নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাল কাজ করুন।

ভাল কথা বলুন

মেহেদী পরাগ

আলাদা পরিচয়ে নয় আমার লেখার মাধ্যমেই আমাকে জানুন।

মেহেদী পরাগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্ব-১ - হাদীস সংকলনের ইতিহাসঃ শরীয়া আইন এর অনুপযোগিতা

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩৮

ইসলাম একটি শাশ্বত ধর্ম। তবু এই ধর্মের এত সমালোচনা করা সম্ভব হয় কিভাবে? এর কারণ হচ্ছে বর্তমানে যারা ইসলাম পালন করে তারা ইসলামের মূল ধারা থেকে বহু দূরে বেঁকে গিয়ে ধর্ম পালন করে। যেকোন ইসলামিক আলেমকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় ইসলামের ভিত্তি কি, তাহলে তার উত্তর হবে নিম্নরুপঃ



শরীয়তের মূল ভিত্তি হচ্ছে পবিত্র কোরআন গ্রন্থ, যা কিনা আল্লাহ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উপর অবতীর্ণ করেছেন। তবে কোরআন এর অনেক আয়াতই বুঝা কষ্টসাধ্য বিধায় কোরআনের পরেই শরীয়তের ভিত্তি হচ্ছে সহিহ হাদীস যা কোরআনকে ব্যাখ্যা করে। হাদীসের বহু গ্রন্থের মাঝে ছয়টি গ্রন্থ সবচেয়ে বেশী নির্ভরযোগ্য, এই ছয়টি গ্রন্থকে একত্রে সিহাহ সিত্তা বলা হয়। সিহাহ সিত্তার মাঝে প্রথম দুটি গ্রন্থ সহিহ বুখারী এবং সহিহ মুসলিম শরীফের হাদীসে কোনই সন্দেহ নাই, তবে বাকি চারটি গ্রন্থের হাদীসে বর্ণনাকারীর ধারাতে (ইসনাদ) ত্রুটি থাকলে বা কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক হলে অভিযুক্ত হাদীসটি বাতিল বলে গণ্য হবে। মোট কথা ইসলামের মূল ভিত্তি হচ্ছে ১. পবিত্র কোরআন, ২. বুখারী শরীফ, ৩. মুসলিম শরীফ। এই তিন গ্রন্থে কোন সন্দেহ নাই।





আলেমরা উপরোক্ত ধারণাটি এত ব্যাপক প্রচার করেন যে একজন সাধারণ মুসলিমও এই ধারণায় শতভাগ বিশ্বাসী হয়ে যান। কিন্তু আসলে কি আলেমদের কথা প্রকৃত সত্যের সাথে মিলে? এর উত্তর জানার জন্য আমাদের কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন, সেটাই আমি ধারাবাহিক পর্বে সাধারণ পাঠকদের জানানোর চেষ্টা করব।



শরীয়া আইন নিয়ে আলোচনা করলে মূলত হাদীস শাস্ত্র নিয়েই আলোচনা করতে হয় কারণ শরীয়া আইনে কোরআনের চাইতে হাদীসের প্রাধাণ্য অনেক অনেক বেশী। কোরআন এর সাথে শরীয়া আইনের সম্পর্ক খুবই কম। বরং কোরআন আইনের প্রধান উতস হিসেবে কিভাবে ব্যবহৃত হবে সেটাই হাদীস শাস্ত্র নির্ধারণ করে দেয়। বর্তমানের বেশীরভাগ মুসলিম শরীয়া আইন সম্পর্কে প্রায় তেমন কিছুই জানেনা, শুধুমাত্র বাপ দাদার আমলের বিশ্বাস হিসেবে অন্ধ ভক্তি করে। কিন্তু হাদীসগুলো বিস্তারিতভাবে না পড়লে শরীয়া আইন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব না। আধুনিক মুসলিম সমাজ বেশ কিছু ক্ষেত্রে অনেক উদার মনোভাব প্রকাশ করে। এমন মনোভাবের সাথে মিলে যাওয়া বাছাইকৃত হাদীস নিয়ে বই লিখা হয় যা পড়ে শরীয়া আইনের উপর আধুনিক মুসলিমের অন্ধ বিশ্বাস আরও প্রগাড় হয়। সমস্যা হয় তখনই যখন দাসপ্রথা, পাথর ছুড়ে হত্যার বিধান, অসাম্প্রদায়িকতা, নারীর অধিকার, বিজ্ঞান ইত্যাদি অনেক বিষয়ের হাদীস যেগুলো আধুনিকতার সাথে মিলে না সেগুলো চোখের সামনে পড়ে। তখন সবাই নানাভাবে এগুলো অতীতের বিষয় বলে এড়িয়ে চলে সেই পূর্বের অন্ধ বিশ্বাসকেই সংরক্ষণ করে। অথচ বাঙ্গালী মুসলমানের জীবনে শরীয়া আইনের কোন প্রভাব বা গুরুত্ব কোনটাই নেই। এটা শুধু ধর্ম ব্যবসায়ীদের হাতিয়ার হিসেবেই এদেশে ব্যবহার হয়ে আসছে। সামান্য একটু পড়াশুনা করলেই হাদীস শাস্ত্রের দূর্বলতা সকলেরই চোখে পড়বে। স্ববিরোধী হাদীস, কোরআন বিরোধী হাদীস, অবৈজ্ঞানিক হাদীস, অশ্লীল ও লজ্জাজনক হাদীস, বর্বর হাদীস, আজগুবি হাদীস, মিথ্যা হাদীস, সমসাময়িক বাস্তবতায় অনুপযোগী হাদীস ইত্যাদি বিভিন্ন ত্রুটিপূর্ণ হাদীসের কোন অভাব নেই হাদীসের বইগুলোতে।



শরীয়া আইন ও হাদীস সংকলনের ইতিহাসঃ



মুসলিম শরীফের একটি হাদীসে আছে যে মুহাম্মদ (সা) নিজেই হাদীস সংকলণ করতে নিষেধ করে গিয়েছিলেন। এই কথার সমর্থনে আরও কিছু হাদীস আছে। তবে এর বিপরীত কথাও হাদীসের গ্রন্থে পাওয়া যায় যেখানে হাদীস লিখার অনুমতি নবী দিয়েছিলেন। অনুমতি দেয়ার হাদীসগুলো দেখিয়ে অনেকে প্রমাণ ছাড়াই দাবী করেন যে কোরআন এর সাথে সংমিশ্রণের ভয়ে প্রথমে হাদীস লিখতে নিষেধ করলেও পরে নবী হাদীস লিখার অনুমতি দিয়ে যান। কিন্তু এই দাবীর বিপক্ষেও জোড়ালো যুক্তি দেখানো যায়। যেমন কেউ এমন দাবীও করতে পারেন যে নবী প্রথমে হাদীস লিখার অনুমতি দিলেও পরে হাদীস লিখতে নিষেধ করে গিয়েছেন। হাদীস সংকলনের কোন তারিখ না থাকায় এই দাবীটি কেউ মিথ্যা প্রমাণ করতে পারবেনা। বরং এই দাবীর স্বপক্ষেই প্রমাণ আছে। উদাহরণ স্বরুপঃ নবীর পরবর্তী প্রধান চার খলিফাও হাদীস সংকলনের বিপক্ষে ছিলেন, তাদের আমলে কোন হাদীস গ্রন্থ সংকলিত হয়নি, বরং সারা দেশের সমগ্র হাদীস যোগাড় করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। এমনি করেই প্রায় দেড়শ বছর নিষেধাজ্ঞার কারণে হাদীসের কোন গ্রন্থ লিখিত হয়নি। তবে হযরত আলীর মৃত্যুর পর এই নিষেধাজ্ঞার কথা একসময় মানুষ ভুলে যায়।



হাদীসের সবচেয়ে পুরানো যে গ্রন্থের কথা জানা যায় সেটাও লিখিত হয়েছিল মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর প্রায় দেড়শ বছর পর। সেই গ্রন্থের কোন অস্তিত্বও এখন খুজে পাওয়া যায়না। তবে বহুল পরিচিত বুখারী ও মুসলিম শরীফ সহ সুন্নি মুসলিমদের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সিহাহ সিত্তার ছয়টি হাদীস গ্রন্থই লিখিত হয়েছিল নবীর মৃত্যুর আড়াইশ/তিনশ বছর পর। এই গ্রন্থগুলোয় আসলেই সত্যি কথা লিখা আছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা তাই সম্ভব নয়। যুগে যুগে নতুন নতুন হাদীস নিয়ে নতুন গ্রন্থ লিখিত হয়েছিল। বর্তমান শরীয়া আইনের সাথে তাই আগের শরীয়া আইনেরও ছিল প্রচুর গড়মিল। ঈমাম আবু হানিফা তার হানাফি মাযহাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সিহাহ সিত্তা ও অন্যান্ন অনেক হাদীস গ্রন্থ লিখিত হবার বহু আগে, তাই এই মাযহাবে হাদীসের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম ছিল, ইজমা কিয়াসের সুযোগ ছিল। ঈমাম আহমদ ইবনে হাম্বল তার হাম্বলী মাযহাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সিহাহ সিত্তা গ্রন্থ সংকলণের পর, তাই এই মাযহাবে ইজমা কিয়াসের সুযোগ নেই, সবকিছুই হাদীস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।



একটা কথা জানা দরকার যে বুখারী/মুসলিম হাদীস গ্রন্থ লিখিত হবার পূর্বেই লক্ষ লক্ষ হাদীসের অস্তিত্ব ছিল যার বেশীরভাগই ছিল জাল বা নকল হাদীস। ইহুদিরা জাল হাদীস তৈরি করেছে এমন ধারণা প্রচলিত ছিল বলেই ঈমামগণ হাদীস সংকলণের ব্যাপারে উদ্যোগী হন। লক্ষ লক্ষ জাল হাদীস তৈরী হবার কিছু কারণ উল্লেখ করা দরকার। ইসলামের শত্রুরা কোরআনের কোন ক্ষতি করতে সমর্থ ছিলনা বলে লক্ষ লক্ষ জাল হাদীস রচনা করে ইসলামের ক্ষতি করতে চেয়েছিল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মৃত্যুদন্ড প্রপ্ত আব্দুল করিম স্বীকার করে গিয়েছিলেন যে তিনি একাই চার হাজার জাল হাদীস প্রচার করে গিয়েছিলেন যেখানে তিনি হারাম কে হালাল আর হালালা কে হারাম বানিয়ে দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক ভেদাভেদের কারণে লক্ষ লক্ষ হাদীস জাল করা হয়েছিল। খলিফা উসমানের মৃত্যুর পর হযরত আলী ও হযরত মুয়াবিয়া কে নিয়ে মুসলিম সমাজ শিয়া, খারেজি ইত্যাদি বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। তখন হযরত আলীর সম্মান বাড়ানোর জন্য শিয়া গোত্র অনেক জাল হাদীস রচনা করেছিল, আবার বিরুদ্ধ পক্ষ হযরত আলীর জন্য অসম্মানজনক কথা প্রচার করেও অনেক জাল হাদীস রচনা করেছিল। এমনি করে হযরত আবু বকর ও অন্যান্ন নেতার পক্ষে বিপক্ষে অনেক জাল হাদীস রচিত হয়েছিল। আবার কিছু কিছু সুযোগ সন্ধানী লোক তাদের নেতাদের সুনাম করে হাদীস জাল করত নিজেদের সুবিধা আদায়ের লক্ষে। অনেকে আবার কাল্পনিক সব গল্প বলে হাদীসের নামে চালিয়ে নিজের সম্মান বৃদ্ধি করত। হাদীস জাল করার এমন আরও বহু কারণের মাঝে অনিচ্ছাকৃত মানুষ্য ভুলও জাল হাদীস রচিত হবার পেছনের বড় একটি নিয়ামক ছিল।



নবীর মৃত্যুর তিনশত বছর পর এত লক্ষ লক্ষ জাল হাদীসের ভীড়ে সত্য হাদীস বের করাটা প্রায় দুঃসাধ্য ব্যাপার ছিল। তবে ঈমাম বুখারী সত্য হাদীস নির্ণয় করার একটা উপায় বের করলেন। তিনি শুধু সত্যবাদী লোকদের কাছ থেকেই হাদীস সংগ্রহ করা শুরু করলেন যারা কিনা আবার পূর্ব বা বর্তমান প্রজন্মের অন্য কোন সত্যবাদী লোকের কাছ থেকেই হাদীসটি শুনেছিলেন। এমনি করে ঈমাম বুখারী প্রায় ছয় লক্ষ হাদীস সংগ্রহ করেছিলেন যেগুলো যাচাই বাছাই করে এক লক্ষ সহিহ হাদীসে নামিয়ে এনেছিলেন আর মুখস্থ করেছিলেন। এই এক লক্ষ সত্য হাদীসের মাঝে মাত্র ছয় হাজার হাদীস তিনি তার বুখারী হাদীস গ্রন্থে লিখেছিলেন। বাকিগুলো তিনি সময় স্বল্পতা বা অন্য কোন কারণে লিখে যেতে পারেননি। এই সেই বুখারী হাদীস গ্রন্থ যা প্রায় শতভাগ সহিহ বলে বর্তমান আলেম সমাজ প্রচারণা করে। বর্তমানের আলেমদের এই দাবী কতটা সঠিক তা পরের পর্বে আলোচনা করা হবে।



চলবে।

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৭

চাণক্য হিম বলেছেন: আপনার লেখায় অভিভূত। তবে এর ধারাবাহিকতা আবশ্যক।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১৯

মেহেদী পরাগ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। আশা করি এই সিরিজটা চালিয়ে যেতে পারব।

২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৬

Nurul Afser Ratan বলেছেন: নতুন কিছু জানার অপেক্ষায় রইলাম।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৭

মেহেদী পরাগ বলেছেন: ধন্যবাদ। সাথে থাকুন। পরের পর্বগুলো পড়লে নতুন অনেক কিছুই জানতে পারবেন যা স্টানিং হতে পারে !!

৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩১

শল্যবিদ বলেছেন: আপনি এ বিষয়ে পূর্বেও লিখেছিলেন।খাঁটি ঈমানদাররা কখনই আপনার সাথে একমত হবে না কারণ হাদীস নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঈমানের জন্য হানিকর সুন্নি মুসলমানদের কাছে।তবে এ বিষয়ে একাডেমিক গবেষণা প্রয়োজন।কালিজিরাতে সকল রোগের ঔষধ আছে এটা মানা আজকের দিনে কষ্টকর

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

মেহেদী পরাগ বলেছেন: আমি একসময় এই কথিত খাটি ঈমানদার ছিলাম, তবে এখন বুঝি এটা অন্ধ বিশ্বাস এর নাম। আমি এখনো পূর্ণাং ঈমানদার তবে অন্ধ বিশ্বাসী নই। হাদীস নিয়ে প্রশ্ন না করলেই বরং ঈমানের ক্ষতি হতে পারে, সেটা হাদীসের বই পড়ে চিন্তা করলেই বুঝা যাবে।

৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৩

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: এ সিরিজটি অনুসরনে নিলাম.........

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১০

মেহেদী পরাগ বলেছেন: সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৪

অন্যরকম একজন বলেছেন: হাদিসগুলোর অসংগতি আর ভুলভাল বুঝতে কোন স্কলার হবার দরকার নেই।থরোলি কোরান পড়ে হাদিসগুলো খুললেই বোঝা যায় কী দশা সেগুলোর।আপনার েই লেখার সেকেন্ড পর্বটাও পড়লাম।তাজ্জব হলাম এই দেখে যে সেখানে আপনাকে শিয়া বলে প্রমানের চেষটা চলছে কমেন্টগুলোতে।হাদিসের সমালোচনা কেউ করলেই সে শিয়া ট্যাগ খায় আগেও দেখেছি।দুঃখজনক।গতকাল রাতে আসিফ মহিউদ্দিনের উপর হামলাকে অনেকে জায়েজ প্রমান করছে হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে।যাহোক,আশা করি সিরিজ লেখা চালিয়ে যাবেন।আর পরাগ ভাই,একটা প্রশ্ন।মৃত্যুদন্ড প্রপ্ত আব্দুল করিম আসলে কে ছিলেন?ঘটনাটা আমি এক বন্ধুর মুখে শুনেছিলাম।এটা কত খ্রিস্টাব্দের ঘটনা বলতে পারবেন?

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:২৮

মেহেদী পরাগ বলেছেন: আব্দুল করিম ইবনে আবি আল আওজা ছিলেন একজন জিনদিক । জিনদিকরা ছিল ইসলামে অবিশ্বাসী এবং ইসলামের শত্রু। আব্দুল করিমের ঘটনাটা ঘটেছিল খলিফা আল-মাহদি এর খিলাফত কালে ৭৭৫-৮৫ খ্রীষ্টাব্দের মাঝে। আর এই ঘটনা অনেক বিখ্যাত সুন্নি হাদীস স্কলার এর বইতে পাওয়া যাবে। তবে সবচেয়ে অথেন্টিক সূত্র হচ্ছে ইবনে আল যাওজীর লিখা গ্রন্থ কিতাব আল মাউদুয়াত- ১:৩৭। সংখ্যাধিক্যের দিক থেকে ইবনে আল যাওজীর মত এত ইসলামিক কিতাব মনে হয় আর কেই লিখেন নাই। প্রায় ৭০০ গ্রন্থ তিনি লিখেছিলেন।

২য় পর্বের কমেন্টে বুখারী শরীফের মূল ব্যাখ্যাকারী সর্বজনবিদিত বিখ্যাত সুন্নি ইমাম ইবনে হাজার আসকালানীকে যদি কেউ বলে যে তিনি শিয়া ইমাম, তাহলে তার জ্ঞান এর দৈন্যতা বুঝে নিয়ে তার সাথে তর্কে না যাওয়াই ভাল।

মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।

৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৫৫

বিভ্রান্ত নাগরিক বলেছেন: আপনি হযরত আলী বলার পাশাপাশি হযরত মূয়াবিয়াও বললেন, একটু খটকা লাগল। হযরত আলীর খুনের পেছনে এই মূয়াবিয়াকেই দায়ী করা হয় না? আর তারই পুত্র এজিদ, যার সাথে কারবালায় যুদ্ধে নবীজীর নাতি হোসেন নিহত হন। তাই না?এবং পরবর্তিতে, মুয়াবিয়ার বংশধরেরা ৭ম ও ৮ম শতকে ইসলামি খিলাফত কায়েম করে।
সংযোজনঃ মূয়াবিয়া ছিলেন খলিফা উস্মানের ভাই, যিনি খলিফা উস্মানের মৃত্যুর পর, নবী পত্নী আয়েশাকে সাথে নিয়ে হযরত আলীর বীরুদ্ধে যুদ্ধ করেন, যা ইসলামের প্রথম ফিতনা নামে পরিচিত।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:০৬

মেহেদী পরাগ বলেছেন: আপনি যা বলেছেন তা ঠিক আছে। তবে আপনার খটকা লাগল কেন? হযরত মুয়াবিয়াকে হযরত বলা যাবেনা কেন? তিনিও নবীর সাহাবি ছিলেন। তিনি মুসলিমও ছিলেন। অবশ্য ব্যক্তিগত ভাবে হযরত মুয়াবিয়াকে আমি পছন্দ করিনা। ঠিক হযরত আবু হুরায়রাকে আরও বেশি অপছন্দ করি, তবু হযরত আবু হুরায়রা বলাতে তো দোষের কিছু নাই।

৭| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৫৮

বিভ্রান্ত নাগরিক বলেছেন: উপরে অন্যরকম একজনের মন্তব্য পড়ার পরে আরেকটা লাইন যোগ করতে ইচ্ছে করল। আপনাকে শিয়া ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে জেনে বিভ্রান্তি লাগছে। শিয়ারা কখনও ভূলাও মূয়াবিয়ার নামের আগে হযরত লাগাবে না।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:১১

মেহেদী পরাগ বলেছেন: আমি শিয়া সুন্নি কিছুইনা। অবশ্য জন্মসূত্রে মাত্র কিছুদিন আগ পর্যন্তও সুন্নি ছিলাম। আমি হাদীস শাস্ত্র নির্ভর ইসলাম বিশ্বাস করিনা। হাদীসের দরকার আছে, তবে সেটা কোরানের পর, যা বর্তমানে সবাই মুখে বললেও বাস্তবে শরীয়া আইনে দেখা যায়না।

৮| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০৪

আশরাফ মাহমুদ মুন্না বলেছেন: ..
আমার দৃঢভাবে মনে করি - আপনি যে কাজে নেমে পড়েছেন, এ কাজ আপনার নয়। সত্যি আপনার নয়। অনূদিত কিছু বই পড়ে সাধারণ গাইড লাইন নেয়া যায়। হাদীছ, শরীয়া আইন এসব আপনার নয়। আমার যদি ভুল না-হয়ে থাকে, তবে মনে করি, আপনি সাধারণ স্কুল/কলেজ/ভার্সিটি পাশ দিয়েছেন। আর আপনি নেমে পড়েছেন এমন এক কাজে তা' মাল্টি ডিসিপ্রিলিনারী সাবজেক্ট। যেটি খুবই দুরুহ। এবং আমি নিশ্চিত এটি আপনার জন্য আসেনি। দয়া করে বিরত হোন। এ পোষ্ট ডিলিট করুন।

কোন নাস্তিকে করলে না-হয় মানা যেত। কিন্তু আপনি?

এটি একটি বিশাল জটিল গবেষণার কাজ। হাদীছ, কোরআন, ইসলামের ইতিহাস, ফেকাহ, মানতেক (তর্ক শাস্ত্র), ফলসফা (দর্শন) ইত্যাদি মাল্টিডিসিপ্লিনারী বিষয়ের উপর দখল না-থাকলে লেজে গোবরে হয়ে যাবে। এবং তা' করছেনও আপনি।

আমি আর কোন মন্তব্য দেব না। এটিই শেষ।

দয়া করে এ পোষ্ট ডিলিট করুন। ক্ষান্ত হউন। বিরত হউন।

আল্লাহ আপনাকে হেদায়েত করুক।

৯| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৫৩

আশরাফ মাহমুদ মুন্না বলেছেন: .
আর হ্যাঁ, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইসলামের আলোকে বিশ্বকে বুঝতে হলে ইসলামিক Eschatology'র ( The branch of theology that is concerned with the end of the world or of humankind.) জ্ঞান দরকার।

এ পর্যন্ত পৃথিবীতে একজনই জন্মেছে। তিনি হলেন - ইমরান নযর হোসেন। ওনার ওয়েভসাইট, ইউটিউবে শ'খানেক ভিডিউ ডাউনলোড করে দেখুন। সম্ভব হলে বই সংগ্রহ করে পড়ুন।
হতাশা ও ধোয়াশা কেটে যাবে। আমি নিশ্চিত। এতে ৬ মাস থেকে ১ বছর লাগতে পারে।

ধন্যবাদ।

১০| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৫৫

নীলপথিক বলেছেন: হাদীস বিষয়টি ঝামেলার সৃষ্টি করতে পারে চিন্তা করেই মনে হয় চার খলিফার আমলে কোন হাদীস লিপিবদ্ধ হয়নি। ভাবলে অবাক লাগে দ্বীন রক্ষার ব্যাপারে তাদের চেয়ে ইমাম বুখারী কিংবা ইমাম মুসলিমের উদ্বেগ তো বেশী থাকবার কথা নয়। আপনি লিখে যান ভাই। অন্ধভাবে আপনার লেখা বিশ্বাস করব না তবে যুক্তিপূর্ণ হলে মেনে নেবো।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৩০

মেহেদী পরাগ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

১১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪০

হুমায়ুন তোরাব বলেছেন: tmi ki ahle quran hote chao...
tmi hadis mante chao na..
shala isRael er dosor ja vag..
tr Abbar lekha boi thik,r baki sbar ta bhul.

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৩১

মেহেদী পরাগ বলেছেন: মুর্খরা এমন বলবেই। তোমার মুরদে কুলালে আমি কোথায় ভুল বলেছি দেখাও। সেইটা না পাইরা মুখ খারাপ করতে উস্তাদ। বংশের খুব বড় পরিচয় দিয়া গেলা।

১২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪৯

মিষ্টিগল্প বলেছেন: আশরাফ মাহমুদ মুন্না কে বলতে চাই, আমি একজন ধর্মীয় ছাত্র এবং জানি মেহেদী যে কথাগুলো বলেছে তা ভিত্তিহীন কিনা। যদি সত্যিই মেহেদীর কথা ভিত্তিহীন হয় তবে তা প্রমাণ করুন। মেহেদী তো ছাড় দিয়ে কথা বলছে অন্য কেউ হলে তো ছাড় দিত না। এমন অনেক ফাঁক-ফোকড় আছে যেগুলো হয়ত পরবর্তীতে মেহেদী পোস্টে উল্লেখ করবে। তাই ধৈর্য ধারণ করে পড়াটাই শ্রেয়। আল্লাযিনা ইয়াস্তামিউনাল কাওল ফা ইয়াত্তাবিউনা আহসানাহ' (আল-কুরআন)

মেহেদী পরাগ ভাই সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। সেদিন আমার এক সিনিওর আপনার পোস্টের কথা বললেন আজ বাড়ীতেই ছিলাম বলে সময় পেয়েই আপনার পোস্টটা খুঁজে বের করলাম। বাস্তবধর্মী লেখা, অনেকের ভাল নাও লাগতে পারে, কিন্তু আপনি চালিয়ে যান।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

মেহেদী পরাগ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। অনেকের ভাল লাগবেনা জেনেও লিখছি, গালাগালও কম খাইনি, তবে আশা করি কেউ না কেউ বুঝবে।

১৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:২০

রিফাত হোসেন বলেছেন: +++

Dilam

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৪৬

মেহেদী পরাগ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

১৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:৪৩

মনোহারী দোকান বলেছেন: আঁদার ব্যপারীর কান্ড দেখ সে কিনা আইছে জাহাজের খবর লইতে। জলিলুল ক্বদর সাহাবী, কাতিবে ওহী হযরত মুয়াবিয়া রদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু উনার নামে অপবাদ লেপন কারীরা সবাই কাফের। এমনি ভাবে সকল সাহাবা আজমাঈন উনাদের শানে আদবের খিলাফ কথা বলা কাট্টা কুফরী এবং চির জাহান্নামি ,মালউন, মরদুদ হবার কারণ। এই পোষ্ট একটি বিভ্রাতি সৃষ্টি কারী ফেতনাবাজের পোষ্ট। এরা ইসলাম ও মুসলমান উনাদের দুসমন।এরা কাদিয়ানি ।এদের থেকে সাবধাণ।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৫০

মেহেদী পরাগ বলেছেন: আমার ব্লগে রাজারবাগীর গবেট মূর্খ মুরীদ আসা নিষেধ। আবার আসলে গদাম দিব।

১৫| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:৪৮

মনোহারী দোকান বলেছেন: আঁদার ব্যপারীর কান্ড দেখ সে কিনা আইছে জাহাজের খবর লইতে। জলিলুল ক্বদর সাহাবী, হযরত আবু হুরায়রা রদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু উনার নামে অপবাদ লেপন কারীরা সবাই কাফের। এমনি ভাবে সকল সাহাবা আজমাঈন উনাদের শানে আদবের খিলাফ কথা বলা কাট্টা কুফরী এবং চির জাহান্নামি ,মালউন, মরদুদ হবার কারণ। এই পোষ্ট একটি বিভ্রাতি সৃষ্টি কারী ফেতনাবাজের পোষ্ট। এরা ইসলাম ও মুসলমান উনাদের দুসমন।এরা কাদিয়ানি ।এদের থেকে সাবধাণ।

১৬| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:০৬

দিশার বলেছেন: ধার্মিক বোকা গুলা, যুক্তির বদলে যুক্তি দিতে শিখে নাই, পারে খালি , এরে ওরে কাফের,মুরতাদ ঘোষণা দিতে, জীবনে হাদিস কোরান খুলে দেখে নাই, রোগ ফুলায়ে ফুলায়ে গালি দিতে শিখেছে .

১৭| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:২৮

দিশার বলেছেন: পরাগ ভাই , আপনার কাছে কিছু প্রশ্ন রাখি , স্রেফ জানার জন্য , বেয়াদবি নিবেন না . জ্ঞানীদের সম্মান করতে ভালবাসি আমি .

১) কোরান কে পরিপূর্ণ কিতাব দাবি করা হোলেও , আমার জানা মতে , হাদিস ছাড়া , ইসলামের বেবহারিক দিক গুলা কি খুবই সীমিত হয়ে যাবে (যেমন সালাত এর নিয়ম কানুন, হজ কিভাবে করবেন ইত্যাদি) . তাহলে , যারা হাদিস এর যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ( আমি একমত তাদের সাথে যারা তুলছে প্রশ্ন) তারা কি সল্যুশন দিতে চায় ইসলামের। নাকি আপনারা সুধু যে হাদিস গুলা আপনাদের ভিউ পয়েন্ট সাপোর্ট করে সে গুলা রেখে , বাকি অস্সস্তিকর হাদিস গুলা , বানানো বা ভিত্তি হীন বলে রিলিজিয়াস apology করতে চান?

২) অনেক হাদিস ই , বিজ্ঞানীক ফ্যাক্ট এর মানদন্ড উত্তীর্ণ হতে পারে না , যা সহজে ফেলে দেয়া যায় , হাদিস এর দুর্বল বসে কে আক্রমন করে। কিন্তু কোরান এর যে গুলা তথ্য , বিজ্ঞানীক তথ্য , বা কমন সেন্স, বা মরালিটির সাথে যায় না , সেগুলা কিভাবে বেক্তিগত ভাবে মূল্যায়ন করেন?

৩) আউট অফ কনটেক্সট প্রশ্ন , মোহাম্মদ বা আল্লাহ পাক , কেন কোরান এর একটা ভার্সন রাখার বেবস্থা করেন নাই কোরান এর দূত , মোহাম্মদ বেচে থাকতে . ১০ বছর তো রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন।

১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

মেহেদী পরাগ বলেছেন: আপনি ভাই ধর্মে অবিশ্বাসী মানুষ। ধর্ম সম্পর্কে জানার জন্য আপনি প্রশ্ন করেননি, আপনি আসলে জানতে চাইছেন যে আমি যুক্তিবাদী হয়েও ধর্মবিশ্বাসী হলাম কিভাবে। আপনাকে উত্তর দিতে হলে কিছু ব্যাপার আগে আমাকে পরিষ্কার করে বলতে হবে। প্রথমত, আমি ধর্মকে আঁকড়ে ধরার জন্য কোন রিলিজিয়াস এপোলজি করিনা। দ্বিতীয়ত, অন্য অনেকের মত আমি ধর্ম প্রচারও করিনা। তৃতীয়ত, আমার ব্যাক্তিগত বিশ্বাসের জন্য কেউ আমাকে ইসলামের গোত্রভুক্ত করুক আর না করুক তাতে আমার কিছু যায় আসে না। চতুর্থত, আমি নিজেকে বাঙ্গালী মনে করি আর মানুষের মন থেকে ধর্মীয় গোঁড়ামী দূর করে নিজেদেরকে বাঙ্গালী জাতি হিসেবে ভাবাতে উৎসাহ বোধ করি।

এবার আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়া যাকঃ

১) নামাজ পড়া বা হজ্ব করা এগুলো এতই নিয়মিত বিষয় যে কেউ এগুলো হাদীসের বই পড়ে শিখেনা। শিখে বাবা, মা, আত্মীয়, প্রতিবেশী বা শিক্ষকের কাছে যারা আবার শিখেছিল তাদের পূর্ববর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে, এভাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। বিষয়টা অনেকটা ভাষা শিখার মত, ভাষার অস্তিত্ব ব্যাকরণ বইতে আছে ঠিকই কিন্তু ভাষা শিখতে বই এর কোন প্রয়োজন পড়বেনা, কাগজের বিলুপ্তি ঘটলেও শিশুরা মায়ের মুখেই ভাষা শিখে যাবে চীরকাল। পক্ষান্তরে হাদীসের অন্য অনেক ব্যাপার নামাজের মত নিয়মিত বা ব্যাবহারিক নয়, তাই সেগুলো নামাজের সাথে তুলনীয় নয়।

এবার আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন এসেছে যে নামাজের নিয়ম কানুনে তো অনেক ভিন্নমত আছে, এসব ভিন্নমত কিভাবে হল আর কোনটা সঠিক। আসলে এটাকে আমি মোটেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করিনা। কেউ যখন ভিক্ষা করে তখন সে নিজ প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেই ভিক্ষা করে। কতটুকু হাত বাড়িয়ে, বা কতটুকু উচ্চস্বড়ে ভিক্ষা করতে হবে তা কেউ ভিক্ষুককে শিখিয়ে দেয়না। আলোচনার খাতিরেই যদি ধরে নেন যে আল্লাহ আছেন, নামাজের নিয়মের এইসব সামান্য বিচ্যুতি নিয়ে তাঁর মাথা ঘামানোটা যৌক্তিক হবেনা। এইসব বিচ্যুতি নিয়ে মাথা ব্যাথা শুধু মৌলবাদীদের। তবে সামাজিক শৃঙ্খলার জন্য মোটামুটি একটা নিয়ম থাকতে হয়, যেটা অলরেডি আছে। ভাত আপনি চামচ দিয়েই খান আর হাত দিয়েই খান, ভাত খাওয়াটাই মূল উদ্দেশ্য।

এবার আপনার পরবর্তী প্রশ্ন নিশ্চয়ই এটা যে, মুসলিম উম্মাহ তো আমার এই কথা মানবেনা। আসলে আমি আগেই বলেছি যে মুসলিম উম্মাহ মানুক আর না মানুক তাতে আমি কেয়ার করিনা, তাদের কাছে আমি কাফের হয়েই থাকলাম নাহয়।

সমাজের জন্য ক্ষতিকর হাদীসগুলোকে বাতিল বলছি রিলিজিয়াস এপোলজির জন্য নয়, বরং মানুষ যেন নিজেকে গোঁড়ামির মাঝে আবদ্ধ না রাখে সে জন্য। অস্বস্তিকর হাদীস বাতিল বলে দিয়ে ধর্ম আঁকড়ে পড়ে থাকাটা আমার উদ্দেশ্য নয়।

২) প্রথম কথা হচ্ছে কোরানের বর্তমান ইন্টারপ্রিটেশন খুবই হাদীস নির্ভর। হাদীসের প্রভাব বাদ দিলে কোরানের ইন্টারপ্রিটেশনে অনেক পরিবর্তন আসে। যেমন চোরের শাস্তি হাত কেটে ফেলা, বা বউ পেটানো বা পর্দা প্রথা ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই আপনি ভিন্ন ইন্টারপ্রিটেশন করতে পারেন। সেজন্য আপনাকে নতুন করে ভাষায় বিকৃতি ঘটাতে হবেনা, নতুন কিছু আমদানী করতে হবেনা এমনকি এর মাঝে কোন গোঁজামিলও থাকবেনা। বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক ভুলের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়, আমি প্রমাণ সহ দেখাতে পারব। আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, কোরানের বিকৃতির বিষয়। সামগ্রিক ভাবে মুসলিম উম্মাহ কোরানকে আল্লাহ অবিকৃতভাবে সংরক্ষণ করবেন বলে বিশ্বাস করলেও এমন কথা আসলে কোরানে লিখা নাই। এ ব্যাপারটা আমার কাছে এখনো বিবেচনাধীন, অনেক গবেষণা, পড়াশুনা ও চিন্তার বিষয় আছে, আমি এখনো সময় করে উঠতে পারিনি। কিছু ওইতিহাসিক ফ্যাক্ট আর কিছু হাদীসও কোরান বিকৃতির ইঙ্গিত দেয়। তাই কোরানের যেসব ব্যাপার মোরালিটির সাথে যায়না সেগুলো আপাতত ইগনোর করি, তবে একসময় আপনাকে আমার নিজস্ব উত্তরটা দিতে পারব।

৩) আমার আগের উত্তরেই এই প্রশ্নের জবাব কিছুটা পাবেন। এ ব্যাপারে আমার অবস্থান আরও ভালভাবে বুঝতে হলে আমার দৃষ্টিভঙ্গী ও বিশ্বাস আপনাকে কিছুটা বুঝতে হবে। ইবনে সিনার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে আমি কিছুটা একমত। ইসলামী শরীয়ত আল্লাহকে যেমন পার্সোনিফাইড একজন ইশ্বর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, আমি তার সাথে একমত নই। শরীয়ত হাদীস নির্ভর ভুল ইন্টারপ্রিটেশন করেছে। আপনার এই প্রশ্নটা মোল্লাদের করলেই ভাল। আল্লাহ সরাসরি কোন কাজ করেননা বলেই আমি বিশ্বাস করি। তাই সেই যুগে আস্ত সম্পূর্ণ একটা কোরান প্রিন্টেড অবস্থায় পাওয়া সম্ভব না বলেই মনে করি। নবী মূলত অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেছিলেন, মানব কল্যাণের জন্য স্রষ্টার পক্ষ থেকে তিনি উপদেশ দিয়েছেন মাত্র। কোরান কোন আইন নয়, উপদেশ, এটা কোরানেই বলা হয়েছে। হয়ত ঠিকভাবে বুঝাতে পারলাম না, সময়ের অভাবে লিখতেও পারছিনা, ধৈর্য্যও কমে গিয়েছে।

ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে অনলাইনে অনুপস্থিত ছিলাম। দেরীতে রিপ্লাই দেয়ার জন্য দুঃখিত।

১৮| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:৩১

অন্যরকম একজন বলেছেন: পরাগ ভাই,উপরের কথাগুলো একটু সেলফ কন্ট্রাডিকটরি হয়ে গেল না ?কোরানকেই একমাত্র অবিকৃত গাইডলাইন ধরেই কি আপনি এতদিন হাদিসগুলোর সমালোচনা করে আসেননি?আমি আপনার অনেক লেখা এবং কমেন্টেই জানতে আপনাকে বলতে দেখেছিলাম,তিরিশ পারা কোরান বিকৃত করা অসম্ভব ।অথচ উপরের কমেন্টে আপনি বলেছেন-'সামগ্রিক ভাবে মুসলিম উম্মাহ কোরানকে আল্লাহ অবিকৃতভাবে সংরক্ষণ করবেন বলে বিশ্বাস করলেও এমন কথা আসলে কোরানে লিখা নাই। এ ব্যাপারটা আমার কাছে এখনো বিবেচনাধীন, অনেক গবেষণা, পড়াশুনা ও চিন্তার বিষয় আছে, আমি এখনো সময় করে উঠতে পারিনি। কিছু ওইতিহাসিক ফ্যাক্ট আর কিছু হাদীসও কোরান বিকৃতির ইঙ্গিত দেয়।'
কিন্ত ভাইয়া সূরা হিজরের ৯ নং আয়াতকে তো কোরানকে বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা করার ওয়াদা হিসেবেই অনুবাদকারীরা ইন্টারপ্রেট করেছেন ।'নিশ্চয়ই আমি এই উপদেশবানী অবতীরণ করেছি আর আমিই এর রক্ষনাবেক্ষন করব' ।Behold, it is We Ourselves who have bestowed from on high, step by step, this reminder? and, behold, it is We who shall truly guard it [from all corruption].
এখন এই রক্ষনাবেক্ষন শব্দটা যদি 'অবিকৃ্ত অবস্থায় সংরক্ষন' না হয়ে থাকে,তাহলে আর কী হতে পারে?সমস্ত আয়াতটাই ত তাহলে ফাঁকা আওয়াজে পরিণত হল(নাউজুবিল্লাহ।)
যদি ভাইয়া আপনি কোরানের অবিকৃতি নিয়েই সন্দিহান হন তাহলে তো আর হাদিস নিয়ে লেখা শোভা পায়না।রজম আর সাক্লিং সংক্রান্ত আয়াত ছাগলে খেয়ে ফেলার হাদিসও তাহলে বিশ্বাসযোগ্য ।আশা করি একটু পরিস্কার করবেন ব্যপারটা পরাগ ভাই।ইতোমধ্যে আপনার এই বক্তব্যের স্ক্রিনশট নিয়ে একজন একটা ব্লগ লিখেও ফেলেছেন এবং আপনার আরেকটি লেখায় তার লিঙ্কও দিয়েছেন দেখলাম ।খুব সম্ভবত আপনি আর এই সিরিজটি লিখতে আগ্রহী নন।কিন্ত আমি আশা করব যেটুকু লিখেছেন সেটুকু নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের আমরা পরিস্কার জবাব পাব আপনার কাছ থেকে ।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৭:৩৯

মেহেদী পরাগ বলেছেন: কয়েকটি ব্যাপার আগে মাথা ঠান্ডা করে একটু গভীর ভাবে ভাবুন, নয়তো পা হড়কে যাবার সম্ভাবনা থাকবে।

১) আমি কোন নবী বা রাসূল নই যে আমার কথা অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে হবে। আমি শুধু ভিন্নভাবে চিন্তা করার কিছু পথ দেখিয়েছি আর হাদীসের কিছু ত্রুটি দেখিয়েছি, আর এসব ব্যাপারে আপনাদের অনেকেই আমার মতের সাথে সম্মত হয়েছেন।

২) আমিও সাধারণ মানুষ তাই ভুল আমারও হতে পারে। আমার কিছু মতামতে আপনারা সম্মত হয়েছেন বলে আমার বলা সবকিছুতেই সম্মত হতে হবে এমন কোন বাইন্ডিং এগ্রিমেন্ট নেই। বিবেচনা সম্পূর্ণ আপনাদের নিজস্ব।

৩) আবার আমার নতুন কোন কথায় সম্মত হতে না পারলে যে আমার পূর্বের বলা কথাগুলো যেগুলোতে আপনারা সম্মতি দিয়েছিলেন সেগুলো থেকে সম্মতি উঠিয়ে নিতে হবে এমন কোন কথা নেই। কিছু হাদীস ভুল বলে সকল হাদীস যেমন ভুলনা, আবার কিছু হাদীস সঠিক বলে সকল হাদীসই সঠিকনা। এভাবেই কিছু ব্যাপারে ভুল হলেও সব ব্যাপারে যে আমি ভুল তা নাও হতে পারে। নিজের যুক্তি, বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা দিয়েই সব বিবেচনা করবেন।

এবার মূল কথায় আসা যাক। পবিত্র কোরান এখনো আমি অবিকৃতই মনে করি কিন্তু এর মাঝে বিকৃতির সম্ভাবনা ব্যক্তিগতভাবে আমি এখনো পর্যন্ত একেবারেই নাকচ করে দেইনি।। অর্থাত এ ব্যাপারে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয়ার মত গবেষণা এখনো করিনি। আমার এমন স্ট্যান্ডের পেছনে কিছু যৌক্তিক কারণ আছে। সে ব্যাপারে একটু পরে আসছি। আগে আপনার উল্লেখ করা আয়াতটি নিয়ে একটু আলোচনা করি।

আপনি কোরান অবিকৃতির ব্যাপারে যে আয়াতটির রেফারেন্স দিয়েছেন সেখানে ''কোরান'' বা ''কিতাব'' শব্দটি নেই। এখানে ''জিকর'' বলা হয়েছে। এই আয়াতের লজিক্যাল এবং ভিন্ন ব্যাখ্যা দেয়া খুবই সম্ভব। আয়াতটি একবার দেখি।

সূরা হিজর-১৫:৯>

إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ

নিশ্চয়ই আমি এই উপদেশবানী অবতীরণ করেছি আর আমিই এর রক্ষনাবেক্ষন করব।

Behold, it is We Ourselves who have bestowed from on high, step by step, this reminder? and, behold, it is We who shall truly guard it।


কোরানের জন্য মূল যে শব্দগুলো পবিত্র কোরান গ্রন্থে ব্যবহৃত হয়েছে তা হলোঃ কুরআন, কিতাব, আয়াহ, সূরাহ, ওয়াহী। শেষের তিনটি শব্দ দিয়ে আবার পুরো কোরান বুঝানো হয়না, এগুলো একেকটি একক।

বর্তমান ইন্টারপ্রিটেশন অনুযায়ী ''জিকর'' শব্দ দিয়েও কোরান বুঝে নেয়া হয়। কিন্তু এই ইন্টারপ্রিটেশন কি সঠিক? জিকর এর মূল অর্থ হচ্ছে স্মরন বা উপদেশ (reminder)। এই শব্দটির মূল অর্থের ব্যবহার আমরা সারা কোরান জুড়েই দেখি। 'জিকর শব্দের অর্থ কোরান' এমন ইন্টারপ্রিটেশন এর কারণ হচ্ছে 'জিকর নাজিল করা হয়েছে বা অবতারণ করা হয়েছে'- এই ধরনের কথা কোরানে আছে। আর নাজিল যেহেতু করা হয়েছে তাই এটা কোরান।

কিন্তু ''হিকমাহ'' যার অর্থ প্রজ্ঞা সেটাওতো আল্লাহ নাজিল করেছেন বলে কোরানের আয়াত আছে। জ্ঞান, বুদ্ধি, উপদেশ এগুলো তো আল্লাহ নাজিল করতেই পারেন, নাজিল করেছেন বলেই কি এই শব্দগুলোর অর্থ পরিবর্তন করে ফেলতে হবে?

এমন কি হতে পারেনা যে উপরের আয়াতে আল্লাহ জিকর বলতে বিবেক লব্ধ উপদেশ এর কথা বুঝিয়েছেন যা তিনি সংরক্ষণ করবেন? এই বিবেক এর উপদেশ থেকেই তো আমরা ন্যায়-অন্যায় এর পার্থক্য করতে পারি। কোরান অনুযায়ী এই উপদেশ তারাই পাবে যাদের অনুধাবন করার মত অন্তর রয়েছে (দ্রষ্টব্য- কোরান ৫০-৩৭)।

বহুসংখ্যক আয়াতের মাঝে নিচে ''জিকর'' শব্দটি আছে এমন কয়েকটি আয়াত দিলাম। মিলিয়ে দেখুন তো একবার সেখানে জিকর এর জায়গায় কোরান লিখলে কেমন দেখায়।

সূরা জুমার-৩৯:২১>

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ أَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء فَسَلَكَهُ يَنَابِيعَ فِي الْأَرْضِ ثُمَّ يُخْرِجُ بِهِ زَرْعًا مُّخْتَلِفًا أَلْوَانُهُ ثُمَّ يَهِيجُ فَتَرَاهُ مُصْفَرًّا ثُمَّ يَجْعَلُهُ حُطَامًا إِنَّ فِي ذَلِكَ لَذِكْرَى لِأُوْلِي الْأَلْبَابِ

তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, অতঃপর সে পানি যমীনের ঝর্ণাসমূহে প্রবাহিত করেছেন, এরপর তদ্দ্বারা বিভিন্ন রঙের ফসল উৎপন্ন করেন, অতঃপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তোমরা তা পীতবর্ণ দেখতে পাও। এরপর আল্লাহ তাকে খড়-কুটায় পরিণত করে দেন। নিশ্চয় এতে বুদ্ধিমানদের জন্যে উপদেশ রয়েছে।

See you not, that Allâh sends down water (rain) from the sky, and causes it to penetrate the earth, (and then makes it to spring up) as water-springs and afterward thereby produces crops of different colours, and afterward they wither and you see them turn yellow, then He makes them dry and broken pieces. Verily, in this, is a Reminder for men of understanding

সূরা ক্বাফ-৫০:৩৭>

إِنَّ فِي ذَلِكَ لَذِكْرَى لِمَن كَانَ لَهُ قَلْبٌ أَوْ أَلْقَى السَّمْعَ وَهُوَ شَهِيدٌ

এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্যে, যার অনুধাবন করার মত অন্তর রয়েছে। অথবা সে নিবিষ্ট মনে শ্রবণ করে।

Verily, therein is indeed a reminder for him who has a heart or gives ear while he is heedful.

সূরা আয যারিয়াত-৫১:৫৫>

وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَى تَنفَعُ الْمُؤْمِنِينَ

এবং উপদেশ দিন; কেননা, উপদেশ মুমিনদের উপকারে আসবে।

And remind, for indeed, the reminder benefits the believers.

সূরা আবাসা-৮০:৪>

أَوْ يَذَّكَّرُ فَتَنفَعَهُ الذِّكْرَى

অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো এবং উপদেশ তার উপকার করত।

Or be reminded and the remembrance would benefit him?


কোরান সংরক্ষণের ব্যাপারে আমার উপরোক্ত ব্যাখ্যায় আপনার দ্বিমত থাকতেই পারে। যদি দ্বিমত থাকে তাহলে নিচের কয়েকটি কথা এবার একটু বিবেচনা করুনঃ


১) ধর্মগ্রন্থ অবিকৃত আছে/থাকবে এমন বিশ্বাস থাকা কি সেই ধর্মে বিশ্বাসী হবার জন্য বাধ্যতামূলক? কোরানের ক্ষেত্রে আমরা জানি যে এটা বাধ্যতামূলক। কে বাধ্যতামূলক করেছে? ইসলামী আলেমরা বলেন যে আল্লাহই বাধ্যতামূলক করেছেন। রেফারেন্স হিসেবে আছে আপনার উল্লেখ করা আয়াতটি। কিন্তু আসলেই কি আয়াতটি দিয়ে আল্লাহ এমন কিছু বাধ্যতামূলক করেছেন? এই আয়াতে তো আল্লাহ শুধু একটা বক্তব্য দিয়েছেন কোন আইন জারি করেন নি। বাইবেলের কথা হিসাব করলে দেখা যায় কোন খ্রীস্টানই বিশ্বাস করেনা যে বাইবেল সম্পূর্ণ অবিকৃত, তবু বহু কোটি মানুষ ঠিকই খ্রীস্টান। তেমনি কোরানে কিছুটা বিকৃতি আছে ধরে নিলে কেউ কেন মুসলিম হতে পারবেনা?


২) ধরে নিলাম যে পরম সত্য হচ্ছে কোরান অবিকৃত। কিন্তু কেউ ভুল করে ধারণা করে নিল যে কোরানের কিছু স্থানে বিকৃতি আছে, কিন্তু বেশীরভাগ আয়াতই সে বিশ্বাস করে। কোরান সম্পর্কে এমন ভুল ধারণা করার জন্য কি আল্লাহ তাকে দোজখে পোড়াবেন যদিও সে কোরানের প্রায় সকল উপদেশই মেনে চলে? আল্লাহ কোরানের কোথায় বলেছেন যে কোরান সম্পর্কে এমন ধারণা করলে তার রক্ষা নেই বা সে কাফের? আল্লাহ এমন কথা বলেন নি বরং ইসলামী আলেমরাই এই কথা বলেন।

৩) যদি কেউ মনে করে যে কোরানে কিছুটা বিকৃতি আছে, তার মানে কি বাধ্যতামূলকভাবে তাকে এটাও ধরে নিতে হবে যে সম্পূর্ণ কোরানই বিকৃত? এমন কি হতে পারেনা যে কোরানের বেশিরভাগটাই ঠিক কিন্তু মাত্র কিছু অংশ বিকৃত? কোনকিছু বিকৃত করেও কি আল্লাহ সেটা সংরক্ষণ করতে পারেননা? ফিরাউন এর লাশ আল্লাহ সংরক্ষণ করবেন বলে ওয়াদা করেছেন, সেই লাশ কি সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষিত হয়েছে? আপনার উল্লিখিত আয়াতে কি বলা আছে যে আল্লাহ কোরান সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষণ করবেন?

৪)আপনি বললেন যদি আমি কোরানের অবিকৃতি নিয়েই সন্দিহান হই তাহলে আর হাদিস নিয়ে লেখা শোভা পায়না। আপনি একথা বলেছেন কারণ আপনি আগে থেকেই জেনে নিয়েছেন যে কেউ কোরানের অবিকৃতির ব্যাপারে সন্দিহান হলে আল্লাহর গুডবুক থেকে তার নাম কাটা যায়। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, আল্লাহর গুডবুক থেকে নয় বরং বর্তমানে মুসলমান নামধারী জনগোষ্ঠির গুডবুক থেকে নাম কাটা যায়। আল্লাহ বরং অনেক সৎ ইহুদী, খ্রীস্টান যারা কোরানে বিশ্বাস করেনা তাদের জান্নাতের ব্যাপারেও অঙ্গীকার করেছেন।


এবার আমাকে একটু বুঝিয়ে বলুন যে কোরানের কিছু অংশে বিকৃতি আছে মনে করলে হাদীস নিয়ে লিখা শোভা পাবেনা কেন? কারও একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার ছাড়া যেকোন ব্যাপারে যে কারও মতামত দেয়া একটি মানবিক অধিকার। খুব কমন সেন্স থেকেই হাদীসের অযৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় এর জন্য এমনকি কোরান বিশ্বাসীও হওয়া লাগবে কেন? আর কোরানে বিকৃতি থাকলে রজম বা সাক্লিং এর হাদীস সত্যি হয়ে যাবে কেন? হাদীসগুলো পড়লেই বুঝা যায় আইন বানানোর স্বার্থে সেগুলো উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে বানানো। কোরানে বিকৃতি ঘটনো এতটা সহজ কাজ ছিলনা এবং যে কেউ চাইলেই সেটা করতে পারতনা। কোরানে বিকৃতি যদি হয়েই থাকে সেটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে বা কোন ক্ষমতাবান গোষ্ঠি দ্বারা হয়েছে। কিন্তু হাদীস বানিয়ে ফেলাটা খুবই সহজ কাজ ছিল, যে কেউ চাইলেই সেটা পারত। কিন্তু পাথর নিক্ষেপে হত্যার মত আইন শুধু হাদীসের ভিত্তিতে চালু করা অনেক কঠিন ছিল তাই ইহুদীরা কোরানের দোহাই দিয়ে এটা করেছে। মূলত এই আইন একটি ইহুদী আইন আর এটা ইহুদীদের হাদীসের অনুরূপ গ্রন্থে পাওয়া যায়।




এবার আসা যাক কোরানের অবিকৃতি সম্পর্কে আমার স্ট্যান্ড এমন কেন। এব্যাপারটি আমি পরের কমেন্টে বিস্তারিত বলছি।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৭:৪৯

মেহেদী পরাগ বলেছেন: কোরান সংরক্ষণ সম্পর্কিত ওই আয়াতটিতে জিকির শব্দের অর্থ কেন কোরান হতেই হবে এই ব্যাপারে যদি একটু যুক্তি দেখাতে পারেন তাহলে আমার চিন্তা করতে আর একটু সুবিধা হত।

১৯| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

অন্যরকম একজন বলেছেন: অনেকদিন পরে হলেও উত্তর করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া ।আমি প্রথমেই ক্ষমাপ্রার্থী কারন আমি আরবী জানি না ।কাজেই উল্লেখিত আয়াতে 'জিকর' শব্দের মানে কী কী হতে পারে এই ব্যপারে কিছু বলতে আমি পুরোপুরি অপারগ।ভাইয়া,কথা হচ্ছে,কুরানকে স্ট্যান্ডার্ড ধরেই ত আমরা হাদিস বা অন্যান্য উৎসকে বিচার করি । সেক্ষেত্রে যদি স্ট্যান্ডার্ডেই কোন ঝামেলা থাকে তাহলে বিচারটা করব কী দিয়ে? ধরুন ,রজম সংক্রান্ত কোরানের আয়াত ছাগলে খেয়ে ফেলেছে বলে পুরোপুরি হাদিসের উপর ভিত্তি করে আলেমরা যে পাথর মেরে বিবাহিত ব্যভিচারীদের হত্যার ফতোয়া দেন ,কিংবা অ্যাডাল্ট সাকলিং সংক্রান্ত উদ্ভট ফতোয়া দেন তারাও ত তাহলে বলবেন যে কোরান অবিকৃত নয় তাই এসব হাদিসই মানতে হবে!

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪

মেহেদী পরাগ বলেছেন: কোরান যে বিকৃত আমি কিন্তু সেকথা বলছিনা। আমি শুধু সম্ভাবনার কথা বলেছি। সম্ভাব্যতার হিসেবেই নিচের কথাগুলো বিবেচনা করুন।

কোরান অবশ্যই একটি স্ট্যান্ডার্ড। কিন্তু সেই স্ট্যান্ডার্ডে সামান্য কিছু ঝামেলা থাকলে তাতে এত অসুবিধা কোথায়? যেই আয়াত দিয়ে অসুবিধার কথা বলা হয় আয়াতটা ভালকরে যাচাই করলেই তো আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। আপনি ব্যাপারটা একেবারেই মানতে পারছেন না কারণ ছোটবেলা থেকেই কোরান অবিকৃত এই ধারণা নিয়েই বড় হয়েছেন। অন্যদিকে ইহুদী/খ্রীস্টানদের কথা চিন্তা করে দেখুন তারা কিভাবে ধর্মগ্রন্থের ঝামেলা মেনে নিয়েই নির্বিঘ্নে ধর্ম ও ইশ্বর বিশ্বাস করতে পারছে? কারণ ছোট থেকেই এভাবে শিখে এসেছে। তারমানে পার্থক্যটা শুধু শিক্ষা ও মানসিকতায়। আপনার সন্তানকে যদি কোরান কিছুটা বিকৃত এই শিক্ষা দিয়ে বড় করেন তাহলে মুসলিম হয়েও তার এই ব্যাপারটা মেনে নিতে কোন অসুবিধাই হবেনা। ছোটবেলায় শিখে এসেছেন বলে একসময় হাদীসে ভুল আছে জেনেও শুরুতে হয়তো মানতে পারেননি। কিন্তু উপরে কোরানের বেকআপ ছিল বলে যুক্তির আশ্রয় নিয়ে হাদীসের সমালোচনা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু এখন কেন ভাবতে পারছেননা যে কোরানের উপরেও বড় বেকআপ স্বয়ং আল্লাহ আছেন, তিনি তো মানুষের মনেই বাস করেন আর বিবেকের মাধ্যমে কথা বলেন। আল্লাহর উপর আস্থা রেখে এবার হাদীসের মত করে কোরান যাচাই করে দেখুন না? হাদীসের মত গাঁজাখুরি জিনিস প্রায় পাবেনই না, কিন্তু ভুল ভ্রান্তি কি কিছুই পাবেননা?

তাছাড়া এই কোরান দিয়েই অনেক কিছু বিচার করা যায়। সবচেয়ে বড় বিচারগুন আল্লাহ মানুষের অন্তরেই দিয়েছেন, বিবেক। বিবেক না খাটালে এমনকি বর্তমান কোরান দিয়েই একেকজন একেক বিচার করতে পারে। যেমন কেউ বউ পিটানো জায়েজ মনে করে, কেউ দাসী সহবত বৈধ মনে করে, কেউ চার বিয়ে হালাল মনে করে, কেউ কাজিন বিয়ে করা বৈধ মনে করে, কেউ অমুসলিম হত্যা বৈধ মনে করে, কেউ চোরের হাত কাটার শাস্তি আবশ্যক মনে করে, কেউ আত্মঘাতি বোমা হামলা করে নিরীহ মানুষ হত্যা করা জিহাদ মনে করে, এমন আরও অসংখ্য উদাহরণ আছে। জামাতে ইসলাম দলটাতো পুরো কোরানটাই মৌদুদীর নিজস্ব ইন্টারপ্রিটেশন বিশ্বাস করে। এভাবে ভাবলে বরং কোরানের বৈজ্ঞানিক,গাণিতিক ও মোরালিটি সংক্রান্ত ভুলগুলোর একটা সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।

যদি ধরেও নেই যে কোরানে কিছুটা বিকৃতি আছে, সেই বিকৃতির আকার হাদীসের বিকৃতির স্কেলে হিসাব করলে খুবই নগণ্য হবে, কারন কোরানে বিকৃতি হলে সেটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে বা কোন ক্ষমতাবান গোষ্ঠি দ্বারা হয়েছে, কিন্তু হাদীস বানিয়ে ফেলাটা খুবই সহজ কাজ ছিল, যে কেউ চাইলেই সেটা করতে পারত। তাই কোরানে বিকৃতি আছে এই দোহাই দিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে হাদীস মানতে হবে এমন কথা বরং হাস্যকরই শুনাবে, কেননা হাদীসের বিকৃতি তো আরও বিশাল।

২০| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬

মেহেদী পরাগ বলেছেন: কোরান এর অবিকৃতি নিয়ে ইসলামী স্কলারগণ অনেক মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে থাকেন। তারা বলেন যে সারা দুনিয়ার সকল কোরান মিলিয়ে দেখলেও ১ টা বিন্দু পর্যন্ত এদিক সেদিক পাওয়া যাবেনা। পৃথিবীতে কোরানের শুধুমাত্র ১ টি ভার্সনের অস্তিত্ব আছে। স্কলারদের মুখে শুনে সাধারণ মানুষও এইকথা বেশ প্রচার করে বেড়ায়। কিন্তু একটু খোঁজ করতেই আমি সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ছবি পেলাম।

আমি দেখলাম প্রকৃতপক্ষে বেশ কিছু ভিন্ন ধরণের কোরান মুসলিম সমাজে স্বীকৃত। স্বীকৃত হবার পরেও প্রায় ৯৯ শতাংশ মুসলিমই এই ব্যাপারটি জানে না। বেশ অবাক হলাম। সারাজীবন জেনে এলাম কোরানের একটি মাত্র সংস্করণ আছে যা আল্লাহ নিজেই সংরক্ষণ করবেন, তাহলে আবার ভিন্ন ভিন্ন কোরান এল কোত্থেকে, আর সেগুলো ইসলামিক সমাজে স্বীকৃতিই বা পেল কি করে? স্কলাররা এ ব্যাপারে কি বলেন সেগুলো একটু খুঁজে দেখার চেষ্টা করলাম।

স্কলাররা একটা হাদীসের রেফারেন্স আনলেন। সেই হাদীসে বলা আছে যে পবিত্র কোরান ৭ টি হরফ বা উচ্চারণ রীতিতে (Dialect) নাজিল হয়েছিল। অতএব বর্তমানে পাওয়া সাতটি ভিন্ন ভিন্ন কোরানই অনুমোদিত ।


ইবনে আব্বাস(রা.) হতে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ(সা.) বলেন, “জিব্রাইল[আ.] আমার কাছে এক হরফে কুরআন তিলাওয়াত করলেন, আর আমি তাকে ভিন্ন ভিন্ন হরফে তিলাওয়াত করতে বলতে লাগলাম যতক্ষণ না, তিনি সাতটি ভিন্ন হরফে তিলাওয়াত করলেন।” [সূত্র: সহিহ বুখারি, আরবী: ৩২১৯, ইংরেজি অনুবাদ: ৪।৫৪।৪৪২, সুন্নাহ.কম: ৫৯।৩০]

উবাই বিন কা’ব(রা.) হতে বর্ণিত আরেকটি হাদিসের শেষে জিব্রাইল(আ.) বলেন: আল্লাহ আপনাকে আপনার উম্মতের নিকট সাত হরফে তিলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং যে হরফেই তারা তিলাওয়াত করুক, তারা সঠিক [সাব্যস্ত] হবে। [দ্রষ্টব্য: সহিহ মুসলিম, আরবী: ৭।১৯৪২, ইংরেজি অনুবাদ: ৪।১৭৮৯, সুন্নাহ.কম: ২১৭৮৯০]

উমর বিন খাত্তাব বলেন: আমি হিশাম বিন হাকিম বিন হিযামকে সূরা আল-ফুরকান আমি যেভাবে পড়তাম, যেভাবে রাসূলুল্লাহ(সা.) আমাকে শিখিয়েছিলেন, তা অপেক্ষা ভিন্ন এক পদ্ধতিতে পড়তে শুনলাম। আমি তার সাথে তর্ক করতে উদ্যত হলাম, কিন্তু তিনি তা শেষ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। অত:পর আমি তার চাদর ধরে তাকে রাসূলুল্লাহ(সা.)এঁর কাছে নিয়ে গেলাম এবং বললাম: ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি এই ব্যক্তিকে এমন পদ্ধতিতে সূরা আল-ফুরকান পড়তে শুনেছি যা আপনি আমাকে যেভাবে শিখিয়েছেন তা অপেক্ষা ভিন্ন। এই প্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ(সা.) তাকে ছেড়ে দিতে বললেন এবং তাকে তিলাওয়াত করতে বললেন। তিনি তখন সেই পদ্ধতিতে পড়লেন যেই পদ্ধতিতে আমি তাকে পড়তে শুনেছিলাম। রাসূলুল্লাহ(সা.) তখন বললেন: এভাবেই এটা নাযিল হয়েছে। তিনি তখন আমাকে তিলাওয়াত করতে বললেন এবং আমি তিলাওয়াত করলাম। তিনি বললেন: এভাবেই এটা নাযিল হয়েছে। কুরআন সাতটি হরফে নাযিল হয়েছে। কাজেই সেগুলোর ভেতর হতে যেটা সহজ মনে হয় সেভাবেই তিলাওয়াত করো। [সূত্র: সহিহ মুসলিম, আরবী: ৭।১৯৩৫, ইংরেজি অনুবাদ: ৪।১৭৮২, সুন্নাহ.কম: ২১৭৮২০]

উবাই বিন কা’ব(রা.) হতে বর্ণিত:
আমি এক মসজিদে ছিলাম যে সময় এক ব্যক্তি প্রবেশ করে নাযাল পড়ল এবং এমন এক পদ্ধততিতে তিলাওয়াত করলো যাতে আমি আপত্তি করলাম। অত:পর অন্য এক ব্যক্তি প্রবেশ করলো এবং এমন এক পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করলো যা তার সাথীর পদ্ধতি অপেক্ষা ভিন্ন ছিল। যখন আমরা নামায শেষ করলাম, আমরা সবাই রাসূলুল্লাহ(সা.)এঁর কাছে গেলাম এবং তাঁকে বললাম: এই ব্যক্তি এমন এক পদ্ধততিতে তিলাওয়াত করলো যাতে আমি আপত্তি করলাম, অত:পর অন্যজন প্রবেশ করলো এবং এমন এক পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করলো যা তার সাথীর পদ্ধতি অপেক্ষা ভিন্ন ছিল। রাসূলুল্লাহ(সা.) তাদের তিলাওয়াত করতে বললেন, কাজেই তারা তিলাওয়াত করলেন। রাসূলুল্লাহ(সা.) তাদের ব্যাপারে অনুমোদন ব্যক্ত করলেন। আর আমার মনে একপ্রকার অস্বীকৃতি বিরাজ করলো যা এমনকি জাহিলিয়াতের দিনেও আসে নাই। যখন রাসূলুল্লাহ(সা.) দেখলেন আমি কিভাবে [ভুল ধারণার দ্বারা] আক্রান্ত হয়েছি, তিনি আমার বুকে আঘাত করলেন, যার ফলে আমি ঘামতে লাগলাম এবং ভয়ে মনে হতে লাগলো আমি যেন আল্লাহকে দেখছি। তিনি বললেন: উবাই! আমাকে এক হরফে কুরআন তিলাওয়াত করার নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল। আমি উত্তর দিলাম: আমার উম্মতের জন্য সহজ করো। দ্বিতীয়বার আমাকে জানানো হলো যে দুই হরফে তিলাওয়াত করা যাবে। আমি পুনরায় উত্তর দিলাম: আমার উম্মতের জন্য সহজ করো। তৃতীয়বার আমাকে সাত হরফে তিলাওয়াত করার কথা জানানো হলো.. [সূত্র: সহিহ মুসলিম(হাদিসের প্রাসঙ্গিক অংশ), আরবী: ৭।১৯৪০, ইংরেজি অনুবাদ: ৪।১৭৮৭, সুন্নাহ.কম: ২১৭৮৭০]


আরেকটু খোঁজ নিয়ে দেখলাম যে আলেমদের দেয়া উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি বিভ্রান্তিকর। হাদীস গুলো পড়লে বুঝা যায় যে এখানে শুধু আঞ্চলিক ভাবে ভিন্ন উচ্চারণ রীতির কথা বলা হয়েছে। অক্ষর বা শব্দ বা কোন ব্যাকরণ পরবর্তনের কথা বলা হয়নি। কিন্তু বর্তমানের প্রচলিত কোরানগুলোতে বিশেষ্যের পার্থক্য, ক্রিয়াপদের পার্থক্য, বৈশিষ্ট্যসূচক চিহ্নের পার্থক্য, উচ্চারণগত পার্থক্য, শব্দের ভিন্নতা, শব্দের আগ-পিছ, শব্দের কম-বেশী ইত্যাদি বিভিন্ন রকম পার্থক্য দেখা যায়।

এছাড়া প্রচলিত ভিন্ন রীতির কোরানের সংখ্যাও ৭ টি নয় বরং আরও অনেক বেশী। এর মাঝে ১০ টি কোরান সমস্ত স্কলার কর্তৃক স্বীকৃত, আরও ৪ টি একটু কম প্রসিদ্ধ হলেও স্বীকৃত। আর প্রায় ৪৬ টির কোন স্বীকৃতি নাই কিন্তু অস্তিত্ব আছে।

আবারও খোঁজ করলাম যে স্কলাররা এ ব্যাপারে কি বলেন। এবার কিছুটা ভিন্ন ধরণের উত্তর পেলাম। হযরত উসমান এর খিলাফতকালে ৭ হরফের কোরান নিয়ে বেশ ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছিল। সাহাবাগণ একটার সাথে আর একটা গুলিয়ে ফেলছিলেন। তাই হযরত উসমান শুধু মূল হরফ কুরাইশ ঠিক রেখে বাকি ৬ টি হরফের কোরান নষ্ট করে দিয়েছিলেন। এখনকার প্রচলিত কোরানগুলো এই কুরাইশ হরফের ভিন্ন ভিন্ন কিরাত বই অন্য কিছু নয়। ১০ টি প্রসিদ্ধ কিরাতের মাঝে হাফস কিরাত সবচেয়ে বেশী প্রচলিত আর ওয়ারশ কিরাত অল্প কিছু দেশে প্রচলিত, বাকীগুলোর প্রচলন খুবই কম।

The Readings and Rhythm of the Uthman (Qur'anic) Manuscript এই বইটিতে লেখক পুরো হাফস কোরান প্রিন্ট করেছেন, আর যে শব্দগুলো ওয়ারশ কোরানের সাথে পার্থক্যপূর্ণ সেগুলো আন্ডারলাইন করেছেন আর পাশে মার্জিনের খালি জায়গাতে তা লিখে দিয়েছেন। হাফস এবং ওয়ারশ কিরাতের কোরানের মাঝে ১৩৫৪ টি পার্থক্য পাওয়া যাবে এই বইটিতে। বইটির একটি পৃষ্ঠার ছবি দিলাম।



আর অথেন্টিক ১০ টি ভিন্ন কিরাতের কোরানের মাঝেই পার্থক্য পাবেন মুহাম্মদ ফাহাদ খাররুন এর লিখা আরেকটি আরবী বই ت التنزيل مذيلا بمنظومتي الشاطبية والدرة থেকে। বইটি চাইলে আপনি কিনতে পারবেন Click This Link এই সাইট থেকে। বইটির একটি পৃষ্ঠার ছবি দিলাম।



আলেমদের দেয়া এই উত্তরে আমার মনের খটকা বারল বই কমলনা। এই কিরাত আবার কোত্থেকে এল? এর রেফারেন্স কই, কোন হাদীসে তো ভিন্ন কিরাতের কোন রেফারেন্স নেই। এছাড়া হরফ আর কিরাতের মাঝে পার্থক্য কি? আবার খুঁজলাম স্কলাররা কি বলেন। উত্তর যা পেলাম আবারও অবাক হলাম। কিরাতের কোন রেফারেন্স নেই, এটা শুধুমাত্র ইসনাদ বা চেইন অব নেরেটর এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ প্রতিটি কিরাতের প্রবক্তাগন ছিলেন সত্যবাদি, তারা তাদের পূর্বের প্রজন্মের সত্যবাদী কিছু ইমাম/তাবেয়ীন/সাহাবার কাছ থেকে এই কিরাত শিক্ষা লাভ করেছিলেন যারা কিনা আবার সরাসরি নবী (সা) এর কাছ থেকে সেই কিরাত শিক্ষা লাভ করেছিলেন। এতদিন জেনে এসেছিলাম শুধুমাত্র হাদীসের মাঝেই জাল, সহিহ, জয়িফ, হাসান ইত্যাদি রকমফের আছে- কিন্তু কোরান শুধুমাত্র ১ টাই, আর এখন দেখলাম আসলে কোরানের মাঝেও জাল কোরান, সহিহ কোরান, জয়িফ কোরান আর হাসান কোরান বিদ্যমান।

হাদীস নিয়ে পড়াশুনার পর জেনেছি যে ইসনাদ বিশ্বাস করার পিছনে কোন যৌক্তিক কারণই নেই। আর এই কোরানগুলো নাকি সেই ইসনাদের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত! এছাড়া হরফ আর কিরাতের মাঝে পরিষ্কার কোন পার্থক্যও আলেমরা দেখাতে পারেননা। তাই কিছুটা মর্মাহত হলাম। তবে একটা জিনিস জেনে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছিল। ভিন্ন ভিন্ন কিরাতগুলোর মাঝে অনেক অনেক পার্থক্য থাকলেও সামগ্রিক ভাবে কোরানগুলোর অর্থের মাঝে খুব একটা পার্থক্য নেই। উদাহরণ স্বরুপঃ

২:১২৫ হাফস এ পড়া হয় ওয়াত্তাখিজু (তোমরা নেবে) ওয়ারশ এ পড়া হয় ওয়াত্তাখাজু (তারা নিয়েছে)

২:১৪০ হাফস এ পড়া হয় তাকুলুনা (তোমরা বল) ওয়ারশ এ পড়া হয় ইয়াকুলুনা (তারা বলে)

৩:১৪৬ হাফস এ পড়া হয় কাতাল (লড়াই করেছিল) ওয়ারশ এ পড়া হয় কুতিল (খুন হয়েছিল)

উপরের উদাহরণগুলো শব্দের অর্থ পার্থক্য দেখালেও বাক্যের অর্থে খুব বেশী পার্থক্য দেখায় না। তাই কিছুটা এপলজিস্টিক ওয়েতে ভিন্ন কোরানগুলো মেনে নেয়া যায়। কোরানের মত মহা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ খুবই যত্নের সাথে সংরক্ষণ করা উচিত। হযরত উসমান কর্তৃক সংকলিত কোরানগুলোর অন্তত একটা কপি নিশ্চয়ই আছে যাকে আদর্শ ধরে সঠিক কিরাতের কোরানটি পেতে পারি। খোঁজ নিয়ে দেখলাম যে তাশখন্দ মিউজিয়াম এ হযরত উসমান কর্তৃক সংকলিত কোরানের কপি সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও ইস্তাম্বুলের মিউজিয়ামে একটি প্রাচীন গোল্ডেন কোরান আছে। যাক আশস্ত হলাম।

কিন্তু আবার একটু ভাল করে খোঁজ নিয়ে পুনরায় হতাশায় নিমজ্জিত হলাম। প্রথমত ওই কোরানটি সম্পূর্ণ নয়, আংশিক আকারে পাওয়া গিয়েছিল। তাছাড়া তাশখন্দের কোরানটি আসলে হযরত উসমান কর্তৃক সংকলিত নয়, বরং আরও অনেক পরের। কার্বন ডেটিং পদ্ধতিতে সেটার বয়স নির্ণয় করা হয়েছিল। এছাড়া ক্যালিগ্রাফিও হযরত উসমান এর আমলের ছিলনা, এমন বেশ কিছু উপাত্তের মাধমে প্রমাণ হয়েছিল যে সেটি হযরত উসমানের কোরান নয়। ততকালীণ মুসলমানেরা কতটা খামখেয়ালী আর অবিবেচক হলে এমন কাজ করতে পারে যে হযরত উসমানের কোরানের একটি কপিও সংরক্ষণে রাখতে পারলনা? এটার গুরুত্ব কি তারা বুঝেননি? সে যাই হোক, সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা তখনো আমার জন্য অপেক্ষা করে ছিল।

প্রাচীন সেই কোরানগুলোর সাথে বর্তমান কোরানের ভয়ানক কিছু পার্থক্য আছে। উদাহরণস্বরুপ, ভুলভাবে দাবীকরা উসমানের কোরানের ৩৭:১০৩ আয়াতের একটি অংশ হচ্ছে ''ওয়ামা আসলামা'' যার অর্থ ''এবং তারা আত্মসমর্পণ করেনি। কিন্তু বর্তমান কোরানে সেখানে আছে ''ফালাম্মা আসলামা'' যার অর্থ ''যখন তারা আত্মসমর্পণ করেছিল। এমন আরও অনেক আয়াত আছে যার অর্থ সম্পূর্ণ আলাদা। গোল্ডেন কোরানেরও কিছুটা একই অবস্থা। তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অন্য দুটি কোরান নিয়ে যেগুলো তাসখন্দের কোরানের চেয়েও পুরানো এবং সেটার পরে আবিষ্কার হয়েছিল। অনেক অনেক অমিল আছে সেই কোরানগুলোতে।

বর্তমান কোরানের সাথে তাশখন্দ মিউজিয়ামে উসমানের কোরানের পার্থক্যের বহু উদাহরণের মাঝে প্রমাণ হিসেবে ২ টি উদাহরণ নীচে দিচ্ছি। (প্রতিক্ষেত্রেই উপরের মোটা হরফে আয়াত উসমানের কপিকৃত তাশকেন্ত মিউজিয়ামে রাখা কোরআন থেকে নেয়া এবং নীচের আয়াত বর্তমানে প্রচলিত কোরআন থেকে নেয়া।)



তাসখন্দের কোরানটি প্রথমে সাধারণ মানুষের যাচাই করার সুযোগ ছিল। ইস্তাম্বুলেরটি পাওয়া সম্ভব ছিলনা। তাসখন্দেরটি সম্পূর্ণ কোরান নয়। মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ এর সাদাকালো ফটোকপি করে বই হিসেবে সরবরাহ করেছিলেন। বেশ কিছু ইসলামিক স্কলার প্রথমে বিশ্ববাসীকে বোকা বানিয়েছিলেন মাত্র দুই একটি পৃষ্ঠার সাথে বর্তমান কোরানের হুবুহু মিল দেখিয়ে। কিন্তু পরে এক খৃষ্টান গবেষক, ব্রাদার মার্ক একটি বই প্রকাশ করেন যাতে তিনি বর্তমান কোরানের সাথে তাসখন্দের কোরানের বহু অমিল দেখিয়েছেন। বইটির নামঃ A perfect qurʹan Click This Link

Click This Link সাইটে আপনি ব্রাদার মার্কের বই থেকে বেশ কিছু উদাহরণ পাবেন। এইখানে মূল পয়েন্ট হচ্ছে তিনি এমন একটি বিষয়ে বই লিখেছেন যা চাইলে সকলেই যাচাই করতে পারে। তিনি মিথ্যা বলেছেন এটা কেউ প্রমাণ করতে যাননি। অনেক ইসলামিক স্কলার বরং সত্য প্রকাশিত হয়ে যাওয়াতে সেটা স্বীকার করে পরে বিভিন্ন ব্যাখ্যা বিশ্লেষন দাঁড় করানোর চেষ্টা করে অনেক আর্টিকেল ছাপিয়েছিলেন পরে আবার মুছেও দিয়েছিলেন। অনলাইনে খুঁজলে সেই আর্টিকেলগুলোর কিছু ডেড লিঙ্ক পাওয়া যায় মাত্র, আর্টিকেল পাওয়া যায়না।

প্রথমে না পাওয়া গেলেও ইস্তাম্বুলের স্বর্ণের কোরান পড়ার সুযোগ এখন আছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েব সাইটে কোরানটির অনেকগুলো সুরা কালার স্ক্যান করে পাবলিকের কাছে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। Click This Link এই সাইটে গিয়ে পড়ে দেখতে পারেন, বর্তমান কোরানের সাথে অনেক জায়গাতে অমিল আছে।

এতকিছুর পর এখন আর এপলজিস্টিক ওয়েতে চিন্তা করার সুযোগ রইল কোথায়? একটু চিন্তা করেই বুঝা যায় যে কেন বর্তমানের ১০ টি ভিন্ন কিরাতের কোরানের মাঝে শব্দ/ব্যাকরণগত পার্থক্য থাকলেও মূল অর্থগত কোন পার্থক্য নেই। মূলত হযরত উসমান শুধুমাত্র একটি কোরান (এক হরফ ও এক কিরাত) সংকলণ করে প্রচলিত বাকি সমস্ত কোরান ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। কালের পরিক্রমায় সেখান থেকে মুখস্ত করার সময় এবং হাতে লিখে কপি করার সময় বিভিন্ন পার্থক্যের সূচনা হয়েছে। এভাবে চলতে চলতে ৫০ টিরও বেশী কোরানের সৃষ্টি হয়েছে। তখন একটি প্রজন্ম চিন্তা করল যে এত কোরানের মাঝে আসল কোরান কোনটি? তৎকালীন বৈজ্ঞানিক অনগ্রসরতার যুগে তাদের কাছে ইসনাদই ছিল সত্যতা যাচাই এর সর্বোত্তম পন্থা। তবে ইসনাদে মুতাওয়াতীর (প্রতি প্রজন্মে অনেক সাক্ষী) হলেই যে তা সত্যতার নিশ্চয়তা দেয়না সে ব্যাপারে তারা ভালভাবেই সচেতন ছিলেন (অথচ আজকালকার স্কলাররা এটা বুঝেননা। সচেতন ছিলেন বলেই বেশ কিছু কোরান মুতাওয়াতির হবার পরেও সহিহ মর্যাদা পায়নি বাকি কোরানগুলোর সাথে অর্থগত পার্থক্য থাকার কারণে। ১০ টি কোরান সহিহ মর্যাদা পেয়েছে কারণ এগুলোর মাঝে মূল অর্থগত পার্থক্য ছিলনা। এরপর প্রিন্টিং প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ফলে মানবজাতি ডকুমেন্টেশনে বেশ উন্নতি লাভ করল। তাই সেই ১০ টি কিরাতের কোরানের সঞ্চালনে আর বিকৃতি ঘটেনি। এর পেছনে আল্লাহর হাত আছে বলেও আর মনে হয়না, কারণ প্রিন্টিং আবিষ্কার এর পর বাইবেলও আর বিকৃত হয়নি, আরও অন্যান্য হাজার হাজার গ্রন্থের কথা বাদই দিলাম।

প্রশ্ন উঠে, একই কোরানের ৭ টি ভিন্ন হরফের ভেতর আবার প্রতিটিতে এতগুলো করে ভিন্ন কিরাতের কথা কোরান তো দূরের কথা হাদীসেও একবারের জন্য এলনা কেন? আবার প্রতিটি হরফে গড়ে ১৪ টি করে কিরাত হিসাব করলে ৯৮ টি ভিন্ন কোরান চলে আসে। এদিকে হরফ আর কিরাতের মাঝেও বৈশিষ্টমূলক কোন পার্থক্য নেই। সর্বোপরি এতগুলো কিরাতে কোরান নাজিল হওয়ার ব্যাপারটা যুক্তির বিচারে কোনভাবেই টিকেনা। হাতে লিখা কোরানগুলোতে বিকৃতি ঢুকলো কিভাবে? আল্লাহ যদি ওয়াদা করেই থাকেন যে তিনি কোরান সংরক্ষণ করবেন তাহলে এই ভুলগুলো ঢুকল কিভাবে? এই কোরানগুলো যারা পড়েছিল তারা কি ভুল পড়েছিল? নাকি আগের গুলোই সঠিক ছিল আর বর্তমানের কোরানগুলো ভুল? ৫০ টি ভিন্ন ভিন্ন জাল কোরান কিভাবে লিখিত হল? যে ভিন্ন উচ্চারন ও বানানে কোরান নাজিল হয়েছিল সেসব গুলোতেই কেন হযরত উসমান ভিন্ন ভিন্ন কোরান সংকলন করলেন না ? কেন শুধু কুরাইশ আঞ্চলিক উচ্চারনের কোরান সংকলন করলেন ? নবির ব্ক্তব্য মোতাবেক, শুধুমাত্র কুরাইশ উচ্চারনেই কোরান নাজিল হয় নি। তাই নয় কি? হযরত উসমান এই অথোরিটি কোথায় পেয়েছিলেন? আর যেখানে অসুবিধা হয় বলে নবী বারবার চেয়ে চেয়ে ৭ হরফের কোরান আনালেন, সেখানে আবার ৭ হরফ অসুবিধা সৃষ্টি করল কিভাবে যে আবার ১ হরফে নামিয়ে আনতে হল? সর্বোপরি, নবীর জীবন ছিল মক্কা ও মদিনা কেন্দ্রিক, কুরাইশ আঞ্চলিক আরবি যদি আদর্শ ভাষা হয় যা নাকি মদিনার লোকরাও বুঝত ও নবির নিজের মাতৃভাষা ছিল, তাহলে কুরাইশ উচ্চারন ছাড়া ভিন্ন উচ্চারনে কোরান নাজিলের কি দরকার ছিল ? নবি যদি বাংলাদেশে জন্ম গ্রহণ করতেন আর তার জন্মস্থান যদি পাবনা হতো এবং ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালি বিভিন্ন অঞ্চলে সফর করতেন আর তখন যদি কোরানের আয়াত নাজিল হতো, তাহলে কি একটা আদর্শ বাংলা ভাষা বা নবির নিজস্ব আঞ্চলিক বাংলাভাষা ছাড়া ঢাকাইয়া, চাটগাইয়া, নোয়াখালির আঞ্চলিক ভাষায় কোরানের আয়াত নাজিল হতো ? সেটাই যে আসলে হতো তা তো বোঝা যাচ্ছে উক্ত হাদিস সমূহে। কিন্তু সেটা কি করে সম্ভব? কোরান একটা চিরন্তন দলিল। চিরন্তন দলিল তো দুরের কথা আমরা সাধারন একটা দাপ্তরিক পত্র লিখতে গেলেও তো একটা আদর্শ দা্প্তরিক ভাষা ব্যবহার করি। বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা একসাথে ব্যবহার করি না। সে ক্ষেত্রে আল্লাহ কোরানের মত একটা চিরন্তন দলিল নবির কাছে নাজিল করতে কমপক্ষে ৭ টা আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করলেন অথচ তিনি একই আরবি গোষ্ঠির মধ্যেই দিনাতিপাত করেছেন যাদের মাতৃভাষা ছিল আরবী, অঞ্চল ভেদে হয়ত নানা আঞ্চলিক আরবি ভাষা ছিল। এভাবে নানা রকম আঞ্চলিক ভাষায় সার্বজনীন দলিল কোরান নাজিল কিভাবে একজন সর্বজ্ঞানী আল্লাহ করেন সেটা ঠিক বুঝতে পারছি না।

হযরত উস্মানের কোরান সংকলন নিয়ে সেই হাদীসগুলোও এখন বিবেচনায় নিতে হলঃ

নবীজি (সাঃ) ইবনে মাসুদকে সম্মান করেছেন কোরআনের শ্রেষ্ঠ পাঠক হিসাবে। আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, চার ব্যক্তির নিকট থেকে তোমরা কোরআনের পাঠ গ্রহণ করঃ (১) ইবনে মাসউদ (২) আবু হুযাইফার মুক্ত গোলাম সালিম (৩) উবাই (ইবনে কা’ব ও (৪) মুয়ায ইবনে জাবাল।
{সহীহ্ আল-বোখারী, ৩৫২৮( জামে সাহীহ্ আল-বোখারী অনুবাদ মাওলানা মোবারক করীম জওহর, খান ব্রাদার্স আন্ড কোম্পানী, ৯ বাংলাবাজার ১১০০;ঢাকা ২০০৮, পৃষ্ঠা ৬৪৩}

কোরআন সম্পর্কে ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর প্রতিক্রিয়াঃ হজরত ওসমানের এই ঘোষনা যখন কুফাতে শোনা গেলো যে, এদের সব কোরআন পুড়িয়ে দিয়ে শুধুমাত্র যায়েদ ইবনে সাবেতের মুসহাফ এখন থেকে ব্যবহার করতে হয়। আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ এর বিরোধিতা করলেন। এই হুকুম শুনে তিনি কুফা শহরে এই ভাবে খুৎবা দিলঃ কোরআনের পাঠে লোকেরা ছলনার দোষে পড়েছে। আমি এর পাঠ বেশী পছন্দ করি {মুহাম্মাদের}, যার পাঠ আমি যায়েদ বিন সাবেতের পাঠ থেকে বেশী ভালোবাসি। আল্লাহ্র কসম! যিনি ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই। আমি আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ)-এর মূখ থেকে সত্তরেরও বেশী সূরা শিখেছি। যখন যায়েদ ইবনে সাবেত যুবক ছিলেন। এর মাত্র দুইটি কেশপাল চুল ছিলো। এবং যুবকদের সাথে তখন খেলা করতেন। (ইবন সা’দ, কিতাবুল তাবাকাত আল-কবির, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৪৪৪)

তিরমীযী লেখেনঃ
যুহরী (রাঃ) বলেনঃ ইবায়দুল্লাহ্ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে উতবা বলেছেন যে, হজরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) যায়েদ ইবনে ছাবিতের এ তৈরী কপি পছন্দ করেন নি। তিনি বলেছেনঃ “হে মুসলিম সম্প্রদায়!” কোরআনের মুসহাফ লিপিবদ্ধ করার কাজে আমাকে দূরে রাখা হয়েছে আর এর দায়ীত্ব বহন করেছে এমন এক ব্যক্তি যে আল্লাহ্র শপথ আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করি তখন সে ছিলো এক কাফিরের ঔরসে। (এই কথা বলে তিনি যায়েদ ইবনে ছাবিতের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেন “হে ইরাকবাসী! তোমাদের কাছে যে মুসহাফগুলো রয়েছে সেগুলো লুকিয়ে রাখো। (জামিউত তিরমিযী, সোলেমানিয়া বুক হাউস, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৮৫১)

ইবনে আবু দাউদের কিতাবুল মাসাহিফ গ্রন্থে আছে যে ইবনে মাসউদ বলতেনঃ আমি সরাসরি আল্লাহ্র রাসুল(সাঃ) থেকে সত্তর সূরা পেয়েছি যখন; যায়েদ বিন সাবেত তখনও একজন বাচ্চা মানুষ ছিলো। এখন আমি কি ত্যাগ করব যেটা আমি আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) থেকে সরাসরি পেয়েছি? (ইবন আবি দাউদ, কিতাবুল মাসাহিফ, পৃষ্ঠা ১৫)
ইবনে মাসউদের কোরআন হজরত ওসমান (রাঃ) জোর করে কেড়ে নিলো এবং ইবনে মাসউদকে মসজিদের জানালা দিয়ে ফেলে দেওয়ার হুকুম দিলেন। তাতে ইবনে মাসউদের পাজর ভেঙ্গে গেল।

ইবনে মাসুদের কোরআনের বৈশিষ্ট্য
ইবনে আবু দাউদের কিতাবুল মাসাহিফ অনুযায়ী, ইবন মাসউদের মুসহাফের মধ্যে সূরা ফাতেহা, আল- ফালাক এবং আন-নাস ছিলো না (এই তথ্যও ইমাম আহমাদ তাবারানি এবং ইবন হিব্বানের মুসনাদে রয়েছে), ইবনে মাসউদ এবং যায়েদ ইবন সাবেতদের মুসহাফের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে আবি দাউদের কিতাবুল মাসাহিফে ১৯ পৃষ্ঠার পার্থক্যের কথা লেখা আছে। এর সঙ্গেও সূরার ক্রমের পার্থক্যও ছিলো। অপর দিকে উপরোক্ত উবাই ইবনে কা’ব-এর কোরআনের মধ্যে তিনি বাড়তি দুটি সূরা যোগ করলেন-সূরা আল-হাফদ এবং সূরা আল-খাল।

এই ইবনে মাসউদ সূরা ফাতেহা, সূরা আল-ফালাক এবং সূরা আন-নাস কোরআনের অংশ হিসাবে তিনি গ্রহণ করেননি। অপর দিকে, উপরোঁক্ত উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ)-এর মুসহাফে দু’টি বাড়তি সূরা ছিলো। সূরা আল-হাফদ্ এবং সূরা আল-খাল (বর্তমান কোরআনে নাই)।

হযরত ‘আব্দুল্লাহ্ ইবনে ‘ওমর বলেছেন, “কেউ যেন না বলে যে, ‘আমি পুরো কোরআন শিখেছি! তা কিভাবে সম্ভব যেহেতু তার অনেককাংশই হারিয়ে গেছে? তিনি বরং বলুক, যা বাকি রয়েছে তাই শিখেছি। (জালাল উদ্দি সুয়ূতি, আল-ইত্কান ফী উলুম আল- কোরআন, লাহোর; ইদারাহ্ ইসলামিয়াত, ১৯৮২, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৫২৪)
এই আব্দুল্লাহ্ ইবন ‘ওমর, শুধু খলিফা হযরত ওসমানের সন্তানই নন বরং তিনি হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর ভগ্নীপতি ছিলেন এবং একজন বিখ্যাত সাহাবী হিসেবে রাসুলের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছেন।

২১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৯

অন্যরকম একজন বলেছেন: সর্বনাশ! ব্যপারটা এতো গোলমেলে?উপরে আপনি হাদিসের যেসব রেফারেন্স দিয়েছেন সেগুলোর সবগুলো যদি উড়িয়েও দিই,ইস্তানবুলের স্বর্নের কুরানের সাথে বর্তমান সংস্করনের অমিলকে কিভাবে ব্যাখ্যা করব বুঝতে পারছি না ।যাহোক, কোন একসময় আপনার দেওয়া লিঙ্কগুলো ঠান্ডামাথায় পড়ে দেখার ইচ্ছা রাখি ।আরেকটা কথা ভাইয়া,উপরে আপনি লিখেছেন - 'যেমন কেউ বউ পিটানো জায়েজ মনে করে, কেউ দাসী সহবত বৈধ মনে করে, কেউ চার বিয়ে হালাল মনে করে, কেউ কাজিন বিয়ে করা বৈধ মনে করে--------------"।ভাইয়া,কাজিন অর্থ্যাৎ আপন মামাতো,চাচাতো,খালাতো,ফুপাতো ভাইবোনদের মধ্যে বিয়ে জায়েজ হবার পক্ষে ত সকল ইসলামী আলেমরাই একমত ।কুরানে এর বিপক্ষে কোনও আয়াত নেই ,এমনকি হাদিসেও নেই ।মহানবী(সঃ) নিজেও তাঁর কাজিন জয়নব বিনতে জাহশকে বিয়ে করেছিলেন ।তাহলে কাজিনদের মধ্যে বিয়ে অবৈ্ধ বলে দাবী করেন কারা?কী কারনে? হ্যাঁ যতদূর জানি মেডিকেল দৃষ্টিকোণ থেকে এই ধরনের বিয়ে না হওয়াই ভালো ।কিন্ত ইসলামে ত নিষেধ নেই।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:০২

মেহেদী পরাগ বলেছেন: কোরানের আয়াত দেখিয়েই অনেকে কাজিনদের বিয়ে অবৈধ দাবী করে। তাদের দাবী কাজিন বিয়ে করা শুধুমাত্র নবীর (সাঃ) জন্যই বৈধ ছিল।

ইসলাম অনুযায়ী কাকে কাকে বিয়ে করা অবৈধ সে সম্পর্কে কোরানের সূরা নিসার তিনটি ক্রমিক আয়াত থেকে নির্দেশনা পাওয়া যায়।

সূরা নিসা, ৪:২২-২৪>

যে নারীকে তোমাদের পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে তোমরা তাদের বিবাহ করো না। কিন্তু যা বিগত হয়ে গেছে। এটা অশ্লীল, গযবের কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ। তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভ্রাতৃকণ্যা; ভগিনীকণ্যা তোমাদের সে মাতা, যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মাতা, তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকরী, দয়ালু। এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।


এ থেকে আমারা প্রজন্ম স্তরে ভাগ করে দেখতে পারি কাকে বিয়ে করা নিষেধ। শর্ত শুধু এই যে বিয়ে করতে হলে মোহরানা দেয়া লাগবে।

১ম প্রজন্মঃ কেউ নেই
২য় প্রজন্মঃ মা, খালা, ফুফু, সৎ মা, দুধ মা, শাশুড়ি।
৩য় প্রজন্মঃ আপন বোন, দুধ বোন।
৪র্থ প্রজন্মঃ কণ্যা, ভাতিজি, ভাগ্নি, আপন ছেলের বউ।
৫ম প্রজন্মঃ কেউ নেই
যেকোন প্রজন্মঃ এমন দুই নারীকে একত্রে যারা আপন বোন, সধবা অর্থাৎ স্বামী আছে এমন নারী (সধবা কৃতদাসী হলে সমস্যা নেই) ।


উপরের তালিকাকে মডিফাই করার জন্য তারা আরও একটি আয়াত বিবেচনা করে। এই আয়াতে শুধুমাত্র নবীর জন্য বৈধ কিন্তু অন্য কারও জন্য নয় এমন নারীদের কথা বলা হয়েছে।


সূরা আহযাব- ৩৩:৫০>

হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।


এখান থেকে তারা যুক্তি দেখায় বিবাহের উদ্দেশ্যে নবীর (সাঃ) জন্য বৈধ কিন্তু অন্য সকলের জন্য অবৈধ হচ্ছেঃ

চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নি।

তাদের যুক্তি হচ্ছে, এখানে উল্লেখ করা নারীদের ৪ টি গ্রুপে ফেলা যায় যার ৩ টি গ্রুপ আগেই আল্লাহ মুমীনদের জন্য বৈধ করে দিয়েছেন। তাই শুধু ৪র্থ গ্রুপ অর্থাৎ কাজিন বিয়ে করাই নবী (সাঃ) এর জন্য বিশেষায়িত।

১ম গ্রুপঃ মোহরানা প্রদান করে বিয়ে করা স্ত্রী।
২য় গ্রুপঃ কৃতদাসী।
৩য় গ্রুপঃ কোন মুমীন নারী যদি নিজেকে বিয়ের জন্য সমর্পণ করে।
৪র্থ গ্রুপঃ কাজিন।

তবে বর্তমান ইসলামিক ইন্টারপ্রিটেশন হচ্ছে, আয়াতটির শুধু শেষ অংশটিই নবীর জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ কোন মুমীন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পণ করে আর নবী নিজেও রাজী হন। কাজিন বিয়ের বিরোধীপক্ষ এইখানে প্রশ্ন করতে পারে যে সমর্পনকারী মুমীন নারী তো সাধারণ লোকের জন্যেও বৈধ। বর্তমান ইন্টারপ্রিটেশনে এর উত্তর হচ্ছে নবীর কাছে সমর্পন করা নারীরা মুমীন হলেই যথেষ্ট এমনকি নিষিদ্ধ তালিকার মুমীন নারী হলেও (মা, খালা ইত্যাদি?) শর্ত পূরণ হয়। কিন্তু নিষিদ্ধ তালিকার নারী মুমীন হলেও সাধারন মুসলিমের জন্য সে বৈধ নয়।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:১৪

মেহেদী পরাগ বলেছেন: ব্যক্তিগতভাবে কাজিনরা রাজি থাকলে তাদের বিয়েতে আমার আপত্তি নেই। তবে হানাফি মাযহাব অনুসারে কণ্যা রাজী না থাকলে পিতা অন্য কোথাও বিয়ে দিতে না পারলেও কণ্যার কাজিনের সাথে জোড় করে বিয়ে দিতে পারে। এই জোড়াজোড়ির ব্যাপারটা আমি মানতে পারিনা।

২২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:২৪

মো. আদম শফিউল্লাহ বলেছেন: عَامِلَةٌ نَاصِبَةٌ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.