নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিব্রাজক

পরিব্রাজক।

মানুষ হবার চেষ্টায় অবিরত ...

পরিব্রাজক। › বিস্তারিত পোস্টঃ

কী দ্যাখতে যাও কক্সবাজার

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৯

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার , সীমাহীন সমুদ্র সৌন্দর্যের ধারক কক্সবাজার, লাখো পর্যটকের হৃদয়ের বীণায় বান ডাকা বালুকা বেলার কক্সবাজার , এক পাশে পাহাড় আর এক পাশে বালির কক্সবাজার, চোখ জুড়ানো সবুজের সম্ভার এর কক্সবাজার, আমাদের ভালোবাসার আনন্দ আর আশার কক্সবাজার , বুক ভরে নি:শ্বাস নেবার কক্সবাজার , নানান জাতের ধারক আর নানান রুপের বাহক কক্সবাজার ।





কক্সবাজারে পর্যটক আসছে , দেশ এবং বিদেশ উভয় জায়গা থেকেই, সমানভাবে। পর্যটকদের এ ভীড় কে আরও ভারী করেছিল কক্সবাজারের নুতন সপ্তার্শ্চার্যে জায়গা পাওয়া । দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে যে কোন সময়েই কক্সবাজার আসা যাচ্ছে । ঢাকা থেকে রাতের গাড়ীতে চড়লে সকালেই পৌছানো যাচ্ছে কক্সবাজার। কিন্তু কক্সবাজার এর যোগাযোগ সম্পর্কে আমরা ধীরাজ ভট্রাচার্যের ‘যখন আমি পুলিশ ছিলাম’ গ্রন্থ থেকে জানতে পাই তখনও মানুষ কক্সবাজার আসত, বায়ু বদলের জন্য তখনও কক্সবাজার বিখ্যাত ছিল । কিন্তু তখন কক্সবাজার আসতে হত চট্রগ্রাম থেকে জাহাজে চড়ে । জাহাজটি বছরের ছয় মাস চলত সপ্তাহে দুই দিন করে, চট্্রগ্রাম ছাড়ত সকালে আর কক্স্রবাজার পৌছাত পরদিন সকালে । আবার তখন কক্সবাজার থেকে ছেড়ে তারও পরদিন পৌছত টেকনাফ । অথচ সেই কক্সবাজার এবং টেকনাফ আজ সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায়, কক্সবাজার কে রেলের আওতায় আনার চিন্তা ভাবনাও শুরু হয়েছে জোড়োশোরে। এক দশক পূর্বের কক্সবাজারকে এই সময়ের কক্সবাজার এর সাথে মেলাতে গেলে খেই হারাতে হবে সবাইকে । আর পরিবর্তনের এই জোয়ার শুরু হয়েছে বিগত এক দশক ধরেই কিন্তু সুনামিটা শুরু হয়েছে গত দু চার বছরে বলা চলে , বিশেষ করে কক্সবাজার নিউ সেভেন ওয়ান্ডারর্স এ জায়গা পাবার পর থেকে। কক্সবাজার নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স থেকে ছিটকে পড়লেও পর্যটকদের যে জোয়ার এখানে নেমেছে তা অব্যহত আছে আগের মতই। নি:সন্দেহে এটি আশার কথা, আনন্দের ও বটে ।





কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার মূল সৈকত, হিমছড়ি , ইনানি, কক্স্রবাজারের বৌদ্ধ মন্দির, বার্মিজ মার্কেট, শুটকি মার্কেট ইত্যাদি । এগুলো ছাড়াও কক্সবাজার এর আশে পাশে মহেশখালী ও রামুতেও রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এগুলোর বাইরে কক্সবাজার এ রয়েছে মেরিন ড্রাইভ ; কক্সবাজার এর অন্যতম আকর্ষন । একপাশে পাহাড় আর এক পাশে সাগরের এমন যৌথ সৌন্দর্য প্রতিযোগীতা শুধুমাত্র কক্সবাজারেই সম্ভব । কক্্রবাজারে বেড়াতে এসে মেরিন ড্রাইভ ধরে হিমছড়ি কিংবা ইনানি সৈকতে খোলা জিপে কিংবা সূর্য ছাদ খুলে দিয়ে অথবা রিকশা কিংবা টমটমে যে একবার গিয়েছে সে নি:সন্দেহে প্রেমে পড়েছে এই পথের । এ পথের মায়া তাকে বার বার হাতছানি দিয়ে ডাকে ফিরে যাবার পরও। এ পথই পথিক কে ফিরিয়ে নিয়ে আসে বার বার । দিনের শেষে পশ্চিমাকাশে সূর্যদেব সাতরঙ ছড়িয়ে , পাহাড় আর বালুর বুকে অন্য আলোর এক স্পর্শ মেখে দিয়ে, পথিকের বুকের মধ্যের একেবারে গভীরের সূক্ষ অংশে এক অব্যক্ত হাহাকার তুলে সাগর কন্যার বুকে সমর্পনের দৃশ্য এ সড়কের যে কোন অংশে দাড়িয়ে অবলোকন অনন্য আনন্দের। এক পাশে সবুজ পাহাড় আর এক পাশে সফেন সমুদ্রের সীমাহীন জলরাশি, একপাশে পাহাড়ি ঝরনার ঝর ঝর ধারা আর অন্যপাশে ঝাউয়ের সম্মিলিত সঙ্গীত , একপাশে সুপারি আর এক পাশে নারিকেলের বাগান, একপাশে বিস্তৃত বালুকাবেলা আর অন্য পাশে সারিবদ্ধ পাহাড়ের দেয়াল । না সামান্য কিছু জায়গাজুড়ে এর বিস্তৃতি নয়, কয়েকশ ফিট ও নয়, কয়েক মাইল বা কিলোমিটারও নয়; এমন অপার সৌন্দর্যের বিস্তৃতি একশত বিশ কিলোমিটারেরও বেশী দৈর্ঘ্য জুড়ে । প্রান জুড়ানো এমন অসহ্য সৌন্দর্যের ছড়াছড়ি পর্যটকের মনে উথলে দেয়-আহা কী করি , কী করি । এমনই অপার সৌন্দর্যের অধিকারীনি এই অবলা বাংলাদেশ , এই্ কক্্রবাজার।





মেরিন ড্রাইভের গন্তব্য টেকনাফ, আর সম্পন্ন হয়েছে ইনানী পর্যন্ত। ইনানী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ‘মেরিন’ রাস্তার কাজ করছে সেনাবাহীনির ১৭ তম ইসিবি কোর । মূলত কক্্রবাজার থেকে ইনানী তথা পুরো রাস্তার পুরোধা তারাই। মজার বিষয় হচ্ছে ইনানী থেকে মেরিন ড্রাইভের পাশাপাশি একই সমান্তরালে এল.জি.ই.ডি তাদের তত্ত্বাবধানে নির্মান করছে আরেকটি সড়ক। এ সড়কের কাজ প্রায় সম্পন্ন। নি:সন্দেহে সড়ক উন্নয়নের জোয়ার কে প্রবেশ করানোর অন্যতম মাধ্যম, দেশের অগনিত গ্রাম একটি সড়কের প্রত্যাশা করে প্রতিনিয়তই , একটি সড়কের জন্য হাহাকারও আছে দেশের অসংখ্য গ্রামের । কিন্তু তাদের হাহাকার, তাদের প্রয়োজন মেটানের আয়োজন নি:প্রয়োজন । অথচ খুব কাছাকাছি , এত পাশাপাশি দু’টি সড়কের সম্ভাবনা আমাদের কিছুটা শঙ্কিত করলেও তাদের কাছে নিশ্চয়ই ভিন্ন কিছু অঙ্কিত আছে । অবশ্য এক সড়কের তুলনায় দু সড়ক হওয়াতে সাগর আর পাহাড়ের দেয়ালের মাঝের সামান্য সমতলটুকু বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে সাইক্লোন বেগে আর সড়ক সম্পন্ন না হলেও বিভিন্ন ডেভলপার কিংবা সমজদার সমাজের কাছে সকল সমতল বিক্রি সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে। কাঁটাতারের বেড়া , কিংবা ইটের দেয়ালের মাঝের সাইনবোর্ডগুলো সে কথাই বলছে । সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে কিংবা পরিকল্পনা করছে প্রবৃদ্ধির , উর্দ্ধ উন্নয়নের ।





এই সড়ক দুটি যে সব ইউনিয়ন অতিক্রম করেছে তার মধ্যে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা গ্রামটির সৌন্দর্য সীমাহীন করেছে এখানকার বিস্তৃত বহুবর্ষী গর্জন বনটি। গর্জনের সাথে সাথে রয়েছে জংলী ঝোপ ঝাড় । পাহাড়ের পাদদেশের বনটির মধ্যে প্রবেশ মাত্র প্রত্যেকের মাঝেই প্রবেশ করবে এক প্রাগঔতিহাসিক প্রচ্ছন্নতা। হাজার টিয়া, ময়না আর বিচিত্র পাখির সম্মিলিত সঙ্গীত, পাহাড় শ্রেনীর একটু গভীরে প্রবেশ করলে এবং কপাল ভাল হলে কখনও কখন দু একটি বন মোরগ কিংবা হরিনের দেখা, অথবা বন্য হাতিদের সাথে আপনার হর্ষ ধ্বনি একাকার হয়ে যাবে। কেউ কেউ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়লেও তাকে বকা দেয়া বাতুলতা মাত্র। প্রকৃতির এমন অপার সৌন্দর্যের বুক চিড়ে এলজিইডির সড়কটি একেবেকে চলে গেছে টেকনাফ পর্যন্ত । আর এই পুরো সড়কের এবং মেরিন সড়কের ইনানী পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়তই শুটিং চলে নানান সিনেমা, নাটক আর বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের । সেও পর্যটকদের জন্য বিনোদনের এক ভিন্ন মাধ্যম।





এই সড়কের আরও একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য এটি আষাঢ়ে এক অনুপম রুপ ধারন করে । আষাঢ়ে কক্্রবাজারের রুপ পুরোপুরি পরিবর্তিত । আষাঢ় কক্্রবাজারকে দেয় এক ভিন্ন মাত্রা । ফুসে ওঠা সাগরের গর্জন, বালুকাবেলায় আর মেরিন ড্রাইভের যে অংশ নিয়ে সেনাবাহিনীর সাথে আষাঢ়ের সমুদ্রের সম্মুখ সমর হয় ; যে অংশে সেনাবাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে কংক্রিট ব্লক ফেলে; সে ব্লকের উপর সাগরকন্যার তীব্র আক্রোশ, অসংখ্য পাহাড়ি আষাঢ়ি ঝরনা, চকচকে সবুজ পত্র পল্লবে ছাওয়া পাহাড়েরর সারি, মেঘ পাহাড়ের লুকোচুরি , হিমছড়ি পাহড়ের উপর থেকে বিস্তৃত সাগরের বুকে তুষারের ন্যায় বৃষ্টির দৃশ্য আর সবুজ জঙ্গলে ঢাকা পাহড়ের নৈ:শব্দ হাহাকার, ইনানির পাথুরে সৈকতে বৃষ্টির খেলা , রুপালী জোসনার রাতে চকচলে বালুকাবেলায় দুষ্ট মিষ্টি বাতাসের হররা, ঝর ঝর আষাঢ়ের পথের প্রান্তে কিছু কিছু আষাঢ়ি ফুলের আলতো হাসি, এ সব কিছুই পথিকের প্রকোষ্ঠো বাজায় পরিণয়ের বাঁশি । আষাঢ়ে কক্্রবাজার পূর্ণ যৌবনা, উপচে পড়া উদ্ধত আনন্দে উতলা । আষাঢ়ের কক্্রবাজার ও পর্যটক আনছে , টানছে । মূলত কক্্রবাজার প্রতি ঋতুতেই রুপ ধারন করছে রুপসীর ন্যায়, প্রকৃতির পরিবর্তনের সাথে সাথেই কক্্রবাজার বদলায়, বদলায় তার পোশাক, তার মেজাজ তার মর্জি তার রুপের ডালি।





কক্্রবাজার থেকে ইনানি পর্যন্ত মেরিন সড়ক আর ইনানি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় সম্পন্ন এলজিইডির সড়ক দুটোর মধ্যে একটি সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে যেটি একটু লক্ষ্য করলেই চোখে পড়বে সবার । কক্্রবাজার থেকে ইনানি পর্যন্ত মেরিন সড়কের সাথী পাহাড় গুলো কেমন যেন শ্রীহীন, ছাড়া ছাড়া অন্যদিকে ইনানি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত এলজিইডি সড়কের সাথী পাহাড়গুলো অনেক সবুজ আর প্রাকৃতিক ঝোপ জঙ্গলে ঢাকা । সেই সাথে সাথে রয়েছে প্রানী বৈচিত্রের ও বৈষম্য। আর এগুলোর কারনও ওই সড়ক। কক্্রবাজার থেকে ইনানি সড়কটির বয়স অনেকগুলো বছর অতিক্রম করেছে আর সে বছরগুলোর সাথে সাথে তার সাথী পাহাড়গুলোও হারিয়েছে তাদের শ্রী ও সম্পদ । যেগুলো ওই সড়ক পথেই নিয়ে গেছে মানুষেরা । বৃদ্ধ এবং কাগজ সে কথাই বলে । আর তাইতো সকলের ভয় ইনানি থেকে টেকনাফ এলজিইডি সড়কের সাথী ও পরিপার্শ্বও তাদেও শ্রী ও সম্পদ হারাবে অচিরেই । যেটি হয়তো বা পরিবাহিত হবে ওই সড়ক ধরেই ।





কক্্রবাজারে পর্যটকদের জোয়ারের সাথে সাথে আরেকটি জোয়ার শুরু হয়েছে । সেটি হচ্ছে উন্নয়নের জোয়ার । এই জোয়ারটিও মূলত সুনামিতে পরিনত হয়েছে ওই সেভেন ওয়ান্ডার্স এ জায়গা পাবার পর। কক্্রবাজার শহর বাড়ছে ; বাড়ছে ডানে , বাড়ছে বামে , বাড়ছে সামনে, বাড়ছে পেছনে, বাড়ছে উপরে। এই বৃদ্ধির পেছনে যারা মূখ্য ভূমিকা পালন করছে তারা হচ্ছে এদেশ কে উপরের দিকে নিয়ে যাওয়া কারিগররা , তারা এ দেশের নব্য শক্তিধর গোষ্ঠি , যাদেরকে আমরা বলছি ‘ডেভলপার’ । দেশের নামি বেনামী অধিকাংশ ডেভলপাররা এখন ছুটোছুটি করছে কক্্রবাজারে, তারা প্রাণ পন চেষ্টা করছে কক্্রবাজার কে বাড়ানোর কাজে তাদের সামান্য অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে । আর এ কারণে কক্্রবাজারের জমির দামও বেড়েছে বাড়াবাড়ি রকমের। বিশেষ করে কক্্রবাজারের কলাতলীর জমি এখন স্কয়ার ফিট হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বললে অত্যুক্তি হবে না । কলাতলীর একমাত্র বৃদ্ধি এখন উর্দ্ধমুখী ।





বৃদ্ধি নি:সন্দেহে আনন্দের । কিন্তু এই বৃদ্ধি বা বাড়াটা যদি বাড়াবাড়ি রকমের হয় তখন তো কিছুটা ভয়ই হয় । পরিকল্পনা আর নিয়ন্ত্রনহীন বাড়াবাড়ির ফলটাও যে খুব একটা সুখকর নয় তা আমাদের আজানা নয়। ঢাকা শহর বাড়তে বাড়তে এখন ইট পাথরের স্তুপে পরিনত হয়েছে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও ঢাকা শহরকে ইট পাথরের বস্তির সাথে তুলনা করেছেন । ঢাকা আজ প্রায় বসবাস অযোগ্য শহরে পরিনত হয়েছে। এই বসবাস অযোগ্য ইট পাথরের স্তুপ থেকে বুক ভরে নি:শ্বাস নেবার জন্য মানুষ ছুটে আসবে প্রকৃতির কাছে, আসে কক্্রবাজারে । কিন্তু কক্্রবাজারও যে ইট পাথরের বস্তিতে পরিনত হতে চলছে । চিংড়ির হ্যাচারী আর ইট পাথরের স্তুপ পাহাড়ের উপরে , কোথাও কোথাও একেবারে সাগরের পাড়ে, একেবারে বালুকাবেলায় গিয়ে ঠেকেছে । অযোগ্য শহরের থেকে পালিয়ে এত দূরে এসেও মানুষ কী ইট পাথরের হাত থেকে মুক্তি পাবে ? গায়ে গায়ে , পায়ে পায়ে গড়ে উঠছে ভবন, ভবনগুলো নিজেরা নি:শ্বাস নিতে পারবে কী না সন্দেহ, আর তার অতিথিরা যে কি করবে তা বলাই বাহুল্য। কলাতলীতে ড্রেন করার জায়গাটুকু ও নেই, আর পয়:নিষ্কাশনের কী হবে সে ভাবনাও কারও নেই , অবশ্য তার প্রয়োজন উর্দ্ধ উন্নয়নকারীরা ভাবছেন বলেও মনে হচ্ছে না। নিচের দিকে তাকানোর সময় কোথায়, উপরের দিকে উঠে স্কয়ার ফিটের হিসেব নিয়েই তারা ব্যস্ত আছেন । বাহারি বিজ্ঞাপন আর লোভনীয় প্রস্তাবের প্রস্তুতিতে সময় কাটছে সবার । অবশ্য দেশটা যেহেতু শুধুমাত্র সরকারের এবং এসব দেখার জন্য বা এসব ভাবনা যেহেতু একমাত্র সরকারেরই তাই সবাই সেদিকেই তাকিয়ে আছেন বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু তারাও কতটা কী করতে পারছেন বা পারবেন সেটিই দেখার বিষয়।





অনেক কিছু বলেও যেন কক্্রবাজারের সৌন্দর্যের কিংবা বর্তমান অবস্থার বর্ননাটা দেয়া গেল না । আসলে প্রকৃতির এমন সীমাহীন সৌন্দর্যের বর্ননা , ভাষা দিয়ে তার রুপের একটা রুপকল্প দাড় করানো , কিংবা ক্যামেরার ফ্রেমে এই সৌন্দর্যকে বন্দী করা অসম্ভব । অসহ্য সৌন্দর্যের সামনে দাড়িয়ে বাকরুদ্ধ হওয়াই এ সৌন্দর্যকে অনুভব করার একমাত্র উপায় । আর মানুষ সৌন্দর্যের পূজারী, তাইতো মানুষ ছুটে আসে এখানে , এসেছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু আমরা যদি এ সৌন্দর্যের বুকে ছুড়ি চালাই , যদি ভয়ংকর দানবের মত তছনছ করে দেই এই সাজানো বাগানকে ; যদি পুরো কক্্রবাজারকে, পুরো সৈকত সড়কের দু’পাশ , পুরো বালুকাবেলা , পুরো পাহাড় সারি ইট পাথরের স্তুপ দিয়ে ঢেকে দেই; যদি এই সীমাহীন সৌন্দর্যের সমুদ্রকে কে ইট পাথরের বস্তিতে পরিণত করি , তাহলে বুক ভরে নি:শ্বাস নেবার জন্য আমরা কোথায় যাব, মানুষ কী দেখতে যাবে কক্্রবাজার ? আমরা যদি এই অনন্য সৌন্দর্য কে লালন করতে না পারি , আমরা যদি প্রকৃতির এ অপার দান কে অবহেলা করি তাহলে প্রকৃতিও কিন্তু আমাদের ক্ষমা করবে না , আর মানুষ হিসেবে সেটি হবে আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.