নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হক মাওলা, আয়া পড়চি

আমি একজন ই-পীর

পীরসাহেব

রাতমজুর

পীরসাহেব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মনখারাপের রাত-নামচা - ০৬-০১-২০১৩

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৬

মেয়েটার বয়স চব্বিশ। আমার পরিচিতা, বন্ধুই বলা যায়। পরিচয়টা বছরখানেক আগে, পারিবারিক একটা অনুষ্ঠানে। তারপর থেকে প্রায়ই কথা হয়।



বাবা-মা নেই, আছেন সৎ মা, তবে বেশ সহজ-সরল, তিনি কেবলই ঘর সামলাতে জানেন, বৈষয়িক হিসাবে লবডংকা। দুটো ছোটো বোন আছে, এখনো স্টুডেন্ট। সেও স্টুডেন্ট, তবে সংসার চালাতে একটা চাকরী করতে হয়।



মেয়েটা মাঝে মাঝেই আমাকে প্রপোজ করে বসে। নাহ, প্রেম টাইপ নয়, সরাসরি বিয়ের কথা। আবার পরদিনই সেটা বেমালুম ভুলে গিয়ে ডুবে যায় নিজের পড়াশুনো আর চাকরীতে। মনে করিয়ে দিলে, "আরে ধুর, আমি কখন কি বলি তার ঠিক আছে নাকি?" - বলে প্রান খোলা একটা হাসি দেয়। তারপর আবার চলে নিজস্ব রোজকার আলাপচারীতা।



মেয়েটা আমাকে বিয়ে করতে চাইলে, আমার মনটা অদ্ভুত বিষন্ন হয়ে আসে। কারন, আমি জানি পেছনের কারনটা। চাইলেই নিজের বোন দু'টোকে রেখে হুট করে বিয়ে করা তার পক্ষে সম্ভব না, সে নিজেই বলে। আরো অন্ততঃ কয়েক বছর তার নাকি "মুক্তি নেই"। তবু মাঝে মাঝেই দাঁড়াতে হয় "মেয়ে দেখা" নামের এক্সাম বোর্ডের সামনে, অপমানিত হতে।



শ্যামলাটে ছিপছিপে মেয়েটার জন্যে বিয়ের প্রস্তাব আসে না তা না, তবে এলেই নাকি তার অপমানিত মনে হয় নিজেকে, বার বার প্রতিবারই। তাই নতুন কোনো প্রস্তাব এলে আজকাল গা করেনা একদমই। বারবার শাড়ী পড়ে মেয়ে দেখার আসরের পরীক্ষা দেওয়া ভালো লাগে না। সব থেকে অপমানের, যখন "মেয়ে ঠিক আছে, এবারে লেনদেন নিয়া আলাপ করি" বাক্যটা যখন কানে ঘোকে পাশের ঘর থেকে। বাপ-মা নেই, চেহারাও তেমন নেই, রংটাও কালোপণা, চাকরী করে, বাইরের দুনিয়া চেনে - সেরা ছেলেটাকে কিছু না দিলে ঘরে তুলবে কেনো? - এই মানসিকতায় বসে হাসতে থাকা লোকগুলোকে দেখে নাকি ঘিনঘিনে একটা ভাব আসে মনে।



আজ বলছিলো, আজকে সন্ধের মেহমান লোকগুলো নাকি এসে জানতে চেয়েছিলো মেয়ের ভাগে কতটুকু জমি পড়বে।



আজ বলছিলো, আজকাল নাকি জীবনটা বড় বেশী এক ঘেয়ে আর ক্লান্ত লাগে।



আজ বলছিলো, "বিয়ে করবেন আমাকে? আমি কিন্তু সুন্দরী না, আর চাকরী করতে দিতে হবে, বোনদের চালাতে হবে আরো কয়েকটা বছর।"



আমি বরাবরের মতই বলেছি, "আগে মন ঠিক করো নিজের, স্থির করো কি চাও, তারপর দেখা যাবে। এভাবে আজ একটা কাল আরেকটা প্লান নিয়ে গবেষনা করে জীবন চলবে?"



"আরেকটা ইচ্ছে করতেছে" - বলছিলো মেয়েটা, "দেশের বাইরে কোনো ছেলের সাথে বিয়ে হলে বেঁচে যাই। পালাতেও পারবো, বোনরাও স্বচ্ছল থাকবে।"



"উইশ ইউ লাক, তবে মতটা আবার বদলাবে কখন?" - তরল গলায় বলেছিলাম।



জবাবে শুনেছি, "জানিনা, হয়তো একটু পরেই, হয়তো সকালে ঘুম দিয়ে উঠেই।"



এরপর আর তেমন কিছু বিশদ আলাপ হয়নি। তবে মনটা আসলেই কালো হয়ে আছে কেনো যেনো।



আজকের পাত্রপক্ষ মেয়েটাকে বিয়ে করতে আগ্রহী ছিলো নাকি জমির ভাগটাকে - এখনো বুঝছিনা ঠিক মতো।



দেখি, একটা সিগ্রেট কোনো হেল্প করতে পারে কি না এই ভাবনার।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

প্যারানয়েড টীন বলেছেন: বস, অনেকদিন পর। তয় মন খারাপ করায়া দিলেন।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩১

পীরসাহেব বলেছেন: মন খারাপের কি আছে ব্রাদার? অহরহ ঘটছে। আছেন কেমন?

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৬

বটের ফল বলেছেন: অসাধারন আপনার লেখা। মনের ভাব খুব সুন্দর করে প্রকাশ করতে পারেন আপনি। মন খারাপ করে দেওয়ার জন্য +++++++++

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩২

পীরসাহেব বলেছেন: /:)

৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৩

অভ্রনীল লুছিফার বলেছেন: :(

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩২

পীরসাহেব বলেছেন: /:) /:)

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৭

প্যারানয়েড টীন বলেছেন: চলে যায় জীবন তরী, আমি শুধু হাল ধরে থাকি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.