নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,

পি কে বড়ুয়া

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,

পি কে বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙ্গালীর জন্ম কবে থেকে ?

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২

দশম শতকের আগে আসলে কি বাঙালির জন্ম হয়েছিল ?
এই প্রশ্ন ও উত্তরের প্যরামিটার টা কি, ভাষা, ভুখন্ড, তার সংস্কৃতি মানবগষ্টি ? কোনটা ? আমি মনে করি সব টুকু মিলেই । যদিও সেখানে ব্যবধান হবে বিশাল । কিন্তু সেই বৈচিত্র্য র মাঝে ঐক্য বের করাই আমাদের কাজ । নীচের ঐতিহাসিক, সাহিত্যিক ও প্রত্নতাওিক সুত্র গুলো থেকে উত্তর পেতে পারেন এই প্রশ্নের । সত্যি এটাই যে , প্রাচীন কালে এই জনপদের মানুষরা ছিল ব্রাত্য মানে দ্রাবীড় ,নিষাদ,চন্ডাল, কিরাত । তারা ছিল আর্য দের কাছে এ নামে ঘৃণিত। যেহেতু এরা ছিল প্রকৃতি পুজারী তাই কোথাও উল্লেখিত হয়েছে তাদের টোটেম ছিল জীব জন্তু বা পাখি ।
বৈদিক কালে রচিত ঐতরীয় ব্রাহ্মণে উল্লেখ আছে যে, পূর্ব আর্যবর্তের আরো পূর্বে থাকে দস্যুরা। দস্যুদের কথা অস্তিত্ব ঘোষণা দিয়ে ঐতরীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পুন্দ্র জাতি এবং তাদের রাজধানী ’পুন্ড্রনগর’-এর কথা। বর্তমান মহাস্থান গড়ই সেই দস্যুদের রাজধানী। ঐতরীয় ব্রাহ্মণে না থাকলেও সমকালীন ঐতরীয় আরণ্যকএ বঙ্গ জাতির উল্লেখ প্রথম পাওয়া যায়। ঐতরীয় রায় দিয়েছে, দস্যুরা পথভ্রষ্ট পাপী কেননা তারা কোনো সত্য গ্রন্থের অনুসারী নয়।ঐতরীয় ব্রাহ্মণে না থাকলেও সমকালীন ঐতরীয় আরণ্যকএ বঙ্গ জাতির উল্লেখ প্রথম পাওয়া যায়। অথচ রামায়ন ও মহাভারতে দেখা যায় যে, বঙ্গজরা পাপীতো নয়ই, বরং মিত্রতা প্রতিষ্ঠা করার মতো অতি সম্ভাবনাময় জাতি। রামায়ণে এক তালিকায় রয়েছে কোনো কোনো বঙ্গজ জাতির সঙ্গে আর্যদের মিত্রতা স্থাপিত হয়েছে। মহাভারতে ভীব কর্তৃক পুন্ডবর্ধন ও অন্যান্য কয়েকটি বঙ্গজ জাতিকে বশীভূত করার উল্লেখ আছে। বনপার্বণ গ্রন্থের তীর্থযাত্রা পর্বে পুন্ডনগরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া গঙ্গার একাংশ করতোয়া নদীকে পবিত্র ঘোষণা করা হয়েছে। এমনিভাবে ধীরে ধীরে বঙ্গজ জাতিগুলি মহাভারতের যুগে এসে আর্যাবর্তের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে মর্যাদার সহিত সম্পৃক্ত হয়েছ বলে গবেষক রা ধারনা করেছেন। মহাভারতের বীরকর্ণ, কৃষ্ণ এবং ভীমসেনা বঙ্গরাজ্যগুলি জয় করে বীরত্ব প্রদর্শন করেছিলেন। অর্থাৎ সমকালীন যুগে রাজ্যগুলির বিকাশ ও খ্যাতি ছিল এমনই যে, এগুলিকে জয় করার জন্য আর্যবর্ত থেকে এসেছিলেন ঐশ্বরিক শক্তিধর বীরেরা। তবে হ্যাঁ , বাঙালি জাতি পরিচয়ের ঐতিহাসিক যুগ শুরু হয় গুপ্তযুগ (৩২০ খ্রি.- ৬৫০ খ্রি.) থেকে এবং এ যুগেই প্রথম ক্ষুদ্র রাজ্যপুঞ্জগুলিকে নিয়ে গঠিত হয় বিশাল রাজ্য। গুপ্তদের সাম্রাজ্যিক ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় ক্ষুদ্র রাজ্যের বদলে বৃহৎ রাজ্য যেমন পূর্ব ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের বঙ্গরাজ্য ও উত্তরাঞ্চলের গৌড় রাজ্য। বৃহৎ বঙ্গের প্রথম এবং ঐতিহাসিকভাবে সুনির্দিষ্ট এবং শক্তিশালী শাসক শশাঙ্ক থেকেই বাঙালি জাতিসত্ত্বার যাত্রা শুরু এবং পাল ও সেন আমলে এসে সে সত্ত্বা আরো বিকশিত হয়ে বাঙালি জাতির শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করে। যদিও সেন রা ছিল বহিরাগত । চায়না ভিউ ( সিনহুয়া নেট) জানায় ,ক্যালকোলিথিক বা তাম্র যুগের নিদর্শন আবিস্কারের হবার পর বঙ্গদেশ বয়স চার হাজার বছর বলে প্রত্নতাত্বিক রা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । এই গবেষনা মতে বাঙালী জাতি হল বঙ্গদেশ অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বসবাসকারী মানব সম্প্রদায় যাদের ইতিহাস অন্ততঃ চার হাজার বছর পুরোনো। আর ভুখন্ড এর কোন কোন এলাকা ভেদে বয়স দশ লক্ষ থেকে পাঁচ লক্ষ বলে ধারনা করা হয়েছে । ভাষাভেদে চর্যাপদ আদি বাংলার নিদর্শন যা ৬৫০ খ্রি থেকে ৯৫০ খ্রি । বঙ্গ বা বাংলা শব্দটির সঠিক ব্যুৎপত্তি জানা নেই তবে অনেকে মনে করেন এই নামটি এসে থাকতে পারে দ্রাবিড় ভাষী বং নামক একটি গোষ্ঠী থেকে যারা এই অঞ্চলে আনুমানিক ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে বসবাস করত। ডঃ অতুল সুরের মতে "বয়াংসি" অর্থাৎ পক্ষী এদের টোটেম ছিল। সেই থেকে এই নামের উৎপত্তি । আর্যদের আগমনের পর বাংলা ও বিহার অঞ্চল জুড়ে মগধ রাজ্য সংগঠিত হয় খ্রীশষ্টপূর্ব সপ্তম শতকে। বুদ্ধের সময় মগধ ছিল ভারত উপমহাদেশের চারটি মহাশক্তিশালী রজত্বের অন্যতম ও ষোড়শ মহাজনপদের একটি। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্বের সময় মগধের বিস্তার হয় দক্ষিণ এশিয়ার এক বিশাল অঞ্চলে। খ্রীষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে সম্রাট অশোকের সময় আফগানিস্তান ও পারস্যের কিছু অংশও মগধের অধিকারভুক্ত ছিল।
বাংলার প্রথম স্বাধীন রাজা বলা হয় শশাঙ্ককে যার রাজত্ব ছিল সাতশো শতকের গোড়ার দিকে। তারপর কিছুদিন অরাজকতার পর বৌদ্ধধর্মাবলম্বী পাল বংশ এখানে দীর্ঘ চারশো বছর রাজত্ব করে এবং বলা হয় পালরাই ছিল বাংলার সব চেয়ে মহৎ উজ্জ্বল শাসক, তারপর অপেক্ষাকৃত কম সময় রাজত্ব করে ব্রাহ্মণ্য হিন্দু ধর্মী সেন বংশ। প্রাচীন বঙ্গের জনপদ গুলো যেমন, গৌড়, বঙ্গ, হরিকেল, চন্দ্রদ্বীপ, বাঙ্গালাবাদ, পুন্ড, বারেন্দ্রী, দক্ষিণারাড়, উত্তরা রাধামন্ডল, তাম্রলিপ্তি, পুন্ডবর্ধন-ভুক্তি, সুবর্ণবীথি, বর্ধমানভুক্তি, কঙ্কগ্রাম ভুক্তি, মেঘনা নদীর অববাহিকার কয়েকটি রাজ্য- যেখানে আজ আমাদের বসবাস। উপরিল্লিখিত আমাদের পূর্বপুরুষ দ্রাবিড় দের সাথে পরবর্তী তে বহিরাগতদের রক্ত এসে মিশেছে । মৌর্য বৌদ্ধ - গুপ্ত ব্রাম্মন্য -পাল বৌদ্ধ -সেন ব্রাম্মন্য(শেষ লক্ষন সেন বৈষ্ণব ছিলেন - যার কারনে হয়ত মার খেতে হয়েছে খিলজির ডজন খানেক অশ্বারহী র কাছে,না হলে প্রথম সেনরা শুরুতে প্রবল শক্তিধর ছিল )- তুর্কী মুসলমান - আফগান মুসলিম - মুঘল মুসলিম।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:২৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: পি কে বড়ুয়া ,



ভালো লিখেছেন । জানানোর জন্যে ধন্যবাদ ।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:১৪

পি কে বড়ুয়া বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে ও। ভালো থাকুন, সাথে থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.