নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালবাসার শেষ চিঠি কবে এসেছিল এই নগরে- ঠিক কয়টায়, নাগরিক জানালায় জাহাজের সাইরেন ঠিকই বেজে উঠে ভোর পাঁচটায়।

পথে-ঘাটে

শেষ কবে মেঘফুল দেখে হেসেছিল, নগরের পথ-শিশুটি নাগরিক রাস্তায়, নির্ঘুম রাত্রি শেষে ভোরের রোদ্দুরে রোজ ঠিকই ঢং ঢং বেজে উঠে স্কুলের ঘণ্টায়। ঝিঁঝি পোকার ডাক আর শিশুর কান্না যে দেশে মিশে একাকার; যেন জীবন্ত জাদুঘর সে দেশে আমিও হতে চেয়েছিলাম হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা; মনোমুগ্ধকর এক জাদুকর।

পথে-ঘাটে › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙ্গালী জাতির উত্থান

২২ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৯

রাস্তা দিয়ে আমার এক তুর্কি বন্ধু হেটে যাচ্ছিল। আমি পেছন থেকে হঠাৎ শব্দ করলে সে অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে যায়। আমি হাসি মুখে জিজ্ঞেস করলাম, ভয় পেয়েছ? সে আমার দিকে তাকিয়ে গম্ভীরভাবে বলল, "তুর্কিরা আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় পায় না"। তুর্কিদের জাতি প্রেম দেখে সত্যি অবাক হই অথচ আমরা কেউ কেউ নিজেকে বাঙ্গালী পরিচয় দিতে হীনমন্যতায় ভুগি।

-
আমরা বাঙ্গালী না বাংলাদেশি- এই নিয়ে বিতর্ক করা মানেই হল হুদাই সময় অপচয় করা। গত দুইদিন ধরে আমার এক ফেইসবুক ফ্রেন্ডের সাথে “আমরা বাঙ্গালী না বাংলাদেশি” নামক হুদাই বিতর্ক করছি। ফলাফল হয়েছে শূন্য। কারণ কেউ কাউকে মেনে নেয়নি।

-
বিতর্কের শুরু- উনি আমাকে জিজ্ঞেস করল, ডিনার করেছ? তুরস্কের প্রধান খাবার কি?
আমি বললাম, হুম খেয়েছি। তুরস্কের প্রধান খাবার রুটির সাথে তরকারী।
উনি বলল, পাপদা মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছি। আমি বললাম, হুমমম, মাছে-ভাতে বাঙ্গালী। উনি আমাকে সংশোধন করে দিলেন, বাঙ্গালী নয় বাংলাদেশী। আমি মনে মনে বললাম, সর্বনাশ এই লোক তো হাজার বছরের প্রবাদ পরিবর্তন করতে চাইছে। এখন থেকে উনার কথা অনুযায়ী আমাকে “মাছে-ভাতে বাংলাদেশি” বলতে হবে। উনাকে টেক্সট করে বললাম, বাঙ্গালী কিংবা বাংলাদেশি একই তো কথা। ভাষা বাংলা তাই বাঙ্গালী। ভূখণ্ডের নাম বাংলাদেশ তাই বাংলাদেশি।
উনি বলল, “বাঙ্গালী শব্দটি শুনতে ভাল লাগে না। কারণ এটা গালি বিশেষ”।
এই কথা শুনার পর রাগ করা উচিত ছিল। কিন্তু রাগ করিনি। শুধু আফসোস হচ্ছে লোকটির জন্য। আহারে নিজের পরিচয়ে লোকটি লজ্জিত। অবশ্য উনারই বা দোষ কি। আমাদের কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বোধকরি নিজের জাত লইয়া কিঞ্চিৎ লজ্জিত ছিলেন। বলিয়াছিলেন, “ সাত কোটি সন্তানেরে, হে মুগ্ধ জননী,
রেখেছ বাঙালী করে, মানুষ কর নি।"

-
তিনি শেষ পর্যন্ত মানুষ হতে পেরেছিলেন কিনা জানি না। তবে পাক্কা হিন্দু হতে পেরেছিলেন ঠিকই। যার প্রমাণ রবি ঠাকুরসহ কলকাতার বাবু সম্প্রদায়ের পূর্ব বাংলাকে আলাদা প্রদেশ গঠনের বিরোধিতা। বাংলাদেশ স্বাধীনতার প্রথম ধাপ ছিল পূর্ব বাংলায় আলাদা প্রদেশ গঠনের আন্দোলন। যা বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন নামে পরিচিত।

(আমার অবশ্য ‘বঙ্গভঙ্গ’ শব্দটি ব্যবহার করতে আপত্তি আছে। এটা পূর্ব বাংলায় নতুন প্রদেশ গঠনের বিরোধিতাকারীদের শব্দগত প্রোপাগান্ডা। কেননা কোন দেশে প্রশাসনিক কাজকর্মের সুবিধার্থে নতুন প্রদেশ গঠন করা মানে নেগেটিভ অর্থে ভেঙ্গে ফেলা নয়।)

রবিঠাকুরসহ কলকাতার বাবু সম্প্রদায়ের বিরোধিতার কারণে সেদিন পূর্ব বাংলা আলাদা স্বাধীন প্রদেশের মর্যাদা লাভ করতে পারেনি। তারা বলতে শুরু করল, বাংলা আমাদের মা। সুতরাং বাংলাকে ভাগ করতে দেওয়া যাবে না। গানও লিখে ফেললেন, “আমার সোনার বাংলা”। দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, যে গান বাংলাদেশ কে বিরোধিতা করে লেখা হয়েছিল সেই গান এখন আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। বাহ কি চমৎকার ভাবেই না জন্ম লগ্ন থেকে আমরা আমাদের গলায় পরাধীনতার শিকল বেঁধে রেখেছি।
বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতার পেছনে যে মুসলিম বিরোধিতাই মূল কনসেপ্ট ছিল সেটা অল্প দিনের ভেতরেই ধরা পড়ে যায়। তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে সরাসরি বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব বাংলা) বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ওরা তাচ্ছিল্য করে বলেছিল, চাষার ছেলে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবে কি!বাংলার মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়। ইত্যাদি ইত্যাদি আরও কত কি।

রবি ঠাকুর কিংবা দাদা বাবুরা মুসলিম বিরোধিতা করেছিল বলে আমরাও কি হিন্দু বিরোধিতা করবো? অবশ্যই না। বরং যারা ধর্ম দিয়ে বাঙ্গালী জাতিকে বিভক্ত করতে চেয়েচিল তাদের কে আমরা প্রত্যাখ্যান করবো। তারা মুসলমানদের বিরোধিতা করতে গিয়ে মূলত বাঙ্গালীদেরই বিরোধিতা করেছিল। অবশ্য ‘পূর্ব বাংলা প্রদেশ’ বিরোধিতার কঠিন খেসারত দিতে হয়েছিল কলকাতাকে। বিরোধিতা করতে গিয়ে সহিংসতার পথ বেঁচে নেওয়ায় কলকাতা হারায় তার রাজধানীর মর্যাদা। যার ফলে জিতে যায় ইন্ডিয়া (হিন্দি ভাষীরা, দিল্লির নেতারা), হেরে যায় বাঙ্গালিরা।

-
তৎকালীন কলকাতার নেতারা দিল্লি নেতাদের কুমন্ত্রণা গুলো শুনার ফলে বাঙ্গালীরা শুধু রাজধানীই হারায় নি। চিরতরে হারিয়েছে ঐক্যের বন্ধন।
আমি অপেক্ষায় আছি বাঙ্গালীরা একদিন একতার বন্ধনে আবদ্ধ হবে। তারা নিজ জাতির প্রতি আস্থাশীল হবে। দুই বাংলা এক হয়ে স্বাধীন বাংলা গঠন করা হবে। আর সেই বাংলাদেশ হবে দিল্লির শাসনের নামে শোষণের আওতা মুক্ত। সেই বাংলাদেশের উত্থান হবে একদিন যে বাংলাদেশের প্রকাশ ঘটবে আঞ্চলিক পরাশক্তি হিসেবে।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


পুরানো সসম্যা

২২ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৩৮

পথে-ঘাটে বলেছেন: এই সমস্যার সমাধান করতে পারলে বাঙ্গালী জাতির ঐক্যের পথ সুগম হবে আশা করি।

২| ২২ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:০০

প্রোলার্ড বলেছেন: ছোটকাল থেকে আমরা জেনে আসছি যে বাঙ্গালী হচ্ছে বীরের জাতি । এই বীরের জাতি ৭১ এ দেশ স্বাধীন করেছিল । সে সময়ে ইকোনমিক্যালী পূর্ব পাকিস্তান আর মালয়েশিয়া একই কাতারে ছিল ।

আজ মালয়েশিয়া কোথায় আর আমরা কোথায় । আমরা বাঙ্গালীরা যদি বীরের জাতি হই তাহলে মালয়েশিয়ানরা কি ?

২২ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৫০

পথে-ঘাটে বলেছেন: বীরের জাতির বীরত্ব দেখানোটা অনেকটাই একজন কমান্ডার বা নেতার উপর নির্ভরশীল। যেমন, মাহাতির মুহাম্মাদের নেতৃত্বে মালেশিয়ার উত্থান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ৭১ এ বাঙ্গালী জাতির উত্থান ঘটেছিল। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর মত নেতার দেখা বাঙ্গালী জাতি পাইনি। বাঙ্গালী জাতি এখনো বীরের জাতি তবে ঘুমন্ত। ঘুম থেকে জাগানোর জন্য প্রয়োজন একজন সিংহ পুরুষ নেতার। সেই অপেক্ষায়।

৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৫৮

পুকু বলেছেন: উনার বক্তব্যটাই বোঝা গেল না।কেমন যেন মনে হল ধান ভানতে শিবের গীত!!!!!

২২ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৫৩

পথে-ঘাটে বলেছেন: সবাই বুঝল আর আপনি বুঝলেন না। না বুঝলে পয়েন্ট আকারে বলেন বুঝিয়ে দেয়। বাঙ্গালীর প্রতি চুলকানি থাকলে সেটাও সারায়ে দেই।

৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:০৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মধ্যপ্রাচ্যে 'বাঙ্গালী' আসলেই একটা বিশ্রী শব্দ। কোন আরবী ভাষাভাষীকে আরবী বা হিন্দী ভাষাভাষীকে তো আমরা হিন্দী ডাকি না। বাঙ্গালী ডাক দিতো ইন্ডিয়ান আর পাকি রা যখন আমরা এক সাথে ছিলাম। কিন্তু এখন অন্যদের মুখে বাঙ্গালী ডাক শুনলে আমারও বিরক্ত লাগে। জানি আপনি এখন এটা মানতে চাইবেন না। ঠিক যেমন আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবিরা মানতে চান না। বাঙ্গালী ছাড়েন। দেশ এখন বাংলাদেশ...

২৩ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৫

পথে-ঘাটে বলেছেন: কোন আরবী ভাষাভাষীকে আরবী বা হিন্দী ভাষাভাষীকে তো আমরা হিন্দী ডাকি না।
আপনার সাথে একমত। আরবি ভাষাভাষীকে আমরা আরবি ডাকি না, আরব ডাকি। হিন্দি ভাষাভাষীকে আমরা হিন্দি ডাকি না, হিন্দুস্থানি ডাকি। তেমনি ভাবে বাংলা ভাষাভাষীকে বাংলা ডাকা হয় না, ডাকা হয় বাঙ্গালী।

বাঙ্গালী ডাক দিতো ইন্ডিয়ান আর পাকি রা যখন আমরা এক সাথে ছিলাম।
কি ডারউইনের সূত্র মতে বাঙ্গালী বিবর্তন হইয়া বাংলাদেশী হয়ে গেল নাকি আবার। যেমন ভাবে ডারউইনের মতে বানর থেকে মানুষ হইল। অবশ্যই আমরা ভূখণ্ড গত ভাবে বাংলাদেশী আর ভাষাভাষী হিসেবে বাঙ্গালী।

মধ্যপ্রাচ্যে 'বাঙ্গালী' আসলেই একটা বিশ্রী শব্দ।------ কিন্তু এখন অন্যদের মুখে বাঙ্গালী ডাক শুনলে আমারও বিরক্ত লাগে।
এটা আপনার হীনমন্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ইউরোপের কিছু কিছু দেশ আছে যেখানে মুসলমানদের খুবই ঘৃণার চোখে দেখে। এর মানে কি এই, এখন আপনি আপনার ধর্ম পরিবর্তন করে ফেলবেন? আদতে এটা কোন সমাধানের পথ নয়। সমাধানের পথ হল, নিজ জাতিকে সম্মান দিতে শেখা। যে ব্যক্তি নিজ জাতিকে সম্মান দিতে জানে না, সে কীভাবে অপর জাতির কাছ থেকে সম্মান পাবার আশা করে?

৫| ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৩

হিন্দুস্তানি বলেছেন: দুই বাংলা এক হয়ে স্বাধীন বাংলা গঠন করা হবে। আর সেই বাংলাদেশ হবে দিল্লির শাসনের নামে শোষণের আওতা মুক্ত !!!!!
মাননিয় লেখক এবং আপনার সমজাতীয় উব্ব্রর মস্তিস্ক সম্পন্ন প্রতিভাবানদের সাদরে জানাতে ইচ্ছা করে ,যে------
আমারা জানি -আমাদের জাতির পিতা কে-- অনেকদের মত ২ বা ৩ জন নয় ?
রাতারাতি কোন জেনারেল বা প্রধান দাবি কোরে বসেনা--সেই সব্বহন্তা/দন্ড মুন্ডের
প্রধান কতা।
কেউ বলেনা জাতিয় সংগীত চেঞ্জ কর-- কেউ দাবী তোলেনা সংবিধান থেকে
সত্যমেবঃ জ্যয়তে; কথাটি উঠীয়ে দাও। দিল্লী জানে নরমে -গরমে কি ভাবে ২৯ টাকে কি ভাবে চালাতে হয়--- কেউ কেউ
তো ১ টা বা ৪/৫(পাকিস্তান) টাকে সামাল দিতে নিজেরাই বেসামাল।
দিবা সপ্ন দেখতে এক পয়সাও খরচা নেই -- কিন্তু কাউকে বললে পশ্চাত দিকে একটু বেশি মাত্রার আদর খাওয়ার
সম্ভাবনাও থেকে যায় কিন্তু !!!!

৬| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমরা কি বাঙ্গালী? না বাংলাদেশী?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.