![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব ছোটবেলার অনেক ঘটনাও অনেক সময় কারও কারও মনে থাকে । সেরকমই একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে । আমি তখন অনেক ছোট । স্কুলেও ভর্তি হইনি । একদিন বিকালে বাসার সামনে খেলা করার সময় আমারই সমবয়সী একটা ছেলের চোখে একটা চশমা দেখি । কালো সানগ্লাস । ভালো লেগে যায় অনেক । সন্ধ্যার আগে দিয়ে বাসায় ফিরেই মা'র কাছে আবদার করি আমাকে ওরকম একটা চশমা কিনে দেবার জন্যে । যথারীতি বকা জুটে,তবে আমি দমে যাই না । নাকি নাকি সুরে ঘ্যানঘ্যান করতেই থাকি এবং শেষে কাঁদতে কাঁদতেই ঘুমিয়ে পড়ি,না খেয়েই । তখনো বাবা বাসায় ফেরেনি । তখন মোবাইল নামে কিছু আছে এটাই আমরা জানতাম না,সুতরাং মা ফোন করে বাবাকে কিছু বলবে এটা সম্ভব ছিল না । রাতে আনুমানিক দশটার দিকে বাবা বাসায় ফিরে আমাকে খেতে ডাকে । আমি মা'র দিকে রাগী রাগী চোখে তাকিয়ে ঢুলুঢুলু চোখে খেয়ে নিই চুপচাপ,মূলত বাবার ভয়েই । তারপর আবার বিছানায় চলে যাই । তখন আমার বয়স চার এবং আমি তখনও বাবাকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমাই । সেদিনও বাবা আমার পাশে শুয়ে আমাকে বলে দেখ তো তোমার বালিশের নিচে টর্চলাইট টা রেখেছি কিনা ।আমি বালিশের নিচে হাত দিয়ে চমকে উঠি । আমার চশমা !!! আমার নিজের চশমা এটা !!! বিশ্বাসই হতে চাই না । কিভাবে সম্ভব হল এটা ? বাবা বুঝল কিভাবে আমার চশমা লাগব ?বাবাকে জিঞ্জেস করলেও বলেনা,খালি খুনসুটা করে ।
সেদিন না বুঝলেও আজ বুঝি যে বাবা আসলে ঐদিন বাসায় ফিরে মায়ের মুখে সব শুনে আবার বাইরে বের হয় আমার চশমা কিনতে । সারাদিন পরে বাসায় ফিরেই ক্লান্ত বাবা আমার আবার বের হয় আমাকে একটু চমকে দিতে । আমার হাসি মুখ দেখতে ।
সন্তানের চমক মাখা হাসি মুখ বোধহয় বাবাদের খুব প্রিয় ।
তারপর দিন দিন যত বড় হয়েছি বাবার সাখে দূরত্ব তত বেড়েছি । আজ আর আমার সাথে রাগ করে কথাও বলে না । দরকার না পড়লে ফোনও করে না । আমাকে নিয়ে বাবার সব স্বপ্নগুলো নিজের হাতেই খুন করেছি । ক্ষমা কর না বাবা । যদিও জানি বাবারা ক্ষমা না করে পারে না ।
তোমাকে অনেক ভালবাসি বাবা।আজই প্রথম বলছি এই কথা টা ।তবে ভালবাসি আজ থেকে না ।কবে থেকে বাসি আমিও জানিনা ।
রাত: ০৩.০৪
১৯.০৩.২০১৩
©somewhere in net ltd.