকে, এমনকি যাদের জন্য এই ত্যাগ করলেন সেই সরকারের দিক থেকেও। তারাও বিএনপি ও খালেদা জিয়ার কর্মসূচিকে নরম, দূর্বল বলে বিএনপি’র আন্দোলনের সক্ষমতা নিয়ে উপহাস-বিদ্রুপ করেছেন। খালেদা জিয়া সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করেননি। শান্তির নিজপথে অবিচল থেকেছেন।



শুধু বর্তমান সরকারের আমলে কেন- অতীতেও বহুবার তিনি প্রমাণ দিয়েছেন তার পথ শান্তির পথ।আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত তাঁর শহীদ স্বামীর নামে অশ্লীল ও অশ্রাব্য ভাষায় বিরামহীন গালিগালাজ করা হলেও তিনি আজ পর্যন্ত মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানকে একটি কটু কথাও বলেননি। শেখ হাসিনা জিয়ার মাজারে যাবার ভ্রাম্যমান সেতু সরিয়ে নিলেও উল্টো খালেদা জিয়া ও তাঁর পুত্র শেখ মুজিবের কবর জিয়ারত করে এসেছেন। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর আহত শেখ হাসিনাকে তিনি দেখতে যেতে চেয়েছেন। কিন্তু শেখ হাসিনা নেতাকর্মী দিয়ে সুধা ভবন ঘেরাও করে রেখেছে যাতে খালেদা জিয়া সেখানে না পৌঁছাতে পারেন।প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয় স্ত্রীকে নিয়ে দেশে এলে তাকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানিয়ে পাঠানো বিএনপি’র পুস্পস্তবক বাহক সুধা ভবনের সামনে অপমানিত হওয়া সত্ত্বেও সস্ত্রীক জয়ের রংপুর যাওয়ার পথে বগুড়া জেলা বিএনপির দেয়া শুভেচ্ছার ফুল রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে গেছেন জয়।



১/১১ এর পর দুই-দুই বার মাইনাস টু পরিকল্পনা মেনে আওয়ামী লীগ নেত্রী যখন দেশ ছেড়ে চলে গেছেন তখন বিএনপি নেত্রী দেশের বাইরে তার কোনো ঠিকানা নেই বলে দেশেই মরার ইচ্ছা প্রকাশ করে থেকে গেছেন। ফলে সেই সরকার কর্তৃক দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও ব্যালেন্সের সূত্রে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার সুযোগ পান। ১/১১ এর নটরাজদের এক্সিট প্লান প্রথমে বেগম খালেদা জিয়া কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওযার পরই সে পরিকল্পনা শেখ হাসিনার হাতে পৌঁছায়- যার সূত্র ধরে তিনি দ্বিতীয় বারের মতো ৫ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী।

বর্তমান সঙ্কটের মূল কারণ আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হওয়া না হওয়া নিয়ে। এ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব অবিশ্বাস নিয়ে জাতীয় রাজনীতি এক অনিশ্চিত অন্ধকার গহ্বরে নিপতিত। এ অন্ধকারের গহ্বর থেকে মুক্তি পেতে শান্তিপ্রিয় দেশবাসী, সচেতনমহল সরকারকে বিরোধী দলগুলোর সাথে আলোচনা ও সংলাপ শুরু করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসছেন। ক্ষমতাসীন হিসাবে এই সংলাপ শুরু করার দায়টা সরকারের উপরই বর্তায়। কিন্তু সরকার সে দাবী গ্রাহ্য করেনি। সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিরোধী দলে থেকে খালেদাজিয়াই সরকারকে সংলাপের চিঠি পাঠালেন। পরিবেশ তৈরীর জন্য তার আগে সংবাদ সম্মেলন করে বললেন, তাঁর ও তাঁর পরিবারের উপর যারা নানাভাবে আঘাত করেছে তাদের তিনি ক্ষমা করে দিলেন, যদি ক্ষমতায় যান তাহলেও এর কোনো প্রতিশোধ তিনি নেবেন না। বিরোধীদলের এ চিঠির পর সংলাপ শুরু করার জন্য সরকারের হাতে মোক্ষম সুযোগ আসলেও সরকার তা গ্রহণ তো করেইনি উল্টো তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। এরপরও জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান- ‘সংসদে গিয়ে কোনো প্রস্তাব থাকলে দিন’ অনুসরণ করে খালেদা জিয়া তার দলকে সংসদে পাঠালেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘণিষ্ঠজন ও তাঁর দলের অন্যতম শীর্ষনেতা শহীদ জিয়ার উপর অশ্লীল বক্তব্য দিয়ে বিএনপিকে সংসদের বাইরে ঠেলে পাঠালো। প্রধানমন্ত্রী কোথাও বলেননি তিনি খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করবেন। কিন্তু সংবাদপত্রে প্রকাশিত এ ধরণের খবরকে বিশ্বাস করে খালেদা জিয়া তার বাসার টেলিফোনের কাছে একজন লোক বসিয়ে রেখেছেন যাতে প্রধানমন্ত্রীর ফোন মিস না হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সে ফোন আসেনি। অপেক্ষায় আছেন খালেদা জিয়া। এ কথা তিনি নিজে জানিয়েছেন এমপিদের বৈঠকে। অর্থাৎ দেশে শান্তি বজায় রাখার নূন্যতম সুযোগটিও হারাতে চান না তিনি।



এমনকি ২৫ অক্টোবরে খালেদা জিয়ার আহ্বানে সারা দেশে ১৮ দলীয় জোট নেতারা ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে রাস্তায় নেমে আসলেও খালেদা জিয়া কোনো ধরণের ধংসাত্মক কর্মসূচী ঘোষণা করেননি। শুধু মাত্র মুখরক্ষার জন্য শর্তসাপেক্ষ হরতাল ডেকেছেন। কারণ তিনি শান্তি চান।



সমালোচকদের জন্য একটি কথা বলা জরুরী। আন্দোলন থেকে খালেদা জিয়াকে সরিয়ে আনতে হাসিনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের গেম খেলেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই খেলাতে সরকারকে ৫-০ গোলে পরাজিত করেছেন। এজন্য তাকে একটি ফাউল করতে হয়নি, কোনো লাল কার্ড, হলুদ কার্ড দেখতে হয়নি। হাসিনার অফসাইড ট্রাপ ভেঙ্গে ৫-০ গোলে জিতেছিলেন তিনি। কাজেই আজকে যারা তাকে ফাউল খেলার জন্য উষ্কানী দিচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করার অবকাশ রয়েছে। মাঠে এখন পাকা ধান। শান্তিপূর্ণভাবে সে ধান কেটে গোলায় ভরায় এখন গৃহস্তের মূল লক্ষ্য। এখন নিড়ানী দেয়া, মই দেয়া বা সেই মাঠে রেসলিং করলে ধান শুধু ঝরে মাঠেই পড়ে যাবে, গোলায় ভরবে না। রেসলিং খেলার সময় পার হয়ে গেছে। বরং সরকার যদি রেসলিং খেলার দায়ে ধান কাটার কৃষকদের নামে মামলা দিয়ে জেলে ভরে তাহলে ধান কাটবে কে? কে করবে নির্বাচন- যদি ৩০০ আসনে বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীরা মামলা খেয়ে কনভিক্টেড হয়ে যায়? আমরা শুধু আমাদের জানা তথ্যের উপর বিশ্লেষণ করেই সমালোচনা করছি। খালেদা জিয়ার তথ্য আমরা জানিনা। তার পরিকল্পনা আমরা জানিনা। তার শক্তি আমরা জানিনা। মল্লযোদ্ধারা কেন আর্টিলারী যুদ্ধ করছে না এমন সমালোচনা সহজ, যুদ্ধ নয়। খালেদা জিয়া তার শক্তি ও তথ্য সম্পর্কে আমাদের থেকে বেশী অবগত। ক্ষমতায় যাওয়ায় দায়ও আমাদের থেকে তার বেশী। কাজেই আমাদের তার তথ্য ও পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাদের আস্থা রাখতে হবে। আর একথাও মনে রাখা জরুরী যে, বিশ্বের আর কোথাও না হলেও বাংলাদেশে বারাক ওবামা মনোমোহন সিং এর বাসায় হপ্তে দিয়ে পড়ে থাকে। সেই প্রেক্ষিতে শান্তির পথ ছাড়া খালেদা জিয়ার সামনে কোনো বিকল্প আছে কি?



তাই শান্তির প্রতি খালেদা জিয়ার এই আকুতি, দেশের গণতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলার অবনতি রোধ করা ও গণতন্ত্র রক্ষায় খালেদা জিয়ার এই আগ্রহ, আন্তরিকতা, ঐকান্তিকতার কোনো সদুত্তর, মূল্যায়ন তিনি পাননি।

তাই আজ একথা বলার সময় এসেছে, খালেদা জিয়ার দিক থেকে এতকিছু করার পরও যদি কোনো কারণে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরী হয়, গণতন্ত্র ব্যহত হয়, আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- তাহলে এর দায় সরকারের, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৪

বেকার যুবক বলেছেন: দেশে ব্রিটিশ আছে, মারাঠা আছে, আছে মীর নিযাম আলীরা, কিন্তু শেরে মহীশুরের দেখা পাওয়া ভার।

খালেদা জিয়া হয়তো ব্যক্তিগতভাবে দেশের কল্যাণ চান, কিন্তু তার সাথে রয়েছে এমন অসংখ্য সুযোগসন্ধানী যাদের সাথে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের কোন পার্থক্য নেই। সঠিক নেতা, আর নেতৃত্ব এখন সময়ের দাবি।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

পার্বত্যিনউজ বলেছেন: সেই নেতা হতে পারে তারেক রহমান।

২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৭

মো: ওমর ফারুক বলেছেন: ভাই চমতকার একটা লেখা। একবারে মনের কথা গুলা বলেছেন ভাই।

অসংখ ধন্যবাদ। আগামী দিনে বেগম জিয়ার নেত্রিত্তে জাতীয়তাবাদী শক্তির জয় হবে ইনশাল্লাহ

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

পার্বত্যিনউজ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.