নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

philosophy in bangladesh(ফিনবিডি)

দর্শন দর্পণে প্রতিবিম্বিত জীবন...

বাংলাদেশে 'দর্শন'

যুক্তি, ন্যায় ও সাম্যের সন্ধানে

বাংলাদেশে 'দর্শন' › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোবিন্দ চন্দ্র দেব এর স্মরণে...

৩০ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১২:৪০

গোবিন্দ চন্দ্র দেব (১ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৭ - মার্চ ২৬, ১৯৭১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনবিদ্যার একজন অধ্যাপক ছিলেন। তিনি জি সি দেব নামেই সমধিক পরিচিত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী-সম্প্রদায়কে ধবংস করার একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পাকিস্তানী সৈন্যরা ক্...ষণজন্মা মনিষী , আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দার্শনিক ড গোবিন্দ চন্দ্র দেবকে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ '৭১ প্রথম প্রহরে হত্যা করেছিল। শৈশব জি.সি. দেব তদানিন্তন ব্রিটিশ ভারতের আসাম প্রদেশের পঞ্চখান্দা পরগনার (বর্তমানে বাংলাদেশের সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা) গ্রাম লাউতাতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন( ১ফেব্রুয়ারী,১৯০৭)। তার পূর্বসূরীগণ ছিলেন উচ্চগোত্রীয় ব্রাহ্মণ যারা গুজরাট থেকে সিলেট এসেছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর জি,সি দেব স্থানীয় মিশনারীদের তত্ত্বাবধানে বড় হন। শিক্ষাজীবন জি,সি দেব তার শৈশবেই মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯২৫ সালে বিয়ানীবাজার উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে এন্ট্রাস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কোলকাতার রিপন কলেজ থেকে তিনি ১৯২৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯২৯ সালে সংস্কৃত কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস এবং ১৯৩১ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে মার্স্টাস সম্পন্ন করেন। জিসি দেব ১৯৪৪ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। কর্মজীবন ড.জি,সি দেব কোলকাতা রিপন কলেজের শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ২য় মহাযুদ্ধকালীন সময়ে রিপন কলেজ কোলকাতা থেকে দিনাজপুর স্থানান্তরিত হলে তিনিও কর্মসূত্রে দিনাজপুর আসেন। কিন্তু যুদ্ধ শেষে রিপন কলেজ পুনরায় কোলকাতায় স্থানান্তরের সময় তিনি দিনাজপুরে থেকে যাবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং সুরেন্দ্রনাথ কলেজের (দিনাজপুর) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেব যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালের জুলাইয়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি পূর্বতন ঢাকা হলের (বর্তমান- শহীদুল্লাহ হল) হাউস টিউটর হিসেবে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত দ্বায়িত্ব পালন করেন, পরবর্তীতে একই বছর তিনি জগন্নাথ হলের প্রভোস্টের দ্বায়িত্ব পান। ড. দেব ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়্যায়ম্যানের দ্বায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং ১৯৬৭ সালে প্রফেসর পদে পদান্নতি লাভ করেন। ষাটের দশকের শেষের দিকে ড. দেব পেনসেলভেনিয়ার wilkes-Barre কলেজে শিক্ষকতা করেন। স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি সেখানে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এবং সেখানে তার গুণমুগ্ধরা তার মানবিক দর্শন প্রচারের লক্ষ্যে The Govinda Dev Foundation for World Brotherhood প্রতিষ্ঠা করে। ড. দেব ১৯৬০ থেকে আমৃত্যু পাকিস্তান দর্শন সমিতির নির্বাচিত সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করে গেছেন। এছাড়া ড. দেব তার জীবন ঘনিষ্ঠ মানবিক দর্শন প্রচারের জন্য সমস্ত সম্পত্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে দান করে গেছেন যা দ্বারা পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন কেন্দ্র (DCPS) প্রতিষ্ঠিত হয়। হত্যা ড. দেব এর পালিতা কন্যা রোকেয়া বেগম আর তার স্বামী তাঁর বাসায় থাকতেন। ২৫শে মার্চ, ১৯৭১ তারিখে রাতে সারারাত ধরেই তাঁর বাড়ির উপর গুলি বর্ষিত হয়েছে। ভোরের দিকে তিনি তার মেয়েকে বললেন : মা তুমি একটু চা কর। আমি ততক্ষণে ভগবানের একটু নাম করি। এ সময় দরজা ভেঙে পাকিস্তানী সেনারা ঘরে প্রবেশ করে । "কাঁহা মালাউন কাঁহা" বলে তারা প্রফেসর দেবকে খোঁজ করে। পালিতা কন্যা রোকেয়া বেগমের স্বামী গোবিন্দ চন্দ্র দেবকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন এবং সৈন্যদের মন গলানোর জন্য কলেমা পড়েন। কিন্তু এতে কাজ হয়নি। ড. দেব নিজেও দু'হাত ওপরে তুলে "গুড সেন্স গুড সেন্স" বলে তাদের নিবৃত্ত করতে চেয়েছেন। কিন্তু হাত কয়েক ব্যবধানে থেকে সেনাসদস্যরা ব্রাশ ফায়ার করে গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও রোকেয়া বেগমের স্বামীকে হত্যা করে। রোকেয়া বেগম আকস্মিক আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডে অচেতন হয়ে পড়ায় বেঁচে যান। ২৬ শে মার্চ বিকেলে জগন্নাথ হলের পশ্চিম পাশ (যেখানে তার লাশ ফেলে রাখা হয় ) ঘেঁষে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর গর্ত খুঁড়ে মাটি চাপা দেয়া হয় হলের প্রভোস্ট ড. দেবসহ অন্যদের লাশ ।

বাংলাদেশে 'দর্শন'

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৩:১৯

কাজলভোমোরা বলেছেন: শুধু এই একটি অপরাধের জন্য হলেও পাকিস্তানীদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:২৭

বাংলাদেশে 'দর্শন' বলেছেন: অসাধারণ বলেছেন। দেব স্যারের স্মরণে স্মারক বক্তৃতায় অভিন্ন কথাটি বলেছিলেন কলামিস্ট আবুল মুকছুদ। ধন্যবাদ।

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৩৯

ঈশান বলেছেন: ৩০ লাখ মানুষ মারা গেছে আমার দুঃখ লাগেনা। যুদ্ধ হলে মানুষ তো মরবেই। কিন্তু বুদ্ধিজীবি হত্যা ছিলো পরিকল্পিত ঠান্ডা মাথার খুন। জাতিকে মেধাশুন্য করার এই চেষ্টার জন্য রাজাকার আল বদর গুলারে ফাঁসিতে লটকানো উচিত।


পঞ্চখান্দা নয় জায়গাটার নাম পঞ্চখন্ড।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.